এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “A, B, C ও D মৌল চারটির পারমাণবিক সংখ্যা যথাক্রমে 3, 9, 11 ও 17। এদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা তড়িৎ ধনাত্মক মৌল কোনটি ও সর্বাপেক্ষা তড়িৎ-ঋণাত্মক মৌল কোনটি?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

A, B, C ও D মৌল চারটির পারমাণবিক সংখ্যা যথাক্রমে 3, 9, 11 ও 17। এদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা তড়িৎ ধনাত্মক মৌল কোনটি ও সর্বাপেক্ষা তড়িৎ-ঋণাত্মক মৌল কোনটি?
A মৌলের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস 2, 1; B মৌলের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস 2, 7; C মৌলের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস 2, 8, 1 এবং D মৌলের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস 2, 8, 7। A এবং B মৌল দুটি পর্যায়-সারণির দ্বিতীয় পর্যায়ে এবং C ও D মৌল দুটি তৃতীয় পর্যায়ে অবস্থিত। A এবং C মৌল দুটি পর্যায় সারণিতে 1 নং শ্রেণিতে এবং C ও D মৌল দুটি 17 নং শ্রেণিতে অবস্থিত।
A ও C মৌল দুটি তড়িৎ-ধনাত্মক মৌল এবং A অপেক্ষা C বেশি তড়িৎ-ধনাত্মক মৌল।
B ও D মৌল দুটি তড়িৎ-ঋণাত্মক মৌল এবং B মৌলটির তড়িৎ-ঋণাত্মকতা বেশি।
সুতরাং C হল সর্বাপেক্ষা তড়িৎ-ধনাত্মক এবং B হল সর্বাপেক্ষা তড়িৎ-ঋণাত্মক মৌল।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
তড়িৎ-ধনাত্মকতা (Electropositivity) বলতে কী বোঝায়?
তড়িৎ-ধনাত্মকতা হলো কোনো মৌলের পরমাণুর তার ভ্যালেন্স শেল (যোজ্যতা স্তর) থেকে ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়ন (ক্যাটায়ন) গঠনের প্রবণতা। যে মৌল যত সহজে ইলেকট্রন ত্যাগ করতে পারে, সে মৌল তত বেশি তড়িৎ-ধনাত্মক। পর্যায় সারণির বাম পাশের মৌলগুলি (যেমন – Group 1 এবং Group 2) অত্যন্ত তড়িৎ-ধনাত্মক।
তড়িৎ-ঋণাত্মকতা (Electronegativity) বলতে কী বোঝায়?
তড়িৎ-ঋণাত্মকতা হলো কোনো মৌলের পরমাণুর একটি রাসায়নিক বন্ধনে ভাগাভাগি করা ইলেকট্রন জোড়কে নিজের দিকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা। যে মৌলের ইলেকট্রন আকর্ষণ করার ক্ষমতা যত বেশি, তার তড়িৎ-ঋণাত্মকতা তত বেশি। পর্যায় সারণির ডান পাশের মৌলগুলি (যেমন – Group 17, হ্যালোজেন) অত্যন্ত তড়িৎ-ঋণাত্মক।
একটি পর্যায়ে (Period) বাম থেকে ডানে যাওয়ার সময় তড়িৎ-ধনাত্মকতা ও তড়িৎ-ঋণাত্মকতার কী পরিবর্তন হয়?
একটি পর্যায়ে বাম থেকে ডানে যাওয়ার সময় –
1. তড়িৎ-ধনাত্মকতা হ্রাস পায়। কারণ, পরমাণুর আকার কমতে থাকে এবং নিউক্লিয়াসের কার্যকরী আধান (effective nuclear charge) বাড়ে, ফলে ইলেকট্রন ত্যাগ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
2. তড়িৎ-ঋণাত্মকতা বৃদ্ধি পায়। কারণ, একই কারণে ইলেকট্রন আকর্ষণ করার ক্ষমতা বেড়ে যায়।
একটি শ্রেণিতে (Group) উপর থেকে নিচে যাওয়ার সময় তড়িৎ-ধনাত্মকতা ও তড়িৎ-ঋণাত্মকতার কী পরিবর্তন হয়?
একটি শ্রেণিতে উপর থেকে নিচে যাওয়ার সময় –
1. তড়িৎ-ধনাত্মকতা বৃদ্ধি পায়। কারণ, পরমাণুর আকার বড় হয় এবং ভ্যালেন্স ইলেকট্রন নিউক্লিয়াস থেকে দূরে থাকে, ফলে সহজেই ইলেকট্রন ত্যাগ করতে পারে।
2. তড়িৎ-ঋণাত্মকতা হ্রাস পায়। কারণ, পরমাণুর আকার বৃদ্ধির ফলে নিউক্লিয়াস ভাগাভাগি করা ইলেকট্রনগুলিকে দুর্বলভাবে আকর্ষণ করে।
সর্বাপেক্ষা তড়িৎ-ধনাত্মক মৌলটি সাধারণত পর্যায় সারণির কোথায় অবস্থিত?
সর্বাপেক্ষা তড়িৎ-ধনাত্মক মৌলটি পর্যায় সারণির বাম পাশের নিচের দিকে অবস্থিত। যেমন – Cesium (Cs) বা Francium (Fr) সবচেয়ে বেশি তড়িৎ-ধনাত্মক মৌল।
সর্বাপেক্ষা তড়িৎ-ঋণাত্মক মৌলটি সাধারণত পর্যায় সারণির কোথায় অবস্থিত?
সর্বাপেক্ষা তড়িৎ-ঋণাত্মক মৌলটি পর্যায় সারণির ডান পাশের উপরের দিকে অবস্থিত। এটি হলো Fluorine (F)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “A, B, C ও D মৌল চারটির পারমাণবিক সংখ্যা যথাক্রমে 3, 9, 11 ও 17। এদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা তড়িৎ ধনাত্মক মৌল কোনটি ও সর্বাপেক্ষা তড়িৎ-ঋণাত্মক মৌল কোনটি?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন