এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় কীভাবে দেশভাগের স্মৃতি বর্ণিত হয়েছে?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় কীভাবে দেশভাগের স্মৃতি বর্ণিত হয়েছে?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায় “উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964)“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় কীভাবে দেশভাগের স্মৃতি বর্ণিত হয়েছে?
দেশভাগের অপরিসীম দুঃখ-দুর্দশা, যন্ত্রণা, ছন্নছাড়া জীবন, বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহণ ও পুনর্বাসন প্রভৃতি সমকালীন অনেক বিদগ্ধ মানুষের আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় স্থান পেয়েছে।
উল্লেখযোগ্য আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা –
তৎকালীন উদ্বাস্তু কমিশনার হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘উদ্বাস্তু’, প্রফুল্ল কুমার চক্রবর্তীর ‘দ্য মার্জিনাল মেন’ (প্রান্তিক মানব), শঙ্খ ঘোষের ‘সুপুরি বনের সারি’, প্রফুল্ল রায়ের ‘কেয়া পাতার নৌকা’, দক্ষিণারঞ্জন বসু-র ‘ছেড়ে আসা গ্রাম’, মনিকুন্তলা সেনের ‘সেদিনের কথা’, নিরোদচন্দ্র চৌধুরির ‘অটোবায়োগ্রাফি অফ অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান’ প্রভৃতি আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা বা উপন্যাসে দেশভাগের যন্ত্রণার করুণ সুর ধ্বনিত হয়েছে।
উদ্বাস্তুদের জীবন-যন্ত্রণা –
দেশভাগের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কীভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, নারী নির্যাতন, লুণ্ঠন প্রভৃতির শিকার হয়েছে এবং দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে-তা বিভিন্ন সমকালীন সাহিত্যে যথার্থই ফুটে উঠেছে। দেশত্যাগ কীভাবে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজনের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে, কীভাবে বহু প্রিয়জন দেশভাগের ফলে চিরদিনের মতো একে অপরের থেকে হারিয়ে গেছে তার বাস্তব মর্মস্পর্শী চিত্র ফুটে উঠেছে বিভিন্ন স্মৃতিকথায়। কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন – “আমার মুখে অন্তহীন আত্ম লাঞ্ছনার ক্ষত/আমার বুকে পালানোর, পালানোর আরও পালানোর দেশজোড়া স্মৃতি।”
মন্তব্য –
বাস্তবিকই, দেশভাগ আধুনিক ভারত ইতিহাসের সবচেয়ে বিপর্যয়কারী ঘটনা। এত বড়ো গণপ্রস্থানের উদাহরণ বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। সেই অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশার যে যৎসামান্য অংশ লিখিত আকারে আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা রূপে আমাদের কাছে প্রকাশিত হয়েছে-তা সত্যই বেদনাদায়ক।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
দেশভাগের স্মৃতিচারণমূলক রচনাগুলো কী ধরনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে?
দেশভাগের স্মৃতিচারণমূলক রচনাগুলোতে দেশভাগের যন্ত্রণা, উদ্বাস্তু জীবনের দুঃখ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, নারী নির্যাতন, সম্পত্তি লুণ্ঠন, প্রিয়জনের বিচ্ছেদ এবং পুনর্বাসনের সংগ্রামের মর্মস্পর্শী বর্ণনা রয়েছে।
দেশভাগ নিয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার নাম কী?
দেশভাগ নিয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার নাম হল –
1. হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘উদ্বাস্তু’
2. প্রফুল্ল কুমার চক্রবর্তীর ‘দ্য মার্জিনাল মেন’
3. শঙ্খ ঘোষের ‘সুপুরি বনের সারি’
4. প্রফুল্ল রায়ের ‘কেয়া পাতার নৌকা’
5. দক্ষিণারঞ্জন বসুর ‘ছেড়ে আসা গ্রাম’
6. মনিকুন্তলা সেনের ‘সেদিনের কথা’
7. নিরোদচন্দ্র চৌধুরীর ‘অটোবায়োগ্রাফি অফ অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান’।
শঙ্খ ঘোষের লেখায় দেশভাগের স্মৃতি কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে?
শঙ্খ ঘোষ ‘সুপুরি বনের সারি’-তে দেশভাগের যন্ত্রণাকে “আমার মুখে অন্তহীন আত্মলাঞ্ছনার ক্ষত/আমার বুকে পালানোর, পালানোর আরও পালানোর দেশজোড়া স্মৃতি” বলে বর্ণনা করেছেন, যা উদ্বাস্তুদের মানসিক যন্ত্রণাকে প্রতিফলিত করে।
দেশভাগের স্মৃতিকথাগুলো ঐতিহাসিকভাবে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
এগুলো শুধু ব্যক্তিগত স্মৃতি নয়, বরং একটি জাতির ট্র্যাজেডির দলিল। বিশ্ব ইতিহাসে এত বড় গণপ্রস্থানের নজির খুব কম, এবং এই রচনাগুলো তারই সাক্ষ্য বহন করে।
দেশভাগের সাহিত্য কেন আজও প্রাসঙ্গিক?
সাম্প্রদায়িকতা, শরণার্থী সংকট ও মানবিক ট্র্যাজেডি আজও বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান। তাই দেশভাগের স্মৃতিচারণমূলক রচনাগুলো বর্তমান প্রজন্মের জন্য একটি সতর্কবার্তা বহন করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় কীভাবে দেশভাগের স্মৃতি বর্ণিত হয়েছে?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় কীভাবে দেশভাগের স্মৃতি বর্ণিত হয়েছে?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায় “উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964)” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন