এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “জারণ ও বিজারণের উদাহরণসহ ইলেকট্রনীয় সংজ্ঞা দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

জারণ ও বিজারণের উদাহরণসহ ইলেকট্রনীয় সংজ্ঞা দাও।
জারণ – যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো পরমাণু বা আয়ন এক বা একাধিক ইলেকট্রন বর্জন করে তাকে জারণ বলে। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরমাণু বা আয়নের ইলেকট্রন সংখ্যা কমে গেলে বলা হয় যে পরমাণুটি বা আয়নটি জারিত হয়েছে।
উদাহরণ – Na – e⁻ → Na⁺; K – e⁻ → K⁺; Ca – 2e⁻ → Ca²⁺; Al – 3e⁻ → Al³⁺
বিজারণ – যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো পরমাণু বা আয়ন এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাকে বিজারণ বলে। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো পরমাণু বা আয়নের ইলেকট্রন সংখ্যা বাড়লে বলা হয় যে, পরমাণু বা আয়নটি বিজারিত হয়েছে।
উদাহরণ – Cl + e⁻ → Cl⁻; Br + e⁻ → Br⁻; S + 2e⁻ → S²⁻
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
জারণ ও বিজারণ একসাথে কেন ঘটে?
জারণ ও বিজারণ বিক্রিয়া সর্বদা একসাথে সংঘটিত হয়। একটি বস্তু জারিত হলে অপর একটি বস্তু বিজারিত হয়। কারণ, একটির ত্যাগ করা ইলেকট্রন অন্যটি গ্রহণ করে। একে রেডক্স বিক্রিয়া বলে।
জারণ-বিজারণের উদাহরণ দাও যেখানে ইলেকট্রন স্থানান্তর দেখা যায়।
দস্তা (Zn) ও কপার সালফেট (CuSO₄) এর বিক্রিয়া।
1. জারণ – Zn → Zn²⁺ + 2e⁻ (দস্তা জারিত হয়েছে)
2. বিজারণ – Cu²⁺ + 2e⁻ → Cu (কপার আয়ন বিজারিত হয়েছে)
3. সম্পূর্ণ বিক্রিয়া – Zn + CuSO₄ → ZnSO₄ + Cu
জারণ সংখ্যা কী? এর গুরুত্ব কী?
জারণ সংখ্যা হলো কোনো পরমাণুতে বিদ্যমান আধানের পরিমাণ, যা নির্দেশ করে যে পরমাণুটি কতগুলো ইলেকট্রন গ্রহণ, ত্যাগ বা ভাগ করেছে। রেডক্স বিক্রিয়ায় কোনটি জারিত ও কোনটি বিজারিত হচ্ছে তা বুঝতে জারণ সংখ্যা ব্যবহৃত হয়।
জারণ-বিজারণের অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন ভিত্তিক সংজ্ঞা কী?
জারণ – কোনো বস্তুর সাথে অক্সিজেনের যুক্ত হওয়া বা হাইড্রোজেনের অপসরণ।
বিজারণ – কোনো বস্তু থেকে অক্সিজেনের অপসরণ বা হাইড্রোজেনের যুক্ত হওয়া।
দৈনন্দিন জীবনে জারণ-বিজারণের তিনটি উদাহরণ দাও।
দৈনন্দিন জীবনে জারণ-বিজারণের তিনটি উদাহরণ –
1. লোহার মরিচা পড়া – লোহা (Fe) জারিত হয়ে Fe₂O₃ গঠন করে।
2. খাদ্য দ্রব্য পচন – খাদ্যে উপস্থিত জৈব পদার্থের জারণ।
3. ব্যাটারিতে রাসায়নিক বিক্রিয়া – শুষ্ক কোষ বা লেড-অ্যাসিড ব্যাটারিতে রেডক্স বিক্রিয়া ঘটে।
জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়া শনাক্ত করার উপায় কী?
জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়া শনাক্ত করার উপায় –
1. ইলেকট্রন স্থানান্তর পর্যবেক্ষণ।
2. জারণ সংখ্যার পরিবর্তন বিশ্লেষণ।
3. বিক্রিয়ায় অক্সিজেন যুক্ত হওয়া বা হাইড্রোজেন অপসৃত হওয়া।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “জারণ ও বিজারণের উদাহরণসহ ইলেকট্রনীয় সংজ্ঞা দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন