এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ (রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং ধর্মের বিবর্তন – উত্তর ভারত) – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায়, ‘খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ (রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং ধর্মের বিবর্তন-উত্তর ভারত)’ অধ্যায়ের কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও সহায়ক। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণী এবং চাকরির পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসতে দেখা যায়।

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ
ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ
Contents Show

জনপদ শব্দটি কীভাবে এসেছিল?

প্রাচীন ভারতে জনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল ছোটো ছোটো রাজ্য। এই জন শব্দ থেকেই এসেছিল জনপদ শব্দটি।

মহাজনপদ কাকে বলা হয়?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক নাগাদ একেকটি জনপদের ক্ষমতা ক্রমে বাড়তে থাকে। সেখানকার শাসকরা যুদ্ধ করে নিজেদের রাজ্যের সীমানা বাড়াতে থাকেন। ছোটো ছোটো জনপদগুলির কয়েকটি পরিণত হয় বড়ো রাজ্যে। এই বড়ো রাজ্যগুলিই মহাজনপদ বলে পরিচিত হয়। জনপদের থেকে আয়তন ও ক্ষমতায় বড়ো ভূখণ্ডই হল মহাজনপদ।

কীভাবে মহাজনপদের সৃষ্টি হয়েছিল?

ব্যাবসাবাণিজ্যের বিকাশ, উদ্যমী শাসকদের ক্রিয়াকলাপ প্রভৃতি কারণে জনপদগুলিতে লোকবসতি বাড়তে থাকে। আয়তন ও ক্ষমতার দিক থেকে জনপদগুলি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে মহাজনপদে পরিণত হয়।

ষোড়শ মহাজনপদ কাকে বলে?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে বর্তমান আফগানিস্তানের কাবুল থেকে দক্ষিণ ভারতের গোদাবরী নদীর তীর পর্যন্ত। 16টি যে-বড়ো বড়ো রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল, তাদেরকে একত্রে ষোড়শ মহাজনপদ বলে।

বৈদিক যুগের রাজাদের সঙ্গে ষোড়শ মহাজনপদের রাজাদের কী পার্থক্য ছিল?

বৈদিক যুগের রাজাদের সঙ্গে ষোড়শ মহাজনপদের রাজাদের পার্থক্যগুলি নিম্নলিখিত –

  • বৈদিক যুগের রাজাদের তুলনায় ষোড়শ মহাজনপদের রাজাদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি অনেক বেশি ছিল।
  • ষোড়শ মহাজনপদের রাজাদের সম্পদ তুলনামূলকভাবে বৈদিক যুগের রাজাদের থেকে অনেক বেশি ছিল।

কোন্ সময় থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে জনপদের কথা জানা যায়? মূলত মহাজনপদগুলি কোথায় গড়ে উঠেছিল?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের গোড়ার দিকে ভারতীয় উপ- মহাদেশে জনপদের কথা জানা যায়। গঙ্গা-যমুনার উপত্যকাকে ভিত্তি করেই বেশিরভাগ মহাজনপদ গড়ে উঠেছিল।

গঙ্গা উপত্যকায় মহাজনপদগুলি গড়ে উঠেছিল কেন?

গঙ্গা উপত্যকা ছিল মূলত সমতল, জনবহুল ও সমৃদ্ধশালী। সেই কারণেই গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় মহাজনপদগুলি গড়ে উঠেছিল।

যে-চারটি মহাজনপদ শেষপর্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল সেগুলি কী কী?

অথবা, ষোলোটি মহাজনপদের প্রধান চারটি মহাজনপদের নাম লেখো।

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতবর্ষের চারটি শক্তিশালী মহাজনপদ হল অবন্তি, বৎস, কোশল ও মগধ।

অধিকাংশ মহাজনপদে কী ধরনের শাসন ছিল? সেগুলিকে কী বলা হত?

অধিকাংশ মহাজনপদে ছিল রাজার শাসন বা রাজতান্ত্রিক শাসন। সেই মহাজনপদগুলিকে বলা হত রাজতান্ত্রিক রাজ্য।

অরাজতান্ত্রিক মহাজনপদগুলির শাসনব্যবস্থা কীভাবে চলত?

অরাজতান্ত্রিক মহাজনপদগুলিতে রাজার কোনো শাসন প্রচলিত ছিল না। সেখানে একাধিক উপজাতি বসবাস করত এবং তারা নিজের নিজের রাজ্যে অরাজতান্ত্রিক শাসন কায়েম রাখত।

মগধের উত্থানের দুটি কারণ লেখো।

মগধের উত্থানের দুটি কারণ হল –

  • মগধের ভৌগোলিক অবস্থান একে প্রাকৃতিক সুরক্ষা ও সম্পদ দিয়েছিল।
  • মগধের উদ্যমী রাজাদের কৃতিত্বে মগধ শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত হয়েছিল।

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের আগে কোন্ অঞ্চলকে মগধ বোঝাত? সেখানে কী ধরনের শাসনব্যবস্থা চালু ছিল?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের আগে দক্ষিণ বিহারের সামান্য কিছু এলাকাকে বলা হত মগধ। সেখানে রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু ছিল।

দুটি রাজতান্ত্রিক ও দুটি অরাজতান্ত্রিক মহাজনপদের নাম লেখো।

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের দুটি রাজতান্ত্রিক মহাজনপদ হল বৎস, অবন্তি ও দুটি অরাজতান্ত্রিক মহাজনপদের নাম হল বৃজি ও মল্ল।

রাজতান্ত্রিক রাজ্য ও প্রজাতান্ত্রিক রাজ্যের মধ্যে তুমি কাকে বেশি পছন্দ করবে এবং কেন করবে?

অবশ্যই প্রজাতান্ত্রিক রাজ্যকে বেশি পছন্দ করবো। কারণ –

  • প্রজাতন্ত্রে জনগণের, মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
  • রাজার স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম থাকে।

গণরাজ্য কী?

কতকগুলি মহাজনপদ ছিল অরাজতান্ত্রিক। সেখানে কোনো রাজতন্ত্র ছিল না। সেগুলিকে বলা হত গণরাজ্য।

গণরাজ্যগুলির বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

সাধারণভাবে গণরাজ্যগুলিতে এক-একটি উপজাতি বাস করত। তারা নিজের নিজের রাজ্যে অরাজতান্ত্রিক শাসন বজায় রেখেছিল।

বজ্জি রাজ্যের অবস্থা কেমন ছিল?

বজ্জি রাজ্য ছিল একটি শক্তিশালী গণরাজ্য। এই মহাজন-পদটি ছিল মগধের কাছেই। এই জনপদের শাসনক্ষমতা ছিল কয়েকটি গোষ্ঠীর হাতে।

জান কি? – বজ্জির অপর নাম বৃজি।

বজ্জিদের একজোট থাকার জন্য গৌতম বুদ্ধ কী করেছিলেন?

বজ্জিদের একজোট থাকার জন্য গৌতম বুদ্ধ কয়েকটি নিয়ম পালনের কথা বলেছিলেন। যা থেকে মনে হয়। বজ্জিদের লিখিত আইন ছিল।

কৃষকরা পশুবলির বিরোধী ছিল কেন?

চাষের জন্য গবাদি পশুর প্রয়োজন ছিল। তাই কৃষকরা যজ্ঞের জন্য পশুবলির বিরোধী ছিল।

সমাজের বিভিন্ন মানুষ ব্রাহ্মণদের বিরোধিতা করেছিল কেন?

ব্রাহ্মণদের তৈরি ধর্মীয় বিধিনিষেধে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে গিয়েছিল। লোহার ব্যবহার ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। ফলে তারা ব্রাহ্মণদের বিরোধিতা করতে শুরু করেছিল।

প্রাচীন ভারতের দ্বিতীয় নগরায়ণ বলতে কী বোঝো?

প্রাচীন ভারতে প্রথম নগরায়ণ হয় হরপ্পা সভ্যতার হাত ধরে। পরে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে উত্তর ভারতে অনেকগুলি জনপদ গড়ে ওঠে। এই সময়কালকেই বলা হয় দ্বিতীয় নগরায়ণের যুগ।

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতীয় সমাজে নতুন ধর্মমতের চাহিদা তৈরি হয়েছিল কেন?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে বৈদিক ব্রাহ্মণ্য ধর্ম আচারনিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। তার শিকার হয়েছিল ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্ররা। সেকারণে তখন নতুন ধর্মমতের চাহিদা তৈরি হয়েছিল।

নব্যধর্মের প্রভাবে কী পরিবর্তন এসেছিল?

নব্যধর্মগুলি ব্রাহ্মণ্য ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করেছিল। মানুষের সহজ-সরল জীবনযাপনের ওপর বেশি করে জোর দিয়েছিল।

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ফসলের উৎপাদন বেড়ে যায় কেন?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতীয় উপমহাদেশের সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতির ক্ষেত্রে নানা পরিবর্তন আসে। বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকে জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করে। অন্যদিকে লোহার লাঙলের ব্যবহার বেড়ে যায়। ফলে ফসলের উৎপাদনও বহুগুণ বেড়ে যায়।

জেনে রাখো – প্রধানত ব্রাহ্মণ্য ধর্মের নানা বুটি-বিচ্যুতি বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের উত্থানের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল। তা ছাড়া ব্রাহ্মণ্য ধর্মের যাগযজ্ঞ, আচারসর্বস্বতা এবং ব্রাহ্মণদের প্রতিপত্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের উদ্ভব হয়েছিল বলে, একে প্রতিবাদী বা নব্যধর্ম বলা হয়। লোহার আবিষ্কার বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের উত্থানের পথকে ত্যারও প্রশস্ত করেছিল। লোহা আবিষ্কৃত হলে অস্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ ক্ষত্রিয়দের প্রভাব প্রতিপত্তি বেড়ে যায়। আবার লোহা শুধু অস্ত্রে নয়, লাঙলের ফলাতেও ব্যবহূত হয়েছিল, ফলে বৈশ্যদের প্রভাবও বেড়ে যায়। এই ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যরা, ব্রাহ্মণদের সমান সমান অধিকার দাবি করলে এবং বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম মেনে নিলে প্রতিবাদী বা নব্যধর্মের উত্থানের পথ প্রশস্ত হয়।

সমাজের কোন্ কোন্ অংশের মানুষ নব্যধর্ম আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র সম্প্রদায়ের মানুষ নব্যধর্ম আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন।

নব্যধর্ম কী সত্যিই নতুন ধর্ম ছিল?

অনেকের মতে, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম সম্পূর্ণ নতুন ধর্মমত ছিল না। কারণ বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের মূল সূত্রগুলি বেদের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছিল।

নব্যধর্মের কোন আদর্শগুলি জনগণের কাছে আকর্ষণীয় ছিল?

ধর্মাচরণের সহজ-সরল পন্থা, ব্রাহ্মণদের প্রভাব না থাকা, যাগযজ্ঞ, পশুবলি প্রথার অনুপস্থিতি, জাতিভেদ প্রথা প্রভৃতি না থাকায় মানুষ নব্যধর্মের আদর্শগুলি গ্রহণ করেছিল।

জৈন ও বৌদ্ধদের আগে ব্রাহ্মণদের ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরোধিতা করেছিলেন কোন্ দুটি গোষ্ঠী?

জৈন ও বৌদ্ধদের আগে ব্রাহ্মণদের ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরোধিতা করেছিলেন চার্বাক ও আজীবিক গোষ্ঠী।

জৈন ধর্মে মোট কতজন তীর্থংকর ছিলেন? তাঁদের মধ্যে শেষ তীর্থংকর কে?

জৈন ধর্মে মোট ২৪ জন তীর্থংকর ছিলেন। তাঁদের মধ্যে শেষ তীর্থংকর ছিলেন বর্ধমান বা মহাবীর।

জৈন ধর্মে তীর্থংকর বলতে কী বোঝো?

জৈন ধর্মের প্রধান প্রচারককে বলা হত তীর্থংকর। এই ধর্মে মোট চব্বিশজন তীর্থংকর ছিলেন। এঁদের মধ্যে শেষ দুজন হলেন পার্শ্বনাথ ও বর্ধমান মহাবীর।

বর্ধমান পরবর্তীতে মহাবীর নামে পরিচিত হলেন কেন?

বর্ধমান একটানা 12 বছর কঠোর তপস্যা করে সর্বজ্ঞানী হন। তাই তাকে মহাবীর বলা হয়।

জৈন ধর্ম কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে?

প্রথম দিকে জৈন ধর্ম মগধ, বিদেহ, কোশল ও অঙ্গরাজ্যে প্রচলিত ছিল। মৌর্য আমলে জৈনদের প্রভাব বাড়তে থাকে। এমনকি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যও জৈন ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে ওড়িশা থেকে মথুরা পর্যন্ত জৈন ধর্ম ছড়িয়ে পড়ে।

চতুর্যাম – এর সঙ্গে মহাবীর কোন্ নীতিটি যোগ করেছিলেন?

চতুর্যামের সঙ্গে মহাবীর ব্রহ্মচর্য নীতি যোগ করেছিলেন। এইটি যোগ করায় পঞ্চমহাব্রত – এর উদ্ভব হয়।

জৈন ধর্মে ‘অঙ্গ’ বলতে কী বোঝায়?

জৈন ধর্মের মূল উপদেশগুলি বারোটি ভাগে বিন্যস্ত। এই ভাগগুলিকে বলা হয় ‘অঙ্গ’। সংখ্যায় বারোটি বলে এইগুলিকে একসঙ্গে ‘দ্বাদশ অঙ্গ’ বলা হয়।

জৈন ধর্মের ত্রিরত্ন বলতে কী বোঝায়?

সৎ বিশ্বাস, সৎ জ্ঞান ও সৎ আচরণ – এই তিনটিকে একত্রে জৈন ধর্মে ত্রিরত্ন বলা হয়।

বুদ্ধ কে ছিলেন?

বুদ্ধ ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক। তাঁর প্রথম নাম ছিল সিদ্ধার্থ। নেপালের তরাই অঞ্চলের কপিলাবস্তুর শাক্য বংশে সিদ্ধার্থের জন্ম হয়। তিনিও ক্ষত্রিয় বংশের মানুষ ছিলেন।

জেনে রাখো – সিদ্ধার্থের জন্মের সাতদিন পরেই তিনি মাতৃহীন হলে তাঁর বিমাতা গৌতমি তাঁকে লালনপালন করেন। পরবর্তীকালে তাই তাঁর নাম হয় গৌতম।

দুঃখ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বুদ্ধ কী বলেছিলেন?

দুঃখ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বুদ্ধ আটটি উপায়ের কথা বলেছিলেন। গৌতম বুদ্ধ প্রবর্তিত প্রধান আটটি উপায়কে একত্রে বলা হয় অষ্টাঙ্গিক মার্গ।

বৌদ্ধ ধর্মসংগীতিগুলিতে কী হত?

বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাসে ধর্মসংগীতিগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ধর্মসংগীতি অনেকটা ধর্মসম্মেলনের মতো ছিল। এই সংগীতিতে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা মিলিত হতেন। এগুলিতে বৌদ্ধ ধর্মের নানা বিষয় আলোচনা হত।

তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতিতে কী হয়েছিল?

তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতিতে বৌদ্ধ সংঘের নিয়মগুলি কঠোরভাবে মানার ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। এর। দ্বারা সংঘের মধ্যে ভাঙন আটকানোরও চেষ্টা করা হয়।

কোন্ বৌদ্ধ সংগীতিতে হীনযান ও মহাযানরা চূড়ান্তভাবে আলাদা হয়ে যায়? মহাযান কাদের বলা হয়?

চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতিতে হীনযান ও মহাযানরা চূড়ান্তভাবে আলাদা হয়ে যায়। বৌদ্ধদের মধ্যে যাঁরা মূর্তিপুজো করতেন তাঁদের বলা হত মহাযান।

ত্রিপিটক কী?

বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম ত্রিপিটক। ত্রিপিটক তিনটি ভাগে বিভক্ত, যথা – সুত্তপিটক, বিনয়পিটক ও অভিধম্মপিটক।

বিনয়পিটকের বিষয়বস্তু কী?

বিনয়পিটকে বৌদ্ধ সংঘের ও বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের আচার-আচরণের নিয়মাবলি লেখা আছে।

বৌদ্ধ ধর্মে ত্রিরত্ন কী?

বৌদ্ধ ধর্মে গৌতম বুদ্ধ হলেন প্রধান ব্যক্তি। তাঁর প্রচারিত ধর্ম বৌদ্ধ ধর্ম নামে খ্যাত। আর বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের দায়িত্ব অর্পিত হত বৌদ্ধ সংঘের ওপর। তাই বুদ্ধ, ধম্ম ও সংঘ এই তিনটিকে একত্রে বলা হয় বৌদ্ধ ধর্মের ত্রিরত্ন।

মজঝিম বা মধ্যপন্থা কী?

বুদ্ধের মতে, কঠোর তপস্যা দ্বারা নির্বাণ বা মুক্তিলাভ সম্ভব নয়, আবার চূড়ান্ত ভোগবিলাসেও মুক্তি পাওয়া যায় না, বুদ্ধ তাই মধ্যপন্থা পালনের কথা বলেছেন। এই মধ্যপন্থাকেই পালি ভাষায় মজঝিম বলা হয়।

মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধ ধর্মপ্রচারের জন্য নগরগুলিতে যেতেন কেন?

নগরে নানা রকমের মানুষকে একত্রে পাওয়া যেত। তা ছাড়া ব্রাহ্মণ্য ধর্মে নগরে যাওয়া বা থাকা পাপ বলে মনে করা হত। তাই ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরোধিতায় বুদ্ধ ও মহাবীর ধর্মপ্রচারের জন্য নগরগুলিতে যেতেন।

জাতকের গল্প কোন্ ভাষায় লেখা হয়? এই গ্রন্থগুলির মূলবিষয় কী?

জাতকের গল্প পালি ভাষায় লেখা হয়। এই গ্রন্থগুলির মূলবিষয় ছিল গৌতম বুদ্ধের পূর্ব জন্মের কাহিনি।

জাতকের গল্পগুলির বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

অথবা, জাতক কী?

অথবা, জাতকের গল্প কী?

জাতক হল একটি বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ। যাতে গৌতম বুদ্ধের পূর্বজন্মের কাহিনির উল্লেখ আছে। এগুলি পালি ভাষায় বলা ও লেখা হত। কেবল মানুষ নয়, পশুপাখিরাও জাতকের চরিত্রে স্থান পেয়েছে। এগুলি থেকে সেকালের সমাজের নানা কথা জানা যায়। এরূপ পাঁচশতাধিক জাতকের গল্প কাহিনি পাওয়া যায়।

দুটি গণরাজ্যের নাম লেখো।

মল্ল ও বৃজি বা বজ্জি ছিল ষোড়শ মহাজনপদের অন্তর্গত দুটি গণরাজ্য। এই দুটি জনপদে রাজার শাসন ছিল না।

সেকালে মগধ বলতে কোন্ কোন্ জেলাকে বোঝানো হত? মগধের রাজধানীর নাম কী ছিল?

সেকালে (খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে) মগধ বলতে বর্তমান বিহারের পাটনা ও গয়া জেলাকে বোঝানো হত। প্রথমে মগধের রাজধানী ছিল রাজগৃহ। পরে হয় পাটলিপুত্র।

মগধ মহাজনপদে যে তিনটি রাজবংশ রাজত্ব করেছিল তার মধ্যে দুটির নাম লেখো।

মগধ মহাজনপদে প্রথম রাজত্ব করছিল হর্যঙ্ক বংশ। পরে শৈশুনাগ বংশ বা শিশুনাগবংশ এবং তারপর নন্দ রাজবংশ রাজত্ব করেছিল।

মল্লদের দুটি রাজ্যের নাম লেখো।

মল্লদের দুটি রাজ্য ছিল – পাবা ও কুশিনারা।

জৈন ও বৌদ্ধধর্ম প্রচারের ভাষা কী ছিল?

জৈন ও বৌদ্ধধর্ম প্রচারের ভাষা ছিল, যথাক্রমে – প্রাকৃত ভাষা ও পালি।

বৌদ্ধ ধর্মের ত্রিরত্ন – টীকা লেখো।

অথবা, বৌদ্ধধর্মের ত্রিরত্ন কী?

বৌদ্ধধর্মে অনুসৃত তিনটি আদর্শ বা কথা হল – বুদ্ধ, ধম্ম ও সংঘ। এগুলিকে একত্রে বলা হয় ত্রিরত্ন।

দিগম্বর কাদের বলা হত?

যে সমস্ত জৈনধর্মাবলম্বী জৈন দার্শনিক তথা সন্ন্যাসী ভদ্রবাহুর মত অনুযায়ী (তিনি বর্ধমান মহাবীরের পথকেই কঠোরভাবে মেনে চলতেন) বস্ত্রহীন হয়ে থাকত এবং উপাসনা করত তাদের বলা হত দিগম্বর।

কেবলিন নামে কে পরিচিত ছিলেন? প্রথম বৌদ্ধসংগীতি কার শাসনকালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

মহাবীর জৈন কেবলিন নামে পরিচিত ছিলেন। প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি মগধরাজ অজাতশত্রুর আমলে অনুষ্ঠিত হয়।

শ্বেতাম্বর কাদের বলা হত?

যে সমস্ত জৈন ধর্মাবলম্বী পার্শ্বনাথের পথ ও মত অনুযায়ী সাদা কাপড় পরিধান করত, তাদের বলা হত শ্বেতাম্বর।

জৈন ধর্মের শেষ দুই তীর্থংকরের নাম কী?

জৈন ধর্মের শেষ দুই তীর্থংকরের নাম পার্শ্বনাথ ও মহাবীর।

পরবর্তী বৈদিক যুগে কটি বর্ণের উল্লেখ পাওয়া যায় ও কী কী? তাদের কাজ কী?

পরবর্তী বৈদিক যুগে চারটি বর্ণের উল্লেখ পাওয়া যায়, যথা – ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। তাদের কাজ ছিল যথাক্রমে – অধ্যাপনা করা, যুদ্ধ করা, ব্যবসা করা এবং প্রথম তিনবর্ণের সেবা করা।

বুদ্ধদেব কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

566 খ্রিস্টপূর্বাব্দে বুদ্ধদেব বা গৌতম বুদ্ধ নেপালের তরাই অঞ্চলের কপিলাবস্তু নগরের লুম্বিনী উদ্যানে জন্মগ্রহণ করেন।

বোধিসত্ত্ব বা বোধিসত্ত্বের ধারণা কী?

বোধিসত্ত্ব কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল বুদ্ধত্ব লাভ বা পরম জ্ঞান লাভ বা যিনি শাশ্বত জ্ঞানলাভ করেছেন। বোধিসত্ত্ব শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন গৌতম বুদ্ধ স্বয়ং। এটি একটি পালি শব্দ। এর দ্বারা তিনি তাঁর পূর্বজন্মের অবস্থা থেকে বোধিলাভ করার পূর্ববর্তী সময়কালকে বুঝিয়েছেন। যদিও এ নিয়ে বিতর্ক আছে।

জৈন ও বৌদ্ধধর্মের দুটি পার্থক্য লেখো।

জৈন ও বৌদ্ধধর্মের দুটি পার্থক্য হল –

জৈনধর্মবৌদ্ধধর্ম
জৈনরা সর্বপ্রাণবাদে বিশ্বাসী বিশ্বাসী ছিল।কিন্তু বৌদ্ধরা জীব-প্রাণবাদে ছিল বিশ্বাসী ছিল।
জৈনরা কঠোর কৃচ্ছসাধনে বিশ্বাসী ছিল।কিন্তু বৌদ্ধরা তা ছিলনা। তারা মজঝিম বা মধ্যপস্থা নীতিতে বিশ্বাসী ছিল।

কী কী কারণে মগধ শেষপর্যন্ত বাকি মহাজনপদগুলির থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠে?

মগধ যে কারণে বাকি মহাজনপদগুলির তুলনায় শক্তিশালী ছিল, তা হল –

  • তার প্রাকৃতিক অবস্থানগত সুবিধা ও নিরাপত্তা লাভের জায়গা। মগধের রাজধানী রাজগৃহ ছিল 5টি পাহাড় দিয়ে ঘেরা। ফলে সে বহিঃশত্রুর আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেত।
  • মগধ ছিল বনজ সম্পদ, খনিজ সম্পদ ও কৃষিজ সম্পদে পরিপূর্ণ। ফলে তার অর্থনীতি ছিল খুবই উন্নত। যা অন্যান্য জনপদগুলির ছিল না।

দ্বাদশ অঙ্গ বলতে কী বোঝো?

অথবা, দ্বাদশ অঙ্গ কী?

প্রথম জৈন-সংগীতিতে জৈন দার্শনিক স্থূলভদ্রের অনুপ্রেরণায় মহাবীর প্রচারিত জৈনধর্মকে মোট ১২টি অঙ্গে সংকলিত করা হয়। এগুলিকে দ্বাদশ-অঙ্গ বলা হয়। বর্তমানে এটিকে জৈন আগম বা জৈন সিদ্ধান্ত বলা হয়।

কেবলিন – টীকা লেখো।

আনুমানিক 540 খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহাবীর বৈশালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বনাম ছিল বর্ধমান। 30 বছর বয়সে তিনি সংসার ত্যাগ করেন এবং কঠোর তপস্যা করে তিনি কৈবল্য বা সিদ্ধিলাভ করেন। এইভাবে তিনি সর্বজ্ঞানী হন এবং কেবলিন নামে পরিচিত হন।

নব্যধর্ম আন্দোলন কেন জনপ্রিয় হয়েছিল?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরুদ্ধে নানা কারণে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছিল, কারণ –

  • এই ধর্ম ছিল আচারকেন্দ্রিক। যজ্ঞে প্রচুর গো-বলি দেওয়া হত।
  • সমুদ্রযাত্রা, ঋণ নেওয়া ও সুদ নেওয়া নিষিদ্ধ ছিল।
  • বর্ণভেদ প্রথা কঠোর ছিল।
  • শূদ্র ও প্রান্তিক মানুষের কোনো সামাজিক মর্যাদা ছিল না বললেই চলে।
  • তাদের কাছে সংস্কৃত ভাষা ছিল দুর্বোধ্য। অন্যদিকে নব্যধর্মগুলি ছিল উদার। তা পালন করাও সহজ ছিল। সেখানে নারীদের স্বাধীনতা ও মর্যাদা ছিল। বর্ণভেদ প্রথার কঠোরতা ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষ নব্যধর্ম আন্দোলনের অনুরাগী হয়ে পড়ে এবং এই আন্দোলন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

শ্বেতাম্বর ও দিগম্বরের দুটি পার্থক্য লেখো।

শ্বেতাম্বর ও দিগম্বরের মধ্যে দুটি পার্থক্য হল –

শ্বেতাম্বরদিগম্বর
যে সমস্ত জৈন ধর্মাবলম্বী সাদা কাপড় পরিধান করত তাদের বলা হত শ্বেতাম্বর।যারা শরীরে কোনো কাপড় না পরে কৃচ্ছসাধন করত তাদের বলা হত দিগম্বর।
শ্বেতাম্বর সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন জৈন দার্শনিক স্থূলভদ্র।দিগম্বর সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন জৈন দার্শনিক ভদ্রবাহু।

বোধিবৃক্ষ কাকে বলে?

সংসার ত্যাগ করার পর গৌতম বা সিদ্ধার্থ গয়ায় নৈরঞ্জনা নদীর তীরে একটি পিপুল গাছের নীচে বসে দীর্ঘ তপস্যা করেন। অবশেষে তিনি তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করেন। তখন থেকে তিনি বোধি বা জ্ঞানলাভ করেন। তাঁর নাম হয় বুদ্ধদেব। সেকারণে এই গাছের নাম হয় বোধিবৃক্ষ।

ত্রিপিটকের ভাগগুলি লেখো।

অথবা, ত্রিপিটক কী?

ত্রিপিটকের 3টি ভাগ, যথা – সুত্তপিটক, বিনয়পিটক ও অভিধম্মপিটক।

ত্রিপিটক হল পালি ভাষায় লেখা প্রধান বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ। এতে বুদ্ধের দর্শন ও উপদেশ সংকলিত হয়েছে। এটি প্রথম বৌদ্ধ সংগীতিতে সংকলিত হয়।

হীনযান ও মহাযান কাদের বলা হয়?

গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর পর নানা কারণে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা দুটি ভাগ বা সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে যারা বুদ্ধের মূর্তি পূজা শুরু করেছিল এবং যারা ছিলেন উদারপন্থী তাদের বলা হত মহাযান। কিন্তু যে সমস্ত বৌদ্ধধর্মাবলম্বী অত্যন্ত রক্ষণশীল ছিল তাদের বলা হত হীনযান।

চতুর্থ বৌদ্ধসংগীতি কার আমলে কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?

চতুর্থ বৌদ্ধসংগীতি সম্রাট কণিষ্কের আমলে কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত হয়।

দ্বিতীয় বৌদ্ধসংগীতির পর বৌদ্ধরা কী কী ভাগে ভাগ হয়ে যায়?

দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতির পর বৌদ্ধরা দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়, যথা –

  • থেরাবাদী (যাঁরা বুদ্ধদেবকে শিক্ষক বলে মনে করেন)
  • মহাসাংঘিক (যাঁরা বুদ্ধদেবকে দেবতা জ্ঞানে পূজা করার পক্ষপাতি ছিলেন)

‘আর্যসত্য’ কী?

ইহলোকে জন্মান্তরের হাত থেকে মানুষের মুক্তিলাভের উপায় হিসেবে গৌতম বুদ্ধ চারটি সত্য-র কথা বলেছেন। এগুলি হল –

  • পৃথিবী দুঃখময়
  • মানুষের আসক্তি থেকে দুঃখ সৃষ্টি হয়
  • তা দূর করতে পারলেই মুক্তিলাভ করা যায় এবং
  • এই মুক্তি পেতে একটি নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করতে হবে।

গৌতম বুদ্ধ প্রবর্তিত ‘পঞ্চশীল’ কী?

গৌতম বুদ্ধ মানুষকে পাঁচটি শীল বা আচরণবিধি মানার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন, যা বৌদ্ধধর্মে ‘পঞ্চশীল’ নামে খ্যাত। এই পাঁচটি শীল হল – ব্যভিচার, মদ্যপান, মিথ্যাভাষণ, পরস্বাপহরণ, হিংসা থেকে বিরত থাকা।

প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি সম্পর্কে লেখো।

প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি অনুষ্ঠিত হয় অজাতশত্রুর রাজত্বকালে রাজগৃহের সপ্তপর্ণী গুহায়। এই সংগীতির সভাপতি ছিলেন মহাকাশ্যপ। এতে সুত্তপিটক ও বিনয়পিটক সংকলিত হয়।

দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি সম্পর্কে লেখো।

দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি অনুষ্ঠিত হয় কালাশোক বা – কাকবর্ণের রাজত্বকালে। এটি হয় বৈশালীতে। বৌদ্ধপণ্ডিত যশ এই সংগীতিতে সভাপতিত্ব করেন। এতে বৌদ্ধরা দু-টি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়। যথা – থেরবাদী ও মহাসাংঘিক।

তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতি সম্পর্কে লেখো।

তৃতীয় বৌদ্ধ ধর্মসংগীতির সভাপতিত্ব করেন – মোগলিপুত্ত তিসস। এটি অনুষ্ঠিত হয় মৌর্য সম্রাট অশোকের আমলে, পাটলিপুত্রে। এতে বৌদ্ধ ধর্মের নিয়মগুলি পালনের ওপর জোর দেওয়া হয় এবং সংঘের মধ্যে ভাঙন আটকানোর চেষ্টা করা হয়।

চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতি সম্পর্কে লেখো।

অথবা, চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতির গুরুত্ব লেখো।

কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ বৌদ্ধ ধর্মসংগীতি। এতে সভাপতিত্ব করেন বসুমিত্র। এই সংগীতি কনিষ্কের আমলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বৌদ্ধরা হীনযান ও মহাযান নামে দু-টি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়।

কোন্ বৌদ্ধসংগীতিতে বৌদ্ধরা হীনযান ও মহাযানে ভাগ হয়ে যায়?

কনিষ্কের শাসনকালে বসুমিত্রের সভাপতিত্বে কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ধর্মসংগীতিতে বৌদ্ধরা হীনযান ও মহাযান নামে দু-টি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়।

সংঘ বলতে কী বোঝো?

বৌদ্ধ ধর্মের প্রধান বিষয় ছিল ত্রিরত্ন, যথা – বৌদ্ধ, ধম্ম ও সংঘ। গৌতম বুদ্ধ জীবিতকালে তাঁর শিষ্যদের নিয়ে যে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন তাকেই বলা হয় সংঘ বা বৌদ্ধ সংঘ। এই সংঘের প্রথম ভিক্ষুণী ছিলেন তাঁর বিমাতা বা মাসি গৌতমী। এই সংঘের অন্যতম পুরুষ সন্ন্যাসী ছিলেন বুদ্ধের প্রিয় শিষ্য আনন্দ।


আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায়, “খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ (রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং ধর্মের বিবর্তন-উত্তর ভারত)” অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হবে, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ!

Share via:

মন্তব্য করুন