মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় – প্রাণীদেহে সাড়াপ্রদানের একটি প্রকার হিসেবে গমন – উড্ডয়ন,অস্থিসন্ধি ও কঙ্কাল পেশি – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় একটি অপরিহার্য প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীব তার অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়। জীবের সকল কার্যকলাপ, যেমন বৃদ্ধি, বিকাশ, চলন, পুষ্টি, প্রজনন ইত্যাদি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।

Table of Contents

দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায়টি জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় নিয়ে আলোচনা করে। এই অধ্যায়ে আমরা নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের বিভিন্ন প্রকার, নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের জন্য দায়ী অঙ্গ ও তন্ত্র, উদ্ভিদ ও প্রাণীতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের উদাহরণ ইত্যাদি সম্পর্কে জানব।

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় 1

পাখির উড্ডয়নে সহায়ক বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।

পাখির উড্ডয়ন হলো পাখিদের চক্রান্ত সংক্রান্ত পদার্থিক প্রক্রিয়া, যা তাদের উড়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি পাখির বিশেষ সাধনায় এবং সম্প্রসারণের সামর্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পাখির উড্ডয়নে সহায়ক বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য

  1. পাখিরা খেচর প্রাণী। এরা দুই পায়ে হাঁটা-চলা করলেও এদের প্রধান গমন পদ্ধতি হল উড্ডয়ন
  2. উড্ডয়নের জন্য পাখির দেহ মাকু আকৃতির হয়। এইরূপ দেহাকৃতির জন্য এরা বাতাসের ধাক্কা এড়িয়ে সহজেই এগিয়ে যেতে পারে।
  3. পাখির অস্থিগুলি হালকা, বায়ুপূর্ণ হওয়ার ফলে পাখি সহজেই বাতাসে ভেসে থাকতে পারে।
  4. এদের ফুসফুসের লাগোয়া বায়ুথলিগুলি বায়ুপূর্ণ হয়ে দেহকে হালকা রাখতে সাহায্য করে। এদের উড্ডয়নের সময় অতিরিক্ত অক্সিজেন এবং শক্তির প্রয়োজন হয়। বায়ুথলিগুলি উড্ডয়নের সময় প্রয়োজনীয় এই অতিরিক্ত অক্সিজেন ও শক্তি সরবরাহ করে থাকে।
  5. পাখির অগ্রপদ ডানায় রূপান্তরিত হয়েছে। ডানা দুটি সামনের দিকে চওড়া এবং পেছনের দিকে ক্রমশ সরু হয়েছে। ডানার ওপরের তল উত্তল এবং নীচের তল অবতল। এরূপ গঠনের জন্য সহজেই বাতাসের বাধা অতিক্রম করতে পারে।
  6. পাখির সারা দেহ পালকে আবৃত। পাখির ডানায় 23টি রেমিজেস পালক এবং ল্যাজে 12টি রেন্ট্রিসেস পালক থাকে। এ ছাড়া পালকে বার্ব, বারিউল এবং হুক থাকেx, যা পালকের একটি তল সৃষ্টি করে থাকে। ডানার পালক উড়তে এবং ল্যাজের পালক দেহের ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে। এই পালকগুলি থাকায় পাখির দেহ খুবই হালকা হয়।
  7. ক্ৰমাগত ডানা সঞ্চালনের দরকার হওয়ায় পাখির উড্ডয়ন পেশি অত্যন্ত সুগঠিত এবং উন্নত। পেক্টোরালিস মেজর, পেক্টোরালিস মাইনর এবং কোরাকো ব্রাকিয়ালিস ইত্যাদি উড্ডয়ন পেশিগুলি খুব উন্নত এবং এরা বিভিন্নভাবে ডানার সঞ্চালনে সাহায্য করে উড্ডয়নে সহায়তা করে।

সচল বা সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বলতে কী বোঝায়? এর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

সচল বা সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি হলো জীবদের চলাচলের জন্য প্রযুক্তিগত বিয়োমেকানিক্স যা তাদের স্থিরতা ও সমন্বয়ে দায়িত্ব পালন করে। এটি পাশাপাশি বদ্ধশিরা, মাথার কণ্ঠ, শ্বাসপ্রণালী ইত্যাদি প্রভৃতির চলাচলের সম্প্রসারণের ক্ষমতা নিশ্চিত করে।

সচল বা সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বলতে কী বোঝায়

সচল বা সাইনোভিয়াল সন্ধি

যেসব অস্থিসন্ধিতে সংশ্লিষ্ট অস্থিগুলি সঞ্চালনশীল অর্থাৎ সহজে বিচলন ঘটে, সেই ধরনের অস্থিসন্ধিকে সচল অস্থিসন্ধি বলে। সাধারণত এই সন্ধিস্থলগুলি সাইনোভিয়াল তরল নামক একপ্রকার তরল দ্বারা পূর্ণ থাকে, তাই এদের সাইনোভিয়াল সন্ধিও বলা হয়।

সচল বা সাইনোভিয়াল সন্ধির বর্ণনা

  • এইজাতীয় সন্ধিতে সংশ্লিষ্ট অস্থি দুটির প্রান্ত একটি লিগামেন্ট নামক সরু দড়ির মতো অংশ দিয়ে যুক্ত থাকে।
  • এই অংশে সাইনোভিয়াল পর্দা (synovial membrane) নামে একটি পাতলা আবরণ থাকে।
  • এই পর্দার অভ্যন্তরে, অস্থির প্রান্ত দুটির মধ্যবর্তী অংশে একটি গহ্বর থাকে যাকে সাইনোভিয়াল গহবর (synovial cavity) বলে।
  • এই গহ্বর একপ্রকার তরল দ্বারা পূর্ণ থাকে, যাকে সাইনোভিয়াল তরল (synovial fluid) বলে।
  • সাইনোভিয়াল তরলের কাজগুলি হল
  1. সংশ্লিষ্ট অস্থির প্রান্তের ঘর্ষণজনিত ক্ষয় রোধ করা,
  2. সংশ্লিষ্ট কলাকোশে পুষ্টিদ্রব্য সরবরাহ করা,
  3. অস্থি দুটির বিচলনে বা নড়াচড়ায় সহায়তা করা।
  • এই সন্ধির প্রান্তে তরুণাস্থির আস্তরণ থাকে, যাকে আর্টিকিউলার তরুণাস্থি বলে।
  • সচল সন্ধি বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। গঠনের ওপর ভিত্তি করে প্রধানত চার প্রকার সচল সন্ধি দেখা যায় কবজা সন্ধি, বল ও সকেট সন্ধি, কৌণিক সন্ধি ও পিভট সন্ধি। 

কবজা বা হিঞ্চু বা কপাট অস্থিসন্ধির অবস্থান, গঠনগত বৈশিষ্ট্য, সঞ্চালন এবং উদাহরণসহ লেখো।

কবজা বা হিঞ্চু বা কপাট অস্থিসন্ধির অবস্থান, গঠনগত বৈশিষ্ট্য, সঞ্চালন এবং উদাহরণসহ নিম্নে আলোচনা করা হলো।

কবজা বা হিঞ্চু বা কপাট অস্থিসন্ধি

নিয়ে সচল অস্থিসন্ধিতে সংযুক্ত অস্থি দুটির প্রান্ত দরজার কবজার মতো সংলগ্ন থাকে, তাদের কবজা বা কপাট অস্থি- সন্ধি বা হিঞ্ঝ জয়েন্ট বলা হয়। বিচলনে সক্ষম হওয়ায় কবজা বা হিঞ্চু বা কপাট অস্থিসন্ধিকে সচল অস্থিসন্ধি বা সাইনোভিয়াল জয়েন্ট-ও বলা হয়ে থাকে। এখানে প্রশ্নানুযায়ী এই অস্থিসন্ধির অবস্থান, গঠনগত বৈশিষ্ট্য, সঞ্চালন এবং উদাহরণ সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

কবজা বা হিঞ্চু বা কপাট অস্থিসন্ধি
  • অবস্থান – এই ধরনের সন্ধি কনুইতে এবং হাঁটুতে দেখা যায়। কনুইতে হিউমেরাস ও রেডিয়াস-আলনা অস্থির মধ্যবর্ত অংশে এবং হাঁটুতে ফিমার ও টিবিয়া-ফিবিউলার মধ্যবর্তী অংশে এইজাতীয় অস্থিসন্ধি দেখা যায়।
  •  গঠনগত বৈশিষ্ট্য 1. এইপ্রকার সন্ধিতে দুটি অস্থির প্রান্ত অনেকটা দরজায় কবজার মতো বিন্যস্ত থাকে। এই কারণে একে কবজা সন্ধি বা হিঞ্জ জে বলা হয়। 2. এক্ষেত্রে অস্থি কেবলমাত্র একটি অক্ষেই 180°-তে বিচলন করতে সক্ষম হয়।
  • সঞ্চালন সংশ্লিষ্ট অস্থি দুটি লিগামেন্ট দ্বারা যুক্ত থাকে এবং কেবলমাত্র একটি তল বরাবর বিচলন হয়। অর্থাৎ ফ্লেক্সন এবং এক্সটেনশন দেখা যায়।
  • উদাহরণ হিউমেরাস ও রেডিও আলনার সংযোগস্থল হল কবজা বা হিং সন্ধির উদাহরণ।

বল ও সকেট অস্থিসন্ধির অবস্থান, গঠনগত বৈশিষ্ট্য, সঞ্চালন ও উদাহরণসহ লেখো।

বল ও সকেট অস্থিসন্ধি হলো প্রাণীদের মাংসস্থলীতে অস্থিসন্ধি বা সংযোগ বিন্দু যা মাংসস্থলীর কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি অঙ্গবিন্যাসে মাংসস্থলী সমন্বিত ও সংযোগিত রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বল ও সকেট অস্থিসন্ধি

যে সচল অস্থিসন্ধিতে একটি অস্থির গোলাকার মস্তক অপর অস্থির কাপের মতো সকেটের মধ্যে সংলগ্ন হয়, তাকে বল সকেট সন্ধি বলে। বিচলনের সক্ষম হওয়ায় বল ও সকেট অস্থিসন্ধিকে সচল অস্থিসন্ধি বা সাইনোভিয়াল জয়েন্ট-ও বলা হয়ে থাকে। এখানে প্রশ্নানুযায়ী এই অস্থিসন্ধির অবস্থান, গঠনগত বৈশিষ্ট্য, সঞ্চালন এবং উদাহরণ সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

বল ও সকেট অস্থিসন্ধি
  • অবস্থান এইজাতীয় সন্ধি মানুষের কাঁধে ও কোমরে দেখা যায়। কাঁধে হিউমেরাস ও স্ক্যাপুলার মধ্যবর্তী অংশে এবং কোমরে বা নিতম্বে ফিমার ও শ্রোণিচক্রের মধ্যবর্তী অংশে এইজাতীয় অস্থিসন্ধি উপস্থিত।
  • গঠনগত বৈশিষ্ট্য 1. এইজাতীয় অস্থিসন্ধিতে একটি অস্থির গোলাকার প্রান্ত অপর অস্থির খাঁজের মধ্যে অবস্থান করে। 2. এই ধরনের গঠন-বিন্যাসের ফলে এই সন্ধিতে অস্থিগুলির সব অক্ষেই বিচলন ঘটতে পারে।
  • সঞ্চালন এই অস্থিসন্ধিতে সংশ্লিষ্ট দীর্ঘ অস্থি এক্সটেশন, ফ্লেক্সন, অ্যাবডাকশন, অ্যাডাকশন, রোটেশন ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার বিচলনে সক্ষম।
  • উদাহরণ মানুষের শ্রোণিচক্রের অ্যাসিটাবুলাম গহ্বরের মধ্যে ফিমারের মস্তক অংশ প্রবিষ্ট থেকে এই ধরনের বল ও সকেট অস্থিসন্ধি গঠন করে। এক্ষেত্রে ফিমারের মস্তক বলের মতো এবং অ্যাসিটাবুলাম গহ্বর সকেটর ন্যায় আচরণ করে।

মানুষের কঙ্কাল পেশির ক্ষেত্রে উল্লিখিত পেশি-ক্রিয়াগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও – 1. ফ্লেক্সন 2. এক্সটেনশন 3. অ্যাবডাকশন 4. অ্যাডাকশন 5. রোটেশন।

কঙ্কাল পেশি-ক্রিয়া হলো মানুষের শরীরে অবস্থিত পেশিগুলির একটি প্রক্রিয়া, যা কঙ্কালের মাধ্যমে স্থিরতা, চলন এবং বিভিন্ন কার্যকলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শরীরের স্বাভাবিক চলন ও প্রাকৃতিক কার্যকলাপের সমন্বয়ে মহত্ত্বপূর্ণ কাজ করে।

মানুষের কয়েকটি কঙ্কাল পেশি-ক্রিয়া

পেশি-ক্রিয়ার নাম অংশগ্রহণকারী পেশির প্রকৃতিক্ৰিয়াউদাহরণ
1. ফ্লেক্সনফ্লেক্সরঅস্থিসংলগ্ন পেশিটি সংকুচিত হলে, পরপর অবস্থিত দুটি অস্থি ভাঁজ হয়ে পরস্পরের কাছাকাছি আসে।বাইসেপস্ পেশির সংকোচনে কনুই ভাঁজ হয়।
2. এক্সটেনশনএক্সটেনসরঅস্থিসংলগ্ন পেশিটি সংকুচিত হলে, পরপর অবস্থিত দুটি অস্থি পরস্পরের থেকে দূরে সরে যায়৷ট্রাইসেপস্ পেশির সংকোচনে ভাঁজ করা হাত সোজা হয়।
3. অ্যাবডাকশনঅ্যাবডাকটরএই অস্থি পেশির ক্রিয়ায় কোনো অঙ্গ দেহের মধ্যবর্তী অক্ষ থেকে দূরে সরে যায়। ডেলটয়েড পেশির সংকোচন হাতকে দেহাক্ষ থেকে দূরে সরে যেতে সাহায্য করে।
4. অ্যাডাকশনঅ্যাডাকটরএই অস্থি পেশির ক্রিয়ায় কোনো অঙ্গ দেহের মধ্যবর্তী অক্ষের কাছাকাছি আসে।ল্যাটিসিমাস ডরসি পেশির সংকোচন হাতকে দেহাক্ষের কাছে নিয়ে আসে।
5. রোটেশনরোটেটরপেশির ক্রিয়ায় কোনো অঙ্গ বা অস্থি অপর কোনো অঙ্গ বা অস্থির চারপাশে বৃত্তাকারে ঘুরতে পারে।স্টারনোক্লিডোম্যাসটয়েড পেশি ঘাড়ের ঘূর্ণনে সাহায্য করে।
মানুষের কঙ্কাল পেশির ক্ষেত্রে উল্লিখিত পেশি-ক্রিয়াগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও

অস্থিসন্ধি কাকে বলে? এর প্রকারভেদগুলি লেখো। অচল সন্ধির সঙ্গে সাইনোভিয়াল সন্ধির পার্থক্য লেখো।

অস্থিসন্ধি হলো দুটি অস্থির মধ্যে সংযোগ বিন্দু বা জোড়ক, যা অস্থির স্থিরতা, সমন্বয় এবং সহজ চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের নিরম্বণ, স্থিরতা এবং সমন্বয়ে মহত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অস্থিসন্ধি

কঙ্কালতন্ত্রের যেসব অংশে দুই বা তার বেশি সংখ্যক অস্থির প্রান্ত পরস্পর যুক্ত হয়, তাকে অস্থিসন্ধি বলা হয়।

অস্থিসন্ধির প্রকারভেদ

অস্থিসন্ধি-সমূহকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা — 1. অচল সন্ধি বা তন্তুময় সন্ধি, 2. স্বল্প সচল সন্ধি বা তরুণাস্থিময় সন্ধি, 3. সচল সন্ধি বা সাইনোভিয়াল সন্ধি।

অচল সন্ধি ও সাইনোভিয়াল সন্ধির পার্থক্য

বিষয়অচল সন্ধিসাইনোভিয়াল সন্ধি
1. সঞ্চালনের প্রকৃতিএই প্রকার সন্ধি অচল প্রকৃতির।এই প্রকার সন্ধি সচল প্রকৃতির।
2. তরুণাস্থির আস্তরণঅনুপস্থিত উপস্থিত (সন্ধিস্থানের ওপরে আর্টিকিউলার তরুণাস্থির আস্তরণ থাকে)।
3. সংযোজক বস্তুকোলাজেন তন্তুর দ্বারা দুটি অস্থি পরস্পর সংযুক্ত।লিগামেন্ট-এর মাধ্যমে অস্থি দুটি পরস্পর সংলগ্ন অবস্থায় থাকে।
4. প্রকোষ্ঠের উপস্থিতি অস্থিসন্ধিতে কোনো প্রকোষ্ঠ বা ফাঁকা স্থান থাকে না।অস্থিসন্ধিতে সাইনোভিয়াল প্রকোষ্ঠ উপস্থিত।

ফেক্সন ও এক্সটেশন-এর পার্থক্য লেখো। অ্যাবডাকশন ও অ্যাডাকশন-এর পার্থক্য উল্লেখ করো।

ফ্লেক্সন ও এক্সটেশন হলো শরীরের বিভিন্ন অংশের মধ্যে স্থিরতা এবং বিস্তার করার জন্য যৌগিক প্রক্রিয়া। এটি শরীরে স্থিরতা, চলন এবং কার্যকলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ফ্লেক্সন ও এক্সটেশন-এর পার্থক্য

বিষয়ফ্লেক্সনএক্সটেশন
1. বৈশিষ্ট্যএইপ্রকার পেশি-ক্রিয়ায় অস্থিসংলগ্ন পেশিটি সংকুচিত হলে পরপর অবস্থিত দুটি অস্থি ভাঁজ হয়ে পরস্পরের কাছে চলে আসে।এইপ্রকার পেশি-ক্রিয়ায় অস্থিসংলগ্ন পেশিটি সংকুচিত হলে, পরপর অবস্থিত দুটি অস্থি পরস্পরের থেকে দূরে সরে যায়।
2. অংশগ্রহণকারী পেশির প্রকৃতি এই পেশি-ক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পেশিকে ফ্লেক্সর পেশি বলে।এই পেশি-ক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পেশিকে এক্সটেনসর পেশি বলে।
3. উদাহরণবাইসেপস্ পেশির সংকোচনে কনুই ভাঁজ হয়।ট্রাইসেপস্ পেশির সংকোচনে ভাঁজ করা হাত সোজা হয়।

অ্যাবডাকশন ও অ্যাডাকশন-এর পার্থক্য

বিষয়অ্যাবডাকশনঅ্যাডাকশন
1. বৈশিষ্ট্যএই অস্থি পেশির ক্রিয়ায় কোনো অঙ্গ দেহের মধ্যবর্তী অক্ষ থেকে দূরে সরে যায়।এই অস্থি পেশির ক্রিয়ায় কোনো অঙ্গ দেহের মধ্যবর্তী অক্ষের কাছাকাছি আসে।
2. অংশগ্রহণকারী পেশির প্রকৃতিএই পেশি-ক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পেশিকে অ্যাবডাকটর পেশি বলে।এই পেশি-ক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পেশিকে অ্যাডাকটর পেশি বলে।
3. উদাহরণডেলটয়েড পেশির সংকোচন হাতকে দেহাক্ষ থেকে দূরে সরে যেতে সাহায্য করে।ল্যাটিসিমাস ডরসি পেশির সংকোচন হাতকে দেহাক্ষের কাছে নিয়ে আসে।

জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। প্রাণীদেহে সাড়াপ্রদানের একটি প্রকার হিসেবে গমন, উড্ডয়ন, অস্থিসন্ধি ও কঙ্কাল পেশি প্রাণীদের জীবনযাত্রার জন্য অপরিহার্য।

Share via:

মন্তব্য করুন