উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও

আজকের আর্টিকেলের বিষয় হল উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চল। এই অঞ্চলটি শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং ভৌগোলিক গুরুত্বের দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য এই অঞ্চল সম্পর্কে জ্ঞান অপরিহার্য।

এই ব্লগ পোস্টে, আমরা উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করব, যা আপনাকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।

উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও

উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চল বা পূর্বাচল

অবস্থান – ভারতের উত্তর-পূর্বদিকে পূর্ব হিমালয়ের অনুচ্চ পর্বতশ্রেণি এবং উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হিমালয়ের বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন শাখা-পর্বতশ্রেণি ও পাহাড় নিয়ে গঠিত অঞ্চলকে উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চল বা পূর্বাচল বলা হয়। অরুণাচল প্রদেশের দক্ষিণাংশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং অসমের কাছাড় জেলা জুড়ে বিস্তৃত এই পার্বত্য অঞ্চল পশ্চিমে মেঘালয় মালভূমির সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে।

ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য –

  • অরুণাচল প্রদেশের পাটকই ও মিশমি পাহাড় উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত। মিশমির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ দাফাকুম উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চলেরও সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গ।
  • পাটকই পাহাড় আরও দক্ষিণে নাগাল্যান্ডের মধ্যে প্রসারিত বরাইল পাহাড়ের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। বরাইল পাহাড় আরও পূর্বদিকে প্রসারিত হয়ে কোহিমা পাহাড় এবং নাগা পাহাড়ের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। কোহিমা পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল জাপভো (2995 মি) এবং নাগা পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ সারামতি (3926 মি)। বরাইল পাহাড়ের একটি অংশ অসমের কাছাড় হয়ে মেঘালয় মালভূমির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। মেঘালয় মালভূমির উল্লেখযোগ্য অংশ হল — গারো, খাসি ও জয়ন্তিয়া পাহাড়।
  • নাগাল্যান্ডের দক্ষিণ দিকে পাহাড়গুলির উচ্চতা ক্রমশ হ্রাস পেয়েছে। মণিপুরে এই ধরনের অনুচ্চ পাহাড় শ্রেণির মাঝে একটি সুন্দর উপত্যকার সৃষ্টি হয়েছে। এর নাম ইম্ফল উপত্যকা। এর মাঝখানে রয়েছে লোকটাক হ্রদ।
  • মণিপুরের অনুচ্চ পাহাড়গুলি অবশেষে মিজোরামে লুসাই বা মিজো পাহাড়ের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। লুসাই পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ নউজুয়ারনো (2140 মি)।
  • ত্রিপুরায় লুসাই পাহাড়ের সঙ্গে সমান্তরালভাবে অবস্থিত ছয়টি প্রায় সমান্তরাল পাহাড়শ্রেণি (স্থানীয় নাম ‘টাং’) দেখা যায়। এগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ হল জাম্পুইটাং। জাম্পুই-এর বেতালিং শিব (960 মি) ত্রিপুরার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।
পূর্বাচলের ভূপ্রকৃতি

উত্তর-পূর্বের পার্বত্য অংশ আরাকানইয়োমা পর্বতশ্রেণির অংশ হিসেবে আরও দক্ষিণে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল হয়ে মায়ানমারে প্রবেশ করেছে।

উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চলটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং সমৃদ্ধ ইতিহাসের জন্য একটি অনন্য স্থান। দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য এই অঞ্চল সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। উপরে তালিকাভুক্ত পড়াশুনার পরামর্শগুলি অনুসরণ করে আপনি এই বিষয়টিতে সফল হতে পারবেন।

Share via:

মন্তব্য করুন