অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।
আবহমানের তীব্র প্রবাহে কবির মনের ভেতরে এক প্রচণ্ড প্রতিবাদের জন্ম হয়েছে। জীবনের বাস্তবতাকে তিনি দেখেছেন অসহায় একাকিত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে। টানাপোড়েনের মাঝখানে জীবনের এক নির্মম সত্যকে তিনি উন্মোচন করেছেন। বিপন্ন মানুষকে একদিন ঘুরে দাঁড়াতে হবেই, নতুবা একদিন চিরতরে হারিয়ে যেতে হবে। এই সত্যই এই কবিতার মূল ভাব।
জীবনের সকল দিক থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখলে, সময়ের সাথে সাথে নিজেকে না বদলে, সকলের সাথে একাত্ম না হলে নিজের কোন মর্যাদা থাকে না। একসময় হারিয়ে যেতে হয়। তাই ঘুরে দাঁড়িয়ে সমকালের সবকিছুর মুখোমুখি হওয়াই নিজের অস্তিত্ব প্রকাশের একমাত্র উপায়। এ কারণেই কবি এই কবিতায় বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর, অর্থাৎ প্রতিবাদী সত্তার জাগরণের কথা বলেছেন।
ঘুরে দাঁড়াও – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত সম্পাদিত কবিতা-পত্রিকাটির নাম কী?
প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত সম্পাদিত কবিতা-পত্রিকাটির নাম ‘অলিন্দ’।
তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম – ‘এক ঋতু’ ও ‘সদর স্ট্রিটের বারান্দা’।
তুমি যদি বদলে দিতে না পারো – (নিশ্চিত তুমি ঘুরে দাঁড়াবে/দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরতে হবে/গাছগুলো নদীর জলে স্নান করে আসবে)।
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরতে হবে।
উপান্তের শহরতলি কী করে জেগে উঠবে? (সা-রে-গা-মা-পা করে/গান গাইতে গাইতে/সা-রা-রা-রা করে)।
সা-রা-রা-রা করে।
তুমি আর কোথায় _।
সরবে।
তুমি যদি _ দিতে না পারো।
বদলে।
তুমি _ মতো মিলিয়ে যাবে।
বিন্দুর।
কাদা-ভরতি রাস্তা কোথায় উঠে পড়বে?
কাদা-ভরতি রাস্তা উঠে পড়বে ছায়াপথের কাছাকাছি।
বদলে দিতে না পারলে কী হবে?
বদলে দিতে না পারলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরতে হবে।
সরতে সরতে শেষে কী হবে?
সরতে সরতে শেষে বিন্দুর মতো মিলিয়ে যেতে হবে।
ছায়াপথ কী?
মহাকাশে শুভ্র মেঘের আকারে অসংখ্য নক্ষত্রপুঞ্জ থাকে। একে ‘আকাশগঙ্গা’ও বলা হয়। ইংরেজিতে বলা হয় ‘মিল্কিওয়ে’।
কবি প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত কবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন? তিনি কোন্ বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন?
কবি প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
ঘুরে দাঁড়াও বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? কবিতায় কবি ‘ঘুরে দাঁড়াও’ শব্দটিকে কতবার ব্যবহার করেছেন?
ঘুরে দাঁড়াও বলতে কবি প্রচলিত অবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো অর্থাৎ প্রতিবাদ করার কথা বুঝিয়েছেন।
কবিতায় কবি ‘ঘুরে দাঁড়াও’ শব্দটিকে দুইবার ব্যবহার করেছেন।
ছোট্ট একটা তুক করে বাইরেটা পালটে দাও – ‘বাইরেটা’য় কী ধরনের বদল ঘটবে বলে কবি আশা করেন? সেই কাঙ্ক্ষিত বদল ঘটলে জীবন কীভাবে অন্যরকম হবে বলে কবি মনে করেন?
সাইকেল-রিকশোগুলো শিস দিয়ে চলে যাবে বনে-বনান্তরে, কাদা-ভরতি রাস্তা উঠে পড়বে ছায়াপথের কাছাকাছি, গাছগুলো নদীর জলে স্নান করে আসবে আর সা-রা-রা-রা করে জেগে উঠবে উপান্তের শহরতলি।
এই কাঙ্ক্ষিত বদল ঘটলে জীবন সুন্দর হবে তা না হলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরতে হবে।
এবার ঘুরে দাঁড়াও। — কবি এ কথা বলেছেন কেন?
প্রশ্নে প্রদত্ত অংশটি কবি প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের লেখা ‘ঘুরে দাঁড়াও’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি বা সমস্যা থেকে ক্রমাগত সরে যেতে থাকলে ক্ষণিক স্বস্তি পাওয়া গেলেও চিরন্তন মুক্তি পাওয়া যায় না। তাই কবি মানুষের ‘মেনে নেওয়া’ বা আপসকারী মনোভাবকে বদলে আত্মজাগৃতির আহ্বান জানিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে বলেছেন।
তুমি যদি বদলে দিতে না পারো – তাহলে কী হবে বলে কবি মনে করেছেন?
প্রশ্নে প্রদত্ত অংশটি নেওয়া হয়েছে কবি প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের লেখা ‘ঘুরে দাঁড়াও’ কবিতাটি থেকে। সংকটের থেকে সরে না গিয়ে মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়, নাহলে সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়; মুছে যায় মানবিক অস্তিত্ব। তাই পরিস্থিতি বা সংকটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো বা প্রতিবাদ করা নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য অত্যন্ত আবশ্যক।
এই কবিতায় কবি প্রকৃতির বিক্ষোভের মাধ্যমে মানবজীবনের বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন। অসহায় একাকিত্বের মধ্যে জীবনের টানাপোড়েনের মাধ্যমে কবি দেখিয়েছেন যে, বিপন্ন মানুষকে একদিন ঘুরে দাঁড়াতেই হবে, না হলে হারিয়ে যেতে হবে। কবিতার মূল বার্তা হল জীবনের সকল দিক থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখলে, সময়ের সাথে সাথে নিজেকে না বদলে, সবকিছুর সাথে একাত্ম না হলে নিজের কোন মর্যাদা থাকে না। একসময় হারিয়ে যেতে হয়। তাই ঘুরে দাঁড়িয়ে সমকালের সবকিছুর মুখোমুখি হওয়াই নিজের উপস্থিতি প্রকাশের প্রকৃত পন্থা। কবিতার মধ্যে বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর, প্রতিবাদী সত্তার জাগরণের কথা বলা হয়েছে।
এই কবিতা কেবল প্রকৃতির বর্ণনা নয়, বরং মানবজীবনের এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। কবির এই শক্তিশালী ভাবনা আমাদের সকলকে জীবনের প্রতি সচেতন করে তোলে এবং প্রতিবাদী চেতনার বীজ বপন করে।