এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে গান্ধিজির ভূমিকা আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে গান্ধিজির ভূমিকা আলোচনা করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ট অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে গান্ধিজির ভূমিকা আলোচনা করো।
আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে গান্ধিজির ভূমিকা
আমেদাবাদের শ্রমিকরা ধর্মঘট করলে সমাজসেবী অনুসূয়া সারাভাই ও আমেদাবাদ মালিক সমিতির সভাপতি আম্বালা সারাভাই শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্ব মেটাবার জন্য মহাত্মা গান্ধিকে আমন্ত্রণ জানান।
- সালিশি বোর্ড – মহাত্মা গান্ধি এই আমন্ত্রণে সাড়া দেন এবং মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব মেটানোর ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন ও সালিশি বোর্ড গঠন করেন। কিন্তু এরপর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে এবং শ্রমিকরা পঞ্চাশ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধিতে অটল থাকে, অপরদিকে মালিকরাও ধর্মঘট স্থগিত রাখার দাবি জানায়। ইতিমধ্যে মিল মালিকরা শ্রমিকদের মিলে প্রবেশ করার পথ বন্ধ করে দিলে গান্ধিজি শ্রমিকদের পক্ষ নেন।
- মজুরি হ্রাস – গান্ধিজি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি 50 শতাংশ থেকে কমিয়ে 35 শতাংশে আনার ব্যাপারে অনুরোধ করেন। এর পাশাপাশি শ্রমিক সমাবেশ ও সভার মাধ্যমে গান্ধিজি শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন।
আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে গান্ধিজির মন্তব্য –
শেষ পর্যন্ত মালিকপক্ষ শ্রমিকদের জন্য প্রত্যাশিত মজুরি না বাড়ালে গান্ধিজি অনশন শুরু করেন এবং অনশনের চতুর্থ দিনে মালিকপক্ষ 35 শতাংশ মজুরি বাড়াতে সম্মত হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলন কখন শুরু হয়?
1918 সালে আমেদাবাদের টেক্সটাইল মিলের শ্রমিকদের মধ্যে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।
গান্ধিজি কেন আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে যোগ দেন?
সমাজসেবী অনুসূয়া সারাভাই এবং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আম্বালাল সারাভাই -এর অনুরোধে গান্ধিজি শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্ব সমাধানে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যোগ দেন।
গান্ধিজি কীভাবে শ্রমিকদের সংগঠিত করেন?
তিনি শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়মিত সভা করেন, তাদের ন্যায্য দাবিগুলো বুঝতে সাহায্য করেন এবং শান্তিপূর্ণ ধর্মঘটের নীতি শেখান।
গান্ধিজি কীভাবে সালিশি বোর্ড গঠন করেন? সালিশি বোর্ড কী?
গান্ধিজি মালিক ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই বোর্ড গঠন করেন, কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে তা ব্যর্থ হয়। সালিশি বোর্ড হলো একটি মধ্যস্থতা কমিটি।
আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে শ্রমিকদের মূল দাবি কী ছিল?
শ্রমিকরা 50% মজুরি বৃদ্ধি চেয়েছিল, কিন্তু গান্ধিজি তাদের 35%-এ সম্মত হতে বলেন।
গান্ধিজি কেন শ্রমিকদের 50% -এর বদলে 35% মজুরি বৃদ্ধিতে রাজি করলেন?
গান্ধিজি বুঝেছিলেন যে মালিকপক্ষ 50% দিতে রাজি হবে না, তাই তিনি একটি সাধারণ সমাধান খুঁজছিলেন যাতে উভয় পক্ষের কিছু লাভ-ক্ষতি হয়।
আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে মিল মালিকরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়?
মালিকরা শ্রমিকদের মিলে প্রবেশে বাধা দেয় এবং ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা করে।
গান্ধিজি কেন অনশন শুরু করেন?
মালিকরা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে অস্বীকার করলে, গান্ধিজি অনশন ধর্মঘট শুরু করেন তাদের চাপ দিতে।
আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে গান্ধিজির অনশনের ফলাফল কী ছিল?
অনশনের চতুর্থ দিনে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের 35% মজুরি বৃদ্ধি মেনে নেয়।
আমেদাবাদ আন্দোলন গান্ধিজির অন্যান্য আন্দোলনে কীভাবে প্রভাব ফেলেছিল?
এই আন্দোলন গান্ধিজির অহিংস প্রতিবাদ ও সত্যাগ্রহ নীতির একটি প্রাথমিক উদাহরণ হয়ে ওঠে, যা পরবর্তীতে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রয়োগ করা হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে গান্ধিজির ভূমিকা আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “আমেদাবাদে শ্রমিক আন্দোলনে গান্ধিজির ভূমিকা আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন