এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?
অ্যামোনিয়ার শনাক্তকরণ –
- অ্যামোনিয়ার একটি বিশেষ তীব্র ঝাঁজালো গন্ধ আছে।
- হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড সিক্ত কাচদণ্ডকে অ্যামোনিয়া গ্যাসের সংস্পর্শে আনলে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইডের সাদা ধোঁয়া উৎপন্ন হয়। NH3 + HCl → NH4Cl
- অ্যামোনিয়ার সংস্পর্শে নেসলার দ্রবণ (K2[HgI4]) তামাটে হয়ে যায়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
অ্যামোনিয়া গ্যাসের সবচেয়ে সহজে চেনার উপায় কী?
অ্যামোনিয়া গ্যাসের একটি অত্যন্ত তীব্র ও সুনির্দিষ্ট ঝাঁজালো গন্ধ রয়েছে, যা অনেকটা মূত্র বা ক্লিনিং প্রোডাক্টের মতো গন্ধ। এটি শনাক্ত করার সবচেয়ে সরল ও দ্রুততম উপায় হল এর গন্ধ। তবে, উচ্চ মাত্রার অ্যামোনিয়া বিপজ্জনক, তাই গন্ধ নেওয়ার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড দিয়ে অ্যামোনিয়া শনাক্ত করার পদ্ধতিটি কী?
এটি একটি খুবই জনপ্রিয় রাসায়নিক পরীক্ষা।
1. পদ্ধতি – একটি কাচের দণ্ড (যেমন – গ্লাস রড) হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) দিয়ে ভিজিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই ভেজা দণ্ডটি সন্দেহভাজন অ্যামোনিয়া গ্যাসের কাছাকাছি নিলে সাদা ধোঁয়ার একটি মেঘের সৃষ্টি হবে।
2. কারণ – এই সাদা ধোঁয়া আসলে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NH₄Cl) -এর ক্ষুদ্র কঠিন কণা।
রাসায়নিক সমীকরণ – NH3(g) + HCl(g) → NH4Cl(s)
অ্যামোনিয়া গ্যাসের গন্ধ সরাসরি নেওয়া কি নিরাপদ?
না, একেবারেই নিরাপদ নয়। অ্যামোনিয়া একটি উত্তেজক গ্যাস। অল্প পরিমাণে এর গন্ধ নেওয়া হয়তো ক্ষতিকর নয়, কিন্তু বেশি মাত্রায় শ্বাস নিলে চোখ, নাক, গলা এবং শ্বাসনালীতে গুরুতর জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই গন্ধ শনাক্ত করতে হলে দূর থেকে হালকাভাবে বাতাসটি হাত দিয়ে নিজের দিকে আনার পরই শুঁকতে হবে।
লিটমাস পেপার দিয়ে অ্যামোনিয়া শনাক্ত করা যায় কি?
হ্যাঁ, অ্যামোনিয়া গ্যাস ক্ষারধর্মী। যদি লাল লিটমাস পেপার অ্যামোনিয়া গ্যাসের সংস্পর্শে আনা হয়, তবে এটি নীল বর্ণে পরিণত হবে। এটি অ্যামোনিয়ার ক্ষারকীয় বৈশিষ্ট্য প্রমাণ করে।
নেসলার বিকারক ছাড়া অন্য কোন রাসায়নিক দিয়ে দ্রবণে অ্যামোনিয়া শনাক্ত করা যায়?
হ্যাঁ, অন্য একটি সাধারণ পরীক্ষা হল ফেনলফথালিন দ্রবণ ব্যবহার করা। অ্যামোনিয়া গ্যাস পানিতে দ্রবীভূত হয়ে ক্ষারকীয় হাইড্রোক্সাইড আয়ন তৈরি করলে, এটি বর্ণহীন ফেনলফথালিন দ্রবণকে গোলাপি রঙে পরিণত করবে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন