অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ঘুরে দাঁড়াও – প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

কবির মানসভূমিতে প্রবাহিত আবহমানাই তৈরি করেছে প্রতিবাদের এক ঝড়। জীবনের অসহায় একাকিত্ব থেকে তিনি দেখেছেন বাস্তবতার নির্মম চিত্র। টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে জীবনের এক সত্যকে উন্মোচিত করেছেন তিনি। বিপন্ন মানুষকে একসময় ঘুরে দাঁড়াতে হয়, না হলে হারিয়ে যেতে হয় একদিন। এই সত্যই প্রকাশের জন্য কবিতাটির অবতারণা।

জীবনের সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখলে, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে বদলে না নিলে, সবকিছুর সাথে একাত্ম না হলে নিজের কোন মর্যাদা থাকে না। একসময় হারিয়ে যেতে হয়। তাই ঘুরে দাঁড়িয়ে সমকালের সবকিছুর মুখোমুখি হওয়াই নিজের উপস্থিতি প্রকাশের প্রকৃত পন্থা। এ কারণেই কবি বারবার কবিতার মুখে ঘুরে দাঁড়ানোর অর্থাৎ প্রতিবাদী সত্তার জাগরণের কথা বলেছেন।

কবিতাটিতে, কবি প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। জীবনের টানাপোড়েনে জর্জরিত মানুষের অসহায়ত্ব তিনি দেখেছেন। কিন্তু কবি শুধুই হতাশার কথা বলেননি, বরং তিনি প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন। কবি বলছেন, নিজেকে সরিয়ে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই, বরং ঘুরে দাঁড়িয়ে তুক করে বাইরের জগৎকে বদলে ফেলা দরকার। সময়ের সাথে সাথে নিজেকেও বদলে ফেলতে হবে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ঘুরে দাঁড়াও

ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের কবি পরিচিতি

প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের জন্ম ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই কলকাতা শহরে। বাবা নির্মলেন্দু দাশগুপ্ত ও মা নীলিমা দাশগুপ্ত। তাঁর প্রথম কবিতাটি ছাপা হয় সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের পত্রিকায়। তখন তিনি প্রথম বর্ষের ছাত্র। পরবর্তীকালে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যবিভাগে এমএ পাস করেন ও পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হন। দক্ষিণ আমেরিকার ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তিনি তুলনামূলক সাহিত্যেই আবার এমএ করেন। তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে ‘এক ঋতু’ প্রথম কাব্যগ্রন্থরূপে প্রকাশ পায় (চৈত্র ১৩৬৩)। এরপর যথাক্রমে ‘সদর স্ট্রিটের বারান্দা’, ‘নিজস্ব ঘুড়ির প্রতি’, ‘মানুষের প্রতি’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থ। ‘অলিন্দ’ নামে একটি কবিতা-পত্রিকার তিনি সম্পাদক ছিলেন। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।

ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

আবহমানের স্রোতেই কবির মানসভূমিতে এক প্রতিবাদ তৈরি হয়েছে। জীবনকে দেখেছেন অসহায় একাকিত্বের অবস্থান থেকে। টানাপোড়েনের মধ্যে জীবনের এক বাস্তবকে উন্মোচিত করেছেন তিনি। বিপন্ন মানুষকে একসময় ঘুরে দাঁড়াতে হয়, না হলে হারিয়ে যেতে হয় একদিন। এই সত্যই প্রকাশের জন্য কবিতাটির অবতারণা।

ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

জীবনে সব বিষয়ে নিজেকে সরিয়ে রাখলে, সময়ের সঙ্গে নিজেকে বদলে না নিলে, সব কিছুর সঙ্গে একাত্ম না হলে নিজের কোনো মর্যাদা থাকে না। একসময় হারিয়ে যেতে হয়। তাই ঘুরে দাঁড়িয়ে সমকালের সব কিছুর মুখোমুখি হওয়াই নিজের উপস্থিতি প্রকাশের প্রকৃত পন্থা। এ কারণেই কবি বারবার কবিতার মুখে ঘুরে দাঁড়ানোর অর্থাৎ প্রতিবাদী সত্তার জাগরণের কথা বলেছেন।

ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের নামকরণ

নামকরণ সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নামকরণের মধ্য দিয়ে পাঠক বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনের মতো সাহিত্য-বিষয়টি পাঠ করার আগেই সাহিত্য-বিষয়টি সম্পর্কে খানিক ধারণা লাভ করতে পারেন। সাহিত্যে নামকরণ নানা উপায়ে হতে পারে। যথা – চরিত্রকেন্দ্রিক, বিষয়কেন্দ্রিক, ব্যঞ্জনাধর্মী ইত্যাদি।

এই কবিতায় কবি জীবনে চলার পথে সব কিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে না রেখে নিজেকে সময়োপযোগী করে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। ‘ঘুরে দাঁড়াও’ শব্দ দুটি দুবার ব্যবহারও করেছেন কবিতায়। অর্থাৎ কবিতার মধ্যে কবি মানুষকে প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠতে বলেছেন। তাই বলা যায় কবিতাটির নামকরণ বিষয়কেন্দ্রিক এবং সার্থক।

ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা

ঘুরে দাঁড়াও – প্রতিবাদ করো। তুক – বশীকরণের জন্য তন্ত্রমন্ত্র; জাদু। পালটে – বদলে। বনান্তর – অন্য বন। ছায়াপথ – আকাশগঙ্গা; শুভ্রমেঘের মতো বহুদূরের নক্ষত্রপুঞ্জ। উপান্ত – উপকণ্ঠ; কাছ; নিকট। শহরতলি – শহরের পার্শ্ববর্তী বা নিকটস্থ স্থান। বিন্দু – ফোঁটা বা ফুটকি।

আবহমানার তীব্র স্রোতে কবির মননে এক প্রবল প্রতিবাদ জেগে উঠেছে। জীবনের বাস্তবতাকে তিনি অসহায় একাকীত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। টানাপোড়েনের মাঝে জীবনের এক নির্মম সত্য উন্মোচিত করেছেন কবি। বিপন্ন মানুষকে একদিন ঘুরে দাঁড়াতেই হবে, নইলে একদিন হারিয়ে যেতে হবে। এই সত্যকেই প্রকাশ করেছে এই কবিতা। জীবনের সকল দিক থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা, সময়ের সাথে সাথে নিজেকে না বদলে ফেলা, সকলের সাথে একাত্ম না হলে নিজের কোন মর্যাদা থাকে না। একদিন হারিয়ে যেতে হয়। তাই ঘুরে দাঁড়িয়ে সমকালের সবকিছুর মুখোমুখি হওয়াই নিজের উপস্থিতি প্রকাশের একমাত্র পথ। এ কারণেই কবি কবিতায় বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর, অর্থাৎ প্রতিবাদী সত্তার জাগরণের কথা বলেছেন।

Share via:

মন্তব্য করুন