এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “জারণ-বিজারণের ইলেকট্রনীয় তত্ত্ব অনুসারে দেখাও যে নীচের বিক্রিয়ায় জারণ-বিজারণ একই সঙ্গে ঘটে। 2Fe³⁺ + Sn²⁺ → 2Fe²⁺ + Sn⁴⁺” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

জারণ-বিজারণের ইলেকট্রনীয় তত্ত্ব অনুসারে দেখাও যে নীচের বিক্রিয়ায় জারণ-বিজারণ একই সঙ্গে ঘটে। 2Fe³⁺ + Sn²⁺ → 2Fe²⁺ + Sn⁴⁺
কোনো পরমাণু বা মূলক রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে জারিত হলে বিক্রিয়া মাধ্যমে উপস্থিত অন্য কোনো পরমাণু বা মূলক সেই বর্জিত ইলেকট্রন গ্রহণ করে বিজারিত হয়। সুতরাং জারণ বিজারণ একই সঙ্গে ঘটে।

এক্ষেত্রে, Sn²⁺ আয়ন দুটি ইলেকট্রন বর্জন করে Sn⁴⁺ আয়নে জারিত হয়। অর্থাৎ এটি জারণ বিক্রিয়া।
Sn²⁺ → Sn⁴⁺ + 2e
অন্যদিকে প্রতিটি Fe³⁺ আয়ন একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে Fe²⁺ আয়নে বিজারিত হয়। অর্থাৎ এটি বিজারণ বিক্রিয়া।
Fe³⁺ + e → Fe²⁺
প্রদত্ত বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে দেখা গেল জারণ-বিজারণ একই সঙ্গে ঘটে। প্রদত্ত বিক্রিয়াটিতে Fe³⁺ জারক এবং Sn²⁺ বিজারক পদার্থ।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
জারণ-বিজারণের ইলেকট্রনীয় তত্ত্ব কী?
এই তত্ত্ব অনুসারে, যে সকল রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এক বা একাধিক পরমাণু বা আয়ন থেকে ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়, সেগুলোই জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া।
1. জারণ – কোনো মৌল বা যৌগমূলক কর্তৃক এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করা।
2. বিজারণ – কোনো মৌল বা যৌগমূলক কর্তৃক এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করা।
কেন বলা হয় যে জারণ ও বিজারণ বিক্রিয়া কখনোই আলাদাভাবে ঘটে না?
ইলেকট্রনীয় তত্ত্ব অনুযায়ী, একটি পরমাণু বা আয়ন যদি ইলেকট্রন ত্যাগ করে (জারিত হয়), তাহলে অবশ্যই সেই মুক্ত ইলেকট্রনগুলোকে অন্য একটি পরমাণু বা আয়ন গ্রহণ (বিজারিত) করতে হবে। ইলেকট্রন কখনো মুক্ত অবস্থায় থাকতে পারে না। তাই একটি জারণ বিক্রিয়া ঘটার জন্য একটি বিজারণ বিক্রিয়ার অস্তিত্ব আবশ্যক এবং এর বিপরীতটিও সত্য। এটিই জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার সহ-অবস্থান।
জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া শনাক্ত করার সবচেয়ে সহজ উপায় কী?
বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের পরমাণুগুলোর জারণ সংখ্যা নির্ণয় করো। যদি কোনো পরমাণুর জারণ সংখ্যার পরিবর্তন (বৃদ্ধি বা হ্রাস) হয়, তাহলে সেটি একটি জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া। জারণ সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে জারণ এবং হ্রাস পেলে বিজারণ ঘটেছে বুঝতে হবে।
ইলেকট্রন স্থানান্তর ছাড়া কি জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া সম্ভব?
ইলেকট্রনীয় তত্ত্বের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ইলেকট্রন স্থানান্তর না হলে তাকে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া বলা যায় না। তবে জারণ সংখ্যা পরিবর্তনের ভিত্তিতে সংজ্ঞা দিলে কিছু বিক্রিয়া (যেমন – H₂ + Cl₂ → 2HCl যেখানে সমযোজী বন্ধন গঠিত হয়) জারণ-বিজারণ হিসেবে বিবেচিত হয়, যদিও সেখানে প্রকৃত ইলেকট্রন স্থানান্তর না হয়ে ইলেকট্রন জোড় সরণ ঘটে।
ইলেকট্রনীয় তত্ত্ব অনুযায়ী বিজারণ কী?
কোনো মৌল বা আয়ন এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করলে তাকে বিজারণ বলে।
উদাহরণ – Fe3+ + e− → Fe2+
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “জারণ-বিজারণের ইলেকট্রনীয় তত্ত্ব অনুসারে দেখাও যে নীচের বিক্রিয়ায় জারণ-বিজারণ একই সঙ্গে ঘটে। 2Fe³⁺ + Sn²⁺ → 2Fe²⁺ + Sn⁴⁺” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন