আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো ভারতীয় উপমহাদেশ বলতে কী বোঝ? রাজ্য পুনর্গঠনে ভাষার ভূমিকা কী? এই প্রশ্ন দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারতের অবস্থান ও প্রশাসনিক বিভাগের প্রশ্ন। ভারতীয় উপমহাদেশ বলতে কী বোঝ? রাজ্য পুনর্গঠনে ভাষার ভূমিকা কী? আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।
ভারতীয় উপমহাদেশ বলতে কী বোঝ?
ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা—এই 6টি দেশের মধ্যে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক যোগসূত্ৰ এত বেশি যে, এই 6টি দেশকে একসঙ্গে বলে ভারতীয় উপমহাদেশ। দেশগুলির মধ্যে ভারতের ক্ষেত্রমান ও জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি এবং অবস্থান অনুযায়ী এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় ভারতের অবস্থান প্রায় কেন্দ্রীয় বা দেশগুলির মধ্যবর্তী। স্বভাবতই গোটা অঞ্চলটির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি হয়েছে ভারত। এই কারণে অঞ্চলটির ভারতীয় উপমহাদেশ নামকরণ আরও অর্থবহ হয়ে উঠেছে।
রাজ্য পুনর্গঠনে ভাষার ভূমিকা কী?
ভারতের রাজ্য পুনর্গঠনে ভাষার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ভারতে নানা ভাষাভাষীর মানুষ বাস করে। সংবিধানে 17টি ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও দেশের নানা প্রান্তে আরও অন্তত 160টি ভাষা প্রচলিত রয়েছে। কোনো বিস্তৃত অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ যে ভাষায় কথা বলে তার ওপর ভিত্তি করে সাধারণত সেই অঞ্চলটিকে অঙ্গরাজ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। 1956 সালে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্যের বিভাজন করা হয় যেমন—উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ ইত্যাদি 14টি অঙ্গরাজ্য এবং দিল্লি, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ইত্যাদি 6টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
ভারতীয় উপমহাদেশ ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে বিচিত্র একটি অঞ্চল। এটি ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং আফগানিস্তান – এই সব দেশ নিয়ে গঠিত। উত্তর দিকে হিমালয় পর্বতমালা আর দক্ষিণে ভারত মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত এই উপমহাদেশের নিজস্ব ভূ-প্রকৃতি রয়েছে। এখানে নানা ধরনের ভূ-গঠন, জলবায়ু ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন দেখা যায়।
স্বাধীনতা লাভের পর ভারতে ভাষাগত ভিত্তিতে রাজ্য গঠনের দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। এই দাবীর প্রেক্ষিতে ১৯৫৬ সালে ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (SRC) গঠিত হয়। কমিশনের সুপারিশ অনুসারে ভারতে ১৪টি ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠন করা হয়। এই পদক্ষেপ ভারতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
যদিও ভাষাগত ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠনকে সম্পূর্ণ সমাধান হিসেবে দেখা যায় না। কিছু কিছু রাজ্যে এখনও ভাষাগত সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে, ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন ভারতীয় উপমহাদেশের বাস্তবতা স্বীকার করে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।