জলসেচ কি? ভারতীয় কৃষিতে জলসেচের প্রয়োজনীয়তা

Rahul

আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো জলসেচ সম্পর্কে। দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য “জলসেচ কি? ভারতীয় কৃষিতে জলসেচের প্রয়োজনীয়তা” – এই প্রশ্নটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ অধ্যায়ের ভারতের জলসম্পদ বিভাগে এই প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করা হয়। পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে গেলে এই প্রশ্নটির উত্তর লিখতে পারা গুরুত্বপূর্ণ।

জলসেচ কি? ভারতীয় কৃষিতে জলসেচের প্রয়োজনীয়তা

জলসেচ কি?

কৃষিকাজ করার জন্য নদী, পুকুর, খাল, জলাশয় থেকে যে জল এনে কৃষি জমিতে দেওয়া হয় বা সেচন করা হয়, তাকে জলসেচ বলে। জলসেচের মাধ্যমে কৃষি জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল সরবরাহ করা হয়, যার ফলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

ভারতীয় কৃষিতে জলসেচের প্রয়োজনীয়তা

ভারতীয় কৃষিতে জলসেচের প্রয়োজনীয়তা সীমাহীন। কারণ –

  • অনিশ্চিত মৌসুমি বৃষ্টিপাত – ভারতে সারাবছর বৃষ্টিপাত হয় না শতকরা প্রায় 67 থেকে 72 ভাগ বৃষ্টিপাত বর্ষাকালের 4 মাসের মধ্যে হয় যা দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঘটে থাকে। কিন্তু দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন ও প্রত্যাগমন অনিশ্চিত এবং অনিয়মিত। একমাত্র জলসেচের মাধ্যমেই কৃষির এই অনিশ্চিত অবস্থার প্রতিকার সম্ভব।
  • বৃষ্টিপাতের অসম বণ্টন – ভারতে মৌসুমি বৃষ্টিপাত সব জায়গায় সমান হারে হয় না। উত্তর-পশ্চিম ভারতের অধিকাংশ জায়গায় বছরে 75 সেন্টিমিটারেরও কম বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিপাত বণ্টনের এই আঞ্চলিক বৈষম্যের দরুন রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাতের উত্তর ও পশ্চিমাংশ, দাক্ষিণাত্য মালভূমির অভ্যন্তরভাগ প্রভৃতি এলাকায় কৃষিকাজের জন্য জলসেচের বিশেষ প্রয়োজন।
  • শুষ্ক শীতকাল – উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু অংশ এবং করমণ্ডল উপকূলের দক্ষিণাংশ – এই দুটি অঞ্চল ছাড়া ভারতের অন্যত্র শীতকালে বিশেষ বৃষ্টিপাত হয় না। সুতরাং, শীতকালে ভারতে রবিশস্য যেমন – গম, ডাল, তৈলবীজ, বোরোধান প্রভৃতি চাষের জন্য জলসেচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • মৃত্তিকার জলধারণক্ষমতার তারতম্য – লোহিত মৃত্তিকা এবং ল্যাটেরাইট মৃত্তিকার জলধারণক্ষমতা কম। তাই, ওইসব মাটিতে কৃষিকাজ করার জন্য জলসেচ প্রয়োজন।
  • উচ্চফলনশীল বীজের চাষ – বর্ধিত খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্যে ভারতের বিভিন্ন অংশে উচ্চফলনশীল বীজের চাষ করা হয়। কিন্তু উচ্চফলনশীল শস্য চাষের জন্য অধিক পরিমাণে জল প্রয়োজন। একমাত্র জলসেচের মাধ্যমেই তা সরবরাহ করা সম্ভব।
  • সারাবছরব্যাপী চাষ – কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য একই জমিতে প্রতিবছর তিন-চার বার চাষ করা হয়। একমাত্র জলসেচের ব্যবস্থা থাকলেই জমিতে সারাবছর চাষ করা সম্ভব হয়।

আজকের আলোচনার বিষয় ছিল খাল সেচ এবং ভারতীয় কৃষিতে এর গুরুত্ব। আমরা দেখেছি যে খাল সেচ হলো কৃত্রিম খালের মাধ্যমে কৃষিজমিতে পানি সরবরাহের একটি প্রাচীন পদ্ধতি। এই বিষয়টি দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” অধ্যায়ের “ভারতের জলসম্পদ” বিভাগে এই প্রশ্নটি বারবার দেখা যায়।

Please Share This Article

Related Posts

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো -

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।

বাংলায় ছাপাখানা ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীরূপ অবদান ছিল?

বাংলায় ছাপাখানা ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীরূপ অবদান ছিল?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

তুন্দ্রা জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।

বাংলায় ছাপাখানা ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীরূপ অবদান ছিল?

তুন্দ্রা জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর অবস্থান ও বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর অবস্থান ও প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী তা আলোচনা করো।