এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে? প্রতিসরণের সূত্র দুটি লেখো। অথবা, স্নেলের সূত্রটি লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে? প্রতিসরণের সূত্র দুটি লেখো। অথবা, স্নেলের সূত্রটি লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে?
আলোকরশ্মি যখন একটি সমসত্ত্ব স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে ভিন্ন ঘনত্বের অপর একটি সমসত্ত্ব স্বচ্ছ মাধ্যমের ওপর তির্যকভাবে পড়ে তখন ওই দ্বিতীয় মাধ্যমের বিভেদতল থেকে আলোকরশ্মির গতির অভিমুখের পরিবর্তন ঘটে। ওই ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে। চিত্রে একটি আলোকরশ্মি PO এক মাধ্যম থেকে দুই মাধ্যমের বিভেদতলে O বিন্দুতে আপতিত হয়ে প্রতিসরণের পর OQ অভিমুখে গমন করে।

প্রতিসরণের সূত্র দুটি লেখো।
অথবা, স্নেলের সূত্রটি লেখো।
প্রতিসরণের সূত্র –
- আপতিত রশ্মি, প্রতিসৃত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে দুই মাধ্যমের বিভেদতলের ওপর অঙ্কিত অভিলম্ব সর্বদা একই সমতলে অবস্থান করে।
- দুটি নির্দিষ্ট মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট বর্ণের আলোকরশ্মির প্রতিসরণে, আপতন কোণের সাইন \(\left(\sin\;i\right)\) এবং প্রতিসরণ কোণের সাইনের \(\left(\sin\;r\right)\) অনুপাত সর্বদা ধ্রুবক হয়। এই ধ্রুবককে \(\mu\) (মিউ) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
যদি আপতন কোণ = \(i\) এবং প্রতিসরণ কোণ = \(r\) হয়, তবে \(\mu=\frac{\sin\;i}{sin\;r}\) এই \(\mu\) -কে বলে প্রথম মাধ্যমের সাপেক্ষে দ্বিতীয় মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক। প্রতিসরণের দ্বিতীয় সূত্রটিকে স্নেলের সূত্র বলে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
আলোর প্রতিসরণ বলতে কী বোঝো।
আলোকরশ্মি যখন একটি সমসত্ত্ব স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে ভিন্ন ঘনত্বের অপর একটি সমসত্ত্ব স্বচ্ছ মাধ্যমের ওপর তির্যকভাবে পড়ে, তখন দ্বিতীয় মাধ্যমের বিভেদতলে আলোর গতিপথের অভিমুখ পরিবর্তিত হয়। এই ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
প্রতিসরণের সূত্র দুটি কী কী?
প্রথম সূত্র – আপতিত রশ্মি, প্রতিসৃত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে বিভেদতলের অভিলম্ব একই সমতলে থাকে।
দ্বিতীয় সূত্র (স্নেলের সূত্র) – নির্দিষ্ট দুটি মাধ্যম ও নির্দিষ্ট আলোর বর্ণের জন্য আপতন কোণের সাইন (sin i) ও প্রতিসরণ কোণের সাইন (sin r) -এর অনুপাত ধ্রুবক। অর্থাৎ, \(\frac{\sin\;i}{sin\;r}=\mu\) এখানে, μ হলো প্রথম মাধ্যমের সাপেক্ষে দ্বিতীয় মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক।
প্রতিসরাঙ্ক (μ) কাকে বলে?
শূন্যস্থানের সাপেক্ষে কোনো মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক হলো শূন্যস্থানে আলোর বেগ ও ঐ মাধ্যমে আলোর বেগের অনুপাত।
আলোর প্রতিসরণের কারণ কী?
আলো এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে প্রবেশ করার সময় তার বেগ পরিবর্তিত হয়। মাধ্যমের ঘনত্ব ভিন্ন হলে আলোর গতিবেগও ভিন্ন হয়, ফলে আলোকরশ্মির অভিমুখ বেঁকে যায়।
প্রতিসরণের সময় আলোর বর্ণের প্রভাব কী?
বিভিন্ন বর্ণের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ও বেগ ভিন্ন হওয়ায় প্রতিসরাঙ্কও ভিন্ন হয়। ফলে, বর্ণালী বিচ্ছুরণ ঘটে (যেমন – প্রিজমে সাদা আলো ভেঙে সাতটি রং দেখা যায়)।
বাস্তব জীবনে প্রতিসরণের উদাহরণ দাও।
বাস্তব জীবনে প্রতিসরণের উদাহরণ হল –
1. পানির ভেতরে ডুবন্ত দণ্ড বাঁকা দেখা যায়।
2. মরীচিকা (Mirage) সৃষ্টি হয় বায়ুমণ্ডলের স্তরভেদে আলোর প্রতিসরণের কারণে।
3. লেন্স (চশমা, ক্যামেরা, মাইক্রোস্কোপ) আলোকরশ্মিকে প্রতিসৃত করে প্রতিবিম্ব গঠন করে।
প্রতিসরণের সময় আলোর কম্পাঙ্ক ও তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কী পরিবর্তন হয়?
প্রতিসরণের সময় আলোর কম্পাঙ্ক ও তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তন –
1. কম্পাঙ্ক (Frequency) – অপরিবর্তিত থাকে।
2. তরঙ্গদৈর্ঘ্য (Wavelength) – মাধ্যমের ঘনত্ব অনুযায়ী পরিবর্তিত হয় (ঘন মাধ্যমে তরঙ্গদৈর্ঘ্য কমে)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে? প্রতিসরণের সূত্র দুটি লেখো। অথবা, স্নেলের সূত্রটি লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে? প্রতিসরণের সূত্র দুটি লেখো। অথবা, স্নেলের সূত্রটি লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন