এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “নেসলার বিকারক কী? নেসলার বিকারকে অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ যোগ করলে কী ঘটে?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

নেসলার বিকারক কী? নেসলার বিকারকে অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ যোগ করলে কী ঘটে?
পটাশিয়াম মারকিউরিক আয়োডাইডের [K₂HgI₄] ক্ষারীয় দ্রবণকে নেসলার বিকারক বলে। নেসলার বিকারকে অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ অর্থাৎ অ্যামোনিয়াম হাইড্রক্সাইড যোগ করলে বাদামি বা তামাটে রং-এর অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়।
নেসলার বিকারক অ্যামোনিয়া গ্যাস বা অ্যামোনিয়াম (NH₄⁺) মূলকের উপস্থিতি শনাক্তকরণের কাজে ব্যবহৃত হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
নেসলার বিকারক তৈরির প্রধান উপাদান কী কী?
নেসলার বিকারক হল পটাশিয়াম আয়োডাইড (KI), মারকিউরিক ক্লোরাইড (HgCl₂) বা মারকারি (II) আয়োডাইড (HgI₂) এবং পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইড (KOH) বা সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH) এর একটি জটিল মিশ্রণ। এর রাসায়নিক সংকেত হল K₂[HgI₄] যা পটাশিয়াম টেট্রাইওডোমারকুরেট (II) নামে পরিচিত।
নেসলার বিকারকের সাথে অ্যামোনিয়ার বিক্রিয়ায় যে বাদামি বর্ণের অধঃক্ষেপ পড়ে তার রাসায়নিক নাম কী?
এই অধঃক্ষেপটির রাসায়নিক নাম হল আয়োডাইড অব মিলনের বেস বা “নেসলার্স সল্ট”। এর গঠন একটি জটিল যৌগ, প্রায়শই এটিকে HgO·Hg(NH₂)I হিসেবে প্রকাশ করা হয়।
নেসলার বিকারক দিয়ে অ্যামোনিয়া শনাক্ত করার সংবেদনশীলতা কতটা?
নেসলার বিকারক অত্যন্ত সংবেদনশীল। এটি জলে অ্যামোনিয়ার অতি ক্ষুদ্র পরিমাণ (প্রায় 1 ppm বা তারও কম) শনাক্ত করতে সক্ষম। এই উচ্চ সংবেদনশীলতার কারণেই এটি জলের গুণমান পরীক্ষায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
নেসলার বিকারকের প্রধান ব্যবহার বা প্রয়োগ কী?
এর প্রধান ব্যবহারগুলি হলো —
1. জলের গুণমান পরীক্ষা – জলের অ্যামোনিয়া দূষণ শনাক্ত করার জন্য।
2. জৈব রসায়ন – প্রোটিনের উপস্থিতি নির্ধারণে, কারণ প্রোটিন হাইড্রোলাইসিসের মাধ্যমে অ্যামোনিয়া উৎপন্ন করতে পারে।
3. ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা – রক্ত বা মূত্রে ইউরিয়া ও অ্যামোনিয়ার মাত্রা নির্ণয়ের পরীক্ষায় ব্যবহৃত হয়।
নেসলার বিকারক ব্যবহারের সময় কি কোনো সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন?
হ্যাঁ, অবশ্যই সতর্কতা প্রয়োজন। নেসলার বিকারকে পারদ (Mercury) থাকে, যা অত্যন্ত বিষাক্ত এবং বিপজ্জনক। এটি ত্বকের সংস্পর্শে আনা উচিত নয়, এবং ব্যবহারের পর হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া, এর বর্জ্য পরিবেশ দূষণ রোধে সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “নেসলার বিকারক কী? নেসলার বিকারকে অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ যোগ করলে কী ঘটে?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন