এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “A, B ও C হল তিনটি মৌল যাদের পারমাণবিক সংখ্যা যথাক্রমে (Z – 1), Z, (Z + 1)। B মৌলটি হল তৃতীয় পর্যায়ের নিষ্ক্রিয় মৌল। A ও C পরস্পর যুক্ত হয়ে কোন্ প্রকারের যৌগ গঠন করবে এবং যৌগটির সংকেত লেখো?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

A, B ও C হল তিনটি মৌল যাদের পারমাণবিক সংখ্যা যথাক্রমে (Z – 1), Z, (Z + 1)। B মৌলটি হল তৃতীয় পর্যায়ের নিষ্ক্রিয় মৌল। A ও C পরস্পর যুক্ত হয়ে কোন্ প্রকারের যৌগ গঠন করবে এবং যৌগটির সংকেত লেখো?
B মৌলটি তৃতীয় পর্যায়ের নিষ্ক্রিয় মৌল অর্থাৎ আর্গন (Ar)। B নিষ্ক্রিয় মৌল হওয়ায় এর সর্ববহিস্থ কক্ষে ইলেকট্রন সংখ্যা 8টি।
A মৌলর পরমাণু ক্রমাঙ্ক (Z – 1) হওয়ায় A মৌলটির সর্ববহিস্থ কক্ষে ইলেকট্রন সংখ্যা = (8 – 1)টি = 7টি।
∴ A মৌলটি হ্যালোজেন মৌল অর্থাৎ, অধাতব প্রকৃতির।
C মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক (Z + 1) হওয়ায় মৌলটির সর্ববহিস্থ কক্ষে ইলেকট্রন সংখ্যা 1টি।
সুতরাং, C মৌলটি ক্ষার ধাতু।
ক্ষার ধাতু হ্যালোজেনের সঙ্গে (অধাতু) যুক্ত হয়ে আয়নীয় যৌগ গঠন করে। তাই A ও C পরস্পর যুক্ত হয়ে আয়নীয় যৌগ গঠন করে।
C মৌলটির যোজ্যতা 1 এবং A মৌলটির যোজ্যতা = (8 – 7) = 1। A ও C দ্বারা গঠিত আয়নীয় যৌগটির সংকেত CA।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
A, B এবং C মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক যথাক্রমে 17, 18 এবং 20। এদের মধ্যে কোনটি ধাতু এবং কোনটি অধাতু?
A মৌলের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস 2, 8, 7;
B মৌলের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস 2, 8, 8 এবং C মৌলের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস 2,8,8,21 সুতরাং, পর্যায়-সারণিতে A মৌলটি 17 নং শ্রেণিতে, B মৌলটি 18 নং শ্রেণিতে এবং C মৌলটি 2 নং শ্রেণিতে অবস্থিত।
সুতরাং, C মৌলটি ধাতু ও A মৌলটি অধাতু এবং B মৌলটি নিষ্ক্রিয়।
A, B এবং C মৌলের মধ্যে B মৌলটি তৃতীয় পর্যায়ের নিষ্ক্রিয় মৌল হিসেবে চিহ্নিত করা হলো কীভাবে?
পর্যায় সারণীতে তৃতীয় পর্যায়ে মৌলগুলি হলো Na, Mg, Al, Si, P, S, Cl, Ar। এদের মধ্যে একমাত্র আর্গন (Ar)-ই হল নিষ্ক্রিয় গ্যাস যার সর্ববহিস্থ স্তরে 8টি ইলেকট্রন রয়েছে। তাই B হল আর্গন যার পারমাণবিক সংখ্যা Z = 18।
A, B এবং C মৌলের মধ্যে A মৌলটি কীভাবে শনাক্ত করলেন?
B -এর পারমাণবিক সংখ্যা Z = 18। A -এর পারমাণবিক সংখ্যা (Z – 1) = 17। পারমাণবিক সংখ্যা 17 বিশিষ্ট মৌলটি হল ক্লোরিন (Cl)। এর ইলেকট্রন বিন্যাস 2, 8, 7, তাই এটি একটি হ্যালোজেন অধাতু।
A, B এবং C মৌলের মধ্যে A ও C -এর মধ্যে গঠিত যৌগটি আয়নীয় কেন?
C (পটাসিয়াম, একটি ধাতু) খুব সহজেই একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়ন (K⁺) গঠন করতে চায়। A (ক্লোরিন, একটি অধাতু) একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়ন (Cl⁻) গঠন করতে চায়। এই বিপরীত আধানযুক্ত আয়নগুলির মধ্যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বলের মাধ্যমে আয়নীয় বন্ধন গঠিত হয়।
A, B এবং C মৌলের মধ্যে A ও C কী সমযোজী যৌগ গঠন করতে পারে?
না, A (ক্লোরিন) এবং C (পটাসিয়াম) -এর মধ্যে তড়িৎঋণাত্মকতার পার্থক্য অনেক বেশি (> 1.7)। এছাড়া একটি প্রকৃত ধাতু এবং একটি প্রকৃত অধাতু পরস্পর মিলে সর্বদাই আয়নীয় যৌগই গঠন করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “A, B ও C হল তিনটি মৌল যাদের পারমাণবিক সংখ্যা যথাক্রমে (Z – 1), Z, (Z + 1)। B মৌলটি হল তৃতীয় পর্যায়ের নিষ্ক্রিয় মৌল। A ও C পরস্পর যুক্ত হয়ে কোন্ প্রকারের যৌগ গঠন করবে এবং যৌগটির সংকেত লেখো?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন