এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “A, B ও C মৌল তিনটির পরমাণু ক্রমাঙ্ক যথাক্রমে (Z – 2), Z, (Z + 1)। B একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। 1. A ও C কোন্ শ্রেণিতে অবস্থিত? 2. কোনটি ধাতু? 3. A ও C দ্বারা গঠিত যৌগের প্রকৃতি ও সংকেত লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

A, B ও C মৌল তিনটির পরমাণু ক্রমাঙ্ক যথাক্রমে (Z – 2), Z, (Z + 1)। B একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। 1. A ও C কোন্ শ্রেণিতে অবস্থিত? 2. কোনটি ধাতু? 3. A ও C দ্বারা গঠিত যৌগের প্রকৃতি ও সংকেত লেখো।
B মৌলটির পরমাণু ক্রমাঙ্ক Z। B একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস অর্থাৎ মৌলটির পরমাণুর সর্ববহিস্থ কক্ষে 8টি ইলেকট্রন উপস্থিত।
সুতরাং, B মৌলটি দীর্ঘ পর্যায়-সারণিতে 18নং শ্রেণিতে অবস্থিত।
- A মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক (Z – 2) হওয়ায় মৌলটির পরমাণুর সর্ববহিস্থ কক্ষে ইলেকট্রন আছে = (82)টি = 6টি। সুতরাং, A মৌলটি দীর্ঘ পর্যায়-সারণিতে (10 + 6) = 16 নং শ্রেণিতে অবস্থিত। C মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক (Z + 1) হওয়ায় মৌলটির পরমাণুর সর্ববহিস্থ কক্ষে ইলেকট্রন আছে = 1টি। সুতরাং, C মৌলটি দীর্ঘ পর্যায়-সারণিতে 1 নং শ্রেণিতে অবস্থিত।
- C মৌলটি একটি ক্ষার ধাতু।
- C মৌলটির যোজ্যতা 1 এবং A মৌলটির যোজ্যতা = (8 – 6) = 2। A ও C দ্বারা গঠিত যৌগটি তড়িৎযোজী যৌগ এবং এটির সংকেত C2A।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
B মৌলটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস হলেও এর পারমাণবিক সংখ্যা Z ধরা হয়েছে। এর থেকে কীভাবে A এবং C মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস বের করা যায়?
যেহেতু B একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস, এর সর্ববহিঃস্থ কক্ষপথে (ভ্যালেন্স শেল) 8টি ইলেকট্রন রয়েছে। A -এর পারমাণবিক সংখ্যা হবে (Z – 2), অর্থাৎ B -এর থেকে 2টি ইলেকট্রন কম। তাই A -এর ভ্যালেন্স শেলে ইলেকট্রন সংখ্যা হবে 8 – 2 = 6টি। একইভাবে, C -এর পারমাণবিক সংখ্যা হবে (Z + 1), অর্থাৎ B -এর থেকে 1টি ইলেকট্রন বেশি, তাই এর ভ্যালেন্স শেলে ইলেকট্রন সংখ্যা হবে 1টি।
A মৌলটি 16 নং শ্রেণিতে আছে। এটি কি পর্যায় সারণির 16 নং গ্রুপ নাকি 16তম মৌল?
এখানে “16 নং শ্রেণি” বলতে পর্যায় সারণির 16 নং গ্রুপকেই বোঝানো হয়েছে (যাকে চ্যালকোজেন গ্রুপ বলা হয়), 16তম মৌলকে নয়। দীর্ঘ পর্যায় সারণিতে গ্রুপ নম্বর ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যার সাথে সম্পর্কিত।
C₂A যৌগটির উদাহরণ কী?
C একটি ক্ষার ধাতু (গ্রুপ-1) এবং A একটি চ্যালকোজেন (গ্রুপ-16)। এদের দ্বারা গঠিত C₂A ধরনের যৌগের উদাহরণ হল সোডিয়াম অক্সাইড (Na₂O), পটাসিয়াম সালফাইড (K₂S) ইত্যাদি।
A ও C-এর যৌগটি তড়িৎযোজী হল কেন?
C মৌলটি একটি ধাতু যা সহজেই 1টি ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়ন (C⁺) তৈরি করে। অপরদিকে A মৌলটি একটি অধাতু, যা 2টি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়ন (A²⁻) গঠন করে। এই বিপরীত চার্জযুক্ত আয়নগুলোর মধ্যে তীব্র তড়িৎ-আকর্ষণ বলের কারণে যে রাসায়নিক বন্ধন তৈরি হয়, তাকে তড়িৎযোজী বন্ধন বলে এবং এইভাবে গঠিত যৌগকে তড়িৎযোজী যৌগ বলা হয়।
যদি B -এর পারমাণবিক সংখ্যা 18 (আর্গন) হয়, তাহলে A ও C কী কী মৌল হবে?
যদি Z = 18 (আর্গন) হয়, তবে –
A -এর পারমাণবিক সংখ্যা = Z – 2 = 16 → সালফার (S)
C -এর পারমাণবিক সংখ্যা = Z + 1 = 19 → পটাসিয়াম (K)
এই ক্ষেত্রে যৌগটির সংকেত হবে K₂S (পটাসিয়াম সালফাইড)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “A, B ও C মৌল তিনটির পরমাণু ক্রমাঙ্ক যথাক্রমে (Z – 2), Z, (Z + 1)। B একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। 1. A ও C কোন্ শ্রেণিতে অবস্থিত? 2. কোনটি ধাতু? 3. A ও C দ্বারা গঠিত যৌগের প্রকৃতি ও সংকেত লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন