খনিজ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “খনিজ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

খনিজ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

খনিজ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

খনিজ (Mineral) – প্রকৃতিতে কোনো মৌল যৌগ আকারে অবস্থান করলে ওই যৌগকে মৌলটির খনিজ বলে। প্রকৃতিতে ধাতু, যৌগিক পদার্থ, পাথর বা শিলারূপে কঠিন অবস্থায় কখনও বা ভূপৃষ্ঠে আবার কখনও বা ভূগর্ভে অবস্থান করে। যেমন – বক্সাইট (Al2O3, 2H2O), ফেল্ডস্পার (KAlSi3O8) প্রভৃতি হল অ্যালুমিনিয়ামের খনিজ, জিংক ব্লেন্ড (ZnS), জিংকাইট (ZnO) ইত্যাদি জিংকের খনিজ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

খনিজ কী?

খনিজ হল প্রকৃতিতে প্রাপ্ত নির্দিষ্ট রাসায়নিক গঠন ও সুনির্দিষ্ট ভৌত ধর্মবিশিষ্ট অজৈব পদার্থ। এগুলি সাধারণত কঠিন অবস্থায় ভূত্বকের বিভিন্ন শিলায় স্ফটিকাকৃতি বা অনিয়মিত আকারে পাওয়া যায়। যেমন: ক্যালসাইট, কোয়ার্টজ, হেমাটাইট ইত্যাদি।

একটি পদার্থকে খনিজ বলা যায় তার জন্য কী কী শর্ত পূরণ করতে হয়?

কোনো পদার্থকে খনিজ বলা যায় নিম্নলিখিত পাঁচটি প্রধান শর্ত পূরণ করলে:
1. প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট – এটি প্রকৃতিতে নিজে থেকেই তৈরি হতে হবে, মানুষের তৈরি নয়।
2. অজৈব – এটি প্রাণী বা উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন হওয়া যাবে না (কয়লা বা পেট্রোলিয়াম খনিজ নয়)।
3. কঠিন অবস্থা – এটি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কঠিন হতে হবে (জল বা পারদ খনিজ নয়)।
4. সুনির্দিষ্ট রাসায়নিক গঠন – এর একটি নির্দিষ্ট রাসায়নিক সংকেত থাকবে (যেমন – হ্যালাইট NaCl)।
5. সুনির্দিষ্ট স্ফটিক গঠন – এর পরমাণুগুলো একটি নির্দিষ্ট ও ক্রমবিন্যস্ত কাঠামোতে সজ্জিত থাকে।

আকরিক এবং খনিজের মধ্যে পার্থক্য কী?

আকরিক এবং খনিজের মধ্যে পার্থক্যটি নিম্নরূপ –
1. খনিজ – যেকোনো প্রাকৃতিক, অজৈব, স্ফটিকাকার কঠিন পদার্থ। সব খনিজই আকরিক নয়।
2. আকরিক – সেইসব বিশেষ খনিজ বা শিলা যেগুলো থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনকভাবে ধাতু বা অন্যান্য মূল্যবান পদার্থ নিষ্কাশন করা যায়। যেমন: বক্সাইট হলো অ্যালুমিনিয়ামের একটি আকরিক, কারণ এটি থেকে অ্যালুমিনিয়াম ধাতু নিষ্কাশন করা হয়।

কিছু সাধারণ খনিজের উদাহরণ দিন।

কিছু অতি পরিচিত খনিজের উদাহরণ হল –
1. কোয়ার্টজ (SiO₂) – বালি, গ্রানাইট শিলায় প্রচুর পরিমাণে থাকে।
2. ফেল্ডস্পার (যেমন: KAlSi₃O₈) – পৃথিবীর ভূত্বকের সবচেয়ে সাধারণ খনিজ।
3. ক্যালসাইট (CaCO₃) – চক পাথর ও মার্বেল পাথরের প্রধান উপাদান।
4. হ্যালাইট (NaCl) – সাদা রংয়ের লবণ বা রক সল্ট।
5. হেমাটাইট (Fe₂O₃) – লোহার একটি প্রধান আকরিক।
6. পাইরাইট (FeS₂) – ‘ফুল’স গোল্ড’ বা বোকাদের সোনা নামে পরিচিত।

খনিজ শনাক্ত করার জন্য কোন কোন ভৌত ধর্মগুলো দেখা হয়?

খনিজ শনাক্তকরণে নিম্নলিখিত ভৌত ধর্মগুলো ব্যবহার করা হয় –
1. রং – খনিজটির বাহ্যিক রং।
2. ডোরার রং – খনিজটিকে পোরসেলিন প্লেটে ঘষলে যে রং পাওয়া যায়।
3. কাঠিন্য – অন্য কোনো পদার্থ দ্বারা খনিজটিকে আঁচড় দেওয়ার ক্ষমতা (মোহস স্কেল ব্যবহার করে)।
4. বিদারণ – খনিজটি আঘাত করলে নির্দিষ্ট দিকে ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা।
5. চকচকে ভাব – খনিজটি কীভাবে আলো প্রতিফলিত করে (ধাতব, কাচের মতো, রেশমি ইত্যাদি)।
6. আপেক্ষিক গুরুত্ব – খনিজটির ভর ও আয়তনের অনুপাত।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “খনিজ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণস্থল উল্লেখ করে এর প্রধান কাজগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

ইনসুলিন হরমোনের প্রধান কাজগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ কাকে বলে? উদাহরণসহ হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

প্রাণীদেহের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণে হরমোনের ভূমিকা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

প্রাণী হরমোনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।