এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানাদিক (শিক্ষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও শিল্প) – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায়, ‘প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানাদিক (শিক্ষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও শিল্প)’ অধ্যায়ের কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও সহায়ক। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণী এবং চাকরির পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসতে দেখা যায়।

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানাদিক
ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানাদিক
Contents Show

বৈদিক যুগের শিক্ষার সঙ্গে গুপ্ত যুগের শিক্ষার তুলনামূলক আলোচনা করো।

নিম্নে বৈদিক যুগের শিক্ষার সঙ্গে গুপ্ত যুগের শিক্ষার তুলনামূলক আলোচনা করা হল –

বৈদিক শিক্ষা

গুরুর কাছে থেকে ছাত্রকে পড়াশোনা করতে হত। লেখাপড়ার প্রচলন তখনও হয়নি। পেশাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রদের বিভিন্ন বিষয় পড়তে হত। এই যুগে ছন্দ, কাব্য, ব্যাকরণ ও গণিত বিষয় পড়তে হত।

গুপ্ত যুগের শিক্ষা

গুপ্ত যুগের শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুকুল ব্যবস্থা ব্যবস্থা থাকলেও রাজাদের সাহায্যে বিভিন্ন বিদ্যালয় গড়ে উঠেছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি লেখাপড়ারও প্রচলন ছিল। লিপি, ভাষা, কাব্য, ব্যাকরণ, জ্যোতিষ, নাটক, আইন, রাজনীতি ও যুদ্ধবিদ্যার মতো পাঠ্যবিষয় পড়ানো হত।

প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা পদ্ধতি
প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা পদ্ধতি

জেনে রাখো –

নামপরিচয়
ধন্বন্তরীইনি ছিলেন গুপ্ত যুগের বিখ্যাত চিকিৎসক। তিনি বিক্রমাদিত্যের রাজসভার সদস্য ছিলেন।
শুশ্রুতইনি ছিলেন গুপ্ত যুগের প্রখ্যাত শল্যবিদ। যিনি রচনা করেন শুশ্রুত সংহিতা।
বরাহমিহিরইনি ছিলেন গুপ্ত যুগের জ্যোতির্বিদ। তিনি রচনা করেন বৃহৎ সংহিতা।
ব্রহ্মগুপ্তইনি ছিলেন গুপ্ত যুগের গণিতজ্ঞ। তিনি লেখেন ব্রহ্মসিদ্ধান্ত।

বিহার বা সংঘ ব্যবস্থা সম্পর্কে কী জানো?

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে ভারতে বৌদ্ধবিহার বা সংঘগুলি গড়ে ওঠে। এখানে থেকেই ছাত্ররা লেখাপড়া শিখত।

শিক্ষা পদ্ধতি

সংঘগুলিতে ছাত্ররা শিক্ষকদের মুখে উচ্চারিত পাঠ শুনে শুনে মুখস্থ করত। এখানে পঠিত বিষয় ছিল ধর্মশাস্ত্র, কৃষি, চিকিৎসা, রাজ্যশাসন প্রভৃতি। এ ছাড়া অস্ত্রশিক্ষা, শারীরশিক্ষা (যেমন – কুস্তি, তরবারি চালানো, খেলাধুলো) ইত্যাদি শেখানো হত।

অন্যান্য ব্যবস্থা

এই ব্যবস্থায় ছাত্র ভরতি করা হত মেধা যাচাই করে। কৃতি ছাত্রদের বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা প্রচলন ছিল। বিহারগুলিতে নারীশিক্ষারও চল ছিল। সুমেধা, বিশাখা, সুজ প্রমুখ ভিক্ষুণী বিহারগুলিতে শিক্ষালাভ করেন।

বেদের পৃষ্ঠা
বেদের পৃষ্ঠা

প্রাচীন ভারতে গুরুকুল বা গুরুকুল শিক্ষাব্যবস্থা কেমন ছিল?

বৈদিক যুগে ভারতে গুরুকুল শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলন ছিল। প্রথম জীবনে ব্রাহ্মণ সন্তানরা গুরুগৃহে থেকে শিক্ষালাভ করত। এই অধ্যায়কে বলা হয় ব্রহ্মচর্যাশ্রম।

প্রকৃত শিক্ষা

ছাত্ররা গুরুর কাছে বেদ অধ্যয়ন করত। তবে এই বেদ শুনে শুনে মুখস্থ করতে হত। বেদ ছাড়া ব্যাকরণ, ছন্দ, জ্যোতির্বিদ্যাও অধ্যয়ন করতে হত। এ ছাড়া ছাত্ররা অস্ত্রচালনা ও শরীরচর্চার পাঠও নিত।

আদর্শ

এই শিক্ষাব্যবস্থা ছিল গুরু-শিষ্য সম্পর্ককেন্দ্রিক। শিক্ষালাভের জন্য ছাত্রদের কোনো অর্থ দিতে হত না। তবে অন্যভাবে গুরুদক্ষিণা দেওয়ার প্রথা ছিল। ছাত্ররা গুরুকে ভীষণভাবে শ্রদ্ধা করত। গুরুগৃহের অনেক কাজ ছাত্ররা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিত।

প্রাচীন ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার পরিচয় দাও।

বৈদিক যুগের শিক্ষা ছিল ব্যক্তিগত। গুরু-শিষ্য সম্পর্ককেন্দ্রিক শিক্ষা মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। গুরু ছান্দস ভাষায় তাঁর শিষ্যকে পাঠ দিতেন।

  • বৌদ্ধ শিক্ষা – বৌদ্ধ শ্রমণ ও ভিক্ষুরা বিহার বা সংঘে লেখাপড়া শিখত। বিহারগুলিতে ধর্মীয় বিষয় ছাড়াও কৃষি, চিকিৎসা, রাজ্যশাসন, তির ও তরবারি চালানো, কুস্তি, সুতোকাটা, কাপড়বোনা ইত্যাদি তাদের শিখতে হত।
  • ব্রাহ্মণ্য শিক্ষা – সমাজে বর্ণভেদপ্রথার সৃষ্টি হলে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রদের জন্য পৃথক পৃথক বিষয়গুলির চর্চা হত।
  • গুপ্ত যুগের শিক্ষা – গুরুকুল এবং আশ্রমের শিক্ষা এই সময় থাকলেও রাজাদের চেষ্টায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা প্রচলিত হয়। পাঠ্য বিষয়ের মধ্যে লিপি, ভাষা, কাব্য, ব্যাকরণ, জ্যোতিষ, রাজনীতি বিষয়ে শিক্ষাচর্চা চলত।

জীবক কে ছিলেন? তাঁর সম্পর্কে কয়েকটি বাক্য লেখো।

জীবক ছিলেন মগধরাজ বিম্বিসারের রাজবৈদ্য। তিনি রাজগৃহ থেকে সুদূর তক্ষশীলায় গিয়ে গুরু আত্রেয়র নিকট চিকিৎসা শাস্ত্রে শিক্ষা নেন। জানা যায় যে, শিক্ষা শেষ হলে গুরু আত্রেয় তাঁর ছাত্রদের একটি পরীক্ষা নেন। তিনি ছাত্রদের বলেন ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন কিছু গাছগাছড়া সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে। সবার শেষে জীবক খালি হাতে ফিরে আসেন। গুরুদেব তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করেন। তখন তিনি উত্তর দেন যে, ভেষজ গুণহীন কোনো গাছ তাঁর নজরে পড়েনি। এই উত্তরে গুরুদেব খুশি হন। তিনি বুঝলেন যে, তাঁর ছাত্র প্রকৃত শিক্ষালাভ করেছে।

প্রাচীন ভারতে আচার্য ও উপাধ্যায় কাদের বলা হত?

বৈদিক যুগের শিক্ষার সঙ্গে জড়িত দু-ধরনের শিক্ষক হলেন আচার্য ও উপাধ্যায়।

আচার্যরা বিনা পারিশ্রমিকে ছাত্রদের শিক্ষা দিতেন। ছাত্ররা আচার্যের বাড়িতে থাকত, খাদ্যগ্রহণ করত এবং আচার্যকে নানা কাজে সাহায্য করত। বৈদিক যুগের নারী আচার্যদের বলা হত আচার্যা।

উপাধ্যায়রা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যে-কোনো একটি বিষয় পড়াতেন। নারী উপাধ্যায়দের বলা হত উপাধ্যায়া।

বৌদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থায় উপাধ্যায়দের বিশেষ ভূমিকা ছিল। তাঁরা বৌদ্ধ বিহারগুলিতে থেকে ছাত্রদের বুদ্ধ, বৌদ্ধধম্ম এবং বৌদ্ধ সংঘের নিয়ম সংক্রান্ত পাঠ দিতেন।

তক্ষশিলা মহাবিহার – টীকা লেখো।

গান্ধার মহাজনপদের রাজধানী তক্ষশিলায় এই মহাবিহারটি অবস্থিত ছিল। বিভিন্ন দেশের মানুষ ও পন্ডিতদের এই বিহারে আসা-যাওয়া ছিল। ষোলো থেকে কুড়ি বছর বয়সের ছাত্ররা উচ্চশিক্ষার জন্য মেধা পরীক্ষা দিয়ে এখানে ভরতি হতে পারত। শিক্ষার্থীরা আট বছর এখানে লেখাপড়ার চর্চা করত। রাজা, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ এই মহাবিহার পরিচালনায় সাহায্য করতেন। পরীক্ষা পদ্ধতি ছিল সহজ। তবে এখানে লিখিত পরীক্ষা দিতে হত না। জীবক, পাণিনি, চাণক্য ছিলেন এই মহাবিহারের ছাত্র।

তক্ষশিলা মহাবিহার
তক্ষশিলা মহাবিহার

জেনে রাখো – তক্ষশিলা মহাবিহারে চতুর্বেদ, ইতিহাস, পুরাণ, দর্শন, চিকিৎসাবিদ্যা, হিসাবশাস্ত্র, সমরবিদ্যা প্রভৃতি বিষয় পড়ানো হত।

ভাষা কী? বৌদ্ধ সাহিত্যচর্চার পরিচয় দাও।

ভাষা কথা বলতে এবং লিখতে প্রয়োজন হয়। ঋগবেদের ভাষা ছান্দস ছিল আর্যদের মুখের ভাষা। ভাষা ও তার ব্যবহারকে নিয়মে বাঁধার জন্য পাণিনি অষ্টাধ্যায়ী নামে ব্যাকরণ লেখেন।

বৌদ্ধ যুগে একই ভাষা বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্নভাবে উচ্চারণ হতে শুরু করে। সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে পালি এবং প্রাকৃত। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে এই ভাষাগুলিতে লেখা শুরু হয়। বৌদ্ধ ও জৈন সাহিত্য এই ভাষাতেই লেখা হয়।

গুপ্ত যুগের সাহিত্যচর্চার পরিচয় দাও।

গুপ্ত যুগে সাহিত্যচর্চার মান ছিল খুব উন্নত। এ যুগের বিভিন্ন লেখা পত্রে নাটক, অভিধান ও বিজ্ঞান বিষয়ের কথা জানা যায়। কালিদাসের মতো বিখ্যাত কবির আবির্ভাব এ যুগে ঘটে। তাঁর লেখা মেঘদূতম, কুমারসম্ভবম বিখ্যাত দুটি কাব্য এবং অভিজ্ঞান শকুন্তলম, মালবিকাগ্নিমিত্রম দুটি বিখ্যাত নাটক। তাঁর রচনার মধ্যে তৎকালীন সমাজ ও প্রকৃতির নানা দিক ফুটে উঠেছে। শূদ্রকের মৃচ্ছকটিকম নাটকের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল চরিত্রগুলিতে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, যন্ত্রণাগুলি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বিশাখদত্তের মুদ্রারাক্ষস ও দেবীচন্দ্রগুপ্তম নাটকের বিষয়বস্তু ছিল যথাক্রমে নন্দরাজা ধননন্দকে হারিয়ে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সিংহাসন দখল এবং গুপ্তবংশের রাজা রামগুপ্ত ও চন্দ্রগুপ্তের সঙ্গে শক রাজার যুদ্ধ, অমর সিংহের সংকলিত অমরকোশ নামে অভিধান এই সময়েই রচিত হয়েছিল।

মেঘদূতম কাব্যের প্রচ্ছদ
মেঘদূতম কাব্যের প্রচ্ছদ

রামায়ণ কী? এ সম্পর্কে কী জানো?

রামায়ণ হল ভারতের একটি প্রাচীন মহাকাব্য। মূল রামায়ণ সংস্কৃত ভাষায় লেখা। এটি রচনা করেন। বাল্মীকি। খুব সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকের মধ্যে রামায়ণ রচিত হয়। এই গ্রন্থে মোট 24 হাজার শ্লোক আছে। এর ‘কাণ্ড’ সংখ্যা 7টি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন লেখক রামায়ণ রচনা করেন। যেমন – কাশীরাম দাস বাংলা ভাষায় রামায়ণ লেখেন। এই মহাকাব্যের মূল চরিত্রে আছেন রাম, সীতা, লক্ষ্মণ, রাবণ, হনুমান প্রমুখ। রামের বনবাস, সীতাহরণ, জটায়ু বধ, হনুমানের লঙ্কাদহন, রাম-রাবণের যুদ্ধ প্রভৃতি ঘটনা এই মহাকাব্যে স্থান পেয়েছে।

জেনে রাখো – গুপ্ত যুগে মহাভারত ও পুরাণগুলি নতুনভাবে লেখা হয়।

প্রাচীন ভারতে পালি ও প্রাকৃত ভাষার উদ্ভব কীভাবে হয়েছিল।

ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাচীনকালেও মুখের ভাষা ও লেখার ভাষা ছিল আলাদা। ঋগবেদের ভাষা ছিল ছন্দস বা ছান্দস। পরবর্তীকালে ছান্দস ভাষা ভেঙে তৈরি হয় পালি ভাষা। প্রথমদিকে পালি ছিল মৌখিক। ভাষা, পরবর্তীকালে পালি ভাষায় লেখালেখি শুরু হয়। বৌদ্ধ ধর্মসাহিত্য পালি ভাষাতেই রচিত হয়। প্রাচীন ভারতে বিভিন্ন অঞ্চলে একই ভাষা নানাভাবে উচ্চারিত হত। সেই ভাষাগুলিকেই বলা হত প্রাকৃত ভাষা। প্রকৃত বা আসল থেকে প্রাকৃত কথাটির উৎপত্তি। প্রাকৃত ক্রমে সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা হয়ে ওঠে এবং প্রাকৃত ভাষায় সাহিত্য রচিত হতে শুরু করে। জৈন সাহিত্যগুলি প্রাকৃত ভাষাতেই রচিত।

মহাভারত কী? এ সম্পর্কে কী জানা যায়?

মহাভারত হল ভারতের একটি প্রাচীন ‘মহাকাব্য’। এটির মূল রচনাকার ছিলেন কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাসদেব। এই মহাকাব্যের আদি নাম ছিল জয়কাব্য। পরে বৈশম্পায়ন এতে আরও কিছু শ্লোক জুড়ে এর নাম রাখেন ‘ভারত’। পরে সৌতি এর সঙ্গে আরও অনেক শ্লোক জুড়ে নাম দেন মহাভারত। বর্তমানে মহাভারতের শ্লোকসংখ্যা এক লাখ এবং এটি 18টি সর্গ বা ভাগে বিভক্ত। খুব সম্ভবত মহাভারত রচিত হয় খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকের মধ্যে। মহাভারতের মূলকাহিনিটি গড়ে উঠেছে কৌরব ও পাণ্ডব – বংশের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। এই গ্রন্থ থেকে সমকালীন ভারতবর্ষের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায়।

মহাভারতের প্রচ্ছদ
মহাভারতের প্রচ্ছদ

জেনে রাখো – মহাভারতকে পঞ্চমবেদ বলা হয়।

পুরাণ কী? পুরাণ সাহিত্য থেকে কী জানতে পারা যায়?

পুরাণ শব্দটির অর্থ প্রাচীন। পুরাণে রয়েছে গল্প এবং সামান্য ইতিহাস। মোটামুটিভাবে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম বা চতুর্থ শতকের আগেই কয়েকটি পুরাণ রচিত হয়েছিল। খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতক থেকে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের মধ্যে বাকি পুরাণগুলি রচিত হয়েছিল। পুরাণের সংখ্যা 18টি। প্রাচীন ভারতের লিখিত ইতিহাস যখন খুব বেশি পাওয়া যায়নি তখন পুরাণ কাহিনি থেকে আমরা রাজবংশগুলির ইতিহাস জানতে পারি। এ ছাড়াও কৃষি, পশুপালন, বাণিজ্য, ভূগোল প্রভৃতি বিষয়ে জানতে পারি। প্রাচীন ভারতের ইতিহাস ও পুরাণের বিশেষ পার্থক্য ছিল না।

মৃচ্ছকটিকম নাটকটি কী বিষয় নিয়ে লেখা হয়েছিল?

প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যের একটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল মৃচ্ছকটিকম। গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন শূদ্রক। মৃচ্ছকটিকম কথার অর্থ হল ‘মাটির তৈরি ছোটো গাড়ি’। এই নাটকের প্রধান চরিত্র চারুদত্ত। তাঁর ছেলে রোহসেন প্রতিবেশী বণিকের ছেলের সোনার তৈরি খেলনাগাড়ি দেখে ওই রকম একটি গাড়ির জন্য বায়না শুরু করে। তাকে শান্ত করার জন্য একটি মাটির খেলনাগাড়ি দেওয়া হয়। কিন্তু রোহসেন তাতে শান্ত হয় না। শেষপর্যন্ত বসন্তসেনা (এই নাটকের অপর প্রধান চরিত্র) রোহসেনের সোনার খেলনা গাড়ি বানানোর জন্য নিজের সব গয়না দিয়ে দেয়।

টুকরো কথা শূদ্রকের মৃচ্ছকটিকম – মৃচ্ছকটিকম নাটকটি সংস্কৃত ভাষায় রচনা করেন শূদ্রক। মৃচ্ছকটিকম কথার অর্থ হল ‘মাটির তৈরি ছোটো গাড়ি’। এই নাটকটির প্রধান চরিত্র চারু দত্ত। তাঁর ছেলে রোহসেন প্রতিবেশী বনিকের ছেলের সোনার খেলনা গাড়ি দেখে বায়না করে। ছেলের বায়না মেটাতে বাবা মাটি দিয়ে একটা খেলনা গাড়ি তৈরি করে দেয়। কিন্তু তাতেও রোহুসেনের আশা মেটে না। তার কান্না থামে না। তখন বসন্তসেনা নামে এক চরিত্র তাঁর সোনার গয়না দিয়ে একটি খেলনা গাড়ি বানিয়ে দেয়। এই মূল বিষয়কে কেন্দ্র করে এই নাটকটি পল্লবিত হয়।

প্রাচীন ভারতের পরিবেশ চিন্তা সম্পর্কে লেখো।

প্রাচীন ভারতে পরিবেশ চিন্তার মুখ্য বিষয় ছিল বন- জঙ্গল, গাছপালা ও পশুপাখি। অর্থনীতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি বন হওয়ায় বনের প্রতি শাসকদের বিশেষ নজর ছিল। যেমন – মৌর্য সম্রাট অশোক তাঁর শাসনকালে পশুপাখি হত্যা নিষিদ্ধ করেছিলেন। অর্থশাস্ত্রে বনের ক্ষতি করলে কড়া শাস্তির কথা উল্লিখিত আছে। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক নাগাদ নগরায়ণের বিকাশের ফলে। জঙ্গল ছেদন শুরু হয়। তাই বিভিন্ন সময় গাছ বাঁচানোর নানা উপায় তৈরি হত। যেমন – বট, অশ্বত্থ গাছকে পুজো করার চল শুরু হয়। ফলে ওইসব গাছ আর কাটা যেত না।

পরিবেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান জল। প্রাচীনকালে জল সংরক্ষণ, জলসেচ ও জলাশয় তৈরির বিভিন্ন উদ্যোগ গৃহীত হয়েছিল। তবে প্রাচীনকালে জনসংখ্যা কম থাকায় পরিবেশের ভারসাম্য খুব সহজেই রক্ষিত হত।

শুশ্রুত কে ছিলেন? তাঁর লেখা একটি গ্রন্থের নাম লেখো। এই গ্রন্থের বিষয়বস্তু কী?

প্রাচীন ভারতের বিখ্যাত শল্য চিকিৎসক ছিলেন শুশ্রুত। তিনি হাড় ভেঙে গেলে বা নাক, কান কেটে গেলে তা জোড়ার কাজে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন।

তাঁর লেখা একটি গ্রন্থের নাম শুশ্রুত সংহিতা। শুশ্রুত -এর লেখা গ্রন্থে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ শবব্যবচ্ছেদ বা মড়াকাটা সম্পর্কে বিষদভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

‘লক্ষণের শক্তিশেল’ -এর কাহিনিটি লেখো।

রামায়ণের কাহিনিতে বলা হয়েছে যে, রাম যখন সৈন্যবাহিনী নিয়ে রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। করেছিলেন, তখন যুদ্ধে রাবণের ছোঁড়া শক্তিশেল বাণে লক্ষ্মণ আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় রাজবৈদ্য সুষেণ ক্ষতস্থানে বিশল্যকরণী প্রয়োগের পরামর্শ দেন। বিশল্যকরণী কথার অর্থ হল বিশেষভাবে শল্যকরণের (অস্ত্রোপচার) পরে সে ঔষধ লাগানো হয়। সেই মতো হনুমান বিশল্যকরণী খুঁজতে গন্ধমাদন পর্বতে যান। কিন্তু এই ঔষধ খুঁজে না পেয়ে হনুমান পুরো পর্বত তুলে নিয়ে আসেন। শেষপর্যন্ত সুষেণ ক্ষতস্থানে বিশল্যকরণী লাগিয়ে দিলে লক্ষ্মণ সুস্থ হয়ে ওঠেন।

আর্যভট্ট – টীকা লেখো।

অথবা, প্রাচীন ভারতে বিজ্ঞান চর্চায় আর্যভট্টের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

গুপ্ত যুগের বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও গণিতজ্ঞ ছিলেন। আর্যভট্ট। চারটি খণ্ডে এবং 118টি স্তোত্রে বিভক্ত আর্যভটীয় নামক গ্রন্থে তিনি গণিত, সময় ও গ্রহ-নক্ষত্র বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তিনিই প্রথম সংখ্যা হিসেবে শূন্যের ব্যবহার করেন। আর্যভট্টের মতে, পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার এবং নিজ অক্ষের ওপর পৃথিবী সর্বদা ঘুরছে। চন্দ্রগ্রহণ বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপর পড়লেই চন্দ্রগ্রহণ হয়। আর্যভট্টের লেখা অপর একটি গ্রন্থ হল আর্যসিদ্ধান্ত। জ্যোতির্বিজ্ঞান ও গণিতে তাঁর বিশেষ কৃতিত্বের কারণে ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম রাখা হয় আর্যভট্ট।

প্রাচীন ভারতে কারিগরি শিক্ষাচর্চা বিজ্ঞানচর্চা থেকে আলাদা হয়ে গেল কেন?

সুপ্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় সমাজে কৃষিকাজ ছিল সাধারণ মানুষের প্রধান জীবিকা। পাশাপাশি ইট, পাথর ও ধাতুর ব্যবহারও অব্যাহত ছিল। সেকালে ইট, পাথর ও ধাতুর সাহায্যে নানারকম যন্ত্র তৈরি হত। চিকিৎসা বিজ্ঞানে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি চিকিৎসকরা নিজেরা তৈরি করতেন না। ফলে দক্ষ কারিগরদের প্রয়োজনীয়তা সবসময়েই ছিল। প্রয়োজনীয় যন্ত্র কেমন হবে তা চিকিৎসক কারিগরকে বুঝিয়ে দিতেন। কারিগর সেইমতো যন্ত্র তৈরি করতেন।

শুশ্রুত সংহিতায় কারিগরদের প্রশংসা করা হলেও ধর্মশাস্ত্রে কারিগরদের কাজকে কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এইসব কারণেই প্রাচীন ভারতে কারিগরি শিক্ষাচর্চা ক্রমে বিজ্ঞানচর্চা থেকে আলাদা হয়ে যায়।

ভারতে কুষাণ যুগের অবদান কী ছিল?

ভারতে কুষাণ যুগের অবদান সম্পর্কে বলা যায় –

  • কুষাণগণ ভারতে প্রথম স্বর্ণমুদ্রার প্রচলন করেন।
  • সম্রাট কনিষ্কের আমলে সর্বপ্রথম ভগবান বুদ্ধের
  • মূর্তিপুজোর প্রচলন হয়। ভারতীয়রা টুপি, চামড়ার বুট, লম্বা কোট বা জোব্বা ও শিরস্ত্রাণের ব্যবহার শেখে।
  • শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নতি ঘটে; গন্ধার শিল্পের চরম উন্নতি এযুগেই হয়।
  • এ যুগে বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রের উন্নতি ছিল লক্ষণীয়। আয়ুর্বেদজ্ঞ চরক ছিলেন কুষাণ যুগের প্রখ্যাত চিকিৎসক।
  • কুষাণ যুগেই ভারতে সর্বপ্রথম একটি ‘মিশ্র সংস্কৃতি’ গড়ে ওঠে।

আচার্য ও উপাধ্যায় কাদের বলা হত? এদের মধ্যে একটি পার্থক্য লেখো।

প্রাচীন ভারতে বিশেষ করে বৈদিক যুগে ছাত্ররা যেসমস্ত গুরু বা শিক্ষকের কাছে সবধরনের শিক্ষা (যেমন – অস্ত্র চালনা, নীতিশিক্ষা) গ্রহণ করত তাঁদের বলা হত আচার্য। মহাভারতের যুগে এরূপ আচার্য ছিলেন দ্রোণাচার্য।

যে সমস্ত গুরু বা শিক্ষক একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ছাত্রদের শিক্ষা দিতেন তাঁদের বলা হত উপাধ্যায়।

পার্থক্য – আচার্যরা বিনা পারিশ্রমিকে ছাত্রদের শিক্ষা দিতেন। কিন্তু উপাধ্যায়রা পারিশ্রমিক বা গুরুদক্ষিণা নিয়ে ছাত্রদের শিক্ষা দিতেন।

প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের লিপি সম্বন্ধে লেখো।

প্রাচীন যুগের ইতিহাস জানতে গেলে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান হিসেবে লিপি বা লেখ -এর গুরুত্ব অপরিসীম। এই লিপি বা লেখগুলি থেকে যে সকল তথ্য সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া। যায় তা হল –

লিপি বা লেখ -এর গুরুত্ব

  • রাজার পরিচয় – প্রাচীন লিপিগুলি থেকে বিভিন্ন রাজার নাম, তাঁদের বংশ পরিচয়, রাজত্বের সময়কাল। প্রভৃতি সম্পর্কে বিশদ তথ্য পাওয়া যায়। এমনই একটি লিপির উদাহরণ হল – সমুদ্রগুপ্তের এলাহাবাদ প্রশস্তি।
  • রাজ্যবিস্তার – প্রাপ্ত লিপি গুলি থেকে প্রাচীন রাজাদের রাজ্য বিস্তারের কাহিনি জানা যায়। সম্রাট অশোকের লিপি, সমুদ্রগুপ্তের এলাহাবাদ প্রশস্তি, দ্বিতীয় পুলকেশীর আইহোল লিপি থেকে স্ব-স্ব রাজন্যবর্গের রাজ্যবিস্তার সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায়।
  • ভাষা ও বর্ণ – প্রাচীনকালে মানুষের ভাষা কী ছিল এবং তারা লেখার ক্ষেত্রে কী বর্ণ ব্যবহার করত তা জানা যায়। লিপি থেকেই। যেমন, সম্রাট অশোকের লিপির ভাষা ছিল প্রাকৃত।
  • জীবনযাত্রা – লিপি থেকেই সেযুগের মানুষের ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে অনেক তথ্য। জানা যায়।

উপসংহার – সবশেষে বলতে পারি ইতিহাসের উপাদান। হিসেবে লিপি বা লেখ হল অন্যতম প্রামাণ্য তথ্য যা কোনো এক যুগের নানা অজানা তথ্যের সন্ধান দেয়।

নীতি সাহিত্য কী?

প্রাচীন ভারতে যখন বই লেখার কাজ শুরু হয়নি, তখন পরিবারের বয়ঃজ্যেষ্ঠ মানুষরা তাদের নাতিনাতনি ও ছেলেপুলেদের বিভিন্ন কল্পকাহিনি শোনাত। সেগুলি শুনে তারা যেমন আনন্দ পেত তেমনি নীতি শিক্ষা পেত। ক্রমে এগুলি লিখিত আকার ধারণ করে। যাতে স্থান পেত মানুষের পালনীয় কর্তব্য, ঠিক-ভুলের বিচার করার উপায়, বিভিন্ন উপদেশমূলক কথা। এই ধরনের সাহিত্যগুলিকেই বলা হয় নীতি সাহিত্য।

স্তূপ নির্মাণের কারণ ও উদ্দেশ্য কী ছিল?

অথবা, স্তূপ কেন নির্মাণ করা হত?

স্তূপ নির্মাণের কারণ বা উদ্দেশ্যগুলি হল –

  • যে-সমস্ত স্থানে গৌতম বুদ্ধের পদার্পণ হয়েছিল অথবা, যেখানে বুদ্ধের দেহাবশেষ অথবা, তাঁর ব্যবহৃত জিনিসপত্রের নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে, সেইসব পবিত্র স্থানে কৃত্রিম উপায়ে নির্মিত স্থাপত্যকে বলা হয় স্তূপ। বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা এই স্থাপত্য বা মন্দির স্থাপত্যগুলি খুবই পবিত্র বলে মনে করে।
  • সম্রাট অশোক তাঁর সাম্রাজ্যের নানা স্থানে এরূপ স্তূপ নির্মাণ করেন। বিভিন্ন বৌদ্ধ সাহিত্যে এই রীতিকে অশোকবন্দনা বলে অভিহিত করা হয়েছে।
  • খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকের। মধ্যে ভারতের নানা স্থানে এরূপ অনেক স্তূপ নির্মিত হয়। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল – ভারহুত, সাঁচি ও সারনাথ।

সম্রাট অশোকের আমলে বানানো পাথরের স্তম্ভগুলির বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

অশোকস্তম্ভ
অশোকস্তম্ভ

মৌর্য শিল্পের অন্যতম নজির সম্রাট অশোকের আমলে বানানো পাথরের স্তম্ভগুলি। এগুলিকে অশোকস্তম্ভ বলা হয়। স্তম্ভগুলির বৈশিষ্ট্য ছিল –

  • একটি পাথর থেকেই স্তম্ভগুলি তৈরি হত।
  • স্তম্ভগুলি অনেকটা চক-খড়ির মতো দেখতে হত।
  • স্তম্ভগুলির গায়ে কখনো কখনো লেখ খোদাই করা হত।
  • স্তম্ভের ভিত মাটিতে পোঁতা থাকত। কোনো ঠেকা ছাড়াই স্তম্ভগুলি সোজা দাঁড়িয়ে থাকত।
  • স্তম্ভের একেবারে ওপরে বসানো থাকত একটি প্রাণীর মূর্তি, যেমন – সিংহ, হাতি, ষাঁড় প্রভৃতি।

স্তূপগুলি নির্মাণ করতে কারা কীভাবে অর্থ সাহায্য করত বলে মনে হয়?

  • সাধারণত স্তূপগুলি নির্মিত হত রাজা, সাধারণ মানুষ, কোনো ধনী ব্যক্তি, বণিকশ্রেণি প্রমুখদের দানে।
  • সেই দানের কথা উল্লেখ আছে স্তূপের রেলিং – এ ও স্তম্ভগাত্রে। সাতবাহন রাজা কর্তৃক এরূপ দানের উল্লেখ পাওয়া যায়।
  • সাঁচির তোরণ বা প্রবেশদ্বারের স্থাপত্যে হাতির দাঁতের কাজ দেখতে পাওয়া যায়, যা গিল্ড বা বণিক-সংঘের দানে গড়ে তোলা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, দাতাদের নাম (স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষে), তাদের ঠিকানা, পেশা, এমনকি তাদের আত্মীয়স্বজনের নাম উল্লেখ আছে। ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীদের দানে এরূপ স্তূপ নির্মাণের উদাহরণ ব্যতিক্রম ছিল না।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায়, “প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানাদিক (শিক্ষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও শিল্প)” অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হবে, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ!

Share via:

মন্তব্য করুন