এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবহমানতা – কোশ বিভাজন এবং কোশচক্র – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

জীবন একটি জটিল ঘটনা যা প্রজনন, পরিবর্তন এবং অভিযোজনের মাধ্যমে ক্রমাগত চলমান। জীবনের প্রবাহমানতা অধ্যায়টি এই তিনটি ধারণার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই অধ্যায়ে, আমরা শিখব যে কীভাবে জীবিত জিনিসগুলি তাদের বংশধরদের কাছে তাদের বৈশিষ্ট্যগুলি স্থানান্তর করে, কীভাবে তারা পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয় এবং কীভাবে তারা পরিবর্তনের মাধ্যমে সময়ের সাথে সাথে বিবর্তিত হয়।

Table of Contents

জীবনের প্রবহমানতা – কোশ বিভাজন এবং কোশচক্র – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

কোশ বিভাজনে অংশগ্রহণকারী কোপীয় অঙ্গানুগুলির নাম ও তাদের ভূমিকা লেখো।

কোশীয় অঙ্গাণু হলো জীবাণু যা কোশের অংশ গঠন করে এবং জীবনপ্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কোশীয় অঙ্গাণুর নাম

কোশ বিভাজনে অংশগ্রহণকারী কোশীয় অঙ্গাণুগুলি হল নিউক্লিয়াস, সেন্ট্রোজোম, মাইক্রোটিউবিউল, রাইবোজোম ও মাইটোকনড্রিয়া।

কোশ অঙ্গাণুগুলির প্রধান ভূমিকা

  • নিউক্লিয়াস এটি ক্রোমোজোম ধারণ করে যার বিভাজনের দ্বারা বংশগতির বৈশিষ্ট্যগুলি জনিতৃকোশ থেকে অপত্য কোশে সঞ্চারিত হয়।
  • সেন্ট্রোজোম ও মাইক্রোটিউবিউল সেন্ট্রোজোম কোশ বিভাজনকালে কোশের দুই মেরুতে বিন্যস্ত হয় ও মাইক্রোটিউবিউলের সহায়তায়, বেমতত্ত্ব গঠনের মাধ্যমে বেম বা স্পিন্ডল গঠন করে। উদ্ভিদকোশে সেন্ট্রোজোম না থাকায় সাইটোপ্লাজমীয় মাইক্রোটিউবিউল বেমতন্তু গঠন করে এবং ক্রোমোজোমীয় চলনে সাহায্য করে।
  • রাইবোজোম রাইবোজোম কোশের প্রোটিন সংশ্লেষ করে। এই প্রোটিনগুলি ক্রোমোজোম, কোশীয় অঙ্গাণু ও সাইটোপ্লাজম গঠন করে এবং এইভাবে কোশ বিভাজনে সাহায্য করে।
  • মাইটোকনড্রিয়া মাইটোকনড্রিয়া কোশীয় শ্বসনের দ্বারা শক্তি উৎপাদন করে ও কোশ বিভাজনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে। এ ছাড়া মাইটোকনড্রিয়া কোশচক্রেরও নিয়ন্ত্রক বলে বর্তমানে প্রমাণিত হয়েছে।

মিয়োসিস I এবং মিয়োসিস II-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য মাইটোসিসের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

মিয়োসিস I হলো সেল বিভাজনার প্রথম ধাপ যা দৈবগত বা অনুদৈবগত কারণে ঘটে। মিয়োসিস II হলো সেল বিভাজনার দ্বিতীয় ধাপ যা জীবিত প্রাণীদের জন্য পশ্চাতে ঘটে এবং এটি জীবাণু অঙ্গাণু বিভাজনের মাধ্যমে জীবনপ্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মিয়োসিস I-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য

