এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত NH₃ ও বায়ুর মিশ্রণটি বিশুদ্ধ ও ধুলিকণা মুক্ত হওয়া প্রয়োজন কেন?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত NH₃ ও বায়ুর মিশ্রণটি বিশুদ্ধ ও ধুলিকণা মুক্ত হওয়া প্রয়োজন কেন?
অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে নাইট্রিক অ্যাসিড উৎপাদনের জন্য প্ল্যাটিনাম-রোডিয়াম ধাতু সংকর বা প্ল্যাটিনাম ধাতু দ্বারা নির্মিত তারজালি অনুঘটক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে বিক্রিয়করূপে ব্যবহৃত NH₃ ও বায়ুর মিশ্রণ ধুলিকণা যুক্ত হলে বিক্রিয়ক অণুর আগে ধুলিকণা অনুঘটকের পৃষ্ঠতলে অধিশোষিত হয়ে একটি স্তর গঠন করে অনুঘটকের পৃষ্ঠতলকে আবৃত করে। এর ফলে অনুঘটকের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায় এবং বিক্রিয়ার বেগ কমে যায়। আবার, বায়ুতে কোনো অশুদ্ধি যেমন – আর্সেনিক অক্সাইড উপস্থিত থাকলে, তা অনুঘটকের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে তার কার্যকারিতা নষ্ট করে। সেই জন্য অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত NH₃ ও বায়ুর মিশ্রণটি বিশুদ্ধ ও ধুলিকণা মুক্ত হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়া (NH₃) এবং বায়ুর মিশ্রণটি কেন বিশুদ্ধ ও ধুলিকণামুক্ত হতে হয়?
ধুলিকণা বা অন্যান্য কঠিন কণা অনুঘটকের (প্ল্যাটিনাম-রোডিয়াম জালি) পৃষ্ঠতল আবৃত করে ফেলতে পারে। এটি বিক্রিয়ক অণুগুলোর (NH₃ ও O₂) অনুঘটক পৃষ্ঠের সংস্পর্শে আসা বাধাগ্রস্ত করে, ফলে অনুঘটকের কার্যকারিতা হ্রাস পায় এবং বিক্রিয়ার গতি কমে যায়।
অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে অনুঘটকের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার অর্থনৈতিক প্রভাব কী?
অনুঘটকের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার অর্থ হল একই পরিমাণ নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃) উৎপাদনের জন্য আরও বেশি অ্যামোনিয়া, বেশি সময় এবং বেশি শক্তির প্রয়োজন হবে। যেহেতু প্ল্যাটিনাম একটি অত্যন্ত মূল্যবান ধাতু, তাই অনুঘটকের ক্ষতি বা ঘনঘন প্রতিস্থাপন উৎপাদন ব্যয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করে।
অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়া NH₃ ও বায়ুর মিশ্রণে ধুলিকণা থাকলে কী সমস্যা হয়?
ধুলিকণা অনুঘটকের (প্ল্যাটিনাম-রোডিয়াম জালি) পৃষ্ঠে জমে একটি স্তর তৈরি করে, যা বিক্রিয়ক অণুগুলোর সংস্পর্শে আসা বাধাগ্রস্ত করে। ফলে অনুঘটকের কার্যক্ষমতা ও বিক্রিয়ার গতি কমে যায়।
অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃) তৈরির মূল বিক্রিয়াটি কী?
মূল বিক্রিয়াটি হলো অ্যামোনিয়া (NH₃) এর অনুঘটকী জারণ। প্রথমে অ্যামোনিয়া বায়ুর অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে নাইট্রিক অক্সাইড (NO) তৈরি করে।
4NH₃(g) + 5O₂(g) → 4NO(g) + 6H₂O(g)
তারপর এই NO আরও অক্সিজেন ও পানি দ্বারা জারিত ও প্রোটনযুক্ত হয়ে নাইট্রিক অ্যাসিডে পরিণত হয়।
অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়া জারণের বিক্রিয়াটি কী?
অসওয়াল্ড পদ্ধতির মূল বিক্রিয়াটি হল –
4NH₃(g) + 5O₂(g) → 4NO(g) + 6H₂O(g)
এই নাইট্রিক অক্সাইড (NO) গ্যাসকেই পরে আরও জারণ ও জল-যোজন করে নাইট্রিক অ্যাসিডে (HNO₃) রূপান্তরিত করা হয়।
অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে ধুলিকণা ও অশুদ্ধি দূর করতে সাধারণত কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়?
সাধারণত নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করা হয় –
1. ধুলিকণা অপসারণ – বিক্রিয়ক মিশ্রণকে একটি পরে ফিল্টার বা সাইক্লোন সেপারেটরের মধ্য দিয়ে পরিচালিত করে ধুলিকণা আলাদা করা হয়।
2. বিষাক্ত গ্যাস অপসারণ – বায়ু বা অ্যামোনিয়া গ্যাস থেকে আর্সেনিক অক্সাইড বা সালফার ডাই-অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর গ্যাসগুলোকে রাসায়নিক স্ক্রাবার বা অন্যান্য শোধন পদ্ধতির মাধ্যমে দূর করা হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত NH₃ ও বায়ুর মিশ্রণটি বিশুদ্ধ ও ধুলিকণা মুক্ত হওয়া প্রয়োজন কেন?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন