এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ) – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায়, ‘অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ)’ অধ্যায়ের কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও সহায়ক। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণী এবং চাকরির পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসতে দেখা যায়।

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা
ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা
Contents Show

ষোড়শ মহাজনপদের আমলে গবাদি পশু বলি দেওয়া কমে যায় কেন?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতে কৃষির জন্য গবাদি পশু বিশেষ করে বলদের প্রয়োজন ছিল। সেই কারণে ষোড়শ মহাজনপদের আমলে গবাদি পশু বলি দেওয়া কমতে থাকে।

ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নগরায়ণ এবং দ্বিতীয় নগরায়ণ -এর মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।

প্রথম নগরায়ণ এবং দ্বিতীয় নগরায়ণের মধ্যে পার্থক্য –

প্রথম নগরায়ণদ্বিতীয় নগরায়ণ
1. প্রথম নগরায়ণ দেখা গিয়েছিল তাম্র-প্রস্তর যুগের হরপ্পা সভ্যতায়।1. দ্বিতীয় নগরায়ণ দেখা গিয়েছিল পরবর্তী বৈদিক যুগে উত্তর ভারতে বিশেষত গঙ্গা উপত্যকায়।
2. প্রথম নগরায়ণ পর্বে হরপ্পা ও মহেন-জো-দারো ছিল দুটি বড়ো নগর।2. এই পর্বে 16টি মহাজন- পদের অস্তিত্ব দেখা যায়।

দ্বিতীয় পর্যায়ের নগরায়ণ কী? বা দ্বিতীয় নগরায়ণ কাকে বলে?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক নাগাদ ভারতে বিশেষ করে উত্তর ভারতের গঙ্গা উপত্যকায় যে নগরের উদ্ভব ঘটে তাকে বলা হয় দ্বিতীয় পর্যায়ের নগরায়ণ।

ষোড়শ মহাজনপদের আমলে কী কী লোহার দ্রব্যাদি প্রত্নতাত্ত্বিকরা খুঁজে পেয়েছেন?

প্রত্নতাত্ত্বিকরা ষোড়শ মহাজনপদের আমলে যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র, দা, কুড়ুল, কুঠার ও কিছু লাঙলের ফলা খুঁজে পেয়েছেন।

ষোড়শ মহাজনপদের সময়ে উত্তর ভারতে কোন্ কোন্ জীবিকা সুপরিচিত ছিল?

ষোড়শ মহাজনপদের সময়ে উত্তর ভারতে ধোপা, নাপিত ও চিকিৎসক বা বৈদ্যদের জীবিকা সুপরিচিত ছিল।

মৌর্য আমলে কী কী আসবাবপত্র ব্যবহার করা হত?

মৌর্য আমলে খাট বা চৌকি, মাদুর, তোশক, চাদর, বালিশ প্রভৃতি আসবাবপত্র ব্যবহার করা হত।

মৌর্য আমলে কারিগর ও বণিকদের কাজের তদারকি কারা করত? খনিগুলির দেখভালের জন্য কাদের বহাল করা হত?

মৌর্য আমলে কারিগর ও বণিকদের কাজের তদারকি করত রাষ্ট্র। খনিগুলির দেখভালের জন্য রাজকর্মচারীদের বহাল করা হত।

মৌর্য আমলের পোশাক পরিচ্ছদ সম্পর্কে কী জানো?

মৌর্য আমলে সাধারণ পুরুষেরা আধুনিক ধুতি চাদরের মতো পোশাক পরতেন। মহিলারা সাধারণত পোশাকের উপর চাদর বা ওড়না ব্যবহার করতেন। অন্যদিকে ধনী ও রাজপরিবারের নারী-পুরুষ উভয়েই দামি পোশাক পরিধান করতেন।

মৌর্য আমলে যোগাযোগ ব্যবস্থার কীরকম উন্নতি হয়েছিল?

মৌর্য আমলে রাজধানীর সঙ্গে সাম্রাজ্যের নানা এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছিল। রাজপথ দেখাশোনা করার জন্য রাজকর্মচারী নিয়োগ করা হত।

প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে ‘সেতু’ বলতে কী বোঝাত?

প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে সেতু বলতে জলসেচ প্রকল্পগুলিকে বোঝানো হত। প্রাচীনকালে সেতু ছিল দু-ধরনের। প্রাকৃতিক জলের উৎসকে ভিত্তি করে ছিল এক ধরনের সেতু। আর এক ধরনের সেতু কৃত্রিম উপায়ে অন্য এলাকা থেকে প্রয়োজনীয় জলের সরবরাহের মাধ্যমে নির্মিত হত।

প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে রাজকীয় উদ্যোগে জলসেচ ব্যবস্থার একটি উদাহরণ দাও। কার আমলে এটি বানানো হয়েছিল?

প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে রাজকীয় উদ্যোগে জলসেচ ব্যবস্থার একটি প্রধান উদাহরণ হল সুদর্শন হ্রদ। মৌর্য শাসক চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের শাসনকালে এটি বানানো হয়েছিল।

কুষাণ আমলে ধনী ব্যক্তিরা কীভাবে বিনোদন বা অবসর জীবনযাপন করতেন?

কুষাণ আমলে ধনী ব্যক্তিরা পাশা খেলা, শিকার, রথের দৌড়, কুস্তি প্রভৃতির মাধ্যমে বিনোদন বা অবসর জীবনযাপন করতেন।

জেনে রাখো – কুষাণ যুগে চিনের বিখ্যাত রেশম মধ্য-এশিয়া ও আফগানিস্তানের মধ্যদিয়ে ইরান ও রোমে রফতানি করা হত। তাই এই পথ রেশমপথ নামে পরিচিত।

কুষাণ আমলে কৃষিকাজে কী কী উপকরণ ব্যবহৃত হত?

কুষাণ আমলে কৃষিকাজে ব্যবহৃত উপকরণগুলি হল- লাঙল, কোদাল, কুঠার, দা প্রভৃতি।

সাতবাহন আমলে সমাজে মেয়েদের অবস্থা কীরকম ছিল?

সাতবাহন আমলে সমাজে মেয়েদের অবস্থান ছিল পুরুষের নীচে। শিক্ষার ক্ষেত্রেও তারা পিছিয়ে ছিল। অল্প বয়সে তাদের বিয়ে দেওয়া হত।

গুপ্ত ও গুপ্ত-পরবর্তী আমলে কীসের চাষ হত?

গুপ্ত ও গুপ্ত পরবর্তী আমলে ধান, আখ, তুলো, নীল, সরষে ও তৈলবীজের চাষ হত। দক্ষিণ ভারতে সুপারি, নারকেল ও নানারকম মশলা চাষও হতো।

গাথা সপ্তশতী গ্রন্থটির রচয়িতা কে ছিলেন? উক্ত গ্রন্থটি কোন্ ভাষায় রচিত?

গাথা সপ্তশতী (সাতশোটি গাথার সংকলন) গ্রন্থটির রচয়িতা ছিলেন সাতবাহন রাজা হাল। উক্ত গ্রন্থটি প্রাকৃত ভাষায় রচিত।

গুপ্ত যুগে কী কী পণ্য আমদানি ও রফতানি করা হত?

গুপ্ত যুগে ভারতে আমদানিকৃত পণ্যের তালিকায় ছিল – সোনা, নীলকান্তমণি, হাতির দাঁত, ঘোড়া, চিনের রেশম প্রভৃতি। রফতানিকৃত পণ্যের তালিকায় ছিল – মশলা, গোলমরিচ, চন্দন কাঠ, সুগন্ধি দ্রব্য, মুক্তা, মূল্যবান পাথর প্রভৃতি।

অগ্রহার ব্যবস্থা কী?

ভারতে আদি-মধ্যযুগে বিশেষত গুপ্ত যুগে ব্রাহ্মণ অথবা মন্দিরকে জমি দান করার প্রথাকে বলা হত অগ্রহার ব্যবস্থা। এই জমি ছিল নিষ্কর।

অগ্রহার ব্যবস্থার ফল কী হয়েছিল?

অগ্রহার ব্যবস্থার ফলে – জমিতে ব্যক্তিগত মালিকানা বৃদ্ধি পেয়েছিল। এইসব দান করা জমিতে আরও বেশি পরিমাণে কৃষিশ্রমিক নিয়োগ করা হত। ফলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছিল। তেমনি মানুষের জীবন জীবিকার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

দিল্লির কুতুবমিনারের পাশে লোহার স্তম্ভের বিশেষত্ব কী?

দিল্লির কুতুবমিনারের পাশে একটি লোহার স্তম্ভ আছে যেটি খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে তৈরি। এর প্রধান বিশেষত্ব এই যে, খোলা আকাশের নীচে থাকা সত্ত্বেও এই স্তম্ভে আজও মরচে পড়েনি।

গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে কোন্ কোন্ অঞ্চলে দূরপাল্লার বাণিজ্য হত?

গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে এশিয়া মহাদেশের নানা অঞ্চলের সঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশের বাণিজ্য চলত। বাণিজ্যিক সূত্রে পূর্ব উপকূলের তাম্রলিপ্ত বন্দরের খ্যাতি এসময় বৃদ্ধি পেয়েছিল। তামিলনাড়ুর কাবেরীপট্টিনম বন্দরের গুরুত্বও এসময় অক্ষুণ্ণ ছিল।

সংঘ বলতে কী বোঝো?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক নাগাদ ব্যাবসাবাণিজ্যের সমৃদ্ধির। কারণে কারিগর ও ব্যবসায়ীদের যে প্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে উঠেছিল সেগুলি সংঘ নামে পরিচিত। সংঘগুলি কারিগরি ও ব্যাবসা সংক্রান্ত বিবাদ মেটাত এবং পেশাগত নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করত। এ ছাড়া জিনিসপত্রের গুণমান ও মূল্য নির্ধারণ করাও সংঘের আয়ত্তাধীন ছিল। সংঘগুলি শ্রেণি, গণ ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিল।

গুপ্তরাজাদের চালু করা দুটি সোনার মুদ্রার নাম লেখো।

গুপ্তরাজাদের চালু করা দুটি সোনার মুদ্রা হল দীনার ও সুবর্ণ।

গুপ্তযুগে সমাজে বর্ণপ্রথা কেমন ছিল?

গুপ্তযুগে সমাজে বর্ণপ্রথা প্রচলিত থাকলেও সর্বত্র তা কঠোরভাবে অনুসৃত হত না। ব্রাহ্মণরা ছিল উচ্চ শ্রেণিভুক্ত। অন্যদিকে শূদ্র শ্রেণিকে চড়া হারে সুদ দিতে হত। এই আমলে শূদ্ররা কৃষি, পশুপালন ও বাণিজ্য করতে পারত। তবে এই পর্যায়ে চন্ডালদের অবস্থা ছিল সবচেয়ে খারাপ।

গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর আমলে চন্ডালদের অবস্থা কেমন ছিল?

গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর আমলে সবচাইতে খারাপ অবস্থা ছিল চন্ডালদের। তারা গ্রাম বা শহরে বসবাস করতে পারত না। ব্রাহ্মণদেরও স্পর্শ করতে পারত না।

গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালের সমাজে মেয়েদের অবস্থা কেমন ছিল?

গুপ্ত যুগে নারীজাতির অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। গুপ্ত যুগে নারীদের বিদ্যাচর্চা সমাজে নিন্দনীয় ছিল। তৎকালীন সমাজে মেয়েদের অল্পবয়সে বিবাহ হত। সে যুগে সমাজে বিধবা নারীদের অবস্থার অবনতি ঘটেছিল। বিধবাদের ওপর নতুন নতুন শাস্ত্রীয়বিধি – নিষেধ আরোপিত হয়েছিল।

স্ত্রীধন বলতে কী বোঝো?

গুপ্ত যুগে বিয়ের সময় মেয়েরা তাদের পিতার কাছ থেকে কিছু সম্পদ পেত। এই সম্পদের ওপর কেবল মেয়েদেরই অধিকার ছিল। তারা নিজেদের ইচ্ছামত সেই সম্পদ ব্যবহার করতে পারত। এই সম্পদকেই বলা হয় স্ত্রীধন।

গুপ্ত আমলের শিল্পচর্চার পরিচয় দাও।

গুপ্ত আমলে বিবিধ শিল্পচর্চার পরিচয় পাওয়া যায়। এই পর্যায়ে সুবর্ণকার, কুম্ভকার, রঙ্গকার, সূচিকার প্রভৃতি শিল্পশ্রেণির বিকাশ ঘটেছিল।

সুবর্ণকার ও সূচিকার বলতে কাদের বোঝায়?

কুষাণ যুগে যে সমস্ত শিল্পীরা সোনার গয়না বানাত, তাদের বলা হত সুবর্ণকার। আর যারা পোশাকে সূচিশিল্পের কাজ করত তাদের বলা হত সূচিকার।

ইন-তু কী?

অথবা, সুয়ান জাং -এর লেখায় ভারতবর্ষ কী নামে পরিচিত ছিল? তাতে কটি রাজ্য ছিল?

চিনা পর্যটক সুয়ান জাং সপ্তম শতকে ভারতে আসেন। তিনি ভারতবর্ষকে ইন-তু বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন এই ইন-তু বা ভারতবর্ষ 5টি ভাগে বিভক্ত এবং ইন-তু-তে 80টি রাজ্য ছিল।

গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর যুগে চন্ডালদের অবস্থা কেমন ছিল?

গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর যুগে সমাজে চণ্ডালদের অবস্থা শোচনীয় ছিল। তারা ছিল অস্পৃশ্য ও অপাংক্তেয়। তাদের ছায়া মাড়ানো নিষিদ্ধ ছিল। তারা নগরের বাইরে বসবাস করত। তাদের শহরে ঢোকা নিষিদ্ধ ছিল। জানা যায় গুপ্ত যুগে উচ্চবর্ণের লোকেরা তাদের হত্যা করতে পারত।

বণিক গ্রাম কাদের বলে?

গুপ্ত ও গুপ্ত পরবর্তী যুগে বণিকরা কারিগরদের মতো নিজস্ব সংঘ তৈরি করত। এগুলিকে বলা হত বণিক গ্রাম।

কারা প্রথম রুপোর মুদ্রা চালু করে? এই মুদ্রার নাম কী?

প্রাচীন ভারতে প্রথম গুপ্তরা (দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের আমলে) রুপোর মুদ্রা চালু হয়। এই মুদ্রার নাম ছিল রূপক।

দন্তকার ও রঙ্গকার বলতে কাদের বোঝায়?

কুষাণ যুগে যে সমস্ত শিল্পীরা হাতির দাঁতের দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করত, তাদের বলা হত দন্তকার। আর যারা কাপড়ের রং করত তাদের বলা হত রঙ্গকার।

গুপ্ত আমলে দূরপাল্লার বৈদেশিক বাণিজ্যে খানিক ঘাটতি দেখা দিয়েছিল কেন? এই সময় কোন্ বন্দরের খ্যাতি বেড়েছিল?

গুপ্তযুগের শেষদিকে (বুধগুপ্ত ও স্কন্দগুপ্তের সময়) ভারতে হুন আক্রমণ ঘটে। এর ফলে ব্যাবসাবাণিজ্যে এক অস্থির পরিস্থিতি দেখা দেয়। একারণে দূরপাল্লায় বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি দেখা দেয়। এই সময় পূর্বভারতের তাম্রলিপ্ত বন্দরের খ্যাতি বেড়েছিল।

গাথা সপ্তশতী কী? এটি কে সংকলন করেন?

গাথা সপ্তশতী হল প্রাকৃত ভাষায় লেখা 700টি গাথা বা কবিতার সংকলন। এই গ্রন্থটি সংকলন করেন সাতবাহন রাজা হাল।

গাথা সপ্তশতী বইটিতে গ্রামের জীবন কেন ফুটে উঠেছে?

গাথা সপ্তশতী বইটি সংকলন করেন সাতবাহন রাজা হাল। এই গ্রন্থে সমকালের গ্রাম্যজীবনের চিত্র ফুটে উঠেছে। জানা যায় তখন সাতবাহনবাসীদের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করত। তারা ছিল কৃষিজীবী। তারা খড় দিয়ে ছাওয়া ঘরে বাস করত। ঘর-বাড়িগুলি ছিল পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। গ্রামের মানুষ ছবি আঁকত, বাজনা বাজাত। উৎসবের সময় নাচ-গান করে আনন্দ উপভোগ করত।

প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে জলসেচ ব্যবস্থা কেমন ছিল?

প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে জলসেচ প্রকল্প – গুলিকে বলা হত সেতু। এই সেতু ছিল দুপ্রকার, যথা – প্রাকৃতিক জলের উৎসভিত্তিক সেতু, কৃত্রিম উপায়ে তৈরি সেতু।

প্রাচীন ভারতে জলসেচ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল কেন?

প্রাচীন ভারতে জলসেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হত যে কারণে, তা হল –

  • জমিতে জলসেচের ব্যবস্থা করে জমিকে চাষযোগ্য করে তোলা।
  • যাতে বেশি করে ফসল উৎপাদন করা যায় এবং খাদ্য সমস্যার সমাধান হয়।

মসলিন কাপড় কোথায় তৈরি হত? এর চাহিদা বৃদ্ধির কারণ কী?

প্রাচীন ভারতে বাংলায় মসলিন কাপড় তৈরি হত। এই কাপড়ের চাহিদা বৃদ্ধির কারণ ছিল এর গুণমান। এটি ছিল হাল্কা, সূক্ষ্ম ও সুন্দর। ফলে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে এটি আরামদায়ক ছিল। তাছাড়া এই কাপড়ের মূল্য ছিল অত্যন্ত বেশি। তাই ধনী লোকেদের কাছে এই কাপড় ছিল সম্ভ্রান্ততার প্রতীক।

কুষাণ যুগে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে কী কী দ্রব্য আমদানি করা হত এবং এখান থেকে কী কী দ্রব্য রপ্তানি করা হত?

কুষাণ যুগে ভারত থেকে যে দ্রব্য রপ্তানি করা হত, তা ছিল – হিরে, বৈদূর্যমণি, মুক্তো, বিভিন্ন মশলাপাতি, মসলিন কাপড় ইত্যাদি। যা এদেশে আমদানি করা হত, তা ছিল – রেশম ও কাচের তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র।

মৌর্যযুগে নারীর অবস্থা কেমন ছিল?

মৌর্যযুগে নারীদের অবস্থা ভালো ছিল। তার প্রমাণ পাওয়া যায়, যেমন –

  • সে যুগে নারীরা রাজ রক্ষিবাহিনীতে কাজ করত। ইন্ডিকা গ্রন্থ থেকে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের শাসনকালে একদল নারী রক্ষীর কথা জানা যায়।
  • তারা বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত থাকত, যেমন – রাজকর্মচারী, গুপ্তচর বৃত্তি, বয়ন শিল্প প্রভৃতি।

মহাজনপদগুলির আমলে কোন্ ধান ছিল সেরা? এই ধানের চাষ কোথায় বেশি হত?

মহাজনপদগুলির আমলে উত্তর ভারতে শালিধান ছিল সেরা ফসল। মগধ রাজ্যে এই ধানের চাষ বেশি হত।

মেগাস্থিনিস ভারতীয় সমাজকে কয়টি জাতিতে বিভক্ত করেন এবং কী কী?

মেগাস্থিনিস ভারতীয় সমাজকে (মৌর্য যুগ) 7টি জাতিতে বিভক্ত করেছিলেন। যথা – ব্রাহ্মণ, কৃষক, পশুপালক ও শিকারি, শিল্পী ও ব্যবসায়ী যোদ্ধা, গুপ্তচর ও সচিব বা মন্ত্রী। এই তথ্য পাওয়া যায় তাঁর ইন্ডিকা গ্রন্থে।

মৌর্য আমলে কী কী নতুন নগর গড়ে উঠেছিল?

মৌর্য যুগে উত্তর ভারতে অনেকগুলি নতুন নতুন নর্গর গড়ে উঠেছিল। সেই তালিকায় ছিল – বাংলার মহাস্থানগড়, বাণগড়, তাম্রলিপ্ত (বন্দর-নগর), চন্দ্রকেতুগড় ইত্যাদি। এছাড়া ওড়িশায় শিশুপালগড়ে এরূপ একটি নগর গড়ে উঠেছিল। দাক্ষিণাত্য ও দক্ষিণ ভারতেও এই সময় নতুন নতুন নগর গড়ে ওঠে। কাবেরী নদীর বদ্বীপে কাবেরীপট্রিনম ছিল বিখ্যাত বন্দর – নগর।

মৌর্য আমলে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি কীভাবে তৈরি হত?

মৌর্য যুগে সাধারণ মানুষ ইট, কাঠ, পাথর, মাটি প্রভৃতি উপকরণ দিয়ে ঘরবাড়ি বানাত। ঘরবাড়িগুলির দেওয়ালে মাটির পলেস্তরা দেওয়া হত।

গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর কালে কোন্ কোন্ অঞ্চলে বাণিজ্য হত?

গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর যুগে বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্য চলত, যেমন – তখন রোমের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন চলত। এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশের সঙ্গেও তখন ব্যবসাবাণিজ্য চলত।


আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায়, “অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ)” অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হবে, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ!

Share via:

মন্তব্য করুন