  • মিয়োসিস I- ক্রোমোজোমের পৃথককরণ – 1. মিয়োসিস I-এর প্রোফেজ I দশায় সমসংস্থ ক্রোমোেজামের অংশ বিনিময় বা ক্রসিং ওভার ঘটে। 2. এরপর মিয়োসিস I-এর মেটাফেজ I দশায় সমসংস্থ ক্রোমোজোমগুলি নিরক্ষীয়তলে সজ্জিত হয়। 3. এরপর অ্যানাফেজI দশায় সমসংস্থ ক্রোমোজোমগুলি অ্যানাফেজীয় চলন দ্বারা দুটি বিপরীত মেরুতে পৌঁছে যায়। অর্থাৎ, দুটি সমসংস্থ ক্রোমোজোমের পৃথককরণ ঘটে। উল্লেখ্য যে, মাইটোসিসে অ্যানাফেজ দশায় প্রতিটি ক্রোমোজোমের ক্রোমাটিড দুটির পৃথককরণ ঘটে থাকে।
  • ক্রোমোজোম সংখ্যার হ্রাস মিয়োসিস I-এ সমসংস্থ ক্রোমোজোমগুলি পৃথক হয়ে অপত্য কোশগুলিতে সমানভাবে বিন্যস্ত হয়। এর ফলে অপত্য কোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা কমে দেহকোশের অর্ধেক হয়ে যায়।
  • ক্রসিং ওভার মিয়োসিস I-এর প্রোফেজ দশায় যে পদ্ধতিতে সমসংস্থ ক্রোমোজোমের দুটি নন-সিস্টার ক্রোমাটিডের সমতুল্য অংশের বিনিময় ঘটে এবং নতুন জিনগত বিন্যাস সৃষ্টি হয়, তাকে ক্রসিং ওভার বলে। এই প্রক্রিয়াটির সময় ‘X’ -এর মতো গঠন বা কায়াজমা গঠিত হয়।
মিয়োসিস। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য

মিয়োসিস II-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য

  • মিয়োসিস II-এ ক্রোমোজোমের পৃথক্‌করণ মিয়োসিস II-এর সঙ্গে মাইটোসিসের খুব সাদৃশ্য আছে। তবে মিয়োসিস II-তে হ্যাপ্লয়েড সংখ্যক ক্রোমোজোম অংশগ্রহণ করে এবং মাইটোসিসে সাধারণত ডিপ্লয়েড সংখ্যক ক্রোমোজাম অংশ নেয়। এক্ষেত্রে মাইটোসিসের মতো সমবিভাজন ঘটে, অর্থাৎ ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস পায় না। মাইটোসিসের মতো মিয়োসিস II- এর অ্যানাফেজ II দশায় প্রতিটি ক্রোমোজোমের দুটি ক্রোমাটিড পৃথক হয়ে কোশের বিপরীত দুই মেরুতে গিয়ে অপত্য নিউক্লিয়াস সৃষ্টি করে।
  • সমবিভাজন মিয়োসিস II কোশ বিভাজন ও মাইটোসিসে যথেষ্ট মিল দেখা যায়, শুধু প্রথমক্ষেত্রে n সংখ্যক ক্রোমোজোম ও দ্বিতীয়ক্ষেত্রে (মাইটোসিসে) 2n সংখ্যাক ক্রোমোজোম অংশ নেয়। উভয়ক্ষেত্রে কোশ বিভাজন শেষে সমবিভাজন ঘটে অর্থাৎ ক্রোমোজোম সংখ্যার কোনো পরিবর্তন ঘটে না।
মিয়োসিস II-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য

মিয়োসিসকে হ্রাসকরণ বিভাজন বলে কেন? সম্পাদনের স্থান, ক্রোমোজোমের বিভাজনের প্রকৃতি এবং উৎপন্ন কোশের সংখ্যা অনুযায়ী মাইটোসিস ও মিয়োসিসের পার্থক্য লেখো।

হ্রাসকরণ বিভাজন হলো জীবনের একটি প্রক্রিয়া যা পুরানো এবং বিপুল সংখ্যক কোশগুলি বিভক্ত করে এবং তাদের সংখ্যা অবনতি করে। এটি জীবনপ্রক্রিয়ায় সাধারণত পুনরাবৃত্তির জন্য ব্যবহার করা হয়।

হ্রাসকরণ বিভাজন

মিয়োসিস কোশ বিভাজনে 2n সংখ্যক কোশবিশিষ্ট জন্য মাতৃকোশে বিভাজনের ফলে উৎপন্ন জননকোশ বা গ্যামেটে ক্রোমোজোম সংখ্যা কমে অর্ধেক হয়ে যায়। অর্থাৎ n সংখ্যক ক্রোমোজোম হয়ে যায়। এজন্য মিয়োসিসকে হ্রাসকরণ বিভাজন বা হ্রাসবিভাজন বলে।

মাইটোসিস ও মিয়োসিসের পার্থক্য

বিষয়মাইটোসিসমিয়োসিস
1. সম্পাদনের স্থানদেহকোশ এবং সাধারণ সংখ্যা বৃদ্ধির সময়ে জনন কোশে মাইটোসিস ঘটে।জনন মাতৃকোশ থেকে জননকোশ বা গ্যামেট সৃষ্টির সময় ঘটে।
2. ক্রোমোজোম বিভাজনের প্রকৃতিএটি সমবিভাজন, অর্থাৎ উৎপন্ন অপত্য কোশদুটিতে ক্রোমোজোম সংখ্যা জনিতৃ কোশের সমান (2n) থাকে।এটি হ্রাসবিভাজন, অর্থাৎ উৎপন্ন চারটি অপত্য কোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোশের অর্ধেক হয়ে যায় (2n)।
3. উৎপন্ন অপত্য কোশের প্রকৃতিএকটি জনিতৃকোশ থেকে একবার বিভাজন দ্বারা দুটি অপত্য কোশ উৎপন্ন হয়।জনিতৃকোশ থেকে দুইবার বিভাজন দ্বারা চারটি অপত্য কোশ উৎপন্ন হয়।

মিয়োসিসের প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য – ক্রোমোজোমের সংখ্যার হ্রাসকরণের গুরুত্ব ও ক্রসিং ওভার পদ্ধতিটি গুরুত্ব সহকারে লেখো।

ক্রোমোজোম সংখ্যার হ্রাসকরণ হলো একটি জীবনপ্রক্রিয়া যা কোশের ক্রোমোজোম সংখ্যা অবনতি করে এবং পুনরাবৃত্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়। এটি মানব জন্ম বদলে দেওয়ার কারণ হতে পারে এবং জীবিত প্রাণীদের জন্য মরন প্রক্রিয়াও নিয়ন্ত্রণ করে।

ক্রোমোজোম সংখ্যার হ্রাসকরণ

মিয়োসিস I-এর অ্যানাফেজ I-এর সমসংস্থ ক্রোমোজোমগুলি পৃথক হয়ে বিপরীত মেরুতে চলে যায় ও দুটি ভিন্ন নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করে। এর ফলে মিয়োসিস I-এর শেষে উৎপন্ন অপত্য নিউক্লিয়াসে ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস পেয়ে অর্ধেক (2n থেকে n) হয়ে যায়।

  • গুরুত্ব এইভাবে ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস পায় বলে জননকোশে, অর্থাৎ শুক্রাণু ও ডিম্বাণুতে ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক (n) হয়। শুক্রাণু (n) ও ডিম্বাণু (n)-এর মিলন বা নিষেকের ফলে জাইগোট বা ভ্রূণাণুতে ক্রোমোজোম সংখ্যা পুনরায় 2n বা ডিপ্লয়েড হয়ে যায়। অর্থাৎ মিয়োসিসে ক্রোমোজোম হ্রাসকরণ বা হ্যাপ্লয়েড হয়ে যাওয়ার জন্য জীবের জীবনচক্রে ক্রোমোজোমের সংখ্যা ধ্রুবক থাকে।

ক্রসিং ওভার

মিয়োসিস I-এর প্রোফোজ I দশায় যে পদ্ধতিতে সমসংস্থ ক্রোমোজোমের নন্ সিস্টার ক্রোমাটিডের মধ্যে সমতুল্য অংশের বিনিময় ঘটে ও ক্রোমোজোমে নতুন অ্যালিল সমন্বয়ের সৃষ্টি হয়, তাকে ক্রসিং ওভার বলে।

ক্রোমোজোমের সংখ্যার হ্রাসকরণের গুরুত্ব ও ক্রসিং ওভার পদ্ধতিটি গুরুত্ব সহকারে লেখো।
  • পদ্ধতি প্রোফেজ I-এ প্রতিজোড়া সমসংস্থ ক্রোমোজোম পাশাপাশি জোড় বাঁধে, যাকে সাইন্যাপসিস বলে। জোড় বাঁধা একক ক্রোমাটিডযুক্ত সমসংস্থ ক্রোমোজোম দুটিকে বাইভ্যালেন্ট বলে। পরে প্রতিটি ক্রোমোজোম দুটি ক্রোমাটিড সৃষ্টি করে, অর্থাৎ সমসংস্থ ক্রোমোজোম জোড়ায় চারটি ক্রোমাটিড দেখা যায়। এই অবস্থাকে টেট্রাড বলে। ক্রসিং ওভারে দুটি নন সিস্টার ক্রোমাটিড একে অপরের সঙ্গে ইংরাজি ‘X’ আকারের গঠনে আবদ্ধ হয়। এই গঠনকে কায়াজমা বলে। পরবর্তী পর্যায়ে নন সিস্টার ক্রোমাটিডের কায়াজমা বিন্দুর নীচের অংশের পারস্পরিক বিনিময় ঘটে। এর ফলে ক্রোমোজোমে নতুন অ্যালিল সমন্বয় দেখা দেয়।
  • গুরুত্ব 1. ক্রসিং ওভারের ফলে নতুন জিনগত পুনর্বিন্যাস ঘটে। এর ফলে প্রকরণ সৃষ্টি হয়। 2. ক্রসিং ওভার প্রমাণ করে যে, ক্রোমোজোমে জিন (তথা অ্যালিল)-গুলি সরলরৈখিকভাবে অবস্থান করে।

মাটোসিসকে সমবিভাজন বলে কেন? মাইটোসিস কোশ বিভাজনের গুরুত্ব লেখো।

মাটোসিসকে সমবিভাজন বলা হয় কারণ এই প্রক্রিয়ায় একটি মাত্রা দ্বারা সেল এর ক্রোমোজোম গুলো সমান ভাগ করে এবং তাদের সংখ্যা বজায় রাখা হয়, যা নতুন কোশের গঠনের জন্য প্রয়োজনীয়।

সমবিভাজন

মাইটোসিসে মাতৃকোশ ও উৎপন্ন অপত্য কোশগুলিতে ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান হয়। এ ছাড়া ক্রোমোজোম গুলি আকৃতি ও গুণগত বিচারে মাতৃকোশের সমতুল হয় বলে মাইটোসিসকে সমবিভাজন বলে।

মাইটোসিস কোশ বিভাজনের গুরুত্ব

উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহকোশে মাইটোসিস কোশ বিভাজন ঘটে। এর গুরুত্বগুলি নিম্নরূপ।

  • জীবদেহের আকার ও আয়তন বৃদ্ধি মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় দেহকোশের ক্রমাগত বিভাজনের ফলে কোশের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে জীবদেহের আকার ও আয়তন বৃদ্ধি পায় যা জীবের সামগ্রিক বৃদ্ধি ঘটায়। এককোশী জাইগোট মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে বহুকোশী জীবের সৃষ্টি করে।
  • কোন প্রতিস্থাপন এবং ক্ষয়পূরণ দেহের ক্ষয়প্রাপ্ত ও মৃতকোশ মাইটোসিস পদ্ধতিতে সৃষ্ট নতুন কোশ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। ফলে সেই অংশের ক্ষয়পূরণ ঘটে। যেমন — আমাদের কোনো স্থান কেটে গেলে মাইটোসিস দ্বারা উৎপন্ন কোশ দ্বারা প্রতিস্থাপন ও ক্ষয়পুরণ ঘটে থাকে। ত্বকের এপিডারমাল কোশও অনবরত বিনষ্ট হয়, তাও অনবরত প্রতিস্থাপিত হয়ে থাকে।
  • পুনরুৎপাদন বিভিন্ন প্রাণীর দেহাংশ দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে মাইটোসিস বিভাজনের দ্বারা তা পুনরুৎপাদিত হয়।যেমন-কবচী প্রাণীদের (কাঁকড়া) পদ, তারামাছের বাহু আঘাত বা অন্য কোনো কারণে দেহ থেকে বিছিন্ন হলে, মাইটোসিস বিভাজনের দ্বারা পুনরুৎপাদিত হয়।
  • প্রজনন নিম্নশ্রেণির এককোশী জীবদেহে অযৌন জননের জন্য মাইটোসিস কোশ বিভাজন অত্যাবশ্যকীয়। অ্যামিবা, প্যারামেসিয়াম, ঈস্ট প্রভৃতি এককোশী জীবের অযৌন জনন মাইটোসিস বিভাজনের মাধ্যমে হয়। আবার বিভিন্ন উদ্ভিদের অঙ্গজ জনন মাইটোসিস পদ্ধতি দ্বারাই ঘটে থাকে। যেমন — কচুরিপানা, মিষ্টি আলু, পাথরকুচির অঙ্গজ জনন প্রভৃতি।
  • সমবিভাজন মাইটোসিস পদ্ধতিতে সৃষ্ট দুটি অপত্য কোশ গুণগত ও পরিমাণগত বিচারে অর্থাৎ ক্রোমোজোম সংখ্যা ও অন্যান্য উপাদানের পরিমাণ এবং ক্রোমোজোমের সজ্জাগত বিচারে মাতৃকোশের সমান হয়।

মিয়োসিস কোশ বিভাজন কাকে বলে? মিয়োসিসের তাৎপর্য উল্লেখ করো।

মিয়োসিস কোশ বিভাজন হলো জীবনের একটি প্রক্রিয়া যা সেলের ক্রোমোজোম গুলি দ্বারা বিভক্ত হয় এবং নিজের সংখ্যা বজায় রাখে, যা জন্ম বদলে দেয় এবং জীবিত প্রাণীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

মিয়োসিস

যে কোশ বিভাজন প্রক্রিয়ায় জীবের জনন-মাতৃকোশের নিউক্লিয়াসের পরপর দু-বার বিভাজন ঘটার ফলে জনন- মাতৃকোশের অর্ধেক সংখ্যক ক্রোমোজোমবিশিষ্ট ও জিনের পুনর্বিন্যাসযুক্ত চারটি পৃথক অপত্য জননকোশ বা গ্যামেটের সৃষ্টি হয়, তাকে মিয়োসিস কোশ বিভাজন বলে।

মিয়োসিসের তাৎপর্য

উদ্ভিদ ও প্রাণীর জনন-মাতৃকোশে মিয়োসিস কোশ বিভাজন ঘটে। এর তাৎপর্যগুলি নিম্নরূপ।

  • প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক রাখা মিয়োসিসের ফলে মাতৃকোশের তুলনায় অপত্য কোশে ক্রোমোজোমের সংখ্যা অর্ধেক হয়। দুটি হ্যাপ্লয়েড কোশ মিলিত হয়ে ডিপ্লয়েড ভ্রূণাণু বা জাইগোট গঠিত হয়। যা বিভাজিত হয় ও বৃদ্ধি পেয়ে পূর্ণাঙ্গ ডিপ্লয়েড জীব গঠন করে। অর্থাৎ জীবদেহে ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক থাকে। যদি মিয়োসিস বিভাজন না হত, তাহলে নিষেকের পরে প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা গুণিতক হারে বৃদ্ধি পেত ও প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটত।
  • জিনগত প্রকরণ সৃষ্টি এই প্রক্রিয়ায় ক্রসিং ওভারের সময়ে ক্রোমোজোমের খণ্ড-বিনিময় ঘটে, ফলে তাদের চারিত্রিক গুণাবলির মিশ্রণ ঘটে, একে জিনের রিকমবিনেশন বলে। এর ফলে সৃষ্ট অপত্য জীব ক্রমবিবর্তনের সহায়ক নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয়। একে প্রকরণ বলে।
  • জননকোশ বা গ্যামেট তৈরি মিয়োসিসের ফলে জননকোশ বা গ্যামেট (শুক্রাণু ও ডিম্বাণু) তৈরি হয়, যা জীবের যৌন জননের জন্য একান্ত আবশ্যক।
  • জনুক্রম বজায় রাখা এইপ্রকার কোশ বিভাজনের ফলে হ্যাপ্লয়েড (n) ও ডিপ্লয়েড (2n) দশার পরিবর্তন চক্রাকারে ঘটতে থাকে, অর্থাৎ জনুক্রম বজায় থাকে।

কোশ বিভাজন জীবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া। কোশ বিভাজনের মাধ্যমেই জীবদেহের বৃদ্ধি, বিকাশ, জনন এবং ক্ষয়পূরণ ঘটে। কোশ বিভাজনের নিয়ন্ত্রণকারী কারণগুলির উপর নির্ভর করে কোশ বিভাজনের প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়। কোশ বিভাজনের ব্যাঘাতের ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।

Share via:

মন্তব্য করুন