এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “হিমবাহ কাকে বলে? হিমবাহ ক্ষয়ের প্রক্রিয়াগুলি আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “হিমবাহ কাকে বলে? হিমবাহ ক্ষয়ের প্রক্রিয়াগুলি আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – হিমবাহের বিভিন্ন কাজ ও তাদের দ্বারা সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

হিমবাহ কাকে বলে?
সংজ্ঞা – পৃথিবীর চির তুষার আবৃত মেরু ও উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের ক্রমাগত সঞ্চিত তুষার প্রবল চাপে বরফে পরিণত হয়। অভিকর্ষজ টানে ভূমির ঢাল মেনে চলা এই বরফের স্তুপকে হিমবাহ বলে। বিজ্ঞানী সি. এস. পিচামুথুর হিমবাহের সংজ্ঞায় বলেছেন অভিকর্ষজ শক্তির প্রভাবে স্থলভাগের ওপর দিয়ে ধীরগতিতে বয়ে চলা তুষার ও কঠিনবরফ পঞ্চকে হিমবাহ বলে।
উদাহরণ – জ্যাকবসান বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম হিমবাহ এর গতি 46 মিটার প্রতিদিন।
হিমবাহ ক্ষয়ের প্রক্রিয়াগুলি আলোচনা করো।
হিমবাহের ক্ষয়কাজ –
সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে হিমবাহ ক্ষয় করে। যথা –
অবঘর্ষ –
হিমবাহ প্রবাহের সময় ওই চলমান হিমবাহ, সম্মিলিত ভাবে তলদেশ ও পার্শ্বদেশে প্রবল চাপজনিত ঘর্ষণের দ্বারা যে ক্ষয় হয়, তাকে অবঘর্ষ ক্ষয় বলে। উচ্চভূমি বা উপত্যকার হিমবাহমুখী ঢালে অবঘর্ষের ফলে মসৃণতলের সৃষ্টি হয়।
উৎপাটন –
হিমবাহের প্রবাহের ফলে শিলাস্তরের ফাটলে পর্যায়ক্রমে বরফ সঞ্চয় ও গলনের ফলে ফাটল বৃদ্ধি পায় ও বিচ্যুত শিলাখণ্ডগুলি হিমবাহের দ্বারা পরিবাহিত হয়, একে উৎপাটন বলে। হিমবাহের উলটোদিকের ঢালে উৎপাটন পদ্ধতি কাজ করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
হিমবাহ কি?
হিমবাহ হল পৃথিবীর চিরতুষার আবৃত মেরু ও উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে ক্রমাগত সঞ্চিত তুষার প্রবল চাপে বরফে পরিণত হয়ে অভিকর্ষজ টানে ভূমির ঢাল মেনে ধীরগতিতে প্রবাহিত হওয়া বরফের স্তুপ।
হিমবাহের সংজ্ঞা কে দিয়েছেন?
বিজ্ঞানী সি. এস. পিচামুথু হিমবাহের সংজ্ঞায় বলেছেন, “অভিকর্ষজ শক্তির প্রভাবে স্থলভাগের ওপর দিয়ে ধীরগতিতে বয়ে চলা তুষার ও কঠিনবরফ পঞ্চকে হিমবাহ বলে।”
হিমবাহের উদাহরণ দাও।
জ্যাকবসন হিমবাহ বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম হিমবাহ, যার গতি ৪৬ মিটার প্রতিদিন।
হিমবাহের ক্ষয়কাজ কী?
হিমবাহের ক্ষয়কাজ সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে হয় –
1. অবঘর্ষ – হিমবাহ প্রবাহের সময় চলমান হিমবাহ তলদেশ ও পার্শ্বদেশে প্রবল চাপজনিত ঘর্ষণের দ্বারা যে ক্ষয় হয়।
2. উৎপাটন – হিমবাহের প্রবাহের ফলে শিলাস্তরের ফাটলে পর্যায়ক্রমে বরফ সঞ্চয় ও গলনের ফলে ফাটল বৃদ্ধি পায় ও বিচ্যুত শিলাখণ্ডগুলি হিমবাহের দ্বারা পরিবাহিত হয়।
অবঘর্ষ ক্ষয় কি?
অবঘর্ষ ক্ষয় হল হিমবাহ প্রবাহের সময় চলমান হিমবাহ তলদেশ ও পার্শ্বদেশে প্রবল চাপজনিত ঘর্ষণের দ্বারা সৃষ্ট ক্ষয়। এই ক্ষয়ের ফলে উচ্চভূমি বা উপত্যকার হিমবাহমুখী ঢালে মসৃণতলের সৃষ্টি হয়।
উৎপাটন ক্ষয় কি?
উৎপাটন ক্ষয় হল হিমবাহের প্রবাহের ফলে শিলাস্তরের ফাটলে পর্যায়ক্রমে বরফ সঞ্চয় ও গলনের ফলে ফাটল বৃদ্ধি পায় ও বিচ্যুত শিলাখণ্ডগুলি হিমবাহের দ্বারা পরিবাহিত হওয়া। এই পদ্ধতিটি হিমবাহের উলটোদিকের ঢালে কাজ করে।
হিমবাহের গতি কেমন?
হিমবাহের গতি সাধারণত ধীরগতির হয়, তবে কিছু হিমবাহ দ্রুতগতির হতে পারে। যেমন, জ্যাকবসন হিমবাহের গতি 46 মিটার প্রতিদিন।
হিমবাহ কোথায় পাওয়া যায়?
হিমবাহ প্রধানত পৃথিবীর চিরতুষার আবৃত মেরু অঞ্চল এবং উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে পাওয়া যায়।
হিমবাহের গুরুত্ব কি?
হিমবাহ পৃথিবীর জলবায়ু ও পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মিষ্টি জলের একটি বড় উৎস এবং সমুদ্রের জলস্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হিমবাহের ক্ষয়কাজের ফলে কি সৃষ্টি হয়?
হিমবাহের ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, যেমন মসৃণতল, উৎপাটন খাদ, এবং অন্যান্য ভূমিরূপ যা ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “হিমবাহ কাকে বলে? হিমবাহ ক্ষয়ের প্রক্রিয়াগুলি আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “হিমবাহ কাকে বলে? হিমবাহ ক্ষয়ের প্রক্রিয়াগুলি আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – হিমবাহের বিভিন্ন কাজ ও তাদের দ্বারা সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।