অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – স্বাধীনতা – ল্যাংস্টন হিউজ

Gopi

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের স্বাধীনতা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে স্বাধীনতা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় স্বাধীনতা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই স্বাধীনতা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের দুই বিখ্যাত কবি, শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল গুহ, মার্কিন কবি ল্যাংস্টন হিউজের বিখ্যাত কবিতা “স্বাধীনতা” বাংলায় অনুবাদ করেছেন। এই অনুবাদকে অনেকেই মণিকাঞ্চন যোগের সাথে তুলনা করেন, কারণ একজন বিখ্যাত কবির কবিতা যখন অন্য ভাষায় অনুবাদ করেন সেই ভাষারই একজন খ্যাতিমান কবি, তখন তা সৃষ্টি করে অসাধারণ সৌন্দর্য।

“স্বাধীনতা” কবিতাটি মানুষের মনের মধ্যে স্থিত স্বাধীনতাবোধের তীব্র অনুভূতি প্রকাশ করে। কবি বর্ণনা করেন কিভাবে বৈরী শক্তি মানুষের স্বাধীনতা হরণ করে এবং স্বৈরশাসনের মাধ্যমে তাদের নতিস্বীকারে বাধ্য করে। এই অকারণ হীনতাবোধ মানুষের মধ্যে প্রতিস্পর্ধার জন্ম দেয়। ল্যাংস্টন হিউজের মূল কবিতায় এই স্বাধীনতাবোধের তীব্রতা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে, এবং কবিদ্বয় বাংলা অনুবাদে তার রূপ, রস, গন্ধ ও স্পর্শ অক্ষুণ্ণ রেখেছেন।

এটি একটি আক্ষরিক অনুবাদ নয়, বরং ভাবানুবাদ। কবিদ্বয় বাংলা ভাষার সাথে মানানসই করে তোলার জন্য ভাবানুবাদকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। অনুবাদের চমৎকারিত্ব অতুলনীয়। মানুষের স্বাধীনতাবোধ, স্বাধীনতা লাভের জন্য মানসিক টানাপোড়েন এবং প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির বেদনা এত নিখুঁতভাবে ফুটে ওঠেছে যে মনে হয় কবিতাটি বাংলা ভাষাতেই রচিত হয়েছে। অনুবাদ কবিতা হিসেবে এর সার্থকতা অপরিসীম।

স্বাধীনতা শব্দটির অর্থ অত্যন্ত বিশাল, এটি অনুভূত হয় এবং প্রতিদিন এর প্রয়োজন হয়। স্বাধীনতার মাধ্যমে মানুষ কেবল নিজের অধীনে থাকে এবং নিজের ইচ্ছামত চলে। তাই স্বাধীনতা সকলের কাম্য। স্বাধীনতা অ্যাচিতভাবে পাওয়া যায় না, ভয় বা সমঝোতার মাধ্যমে স্বাধীনতা আসে না। তার জন্য লড়াই করতে হয়। লড়াই হলো বাঁচার মূলমন্ত্র। অন্য সকলের মতো আমাদের, সাধারণ মানুষেরও বাঁচার অধিকার আছে। দু-পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার, দু-কাঠা জমির মালিক হবার অধিকার আছে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – স্বাধীনতা

স্বাধীনতা অধ্যায়ের কবি পরিচিতি

ল্যাংস্টন হিউজ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে। তিনি একাধারে ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার এবং সমাজকর্মী। বিংশ শতকের কুড়ির দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্লেস রেনেসাঁর অন্যতম নেতা হিসেবে তাঁর সমধিক পরিচিতি। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম – ‘The Weavy Blues’। তাঁর রচিত অন্যান্য বই ‘Male Bone’, ‘Jerico-Jim Crow’ প্রভৃতি। কাব্যস্রষ্টা হিসেবে তিনি যথেষ্ট সার্থকতা লাভ করেন এবং বহু পুরস্কারে তিনি সম্মানিত হয়েছিলেন। কবির মৃত্যু ঘটে ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে।

স্বাধীনতা অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

স্বাধীনতা হল ‘স্ব’-এর অধীনতা, অর্থাৎ নিজের উপর নিজের অধিকার বা স্বাধিকার। স্বাধীনতায় মানুষ কেবল নিজের অধীন, স্ববশ, অনন্যপর। তাই স্বাধীনতা সকলেরই কাম্য। স্বাধীনতা হীনতায় কেউই বাঁচতে পারে না বা চায় না। স্বাধীনতা অনেক রকমে মানুষ অনুভব করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি করে যে স্বাধীন সত্তাগুলি মানুষ চায় সেগুলি হল – ব্যক্তিস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ইত্যাদি। তবে রাজনৈতিকভাবে যে স্বাধীনতাবোধ বর্তমান দুনিয়ায় মানুষের মনে প্রবল, তা হল আর্থিক স্বাধীনতা। অর্থগত স্বাধীনতা যে ব্যক্তিজীবনে কতটা জরুরি তা প্রথম বিশ্বের দেশগুলির মানুষ সবচেয়ে গুরুত্ব সহকারে অনুভব করে। কবি ল্যাংস্টন হিউজ তাঁর বিমূর্ত ভাষাভঙ্গিতে মানুষের স্বাধীনতাবোধের চাওয়া পাওয়ার দ্বন্দ্বকে উপস্থাপিত করেছেন।

স্বাধীনতা অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

স্বাধীনতার পথ খুব সহজ নয়। হয়তো সে কোনোদিনই আসবে না। ভয় পেয়ে, সমঝোতার মধ্য দিয়ে তাকে আয়ত্ত করাও সহজ নয়। প্রত্যেকেরই তো অন্য সকলের মতো অধিকার আছে দু-পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার, নিজস্ব কিছুটা জমির মালিকানার। সময়ে সবই হবে, কাল আসবে একটা নতুন দিন – এই কথাগুলো শুনে শুনে কান যেন পচে গেল। মৃত্যুর পর প্রাপ্ত স্বাধীনতা মূল্যহীন। আগামীকাল যে রুটি পাওয়া সম্ভব তা দিয়ে আজ যেন বাঁচার কোনো সম্ভাবনাই নেই। স্বাধীনতা হল একটা শক্তিশালী বীজপ্রবাহ – বাঁচার জন্য, বড়ো প্রয়োজনকে সিদ্ধ করার জন্য। আমরা সবাই একটা বৃহত্তম স্থানে বাস করি, তাই প্রাপ্তিতে সকলেরই সমান প্রয়োজন। কবি ল্যাংস্টন হিউজ তাঁর ‘স্বাধীনতা’ কবিতায় এ কথাই বলেছেন।

স্বাধীনতা অধ্যায়ের নামকরণ

আমেরিকান কবি ল্যাংস্টন হিউজের লেখা একটি কবিতা ‘স্বাধীনতা’। বাংলায় এটিকে তরজমা করেছেন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল গুহ। কবিতাটিতে যে মূল সুরটি ধ্বনিত হয়েছে, তা মানবমনের গহন কোণে ধ্বনিত প্রথম ব্যক্তিগত ও পরত সমষ্টিগত মানুষের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির প্রবল এষণা। স্বাধীনতাবোধ মানবমনে সৃজিত এক প্রবল আলোড়ন সৃষ্টিকারী বোধ। যে বোধের আলোকে রাজনৈতিকভাবে পৃথিবী বারবার আলোড়িত হয়েছে।

কবি তাঁর উক্ত কবিতায় অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে, নির্ভীকভাবে তাঁর মননের আলোড়ন এবং স্বাধীনতাপ্রাপ্তির প্রবল বাসনাকে বিমূর্তভাবে প্রকাশ করেছেন। প্রথমে স্বাধীনতা না পাওয়ার কারণে তীব্র হতাশা এবং পরে স্বাধীনতাপ্রাপ্তিকে সুনিশ্চিত করতে, একটা একজেদি মনোভাবকে কবি তীক্ষ্ণভাবে কবিতার ছত্রে ছত্রে এনেছেন। স্বাধীনতার প্রসঙ্গটি নিদারুণভাবে লালিত ও পল্লবিত হতে দেখা যায় কবিতায়। স্বাধীনতাবোধের জয়গানই এ কবিতার মূল বিষয়। কবিতার শেষে কবির ঘোষণাটিও তাই এক্ষেত্রে স্মরণযোগ্য – ‘তাই/স্বাধীনতা আমার প্রয়োজন/তোমার যেমন।’ অতএব কবিতার বক্তব্য বিষয়ের নিরিখে ‘স্বাধীনতা’ নামকরণটি এখানে বক্তব্যপ্রধান নামকরণ হিসেবে চূড়ান্তভাবে সার্থক বলা যেতে পারে।

স্বাধীনতা অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা

স্বাধীনতা – অন্যের অধীন নয়, এমন অবস্থা; নিজের উপর নিজের অধিকার, মুক্তি বা স্বাতন্ত্র্য। সমঝোতা – বোঝাপড়া; আপোস; বিরোধের ব্যাপারে বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে মীমাংসাসূত্র বা চুক্তি। অধিকার – সত্ত্ব বা দাবি। দুকাঠা – জমির একধরনের মাপ, প্রায় ৭২০ বর্গফুট পরিমাণ জমি হল এক কাঠা; এক বিঘার কুড়ি ভাগের এক ভাগ হল কাঠা, তার দু-গুণ। মালিকানার – অধিকার বা সত্ত্বের। প্রয়োজন – দরকার। আগামীকাল – আসছে যে দিন। বীজপ্রবাহ – বীজের প্রবাহ বা সত্তার ঠিকানা।

ল্যাংস্টন হিউজের “স্বাধীনতা” কবিতাটি মানুষের স্বাধীনতার প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা ও আকুলতার প্রতীক। কবি স্বাধীনতাকে মানুষের জন্মগত অধিকার হিসেবে দেখেন এবং রাষ্ট্রীয় পরিবেশে লালিত এই বোধকে মানুষের অহংকার ও গর্বের বিষয় হিসেবে তুলে ধরেন।

কবিতার শুরুতে কবি স্বাধীনতা না আসার নিরাশাজনক মনোভাব প্রকাশ করলেও, শেষ পর্যন্ত তিনি আশাবাদী হয়ে ওঠেন। তিনি স্বাধীনতা লাভের জন্য মানুষকে সংগ্রাম করতে উৎসাহিত করেন এবং স্পষ্টভাবে বলেন যে, “আমাদেরও তো অন্য সকলের মতন/অধিকার রয়েছে,/দুপায়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকার,/দু কাঠা জমির মালিকানার।”

কবি ‘অল্পে সন্তুষ্ট’ মানুষদের নেতিবাচক ভাবনার সমালোচনা করেন এবং ‘কালে’ স্বাধীনতা লাভের প্রতি আস্থাশীল নন। তিনি ‘আজ’ই স্বাধীনতা লাভের জন্য লড়াই করার আহ্বান জানান। কারণ, তিনি মনে করেন, মৃত্যুর পরে প্রাপ্ত স্বাধীনতার কোন মূল্য নেই।

“স্বাধীনতা” কবিতাটি শুধু একটি সাহিত্যকর্ম নয়, বরং এটি মানুষের মুক্তির আন্দোলনের একটি জ্বলন্ত ঘোষণাপত্র। কবির শব্দে শব্দে ধ্বনিত হচ্ছে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রতজ্ঞা এবং স্বাধীনতার প্রতি অটুট বিশ্বাস। এই কবিতা আজও যথার্থ এবং সময়োপযোগী, এবং এটি সকল মানুষকে অনুপ্রাণিত করে তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করার জন্য।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer