এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “আদমশুমারি সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের জনসংখ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

আদমশুমারি সম্পর্কে টীকা লেখো।
ধারণা – ‘আদমশুমারি’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল Census। ‘Census’ শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ ‘Censre’ থেকে। এর অর্থ হল কর নির্ধারণ করা বা মূল্য নির্ধারণ করা। ‘আদমশুমার’ একটি উর্দু শব্দ, যেখানে আদম শব্দের অর্থ লোক এবং সুমার শব্দের অর্থ গণনা করা।
সংজ্ঞা – জাতিসংঘের ভাষায় আদমশুমারি হল কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনসংখ্যার তাত্ত্বিক, আর্থিক এবং সামাজিক তথ্যসংগ্রহ, সংকলন, মূল্যায়ণ বিশ্লেষণ এবং প্রকাশনার একটি সামাগ্রিক প্রক্রিয়া।
ভারতে আদমশুমারি –
- ভারতে প্রতি 10 বছর অন্তর আদমশুমারি করা হয়।
- 1972 খ্রিস্টাব্দে প্রথম ভারতে জনগণনা প্রকাশ করা হয়। 1976 খ্রিস্টাব্দে এটি শুরু হয়েছিল এবং 5 বছর ধরে এই জনগণনা সম্পূর্ণ করা হয়।
- 1981 খ্রিস্টাব্দে প্রথম সঠিক পদ্ধতিতে জনগণনা হয়।
- ভারতে 2011 খ্রিস্টাব্দের জনগণনা ভারতের 15 তম আদমশুমারি এবং স্বাধীন ভারতের সপ্তম আদমশুমারি।
- 2011 খ্রিস্টাব্দে আদমশুমারির স্লোগান ছিল ‘Our Census, Our Future’।
আদমশুমারির পদ্ধতি – আদমশুমারি দুটি পদ্ধতিতে করা যায়, যথা –
- ডি-ফ্যাক্টো পদ্ধতি (De Facto Method) – এই পদ্ধতিতে একটি নির্দিষ্ট দিন স্থির করা হয় জনগণনার জন্য। ওই নির্দিষ্ট রাতে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনগণনা করা হয়। 1971 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারত ও ইংল্যান্ডে এই পদ্ধতিতে জনগণনা করা হয়।
- ডি-জিওর পদ্ধতি (De jure Method) – এই পদ্ধতিতে 2-3 সপ্তাহের মধ্যে জনগণনা শেষ করা হয় এবং কোনো অস্থায়ী আদিবাসীদের এই গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় প্রত্যেক ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে জনগণনা করা হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
আদমশুমারি কী?
আদমশুমারি হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো দেশ বা অঞ্চলের জনসংখ্যা এবং তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও জনতাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও প্রকাশ করার প্রক্রিয়া।
‘Census’ শব্দের উৎপত্তি কোথা থেকে?
‘Census’ শব্দটি লাতিন শব্দ ‘Censre’ থেকে এসেছে, যার অর্থ কর নির্ধারণ করা বা মূল্যায়ন করা।
আদমশুমারির সংজ্ঞা জাতিসংঘ কীভাবে দিয়েছে?
জাতিসংঘের মতে, আদমশুমারি হলো কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনসংখ্যার পরিসংখ্যানিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক তথ্য সংগ্রহ, সংকলন, মূল্যায়ণ, বিশ্লেষণ ও প্রকাশ করার একটি পূর্ণাঙ্গ প্রক্রিয়া।
ভারতে আদমশুমারি কত বছর অন্তর হয়?
ভারতে আদমশুমারি প্রতি 10 বছর অন্তর করা হয়।
ভারতে প্রথম আদমশুমারি কবে হয়েছিল?
ভারতে প্রথম আদমশুমারি 1872 সালে প্রকাশ করা হয়েছিল, কিন্তু এটি 1876 সালে শুরু হয়ে 5 বছর ধরে সম্পন্ন হয়েছিল।
ভারতে প্রথম সঠিক পদ্ধতিতে আদমশুমারি কবে হয়?
ভারতে প্রথম সঠিক পদ্ধতিতে আদমশুমারি হয় 1881 সালে।
2011 সালের আদমশুমারির স্লোগান কী ছিল?
2011 সালের আদমশুমারির স্লোগান ছিল — “Our Census, Our Future” (আমাদের আদমশুমারি, আমাদের ভবিষ্যৎ)।
আদমশুমারির প্রধান পদ্ধতিগুলো কী কী?
আদমশুমারি দুটি পদ্ধতিতে করা হয়—
1. ডি-ফ্যাক্টো পদ্ধতি (De Facto Method) – একটি নির্দিষ্ট রাতে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণনা করা হয়। (1971 সাল পর্যন্ত ভারতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো)
2. ডি-জুরি পদ্ধতি (De Jure Method) – 2-3 সপ্তাহের মধ্যে স্থায়ী বাসিন্দাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়, অস্থায়ী বাসিন্দাদের গণনা করা হয় না।
2011 সালের আদমশুমারি ভারতের কততম আদমশুমারি ছিল?
2011 সালের আদমশুমারি ছিল ভারতের 15তম আদমশুমারি এবং স্বাধীন ভারতের 7ম আদমশুমারি।
আদমশুমারির গুরুত্ব কী?
আদমশুমারির মাধ্যমে সরকার পরিকল্পনা প্রণয়ন, সম্পদ বণ্টন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন এবং বিভিন্ন নীতি নির্ধারণে সাহায্য করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “আদমশুমারি সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের জনসংখ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন