আজকের আর্টিকেলে, আমরা ভারতের কৃষিকাজের জন্য জলসেচের অপরিহার্যতার উপর আলোকপাত করব। এই বিষয়টি দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” অধ্যায়ের “ভারতের জলসম্পদ” অংশে।
কৃষিকাজের জন্য ভারতে জলসেচের প্রয়োজন হয় কেন?
জলসেচ হল এমন এক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে, বৃষ্টিপাত অনিশ্চিত বা অনিয়মিত হলেও, কৃষিক্ষেত্রে সারাবছর নিয়মিতভাবে ও প্রয়োজনমতো জল সরবরাহ করে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়। ভারতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হলেও জলাভাব ভারতীয় কৃষির একটি প্রধান সমস্যা। এর কারণ –
- মৌসুমি বৃষ্টিপাত অত্যন্ত অনিয়মিত এবং অনিশ্চিত। তাই কখনও অনাবৃষ্টি, আবার কখনও অতিবৃষ্টি কৃষি উৎপাদনে সমস্যার সৃষ্টি করে।
- ভারতে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের আঞ্চলিক বণ্টন সর্বত্র সমান নয়। যেমন-উত্তর-পূর্ব ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হলেও রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাত, দাক্ষিণাত্যের মধ্যভাগ প্রভৃতি এলাকায় অর্থাৎ দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ স্থানে স্বল্প-বৃষ্টিপাতজনিত কারণে কৃষিকাজ ভীষণভাবে ব্যাহত হয়।
- দেশের বেশির ভাগ জায়গায় শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় না বলে গম, ডাল, তৈলবীজ প্রভৃতি রবিশস্য বা শীতকালীন ফসল চাষের জন্য জলসেচ অপরিহার্য।
- ভারতে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত হয় বর্ষাকালের মাত্র চার মাসে (জুন-সেপ্টেম্বর)। সুতরাং, একই জমিতে বছরে দুই-তিন বার ফসল • উৎপাদনের জন্য অর্থাৎ বহুফসলি জমির পরিমাণ বাড়াতে জলসেচ ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়।
- লোহিত মৃত্তিকা এবং ল্যাটেরাইট মৃত্তিকার জলধারণক্ষমতা কম বলে জলসেচ ভিন্ন ওইসব মাটিতে ফসল উৎপাদনে উন্নতি সম্ভব নয়। উচ্চফলনশীল শস্য চাষের জন্য নিয়ন্ত্রিত ও পর্যাপ্ত জল সরবরাহের প্রয়োজন হয়, যা একমাত্র জলসেচের মাধ্যমেই করা যায়।
এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি যে ভারতে কৃষিকাজের জন্য খালের মাধ্যমে জলসেচ কেন প্রয়োজন। বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভরতা কমানো, খরা প্রতিরোধ, ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং জমির উর্বরতা বৃদ্ধি সহ খাল ব্যবস্থার অনেক সুবিধা রয়েছে। টেকসই জল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য খালগুলি যথাযথভাবে পরিচালনা করা গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়ে আরও জানতে এবং ভারতের জলসম্পদের ভবিষ্যৎ উন্নত করতে আপনি কী করতে পারেন তা অন্বেষণ করতে আমরা আপনাকে উৎসাহিত করি।