এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো। অথবা, অ্যালকেন ও অ্যালকাইনের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
অথবা, অ্যালকেন ও অ্যালকাইনের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন -এর মধ্যে পার্থক্য –
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন | অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন |
এক্ষেত্রে কার্বন পরমাণুগুলি পরস্পরের সঙ্গে সমযোজী এক বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে। | এক্ষেত্রে কমপক্ষে দুটি কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে সমযোজী দ্বিবন্ধন বা ত্রিবন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে। |
CCl4 বা | CCl4 বা |
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনে ক্ষারীয় | অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনে ক্ষারীয় |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলতে কী বোঝায়?
যে সকল হাইড্রোকার্বনে কার্বন পরমাণুগুলি শুধুমাত্র একক বন্ধন (C-C) দ্বারা পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে, তাদের সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলে। যেমন – অ্যালকেন শ্রেণির যৌগ (মিথেন, ইথেন)। এদের কার্বন পরমাণুর সকল সংযোজনশীলতা সম্পূর্ণরূপে ‘স্যাচুরেটেড’ বা পূর্ণ থাকে।
অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এদের অণুতে কমপক্ষে একটি দ্বি-বন্ধন (C=C) বা ত্রি-বন্ধন (C≡C) থাকে। এই বন্ধনগুলি থাকার কারণে তারা সহজেই সংযোজন বিক্রিয়া (যেমন – ব্রোমিন বা হাইড্রোজেন সংযোজন) ঘটাতে পারে।
ব্রোমিন জল বা দ্রবণের সাথে বিক্রিয়া দেখিয়ে কীভাবে সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন চেনা যায়?
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন – লাল-বাদামি রঙের ব্রোমিন জলের (বা CCl₄ -এ দ্রবীভূত ব্রোমিন) সাথে বিক্রিয়া করে না। তাই দ্রবণের রং অপরিবর্তিত থাকে।
অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন – লাল-বাদামি রঙের ব্রোমিন জলের সাথে দ্রুত বিক্রিয়া করে একটি বর্ণহীন সংযোজন যৌগ তৈরি করে। ফলে ব্রোমিন জলের লাল রং বিলীন হয়ে যায়।
বেইয়ার পরীক্ষা কী? এটি কোন ধরনের যৌগ শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়?
বেইয়ার পরীক্ষা হল একটি রাসায়নিক পরীক্ষা যেখানে ক্ষারীয় পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট (KMnO₄) এর গোলাপি দ্রবণ ব্যবহার করা হয়। এই পরীক্ষা অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন (অ্যালকিন ও অ্যালকাইন) শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন এই দ্রবণের সাথে বিক্রিয়া করে গোলাপি রং বিলীন করে দেয়, যেখানে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের ক্ষেত্রে রঙের কোনো পরিবর্তন হয় না।
অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন দিয়ে কেন সংযোজন বিক্রিয়া ঘটে?
অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধনে পাই (π) বন্ধন থাকে যা তুলনামূলকভাবে দুর্বল ও অস্থিতিশীল। এই পাই বন্ধন ভেঙে সহজেই অন্য পরমাণু বা পরমাণুগ্রুপ (যেমন – Br₂, H₂, H₂O) যুক্ত হয়ে স্থিতিশীল সংযোজন যৌগ তৈরি করতে পারে।
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের একটি ব্যবহারিক উদাহরণ দাও।
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন (অ্যালকেন) জ্বালানি ও শক্তির প্রধান উৎস। যেমন – রান্নার গ্যাস LPG (প্রোপেন, বিউটেন), পেট্রোল, কেরোসিন, প্রাকৃতিক গ্যাস (মূলত মিথেন) ইত্যাদি।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো। অথবা, অ্যালকেন ও অ্যালকাইনের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন