এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়াকে একটি কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় প্রক্রিয়ার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়াকে একটি কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় প্রক্রিয়ার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে?
নিউট্রন, প্রোটন, α-কণা ইত্যাদি উচ্চ শক্তিসম্পন্ন কণা দ্বারা আঘাতের ফলে এমন কিছু মৌলের সমস্থানিক উৎপন্ন হয় যারা স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়ার মতো পুনরায় পজিট্রন, ইলেকট্রন ইত্যাদি নিঃসরণ করে স্থায়িত্ব মৌল গঠন করে। এই ঘটনাকে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা বলে।
নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়াকে একটি কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় প্রক্রিয়ার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করো।
236U একটি স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয় মৌল হলেও এর পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে নিউট্রন কণা দ্বারা আঘাত করলে অস্থায়ী 236U তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়াস গঠিত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে এটি বিভাজিত হয়ে যায়। সুতরাং, নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়া একটি কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় প্রক্রিয়া। অর্থাৎ একটি স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তাকে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তায় রূপান্তরেরও একটি উদাহরণ হল নিউক্লিয় বিভাজন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা কী?
নিউট্রন, প্রোটন, আলফা-কণার মতো উচ্চশক্তিসম্পন্ন কণার দ্বারা কোনো স্থিতিশীল মৌলকে আঘাত করলে যে তেজস্ক্রিয় সমস্থানিক (radioactive isotopes) তৈরি হয় এবং যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে পজিট্রন, ইলেকট্রন ইত্যাদি কণা নিঃসরণ করে একটি স্থায়ী মৌলে রূপান্তরিত হয়, সেই প্রক্রিয়াটিকেই কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা বলে।
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তার আবিষ্কারক কে?
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তার আবিষ্কারক হলেন আইরিন জোলিও-কুরি ও ফ্রেডেরিক জোলিও-কুরি (1934 সালে)।
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা ও স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তার মধ্যে পার্থক্য কী?
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা ও স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তার মধ্যে পার্থক্য হল –
1. উৎস – স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা প্রকৃতিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে (যেমন – ইউরেনিয়াম, রেডিয়াম)। কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা মানুষের তৈরি পরীক্ষাগার বা নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়।
2. প্রক্রিয়া – স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তার জন্য কোনো বাহ্যিক কণার আঘাত প্রয়োজন হয় না। কিন্তু কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা শুরু করতে নিউট্রনের মতো উচ্চশক্তিসম্পন্ন কণার আঘাত প্রয়োজন।
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তার প্রয়োগ কী কী?
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তার প্রয়োগ হল –
1. চিকিৎসাবিজ্ঞান – ক্যান্সার চিকিৎসা (রেডিওথেরাপি), রোগ নির্ণয় (ট্রেসার হিসেবে)।
2. শিল্পক্ষেত্র – ধাতুর ঘনত্ব/পুরুত্ব মাপা, পাইপলাইনের ফুটো নির্ণয়।
3. কৃষিক্ষেত্র – কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, নতুন প্রজাতির ফসল উদ্ভাবন (Mutation breeding)।
4. গবেষণা – রাসায়নিক ও জৈব প্রক্রিয়াগুলির গতিপ্রকৃতি ট্রেস করা।
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টির জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কণা কোনটি?
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টির জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কণা হল নিউট্রন। কারণ নিউট্রন আধানহীন হওয়ায় এটি ধনাত্মক আধানযুক্ত নিউক্লিয়াস দ্বারা বিকর্ষিত হয় না এবং সহজেই নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করতে পারে।
‘সমস্থানিক’ বা ‘Isotope’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
একই মৌলের এমন সব পরমাণু যাদের পারমাণবিক সংখ্যা একই কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন, তাদেরকে সমস্থানিক বলে। কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তার মাধ্যমে যে নতুন পরমাণুগুলি তৈরি হয়, সেগুলি মূল মৌলেরই তেজস্ক্রিয় সমস্থানিক।
উদাহরণ – স্থিতিশীল কার্বন-12 (¹²C) নিউট্রন দ্বারা আঘাত করলে তেজস্ক্রিয় কার্বন-14 (¹⁴C) তৈরি হয়।
বিভাজনক্ষম নিউক্লিয়াস (Fissible nucleus) বলতে কী বোঝো?
যেসব পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে ধীর গতির নিউট্রন দ্বারা আঘাত করলে স্বতঃস্ফূর্ত শৃঙ্খল বিক্রিয়া শুরু করে সেই নিউক্লিয়াসগুলিকে বিভাজনক্ষম নিউক্লিয়াস বলে। প্রকৃতিতে পাওয়া যায় এরূপ বিভাজনক্ষম নিউক্লিয়াস হল একমাত্র 235U।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়াকে একটি কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় প্রক্রিয়ার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়াকে একটি কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় প্রক্রিয়ার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন