ঘুমের মধ্যেই কোনির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। — কী কারণে ঘুমের মধ্যে কোনির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল লেখো।

“ঘুমের মধ্যেই কোনির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল।” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “ঘুমের মধ্যেই কোনির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল।” — কী কারণে ঘুমের মধ্যে কোনির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল লেখো। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।

আলোচ্য অংশটি মতি নন্দীর বিখ্যাত উপন্যাস “কোনি” থেকে নেওয়া হয়েছে। এই অংশে আমরা দেখতে পাই, দিনভর পরিশ্রম করে ক্লান্ত কোনি ঘুমিয়ে পড়েছে। তার বালিশ নেই, বরং দুটো হাত জড়ো করে মাথার নীচে রেখে ঘুমোচ্ছে। কোনির ঘুমের মধ্যে কথা বলার অভ্যাস ছিল। একদিন ঘুমের মধ্যে সে তার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশকে বলছে, “আমায় কুমির দেখাবে বলেছিলে।” ক্ষিতীশ কোনির কথা শুনে ফিসফিস করে বলেন, “দেখাব, তোকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাব।” এরপর আরও অনেক জায়গা দেখানোর কথা বলেন ক্ষিতীশ। ঘুমের আবেশে কোনি মনে করে যেন তার দাদার সঙ্গে কথা বলছে। তাই ঘুরতে যাবার কথা শুনে ঘুমের মধ্যেই কোনির মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল।

এই অংশটিতে আমরা কোনির দারিদ্র্য ও সংগ্রামের পাশাপাশি তার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার পরিচয় পাই। ঘুমের মধ্যে তার অবদমিত আবেগ প্রকাশ পায়। ক্ষিতীশের স্নেহ ও আশ্বাস কোনির মনে আশার আলো জ্বালায়।

ঘুমের মধ্যেই কোনির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। — কী কারণে ঘুমের মধ্যে কোনির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল লেখো।

“ঘুমের মধ্যেই কোনির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল।” — কী কারণে ঘুমের মধ্যে কোনির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল লেখো।

  • কথামুখ – আলোচ্য অংশটি মতি নন্দীর কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে।
  • ক্ষিতীশের আদর – একদিন ক্ষিতীশ তাড়াতাড়ি খাওয়া সেরে ঘরে এসে দেখলেন দিনভর পরিশ্রমে ক্লান্ত কোনি অকাতরে ঘুমোচ্ছে। বালিশ নেই। তার বদলে দুটো হাত জড়ো করে মাথার নীচে রাখা। ক্ষিতীশ বসলেন ওর পাশে। তারপর তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন। হঠাৎ ক্ষিতীশ শুনলেন, কোনি ঘুমের মধ্যে আপনমনে কী যেন বলছে। তিনি একটু ঝুঁকে পড়লেন শোনার জন্য, একটা পাতলা হাসির রেখা দেখলেন কোনির মুখে। ঘুমের মধ্যেই সে বলছে, আমায় কুমির দেখাবে বলেছিলে। এ কথা শুনে ক্ষিতীশ ফিসফিস করে বললেন, দেখাব, তোকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাব। এরপর আরও অনেক জায়গা দেখানোর কথাও বললেন ক্ষিতীশ। তারপর বললেন, তুই যাবি দিল্লি, মুম্বাই, মাদ্রাজ-আরো দূরে টোকিও, লন্ডন, বার্লিন, মস্কো, নিউইয়র্ক।
  • অবদমিত আবেগের বহিঃপ্রকাশ – ঘুমের আবেশ তখনও কাটেনি কোনির। ঘুমের মধ্যে সে মনে করে যেন তার দাদার সঙ্গে কথা বলছে। ক্ষিতীশের কথাগুলোকে সে দাদার কথাই মনে করেছে। তাই ঘুরতে যাবার কথা শুনে ঘুমের মধ্যেই কোনির মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। জেগে থাকা অবস্থায় যা সে বলতে পারে না, অবদমিত সেই আবেগ যেন তার ঘুমের মধ্যে প্রকাশ পায়।

উপসংহারে বলা যায়, আলোচ্য অংশটি মতি নন্দীর “কোনি” উপন্যাসের একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও আবেগঘন অংশ। এই অংশে আমরা কোনির দারিদ্র্য ও সংগ্রামের পাশাপাশি তার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার পরিচয় পাই। ঘুমের মধ্যে তার অবদমিত আবেগ প্রকাশ পায়। ক্ষিতীশের স্নেহ ও আশ্বাস কোনির মনে আশার আলো জ্বালায়।

এই অংশটি আমাদের জীবনের বাস্তবতা ও স্বপ্নের মধ্যকার সম্পর্ক সম্পর্কে ভাবতে বাধ্য করে। দারিদ্র্য ও সংগ্রামের মধ্যেও কোনির স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। ক্ষিতীশের চরিত্র আমাদের দেখায় যে, স্নেহ ও আশ্বাস কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

“কোনি” উপন্যাসের এই অংশটি আমাদের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে যায়।

Share via:

মন্তব্য করুন