মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবহমানতা – জনন – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

Rahul

জীবনের প্রবাহমানতা হল জীবন বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই অধ্যায়ে, আমরা দেখব যে জীবনের বিবর্তন কিভাবে ঘটেছে এবং বিভিন্ন জীবের মধ্যে কী কী মিল এবং অমিল রয়েছে। এই অধ্যায়ের উপর ভিত্তি করে, মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষায় বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে। এই সাজেশনে, আমরা জীবনের প্রবাহমানতা অধ্যায়ের উপর ভিত্তি করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং উত্তর তুলে ধরেছি।

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবহমানতা – জনন – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
Contents Show

মাইক্রোপ্রোপাগেশনের নীতি কী? অযৌন ও যৌন জননের পার্থক্য লেখো।

মাইক্রোপ্রোপাগেশন হল একটি সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মে ক্রিয়াশীলতার বিশেষ প্রযুক্তি। এটি ব্যবহারকারীদের পছন্দ অনুযায়ী সাজানো তথ্য দেয় এবং তাদের আগ্রহমূলক ক্রিয়াকলাপ সাজানোর জন্য কাজ করে।

মাইক্রোপ্রোপাগেশনের নীতি

উদ্ভিদকোশের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এইপ্রকার কোশ যে-কোনো কলাকোশ থেকে কোশ বিভাজন দ্বারা সম্পূর্ণ উদ্ভিদ সৃষ্টি করতে পারে। একে কোশের টোটিপোটেন্সি ধর্ম বলে। ‘মাইক্রো’ শব্দের অর্থ হল ক্ষুদ্র। অর্থাৎ, উদ্ভিদের মূল, কাণ্ড বা পাতার ছোটো টুকরো উপযুক্ত কর্ষণ মাধ্যম (culture medium)-এ রেখে বিভাজিত হতে দিলে, তা অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি করে। 

অযৌন ও যৌন জননের পার্থক্য

বিষয়অযৌন জননযৌন জনন
1. জনিত জীবের সংখ্যাএকটি।একটি বা দুটি।
2. গ্যামেট উৎপাদনগ্যামেট সৃষ্টি হয় না। রেণু উৎপাদন বা দেহকোশ বিভাজন দ্বারা জনন সম্পন্ন হয়।দু-প্রকার গ্যামেট উৎপন্ন হয় — স্ত্রীগ্যামেট (ডিম্বাণু) এবং পুংগ্যামেট (শুক্রাণু)।
3. বিভাজন পদ্ধতিমাইটোসিস, কিছুক্ষেত্রে অ্যামাইটোসিস।মিয়োসিস পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীল।
4. অপত্য জনুর প্রকৃতিঅপত্য জনুর কোনো প্রকার প্রকরণ ঘটে না বলে তা জনিতৃ জনুর অনুরূপ হয়।প্রকরণ সৃষ্টি হয় বলে অপত্য জনুর মধ্যে যথেষ্ট বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায়।

চিহ্নিত চিত্রের সাহায্যে প্লাসমোডিয়াম-এর বিভাজন পদ্ধতি বর্ণনা করো।

প্লাসমোডিয়াম একটি উচ্চ তাপমাত্রার বিদ্যুৎ অবস্থান যা হতে পারে ক্রমশঃ একটি তরঙ্গমুলক বিভক্তিতে এবং একটি প্রতিক্রিয়াশীল বিশিষ্ট বিভক্তিতে।

প্লাসমোডিয়াম-এর বিভাজন পদ্ধতি

প্লাসমোডিয়াম একটি এককোশী পরজীবী। এটি মানবদেহে ম্যালেরিয়া রোগের জন্য দায়ী। এটি মানুষের যকৃতে সাইজোগোনি নামক বহুবিভাজন পদ্ধতি সম্পন্ন করে। বেশ কয়েকটি দশার মধ্যে দিয়ে নিজের জীবনচক্র অতিবাহিত করে। সাইজন্ট নামক দশায়, মাইটোসিসের ক্যারিওকাইনেসিস বিভাজন দ্বারা দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস সৃষ্টি করে। এরপর কোশের মধ্যে একাধিকবার – ক্যারিওকাইনেসিস ক্রিয়া সম্পন্ন করে অসংখ্য অপত্য নিউক্লিয়াই তৈরি হয়। পরবর্তী পর্যায়ে সাইটোকাইনেসিস পদ্ধতি দ্বারা অসংখ্য মেরোজয়েট উৎপন্ন হয়। এইভাবে প্লাসমোডিয়াম-এ বহুবিভাজন পদ্ধতিটি সম্পন্ন হয়। এই মেরোজয়েটগুলি নতুন কোশকে আক্রমণ করে ও একই পদ্ধতিতে আরও বেশি সংখ্যক মেরোজয়েট উৎপন্ন করে। উসিস্ট বা স্পোরন্ট দশায় বহুবিভাজন ঘটলে তা থেকে স্পোরোজয়েট সৃষ্টি হয়।

চিহ্নিত চিত্রের সাহায্যে প্লাসমোডিয়াম-এর বিভাজন পদ্ধতি বর্ণনা করো।

অঙ্গজ বংশবিস্তার ও যৌন জননের পার্থক্য লেখো।

অঙ্গজ বংশবিস্তার ও যৌন জননের পার্থক্য

বিষয়অঙ্গজ বংশবিস্তারযৌন জনন
1. সংঘটনস্থলসাধারণত উন্নত উদ্ভিদে ঘটে।উন্নত উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়েই ঘটে।
2. পদ্ধতিউদ্ভিদ দেহাংশ থেকে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টির পদ্ধতি। দুটি জনিতৃ জীবের পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেটের মিলনে জাইগোট সৃষ্টির মাধ্যমে অপত্য সৃষ্টির পদ্ধতি।
3. নিষেক ও মিয়োসিসনিষেক ঘটে না এবং মিয়োসিসের কোনো ভূমিকা নেই।নিষেক ঘটে এবং মিয়োসিসের ভূমিকা আছে।
4. পদ্ধতির প্রকৃতিসরল, অনুন্নত বংশবিস্তার পদ্ধতি।জটিল ও উন্নত জনন পদ্ধতি।
5. অভিব্যক্তিতে ভূমিকা জৈব অভিব্যক্তির সহায়ক নয়।জৈব অভিব্যক্তির সহায়ক।
6. প্রয়োজনীয় অঙ্গদেহের যে-কোনো অঙ্গ।দেহে উৎপন্ন নির্দিষ্ট জননাঙ্গ।

জনুক্রম কী? রেখাচিত্রের সাহায্যে ফার্ন-এর জনুক্রম প্রক্রিয়া দেখাও।

জনুক্রম হল একটি বিজ্ঞানীগণ দ্বারা উদ্ভাবিত পদ্ধতি যার মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করা হয় কাজের সময়কে কম করে।

জনুক্রম

যৌন জননকারী জীবের জীবনচক্রে হ্যাপ্লয়েড (n) জনু ও ডিপ্লয়েড (2n) জনুর চক্রাকার আবর্তনকে জনুক্রম বলে।

জনুক্রম কী রেখাচিত্রের সাহায্যে ফার্ন-এর জনুক্রম প্রক্রিয়া দেখাও ।

ফার্ন-এর জনুক্রম প্রক্রিয়া

এক্ষেত্রে ডিপ্লয়েড (2n) রেণুধর জনু এবং হ্যাপ্লয়েড (n) লিঙ্গধর জনু চক্রাকারে আবর্তিত হয়। যে উদ্ভিদটি রেণু ধারণ করে, তাকে রেণুধর উদ্ভিদ বা স্পোরোফাইট বলে। এই দশাটিকে লিঙ্গধর জনু বলে। মিয়োসিস পদ্ধতিতে রেণুধর জনুর রেণুমাতৃকোশ থেকে হ্যাপ্লয়েড (n) রেণু উৎপন্ন হয়। এরপর রেণু, পরিবেশে মুক্ত এবং অঙ্কুরিত হয়ে লিঙ্গধর উদ্ভিদ বা গ্যামেটোফাইট সৃষ্টি করে। এই দশাটিকে লিঙ্গধর জনু বলে। গ্যামোটোফাইটের অ্যানথেরিডিয়ামে উৎপন্ন শুক্রাণু (n), আর্কিগোনিয়ামে উৎপন্ন ডিম্বাণুকে (n) নিষিক্ত করে জাইগোট (2n) সৃষ্টি করে। জাইগোট থেকে পুনরায় রেণুধর বা স্পোরোফাইট উদ্ভিদ সৃষ্টি হয়। এইভাবে পর্যায়ক্রমে রেণুধর ও লিঙ্গধর উদ্ভিদ জনুর আবর্তন দ্বারা জনুক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে। ফার্ন-এর জীবনচক্রে হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড জনুর প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ বলে একে ডিপ্লোবায়োন্টিক জনুক্রম বলে।

মাইক্রোপ্রোপাগেশন বা অণুবিস্তারণ পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা দাও। এর সুবিধা কী?

মাইক্রোপ্রোপাগেশন বা অণুবিস্তারণ পদ্ধতি

মাইক্রোপ্রোপাগেশন বা অণুবিস্তারণ পদ্ধতির ধারাবাহিক পর্যায়গুলি হল — 1. এই পদ্ধতিতে প্রথমে উপযুক্ত এক্সপ্ল্যান্ট বা উদ্ভিদ দেহাংশ নির্বাচন করা হয়, যা পুরোপুরি প্রজাতিনির্ভর। 2. নির্বাচিত এক্সপ্ল্যান্টটিকে প্রথমে 70% অ্যালকোহলে 1 মিনিট ধুয়ে, পরে 10% হাইপোক্লোরাইট দ্রবণে 15 মিনিট রেখে নির্বীজ বা স্টেরিলাইজ করা হয়। এরপর এক্সপ্ল্যান্টটিকে কর্ষণ মাধ্যমে স্থাপন করা হয়। 3. এই কর্ষণ মাধ্যমে শক্তির উৎসরূপে সুক্রোজ ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রকরূপে কৃত্রিম অক্সিন, সাইটোকাইনিন এবং বিভিন্ন পরিপোষক ব্যবহৃত হয়। 4. প্রথমে উদ্ভিদ দেহাংশ থেকে একগুচ্ছ অবিভেদিত কোশ বা ক্যালাস সৃষ্টি হয়। এটি পরে বিভেদিত হয়ে বিভিন্ন কলা সৃষ্টি করে, যা ক্রমে বিভেদিত হয়ে অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি করে।

মাইক্রোপ্রোপাগেশনের সুবিধা

মাইক্রোপ্রোপাগেশনের সুবিধাগুলি হল — 1. এই পদ্ধতিতে কম জায়গায় দ্রুত ও রোগমুক্ত অধিক সংখ্যক চারা তৈরি করা যায়। 2. পছন্দমাফিক উদ্ভিদ ভ্যারাইটির উৎপাদন সম্ভব হয়। বন্ধ্যা উদ্ভিদের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করা যায়। 3. এই পদ্ধতির সাহায্যে বছরের যে-কোনো সময়ে চারা উৎপন্ন করা যায়। 4. এই পদ্ধতির সাহায্যে যৌন জননে অক্ষম উদ্ভিদের ক্ষেত্রে বংশবিস্তার সম্ভব।

অঙ্গজ বংশবিস্তার ও অযৌন জননের পার্থক্য লেখো।

অঙ্গজ বংশবিস্তার ও অযৌন জননের পার্থক্য

বিষয়অঙ্গজ বংশবিস্তারঅযৌন জনন
1. সংঘটনস্থলসাধারণত উন্নত উদ্ভিদে ঘটে।নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়েই ঘটে।
2. পদ্ধতিউদ্ভিদ দেহাংশ থেকে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টির পদ্ধতি।উদ্ভিদের ক্ষেত্রে মূলত রেণু উৎপাদন এবং প্রাণীর ক্ষেত্রে বিভাজন, খণ্ডীভবন প্রভৃতি পদ্ধতিতে ঘটে।
3. মিয়োসিসের ভূমিকাএক্ষেত্রে জননের পূর্বে বা পরে কোনো মিয়োসিস কোশ বিভাজন ঘটে না।উদ্ভিদের ক্ষেত্রে রেণু উৎপাদনের আগে মিয়োসিস কোশ বিভাজন ঘটে।
4. পদ্ধতির প্রকৃতিসরল অনুন্নত বংশবিস্তার পদ্ধতি।জটিল ও উন্নত জনন পদ্ধতি।
5. জনুক্রমের উপস্থিতি অনুপস্থিত।উপস্থিত বা অনুপস্থিত।
6. প্রয়োজনীয় অঙ্গ দেহের যে-কোনো অঙ্গ।দেহে উৎপন্ন নির্দিষ্ট জননাঙ্গ।

জীবের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য জনন একটি অপরিহার্য প্রক্রিয়া। জননের মাধ্যমে জীবের এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে বৈশিষ্ট্যগুলি হস্তান্তরিত হয়। এটি জীবের বৈচিত্র্য সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

Please Share This Article

Related Posts

শিশির, কুয়াশা প্রভৃতি অধঃক্ষেপণ নয় কেন

অধঃক্ষেপণ কাকে বলে? অধঃক্ষেপণের রূপভেদ গুলি আলোচনা করো।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে টীকা লেখো।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে টীকা লেখো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

অধঃক্ষেপণ কাকে বলে? অধঃক্ষেপণের রূপভেদ গুলি আলোচনা করো।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে টীকা লেখো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

বিংশ শতকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতে সংঘটিত কৃষক বিদ্রোহগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে কৃষক সমাজ কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিল?