এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “NH₃ -কে ক্ষার বলা যায়—ব্যাখ্যা করো?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

NH₃ -কে ক্ষার বলা যায়—ব্যাখ্যা করো?
NH₃ ধাতব হাইড্রক্সাইড নয় বলে তাকে ক্ষার বলা যায় না। কিন্তু অ্যামোনিয়া অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় লবণ উৎপন্ন করে এবং অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ লাল লিটমাসকে নীল করে কারণ অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণে অ্যানায়নরূপে কেবলমাত্র OH⁻ পাওয়া যায়।
NH₃ + H₂O ⇌ NH₄⁺ + OH⁻; NH₃ + HCl → NH₄Cl
এই জন্য অ্যামোনিয়া ক্ষার নয়, কিন্তু ক্ষারক এবং এর জলীয় দ্রবণ মৃদু ক্ষারীয় প্রকৃতির হয়।
আবার NH₃ অণুতে একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন-জোড় বর্তমান তাই এটি প্রোটন গ্রহণ করে, তাই NH₃ একটি ক্ষারক।
[H₃N : → H⁺] → NH₄⁺
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ক্ষার (Alkali) এবং ক্ষারক (Base) -এর মধ্যে মূল পার্থক্য কী?
ক্ষারক ও ক্ষারের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো দ্রাবক ও দ্রবণীয়তা।
1. ক্ষারক (Base) – এটি একটি ব্যাপক (broader) ধারণা। যে কোনো পদার্থ যা প্রোটন (H⁺) গ্রহণ করতে পারে বা ইলেকট্রন-জোড় দান করতে পারে, তাকে ক্ষারক বলে। উদাহরণ – NH₃, Na₂O, CaO
2. ক্ষার (Alkali) – এটি ক্ষারকের একটি নির্দিষ্ট প্রকার। জলে দ্রবণীয় ধাতব হাইড্রক্সাইড (যেমন – NaOH, KOH, Ca(OH)₂) –কেই ক্ষার বলা হয়। এগুলি জলীয় দ্রবণে OH⁻ আয়ন সরবরাহ করে।
NH₃ নিজে থেকে OH⁻ আয়ন তৈরি করে না, তাহলে এর জলীয় দ্রবণ ক্ষারীয় আচরণ করে কেন?
NH₃ জলের সাথে বিক্রিয়া করে প্রোটন গ্রহণ করে এবং OH⁻ আয়ন তৈরি করে — এটিকে প্রোটনেশন বা ক্ষারীয় আচরণ বলা হয়।
NH₃ অণুতে একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় থাকে। এটি জলের (H₂O) অণু থেকে একটি প্রোটন (H⁺) গ্রহণ করে।
বিক্রিয়া – NH₃ + H₂O ⇌ NH₄⁺ + OH⁻
ফলে দ্রবণে হাইড্রক্সাইড (OH⁻) আয়ন তৈরি হয়, যা দ্রবণকে ক্ষারীয় করে তোলে এবং লিটমাস পেপারকে নীল রঙে পরিবর্তিত করে।
অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ (অ্যামোনিয়াম হাইড্রক্সাইড) কেন ক্ষারীয় ধর্ম দেখায়?
অ্যামোনিয়া জলের সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রক্সাইড আয়ন (OH⁻) উৎপন্ন করে।
সমীকরণ – NH₃ + H₂O ⇌ NH₄⁺ + OH⁻
এই OH⁻ আয়নের কারণেই এটি লাল লিটমাস কাগজকে নীল করে এবং মৃদু ক্ষারীয় প্রকৃতির হয়।
অ্যামোনিয়া কিভাবে একটি অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ তৈরি করে?
অ্যামোনিয়া তার নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় দিয়ে একটি প্রোটন (H⁺) গ্রহণ করে অ্যামোনিয়াম আয়ন (NH₄⁺) তৈরি করে, যা অ্যাসিডের অ্যানায়নের সাথে যুক্ত হয়ে লবণ গঠন করে।
সমীকরণ – NH₃ + HCl → NH₄Cl (অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড)
অ্যামোনিয়া অণুর কোন বৈশিষ্ট্য তাকে ক্ষারক হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে?
অ্যামোনিয়া (NH₃) অণুর নাইট্রোজেন পরমাণুতে একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় থাকে। এই ইলেকট্রন জোড়ের কারণেই এটি একটি প্রোটন (H⁺) গ্রহণ করতে সক্ষম হয়, এবং সেই কারণে অ্যামোনিয়া একটি ক্ষারক (Base) হিসেবে আচরণ করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “NH₃ -কে ক্ষার বলা যায়—ব্যাখ্যা করো?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন