আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায়, ‘ভারতীয় উপমহাদেশের – প্রাচীন ইতিহাসের ধারা (দ্বিতীয় পর্যায় : আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০-৬০০ অব্দ)’ অধ্যায়ের কিছু রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও সহায়ক। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণী এবং চাকরির পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসতে দেখা যায়।
আর্যদের আদি বাসস্থান কোথায় ছিল?
আর্যদের আদি বাসস্থান নিয়ে দুটি মূল মত রয়েছে।
আর্যদের আদি বাসস্থান প্রথম মত –
দয়ানন্দ সরস্বতী, পার্জিটার, গণনাথ ঝাঁ প্রমুখ ঐতিহাসিকদের মতে, আর্যদের আদি বাসস্থান ছিল ভারতবর্ষ। তাঁরা এই মতের সমর্থনে কিছু যুক্তি প্রদান করেছেন। যেমন –
মতামতের স্বপক্ষে যুক্তি
- বৈদিক সাহিত্যে “সপ্তসিন্ধু” ছাড়া আর কোনো নদীর নাম উল্লেখ নেই। অর্থাৎ, এই নদীগুলির অবস্থান ভারতেই।
- বৈদিক সাহিত্যে যেসব গাছ ও পশুপাখির বিবরণ পাওয়া যায়, সেগুলি সবই ভারতীয়।
- ঋগ্বেদের মতো কোনো রচনা ভারতের বাইরে আগে কখনও কোথাও লেখা হয়নি, যা প্রমাণ করে যে, বৈদিক সাহিত্য ভারতের গৌরব।
আর্যদের আদি বাসস্থান দ্বিতীয় মত –
ব্র্যান্ডেন স্টাইন, গাইলস, ম্যাক্সমুলার প্রমুখ ঐতিহাসিকদের মতে, আর্যদের আদি বাসভূমি ছিল ইউরোপ। তাঁদের যুক্তিগুলি হল –
মতামতের স্বপক্ষে যুক্তি
- ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর সাতটি ভাষার মধ্যে পাঁচটি ইউরোপীয় ভাষা। এই ভাষাগুলি থেকে বোঝা যায় যে আর্যরা ইউরোপীয়।
- বৈদিক সাহিত্যে সিংহের উল্লেখ থাকলেও, বাঘ বা হাতির মতো কোনো ভারতীয় পশুর উল্লেখ নেই, যা ভারতীয় না হওয়া নির্দেশ করে।
- ভারত যদি আর্যদের আদি বাসভূমি হতো, তবে তারা প্রথমে ভারতবর্ষে সমগ্র জায়গায় বসতি স্থাপন করত, কিন্তু তা হয়নি।
জেনে রাখো –
প্রাচীন ভারতে ভরত নামে একটি শক্তিশালী উপজাতি বসবাস করত। এই অঞ্চলের পরে ব্রহ্মাবর্ত নামে পরিচিতি লাভ করেছিল। এই সময়, দিবোদাস, পিজবন, সুদাস নামে কিছু রাজা শাসন করতেন। ঋগবেদের অনেক মন্ত্র সুদাসের রচনা রিচিতি লাভ করেছিল। এই সময় দিবোদাস, পিজবন, সুদাস নামে কয়েকজন রাজার নাম জানা যায়। ঋগবেদের অনেক মন্ত্র সুদাসের রচনা।
আদি বৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবন সম্বন্ধে আলোচনা করো।
অথবা, বৈদিক সমাজ কেমন ছিল?
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে আর্যদের সামাজিক জীবন বেশ কৌতূহলোদ্দীপক ছিল। তাঁদের সামাজিক জীবনের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
আদি বৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবন
- পিতৃতান্ত্রিক পরিবার – আদি বৈদিক যুগে আর্য সমাজের ভিত্তি ছিল একান্নবর্তী পরিবার। পিতাই ছিলেন পরিবারের সর্বময় কর্তা। তাঁকে ‘গৃহপতি’ বা ‘কুলুপ’ বলা হত।
- নারীর স্থান – আদিবৈদিক যুগে নারীর স্থান যথেষ্ট সম্মানের ছিল। ইচ্ছা করলে তারা অনেক পড়াশোনা করতে পারত। এই যুগের কয়েকজন বিদূষী নারী হলেন – অপালা, ঘোষা, লোপামুদ্রা প্রভৃতি।
- বর্ণভেদ ও চতুরাশ্রম প্রথা – আদি বৈদিক যুগে বৈদিক সমাজ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র এই চারটি বর্ণে বিভক্ত ছিল। এ ছাড়া আর্যদের জীবনকাল ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বাণপ্রস্থ, সন্ন্যাস এই চারটি সুস্পষ্ট স্তরে বিভাজিত ছিল।
- খাদ্য – এই যুগে মানুষেরা ভাত, পিঠে, দুধ, ফলমূল প্রভৃতি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করত। তা ছাড়া উৎসবের দিনগুলিতে তারা সোমরস পান করত।
- পোশাক – এই যুগের মানুষেরা নিবি, বাস ও অধিবাস নামে তিন ধরনের পোশাক ব্যবহার করত।
চতুরাশ্রম প্রথা কী?
অথবা, বৈদিক যুগে বর্ণাশ্রম সম্বন্ধে বর্ণনা দাও।
বৈদিক জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য স্তর বিভাজন হল – চতুরাশ্রম প্রথা। আর্য সমাজে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের জীবনকালকে চারটি সুস্পষ্ট স্তরে ভাগ করে যে-জীবন পদ্ধতি গড়ে উঠেছিল তা চতুরাশ্রম নামে পরিচিত।
চতুরাশ্রম
- ব্রহ্মচর্য – চতুরাশ্রমের এটি ছিল প্রথম আশ্রম। এই স্তরে আর্য- বালক গুরুগৃহে থেকে সংযম ও সদাচারের সঙ্গে শিক্ষা অর্জন করত।
- গার্হস্থ্য – চতুরাশ্রমের এটি ছিল দ্বিতীয় আশ্রম। এই স্তরে শিক্ষা শেষ করে আর্য যুবক ঘরে ফিরে বিবাহ করত এবং সংসার ধর্ম পালন করত।
- বাণপ্রস্থ – চতুরাশ্রমের এটি ছিল তৃতীয় আশ্রম। এই স্তরে প্রৌঢ় আর্য সংসার জীবন শেষ করে নির্জনে ধর্ম চিন্তায় দিন কাটাত।
- সন্ন্যাস – এটি ছিল চতুরাশ্রমের শেষ বা চতুর্থ আশ্রম। এই স্তরে বৃদ্ধ বয়সে আর্যরা সংসারের সমস্ত মায়া ত্যাগ করে লোকালয় থেকে দূরে ধর্মচিন্তায় নিমগ্ন থাকত।
আদি বৈদিক যুগের ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো।
আদি বৈদিক যুগের আর্যদের ধর্মীয় জীবন বেশ আকর্ষণীয় ছিল।
আদি বৈদিক যুগের ধর্মীয় জীবন
- যাগযজ্ঞ – ঋবৈদিক যুগে পুজো বলতে আজকের মতো মূর্তি পুজো বোঝাত না। যজ্ঞই ছিল ধর্মাচরণের একমাত্র পথ। জ্বলন্ত আগুনে ঘি, দুধ, ফল, মধু, মাংস, সোমরস ইত্যাদি মন্ত্র উচ্চারণের সঙ্গে আহুতি দেওয়া হত।
- দেবদেবী – প্রথমদিকে দেবদেবী অর্থাৎ আকাশ এবং পৃথ্বী অর্থাৎ পৃথিবী ছিল আর্যদের দেবদেবী। ক্রমে ক্রমে ইন্দ্র, বরুণ, অগ্নি, মরুৎ, সূর্য, সরস্বতী প্রভৃতি দেবদেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। দেবদেবীরা আবার স্বর্গলোক, বিম্বুলোক, পার্থিবলোক এই তিন লোকে বিভক্ত ছিল।
আদি বৈদিক ও পরবর্তী বৈদিক সমাজে নারীদের অবস্থা সম্পর্কে লেখো।
নিম্নে দুই বৈদিক সমাজে নারীজাতির অবস্থা তথা পার্থক্য আলোচনা করা হল –
আদি-বৈদিক সমাজ | পরবর্তী বৈদিক সমাজ |
i. এযুগে সমাজে নারীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত ছিল। | কিন্তু এযুগে নারী মর্যাদা অনেকটা হ্রাস পেয়েছিল। |
ii. নারীরা স্বাধীনভাবে শিক্ষালাভের সুযোগ পেত। | কিন্তু এ যুগে নারীশিক্ষার প্রসার অনেকটাই হ্রাস পেয়েছিল। |
iii. এযুগে নারীরা বেদপাঠের অধিকারী ছিল। | কিন্তু এযুগে নারীর সেই অধিকার খর্ব হয়েছিল। |
iv. এযুগে নারীদের তেমন কোনো সামাজিক কুসংস্কারের শিকার হতে হয়নি। | কিন্তু এযুগে বাল্যবিবাহ ও সতীদাহ প্রথার প্রচলন হয়। ফলে নারীজীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। |
v. এযুগে পরিবারগুলিতে কিন্তু কন্যাসন্তানের জন্ম অকাম্য জন্ম ছিল না। | কিন্তু এযুগে কন্যাসন্তানের জন্ম কাম্য ছিলনা। |
vi. তখন যোগ্য মহিলারা বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারত। যেমন – সভাসমিতিতে যোগদান। | কিন্তু এযুগের মহিলাদের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সে অধিকার ছিল না। |
বৈদিক যুগে আর্যদের অর্থনৈতিক জীবন সম্বন্ধে আলোচনা করো।
বেদ, সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও বিভিন্ন সূত্র সাহিত্য থেকে আমরা আর্যদের জীবনের বিভিন্ন দিকগুলি জানতে পারি।
ঋকবৈদিক বা আদি বৈদিক যুগে আর্যদের অর্থনৈতিক জীবন
- গ্রামকেন্দ্রিক অর্থনীতি – ঋবৈদিক যুগে আর্য সভ্যতা ছিল গ্রামকেন্দ্রিক। কৃষি এবং পশুপালন ছিল তাদের জীবনের প্রধান অঙ্গ। ব্যক্তির সম্পদ গোরুর সংখ্যা দ্বারা। নির্ধারিত হত।
- পেশা – কৃষি ও পশুপালন ছাড়া আর্যদের অর্থনৈতিক জীবনে বিভিন্ন পেশার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। ঋগবেদে সূত্রধর, চর্মকার, তন্তুবায়, কুম্ভকার ও ধাতু শিল্পীর উল্লেখ পাওয়া যায়।
- মুদ্রা – ঋক্বৈদিক যুগে যদিও মুদ্রাভিত্তিক অর্থনীতি তেমনভাবে বিকশিত হয়নি, তবুও সেসময় ‘নিষ্ক’ ও ‘মনা’ নামে দু-রকমের মুদ্রার প্রচলন ছিল বলে জানা যায়।
- ব্যাবসাবাণিজ্য – ঋগবেদে সমুদ্রপোতের উল্লেখ আছে বলে জানা যায়। আর্যরা অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের সঙ্গে সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্যেও অংশগ্রহণ করত।
পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবনে কী কী পরিবর্তন এসেছিল?
আদি বৈদিক যুগ ও পরবর্তী ঋবৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবনের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন আমাদের চোখে পড়ে। মূলত লোহার ব্যাপক ব্যবহারের ফলে জীবনযাত্রায় বেশ কিছু পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল।
পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবন
- বর্ণভেদ প্রথা – পরবর্তী বৈদিক যুগে বর্ণভেদ প্রথা পেশাভিত্তিক থেকে জন্মভিত্তিক হয়ে জটিল হয়ে ওঠে। সমাজে ব্রাহ্মণরা সর্বাধিক সুযোগসুবিধার অধিকারী হয়। প্রচলিত চারটি বর্ণ ছাড়া কর্মকার, সূত্রধর, মৎস্যজীবী প্রভৃতি উপবর্ণের সৃষ্টি হয়।
- নারীর মর্যাদা – পরবর্তী বৈদিক যুগে পূর্বের তুলনায় নারীর সামাজিক মর্যাদা কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়। সম্পত্তির অধিকার থেকে নারীকে বঞ্চিত করা হয়। বাল্যবিবাহ, বিধবাবিবাহ প্রভৃতি কুপ্রথার এসময় উদ্ভব হয়।
- খাদ্য ও পোশাক – পরবর্তী ঋবৈদিক যুগে খাদ্যাভাসের দিক থেকে যেমন মাংস ভক্ষণের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছিল তেমনি সুতি ও পশমের পোশাকের সঙ্গে রেশম বস্ত্রের চলও এই সময় শুরু হয়েছিল। এই যুগে আয়না, চিরুনি ও জুতোর ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। পূর্বের তুলনায় পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবন অনেক জটিল ও আচারসর্বস্ব হয়ে পড়েছিল। আর্যদের সামাজিক জীবনের এই জটিলতা জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রকেও প্রভাবিত করেছিল।
পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যদের অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় জীবনে কী কী পরিবর্তন হয়েছিল?
পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যদের অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় জীবনে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছিল।
পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যদের অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় জীবন
- অর্থনৈতিক জীবনে পরিবর্তন – পরবর্তীবৈদিকযুগে আর্যদের গ্রামীণ অর্থনীতিরও পরিবর্তন ঘটে। এই যুগে জমিতে যেমন ব্যক্তিগত মালিকানা বৃদ্ধি পায় তেমনি কৃষির উন্নতিতে সার ও সেচ ব্যবস্থার প্রচলন শুরু হয়। এযুগে কৃষির পাশাপাশি বাণিজ্যও বিশেষভাবে সম্প্রসারিত হয়েছিল। চিন, মেসোপটেমিয়া প্রভৃতি দেশের সঙ্গে সমুদ্র বাণিজ্যও চলত। তা ছাড়া বাণিজ্যিক স্বার্থ ও নিরাপত্তার জন্য বণিকরা এসময় ‘গিল্ড’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিল।
- ধর্মীয় জীবনে পরিবর্তন – পরবর্তী বৈদিক যুগে পুরোহিত ও মূর্তি পুজোর প্রাধান্য এবং আড়ম্বরতা বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী বৈদিক যুগের ইন্দ্র, অগ্নি প্রভৃতি দেবতার স্থানে ব্রহ্মা, বিন্ধু, রুদ্র প্রভৃতি দেবতা বেশি প্রাধান্য পায়। যজ্ঞানুষ্ঠানে ব্রাহ্মণকে প্রচুর জমি দান করতে হত। তা ছাড়া এই সময় ধর্মে অবতারবাদ, তন্ত্রমন্ত্র, জাদু, ইন্দ্রজাল প্রভৃতি যুক্ত হয়েছিল।
সপ্তসিন্ধু বলতে কী বোঝো? বৈদিক যুগের প্রত্নতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য লেখো।
সপ্তসিন্ধু অঞ্চল – প্রথম পর্বে বৈদিক সভ্যতা সপ্তসিন্ধু অঞ্চলে বিস্তার লাভ করেছিল। সাতটি নদী অধ্যুষিত অঞ্চল সপ্তসিন্ধু নামে পরিচিত। এই নদীগুলি ছিল শতদ্রু, বিপাশা, বিতস্তা, চন্দ্রভাগা, ইরাবতী, সিন্ধু ও সরস্বতী। মনে করা হয় এখানেই আর্যদের প্রথম বসবাস গড়ে উঠেছিল।
প্রত্নতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য – বৈদিক যুগের প্রত্নতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য হল –
- এযুগে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও ব্যবহার সামগ্রী তৈরি হত তামা ও ব্রোঞ্জ দিয়ে। তবে বৈদিক যুগের একদম শেষ পর্যায়ে লোহার ব্যবহার শুরু হয়েছিল। এসময় কৃষকরা চাষের জন্য লোহার তৈরি লাঙলের ফলা ব্যবহার করত।
- এযুগে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে – মাটির তৈরি মূর্তি, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, হাতিয়ার (তির, বর্শা), অলংকার (আংটি, গয়নাগাটি), বড়শি ইত্যাদি।
- উল্লেখযোগ্য বিষয় সে যুগের সাহিত্যে নিষ্ক, মনা, কৃষ্ণন ও শতমান জাতীয় মুদ্রার উল্লেখ থাকলেও সেগুলি বাস্তবে পাওয়া যায়নি। প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলি থেকে ইতিহাসবিদগণ এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে বৈদিক সভ্যতা ছিল একটি গ্রামীণ সভ্যতা।
আর্য সভ্যতার সঙ্গে সিন্ধু সভ্যতার বৈসাদৃশ্যগুলি আলোচনা করো।
আর্য সভ্যতা বা বৈদিক সভ্যতা এবং হরপ্পা সভ্যতা ভারতের দুটি প্রাচীন ঐতিহাসিক সভ্যতা। প্রাচীন এই সভ্যতা দুটির মধ্যে অনেক বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
আর্য সভ্যতার সঙ্গে সিন্ধু সভ্যতার বৈসাদৃশ্য
- যুগ – সিন্ধু সভ্যতা ছিল তাম্র-ব্রোঞ্জ যুগের সভ্যতা। আর্যসভ্যতা ছিল লৌহ যুগের সভ্যতা।
- প্রকৃতি – আর্য সভ্যতা ছিল গ্রামকেন্দ্রিক সভ্যতা। সিন্ধু সভ্যতা ছিল উন্নত নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা।
- সমাজের প্রধান – সিন্ধু সভ্যতার সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক। আর্যসমাজ ছিল পিতৃতান্ত্রিক।
- মৃতদেহ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া – সিন্ধু সভ্যতায় মৃতদেহ সমাধি দেওয়া হত। আর্যরা মৃতদেহকে দাহ করতেন।
- ব্যাবসাবাণিজ্যের মাধ্যম – সিন্ধু সভ্যতার মানুষ বিনিময় প্রথার সাহায্যে ব্যাবসাবাণিজ্য করত। আর্যরা বিনিময় প্রথা এবং মুদ্রার সাহায্যে ব্যাবসাবাণিজ্য করত।
- সমুদ্র বাণিজ্য – সিন্ধু সভ্যতার মানুষেরা ছিল সমুদ্র বাণিজ্যে দক্ষ। আর্যরা সমুদ্র বাণিজ্যে পারদর্শী ছিল না।
- বর্ণভেদ প্রথা – সিন্ধু সভ্যতায় বর্ণভেদ প্রথা ছিল না। আর্য- সমাজে বর্ণভেদ প্রথা ছিল।
প্রাচীন ভারতের ব্যাবসাবাণিজ্য সম্বন্ধে আলোচনা করো।
প্রাচীনকালে ভারতীয়রা ব্যাবসাবাণিজ্যে যথেষ্ট তৎপর ছিল। সিন্ধু সভ্যতায় এবং আর্য সভ্যতায় ভারতীয়রা কৃষির পাশাপাশি ব্যাবসাবাণিজ্য ও শিল্পকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিত।
প্রাচীন ভারতের ব্যবসাবাণিজ্য
- সিন্ধু সভ্যতার ব্যাবসাবাণিজ্য – সিন্ধু সভ্যতায় বস্ত্র শিল্পের পাশাপাশি মৃৎশিল্প, রঞ্জনশিল্প, কারুশিল্প প্রভৃতিতে উন্নতি হয়েছিল। এই সমস্ত শিল্পকার্য দেশে এবং বিদেশে যথেষ্ট সমাদৃত হত। হরপ্পা, মহেন-জো-দারো, চানহুদাড়ো, লোথাল প্রভৃতি শহরগুলিকে কেন্দ্র করে তখন ব্যাবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটেছিল। মূল্যবান পাথর, শঙ্খ, সোনা তখনকার দিনে দক্ষিণ ভারত থেকে আমদানি করা হত। ইরান, সুমের প্রভৃতি দেশের সঙ্গে সিন্ধু সভ্যতার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল।
- বৈদিক যুগে বাণিজ্য – ঋগবেদ থেকে জানা যায় যে, বৈদিক যুগের শুরুতে ‘পণি’-রা এবং পরে বৈশ্যরা ব্যাবসাবাণিজ্যকে জীবিকা হিসেবে বেছে নেয়। জলপথে সিন্ধুর পাঁচটি উপনদীর দ্বারা ব্যাবসাবাণিজ্য চলত। আর্যরা মেসোপটেমিয়া-সহ পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ব্যাবসা করত। তবে আর্যরা সমুদ্র বাণিজ্যে পারদর্শী ছিল না। পরবর্তী ঋবৈদিক যুগে বাণিজ্যের উন্নতির ফলে কৌশাম্বি, কৌশল, বৈশালী প্রভৃতি বহু নগর এবং শ্রেষ্ঠী নামে এক শ্রেণির ধনবান গোষ্ঠীর জন্ম হয়। সবমিলিয়ে প্রাচীন ভারতে ব্যাবসাবাণিজ্যের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছিল।
বৈদিক যুগের শিক্ষাব্যবস্থা কেমন ছিল?
অথবা, বৈদিক যুগে পড়াশোনায় গুরু ও শিষ্যের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ছিল বলে তোমার মনে হয়?
বৈদিক যুগে যে যথেষ্ট শিক্ষার প্রচলন ছিল এবং গুরু-শিষ্যের মধ্যে এক মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠত তার অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে সেযুগে বেদ-এর কোনো লিখিত রূপ ছিল না।
- বৈদিক মানুষের (ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়) প্রথম জীবন কাটত গুরু-গৃহে। তাদের জীবনের এই অধ্যায়কে বলা হত ব্রহ্মাচর্যাশ্রম। সেখানে ছাত্ররা গুরুর কাছে শিক্ষালাভ করত। শিক্ষাজীবন শেষ হলে প্রত্যেক ছাত্রকে স্নাতক বলে মানপত্র দেওয়া হত।
- পরবর্তী যুগে এই শিক্ষাগ্রহণ ও দানের পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটে। এসময় ছাত্ররা গুরুর কাছে শিক্ষালাভের জন্য আবেদন করত। তাতে শিক্ষক বা গুরু সন্তুষ্ট হলে ওই ছাত্রকে উপনয়ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী হিসেবে গ্রহণ করতেন।
- গুরুগৃহে থেকে শিষ্যরা নানা বিষয়ে শিক্ষালাভ করত। সেই তালিকায় ছিল বেদ-এর বাণী মুখস্ত করা। এছাড়া গণিত, চিকিৎসাবিদ্যা ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে তারা শিক্ষালাভ করত।
- শিক্ষান্তে শিষ্যরা তাদের গুরুকে গুরুদক্ষিণা দিত। গুরুদক্ষিণা হিসেবে তারা গুরুকে গো-দান করত।
- আদি বৈদিক যুগে মহিলারাও শিক্ষা লাভ করত। তারা ইচ্ছা করলে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারত। এই সময়ের কয়েকজন শিক্ষিত মহিলার কথা জানা যায়, যেমন – ঘোষা, অপালা, লোপামুদ্রা প্রমুখ।
বৈদিক যুগের রাজনৈতিক অবস্থার পরিচয় দাও।
বিভিন্ন বৈদিক সাহিত্য থেকে বৈদিক যুগের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে অনেক কথা জানা যায়।
ঋকবৈদিক যুগের রাজনৈতিক জীবন –
- রাজন – এযুগে শাসনতন্ত্রের অঙ্গ ছিল গ্রাম, বিশ ও জন। পরিবারকে বাদ দিলে গ্রাম ছিল এর ক্ষুদ্রতম একক। কয়েকটি পরিবার মিলে গড়ে উঠেছিল গ্রাম। কয়েকটি গ্রাম নিয়ে গড়ে ওঠে বিশ। পরিবারের শাসনকর্তাদের বলা হত কুলপতি। বিশ-এর প্রধান ছিলেন বিশপতি বা রাজন।
- গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব – সে যুগে আর্য সমাজ কতকগুলি উপজাতি গোষ্ঠীতে বিভক্ত ছিল। এদের মধ্যে গবাদি পশু ও চারণভূমি নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত। এরূপ একটি দ্বন্দ্ব ইতিহাসে ‘দশ রাজার যুদ্ধ’ নামে খ্যাত। দিবদাসের পুত্র সুদাস তাঁর কুলোপুরোহিত বিশ্বামিত্রকে হঠিয়ে বশিষ্ঠকে স্থাপন করলে বিশ্বামিত্র পুরু, যদু, অনু, দ্রুহ্য, অলিস, শিব প্রমুখ রাজাকে সঙ্গে নিয়ে সুদাসের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেন। সেই যুদ্ধে রাজা সুদাস জয়ী হন।
- রাজকর্তব্য – ঋকবৈদিকযুগে রাজারা স্বেচ্ছাচারী ছিলেন না। সাধারণত রাজপদ ছিল বংশানুক্রমিক। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজা নির্বাচন করা হত। রাজার কর্তব্য ছিল রাজ্যশাসন, বিচার, গোধন রক্ষা, যুদ্ধ করা এবং কর আদায় করা। রাজকার্যে সাহায্য করতেন পুরোহিতগণ। এছাড়া সেনানী, গ্রামণী, গুপ্তচর, মধ্যমসি, উগ্র বা পুলিশ প্রভৃতি রাজকর্মচারীর কথা জানা যায়।
- সভা ও সমিতি – রাজার কার্য তদারকি করার জন্য সভা ও সমিতি নামক দুটি পৃথক পরিষদ গড়ে উঠেছিল। ঐতিহাসিক লুড উইগের মতে, উপজাতির বয়স্ক প্রধানদের নিয়ে গঠিত হত ‘সভা’ এবং ‘সমিতি’ ছিল সর্বসাধারণের পরিষদ। শাসন, বিচার ও জনহিতকর কাজের ব্যাপারে এই দুই সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।
পরবর্তী বৈদিক যুগের রাজনৈতিক জীবন –
পরবর্তী বৈদিক যুগে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের ধারণা প্রবল হয়। গড়ে ওঠে কুরু, পাঞ্চাল, মৎস্য, কাশী, কোশল, মগধ প্রভৃতি রাজ্য। রাজারা তাঁদের ক্ষমতা জাহির করার জন্য একরাট, বিরাট, ভোজ, সম্রাট প্রভৃতি উপাধি ধারণ করতেন।
বৈদিক সাহিত্যে রাজা সম্পর্কে কী জানা যায়? রাজার কাজ কী ছিল?
ঋগবেদে রাজন কথার উল্লেখ আছে। তাই মনে করা হয় আদি বৈদিক যুগে রাজতন্ত্রের ধারণা ছিল। পরবর্তী বৈদিক যুগে রাজা শাসকে পরিণত হন।
- রাজার বিভিন্ন রূপ – ঋগবেদে নানাভাবে ‘রাজা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এ যুগের রাজা ‘বিশপতি’ বা গোষ্ঠীর প্রধান রূপে পরিচিত হতেন। তিনি আবার ‘গোপতি’ বা গবাদি পশুর প্রভু বলেও পরিচিত হতেন। পরে অবশ্য রাজা পরিচিত হতেন ‘ভূপতি’ বা জমির মালিক রূপে। এ যুগে রাজার অন্য নাম ছিল ‘মহীপতি’ অর্থাৎ পৃথিবীর রাজা। তিনি ‘নরপতি’ রূপেও অভিহিত হতেন।
- যোগ্যতা – সাধারণত রাজপদ ছিল বংশানুক্রমিক। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজা নির্বাচিত হতেন। কেউবা যুদ্ধে জয়লাভ করে রাজা হতেন। রাজাকে সাহায্য করতেন রাজপুরোহিতগণ।
- ক্ষমতা – রাজা গবাদি পশু ও চারণভূমি রক্ষার্থে যুদ্ধ করতেন। যুদ্ধে জয়ী হয়ে রাজারা নিজেদের ক্ষমতা জাহির করার জন্য নানান যজ্ঞ করতেন, যেমন – রাজসূয়, বাজপেয়, অশ্বমেধ ইত্যাদি।
- রাজার কাজ – রাজাদের বিভিন্ন রাজকর্তব্য পালন করতে হত, যেমন – প্রজাদের সুরক্ষা দেওয়া, সুষ্ঠভাবে রাজ্যপাট চালানো, গোধন রক্ষা করা, কর আদায় করা। তবে বৈদিক যুগের রাজারা স্বেচ্ছাচারী ছিলেন না। রাজকাজে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন ধরনের রাজকর্মচারী নিয়োগ করা হত। যেমন – গুপ্তচর, উগ্র বা পুলিশ প্রভৃতি।
বৈদিক সমাজের বর্ণাশ্রম প্রথা ও সামাজিক ভেদাভেদ কেমন খারাপ, সে বিষয়ে আলোচনা করে বন্ধুকে একটি চিঠি লেখো।
সুপ্রিয় দেবজিৎ,
অনেক দিন পর চিঠি লিখলাম। আশা করি তুমি ও তোমার বাড়ির সকলে ভালো আছো। আজকে তোমার চিঠি লেখার মূল কারণ হল বৈদিক সমাজে প্রচলিত বর্ণাশ্রম ও সামাজিক ভেদাভেদের অন্ধকার দিকগুলি জানানো।
পাঠ্য বই পড়ে এবং শিক্ষক মহাশয়ের কাছ থেকে জানতে পারলাম পরবর্তী বৈদিক যুগে (১০০০-৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) বর্ণপ্রথা বেশ কঠোর হয়েছিল। এযুগে পারিবারিক সূত্রে বা জন্মসূত্রে মানুষের পেশা নির্ধারিত হত। অনেকের মত যে, বর্ণপ্রথাকে কেন্দ্র করেই বৈদিক সমাজে জাতিভেদ প্রথার সৃষ্টি হয়।
এর ফলে সমাজে ব্রাহ্মণদের প্রতিপত্তি ও প্রভাব বেড়ে গিয়েছিল। ক্ষত্রিয়রাও ক্ষমতার জোরে সমাজে তাদের প্রভাব ও প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল। তারা রাজকার্যে নিজেদের জায়গা দখল করেছিল। এমনকি রাজা হওয়ারও যোগ্যতা অর্জন করেছিল। অন্যদিকে বৈশ্য ও শূদ্রদের অবস্থা খারাপ থেকে খারাপতর হয়ে পড়েছিল। যত দিন গড়িয়েছে ততই শূদ্রদের অবস্থা খারাপের দিকে এগিয়ে গিয়েছিল। তাদের না ছিল সামাজিক মর্যাদা, না ছিল অর্থনৈতিক ক্ষমতা। উচ্চবর্ণের মানুষরা তাদের হেয় প্রতিপন্ন করত। ক্রমে তারা অদ্ভুত হয়ে পড়ে। উচ্চবর্ণের মানুষ তাদেরকে ঘৃণা করা শুরু করে। শহরে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়। তাদের ছায়া মাড়ানো অপবিত্র কাজ বলে প্রচলিত হয়। এমনকি যে কোনো কারণে উচ্চবর্ণের লোকেরা তাদের হত্যা করতে পারত।
দুঃখের বিষয় গোটা মধ্যযুগ এমনকি ব্রিটিশ আমলেও এই ধারা অব্যাহত ছিল। আমি এই ঘৃণ্য প্রথাকে মোটেই সমর্থন করি না। আশা করি তুমিও করবে না। ‘জন্ম হউক যথা তথা । কর্ম হউক ভালো’-আমি এই তত্ত্বে বিশ্বাসী। আমি মনে করি জাতপাতের বিভাজন দ্বারা মানুষের যোগ্যতাকে অবদমিত করা উচিত হবে না। সেক্ষেত্রে যোগ্যতা হওয়া উচিত কাজের মানদণ্ড বা মাপকাঠি। তা নাহলে দেশ ও দশের উন্নতি হবে কী করে?
যদিও আজ আধুনিক শিক্ষার কল্যাণে দেশ থেকে এইসব প্রাচীন ধ্যানধারণার প্রকোপ অনেকটাই কমে গেছে। আশা করব বেশি করে মানুষ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। যাতে করে দেশ থেকে এই বর্বর প্রথার অবসান হয়।
এই কামনা করে আমি চিঠি লেখা শেষ করলাম। ভালো থেকো। চিঠির উত্তর দাও। অপেক্ষায় থাকলাম।
ইতি-
তোমার বন্ধু
দেবায়ন
পশ্চিম তাজপুর
হুগলি
৬.৯.২২
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায়, “ভারতীয় উপমহাদেশের – প্রাচীন ইতিহাসের ধারা (দ্বিতীয় পর্যায় : আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০-৬০০ অব্দ)” অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হবে, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ!