এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে জনঘনত্ব বেশি – কারণ ব্যাখ্যা করো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের জনসংখ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে জনঘনত্ব বেশি – কারণ ব্যাখ্যা করো।
ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে জনঘনত্ব অধিক হওয়ার কারণ –
ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে যেমন বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা; পাকিস্তানের সীমান্তে অবস্থিত পাঞ্জাব এবং শ্রীলঙ্কার নিকটতম রাজ্য তামিলনাড়ুতে জনঘনত্ব যথেষ্ট বেশি। কারণ –
- দেশবিভাগ – দেশবিভাগের পর অনেক মানুষ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণে পাকিস্তান থেকে পাঞ্জাবে চলে আসে। এবং 1971 খ্রিস্টাব্দে অগ্নিশিখায় বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরাতে পরিব্রাজিত হয়। ফলে এই রাজ্যগুলিতে জনঘনত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
- আর্থিক নিরাপত্তা – নেপাল, ভুটান থেকেও বহু নেপালি ও অন্য ভাষাভাষির মানুষ আর্থিক নিরাপত্তার কারণে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যে চলে এসেছে। ফলে জনঘনত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রীলঙ্কা থেকেও অনেক তামিল তামিলনাড়ুতে পরিব্রাজিত হচ্ছে।
- চিনের আগ্রাসননীতি – চিনের আগ্রাসন নীতির জন্য অনেক তিব্বতীয় বৌদ্ধ নিরাপত্তার কারণে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে আশ্রয় নিয়েছে। ফলে জনঘনত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধাভোগ – অনেকসময় কর্মসূত্রে ও জীবিকানির্বাহের সুযোগে অর্থনৈতিক সুবিধার্থে অনেক মানুষ বেআইনিভাবে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যে অনুপ্রবেশ করছে ও জনঘনত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
কোন কোন সীমান্তবর্তী রাজ্যে জনঘনত্ব বেশি?
পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা (বাংলাদেশ সীমান্ত), পাঞ্জাব (পাকিস্তান সীমান্ত), তামিলনাড়ু (শ্রীলঙ্কার নিকটে) এবং উত্তরপ্রদেশ/বিহার (নেপাল/ভুটান/চিন সীমান্তের কাছাকাছি) ইত্যাদি সীমান্তবর্তী রাজ্যে জনঘনত্ব বেশি।
দেশবিভাগ কীভাবে জনঘনত্ব বাড়িয়েছে?
1947 -এ ভারত-পাকিস্তান বিভাগ ও 1971 -এ বাংলাদেশ সৃষ্টির সময় লক্ষাধিক শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা ও পাঞ্জাবে আশ্রয় নেয়, যা জনসংখ্যা বাড়ায়।
অর্থনৈতিক কারণ কীভাবে প্রভাব ফেলে?
নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ থেকে মানুষ কাজের সন্ধানে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে আসে, বিশেষত কৃষি, নির্মাণ ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে।
শরণার্থী সমস্যা কোন রাজ্যগুলিকে প্রভাবিত করেছে?
শরণার্থী সমস্যা যে রাজ্যগুলিকে প্রভাবিত করেছে সেগুলি হলো –
1. পশ্চিমবঙ্গ/ত্রিপুরা – বাংলাদেশি শরণার্থী।
2. পাঞ্জাব – পাকিস্তান থেকে শিখ ও হিন্দু শরণার্থী।
3. তামিলনাড়ু – শ্রীলঙ্কার তামিল শরণার্থী।
4. উত্তরপ্রদেশ/বিহার – তিব্বতি বৌদ্ধ (চিনের আগ্রাসনের কারণে)।
প্রাকৃতিক সম্পদ কীভাবে জনবন্টনকে প্রভাবিত করে?
অসমের চা বাগান, পাঞ্জাবের কৃষি উর্বরতা বা পশ্চিমবঙ্গের শিল্পাঞ্চল কর্মসংস্থান দিয়ে জনসংখ্যা আকর্ষণ করে।
সরকারি নীতি কি জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে?
NRC (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি), সীমান্ত সুরক্ষা (BBMF) ইত্যাদি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক ও মানবাধিকার ইস্যুতে চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
জনবসতি বৃদ্ধিতে জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থান কী ভূমিকা রাখে?
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার উর্বরতা (পশ্চিমবঙ্গ/বাংলাদেশ) বা পাঞ্জাবের নদীভিত্তিক কৃষি জনবসতি বৃদ্ধির সহায়ক।
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কি জনপ্রবাহের কারণ?
হ্যাঁ, যেমন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বা মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংকট ভারতের সীমান্তে প্রভাব ফেলে।
ভবিষ্যতে জনঘনত্ব কেমন হবে?
অর্থনৈতিক অসাম্য, জলবায়ু উদ্বাস্তু (বাংলাদেশের নিম্নাঞ্চল) ও রাজনৈতিক অস্থিরতা জনপ্রবাহ বাড়াতে পারে, ফলে ঘনত্ব আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে জনঘনত্ব বেশি – কারণ ব্যাখ্যা করো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের জনসংখ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন