এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূত্রপাত – ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল? ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূত্রপাত নিয়ে আলোচনা করো। নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল? ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূত্রপাত নিয়ে আলোচনা করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল? ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূত্রপাত নিয়ে আলোচনা করো।
Contents Show

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল?

বেনিয়া ব্রিটিশ মূলত অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কারণে এদেশে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগী হয়েছিল। ঊনবিংশ শতকের সূচনায় ভারতে কোম্পানির রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন পরিচালনার জন্য ইংরেজি শিক্ষিত কর্মচারীর বিপুল প্রয়োজন দেখা দেয়। বলাবাহুল্য, সুদূর ইংল্যান্ড থেকে এই সকল কর্মচারীদের ভারতে এনে প্রশাসনিক কার্যে নিযুক্ত করা ছিল যথেষ্টই ব্যয় সাপেক্ষ। তাই ভারতীয়দের মধ্যে যৎসামান্য ইংরেজি শিক্ষার প্রচলন ঘটিয়ে সুলভ তথা অনুগত কেরানি শ্রেণি তৈরির লক্ষ্যে কোম্পানি ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগী হয়েছিল।

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূত্রপাত নিয়ে আলোচনা করো।

ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্নে ভারতে পাঠশালা, টোল, মক্তব, মাদ্রাসা প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভারতীয়রা আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত ভাষার মাধ্যমে শিক্ষালাভ করত। ব্রিটিশ শাসকরাও প্রথম দিকে এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে বিশেষ আগ্রহ দেখায়নি।

এই সময় বড়লাট ওয়ারেন হেস্টিংস এর উদ্যোগে 1781 খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা মাদ্রাসা, উইলিয়াম জোন্সের উদ্যোগে 1784 খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা এশিয়াটিক সোসাইটি এবং জোনাথন ডানকানের উদ্যোগে 1791/92 খ্রিস্টাব্দে বারানসিতে সংস্কৃত কলেজ প্রভৃতি প্রাচ্যবাদী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। লর্ড ওয়েলেসলী 1800 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফোর্ড উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

পরবর্তীকালে অবশ্য ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন উদ্যোগ লক্ষ করা যায়, যেমন –

মিশনারিদের উদ্যোগ –

  • খ্রিষ্টান মিশনারি মার্শম্যান, ওয়ার্ড ও উইলিয়াম কেরি 1800 খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। এই মিশন 1818 খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশন, চার্চ মিশনারি সোসাইটি ও লন্ডন মিশনারি সোসাইটি এর উদ্যোগে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বেশকিছু ইংরেজী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • স্কটল্যান্ডের মিশনারি আলেকজান্ডার ডাফ এর উদ্যোগে 1830 খ্রিস্টাব্দে জেনারেল এসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন বর্তমানে স্কটিশ চার্চ কলেজ, বেলজিয়াম থেকে আগত জেসুইট মিশনারিদের উদ্যোগে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ এবং লরেট হাউস কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া মিশনারিদের উদ্যোগে শিবপুরে বিশপ কলেজ (1820) এবং মাদ্রাজে খ্রিস্টান কলেজ (1837) প্রতিষ্ঠিত হয়।

অন্যান্যদের উদ্যোগ –

  • কয়েকজন মুক্তমনা ভারতীয় এবং কয়েকজন বিদেশি এদেশে ইংরেজি ও আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। রামমোহন রায় 1815 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় এনগলো হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ডেভিড হেয়ার, রাধাকান্ত দেব, বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়, স্যার এডওয়ার্ড হাইড ইস্ট প্রমুখের প্রচেষ্টায় কলকাতায় 1817 খ্রিস্টাব্দে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্টিত হয়। এটি 1855 খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজ নামে পরিচিত হয়।
  • হেয়ার 1817 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় পটলডাঙ্গা একাডেমি বর্তমানে হেয়ার স্কুল নামে আরও একটি ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া হেয়ারের উদ্যোগে ইংরেজী ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনার উদ্দেশ্য কলকাতা স্কুল বুক সোসাইটি (1817 খ্রিস্টাব্দ) এবং বিভিন্ন স্থানে ইংরেজী বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্দেশ্য কলকাতা স্কুল সোসাইটি (1818 খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী –

এই সময় ভারতে প্রাচ্য না পাশ্চাত্য রীতিতে সরকারের শিক্ষাদান করা উচিত – যে বিষয়ের আলোচনায় কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশনের সদস্যরা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। যথা – প্রাচ্যবাদী বা ওরিয়েন্টালিস্ট এবং পাশ্চাত্যবাদী বা এনগোলিসিস্ট।

  • প্রাচ্যবাদী – যাঁরা প্রাচ্য রীতিতে ভারতে শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন না, তাঁরা প্রাচ্যবাদী নামে পরিচিত হন। প্রাচ্যবাদের সমর্থকদের মধ্যে ছিলেন ওয়ারেন হেস্টিংস, কোলব্রুক ও উইলসন প্রমুখরা।
  • পাশ্চাত্যবাদী – যাঁরা পাশ্চাত্য রীতিতে ভারতে শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন তাঁরা পাশ্চাত্যবাদী নামে পরিচিত হন। স্বয়ং মেকলে ছিলেন উগ্র পাশ্চাত্যবাদী। মেকলের সমর্থকদের মধ্যে ছিলেন আলেকজান্ডার ডাফ, কলভিন প্রমুখরা।

ম্যাকলে মিনিট –

1835 খ্রিস্টাব্দে 2 রা ফেব্রুয়ারি কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশনের সভাপতি ও বেন্টিকের আইনসচিব টমাস ব্যাবিংটন ম্যাকলে যে শিক্ষাসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন বেন্টিকের কাছে পেশ করেন, সেটাই ম্যাকলে মিনিট নামে পরিচিত।

এই প্রস্তাবের মূল বক্তব্য ছিল –

  • প্রাচ্যের শিক্ষায় কোনো বৈজ্ঞানিক চেতনা নেই এবং তা পাশ্চাত্য শিক্ষার চেয়ে সম্পূর্ণ নিকৃষ্ট।
  • মেকলের মতে, “ভালো ইওরোপিও গ্রন্থাগারের একটি তাক আরব ও ভারতের সমগ্র সাহিত্যের সমকক্ষ।”
  • তিনি মনে করতেন যে, পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের ফলে এমন একটি ভারতীয় সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হবে যারা ‘ রক্তে ও বর্ণে হবে ভারতীয়, কিন্তু রুচি, মত, নৈতিকতা এবং বুদ্ধিমত্তায় হবে ইংরেজ।’

ক্রমনিম্ন পরিশ্রুত নীতি –

ম্যাকলে বলেছিলেন যে, ভারতীয়দের ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হলে, প্রথমে ভারতীয় উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। যেমন একটি গ্লাসের জল গ্লাসের গা বেয়ে সারা গ্লাস ভরিয়ে তুলে, ঠিক সেভাবেই ভারতীয়দের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হবে, এটাই চুঁইয়ে পড়া নীতি বা ক্রমনিম্ন পরিশ্রুত নীতি নামে পরিচিত।

বেন্টিংয়ের উদ্যোগ –

ম্যাকলের বাগ্মীতা ও যুক্তির ফলে পাশ্চাত্যবাদীরা জয়যুক্ত হন এবং লর্ড বেন্টিক ইংরেজি শিক্ষা সরকারের নীতি হিসেবে 1835 খ্রিস্টাব্দে 7 ই মার্চ ঘোষণা করেন। তাঁর উদ্যোগের ফলে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্য 1835 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মেডিকেল কলেজ, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, বোম্বাইয়ে এলফিলস্টোন ইনস্টিটিউশন, 1847 খ্রিস্টাব্দে রুরকি তে থমসন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মাদ্রাজে মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি হাই স্কুল প্রভৃতি স্থাপিত হয়।

উডের প্রতিবেদন –

1854 খ্রিস্টাব্দে 19 শে জুলাই বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড একটি শিক্ষা সংক্রান্ত প্রতিবেদন পেশ করেন যা উডের প্রতিবেদন নামে পরিচিত। একে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ম্যাগনা কার্তা বা মহাসনদ বলা হয়। মূলত এই নির্দেশনামা অনুসারে আধুনিক ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।

এই নির্দেশনামায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠা, একটি শিক্ষা বিভাগ, কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, শিক্ষক শিক্ষন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, নারীশিক্ষার প্রসার, মাতৃভাষার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষাদান প্রভৃতির কথা বলা হয়।

পাশ্চাত্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান –

  • মধ্যবিত্তদের ব্যক্তিগত উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগেও ভারতে নতুন নতুন পাশ্চাত্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে। 1857 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন স্যার জেমস উইলিয়াম কোলভিল।
  • এদেশে 1857 খ্রিস্টাব্দে যেখানে মধ্য লাহোরে এবং 1887 খ্রিস্টাব্দে এলাহাবাদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এদেশে 1857 খ্রিস্টাব্দে যেখানে কলেজের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৭ টি, সেখানে 1920 খ্রিস্টাব্দে কলেজের সংখ্যা দাঁড়ায় 145 এ। এ ছাড়া সারা দেশে পাশ্চাত্য শিক্ষাপ্রসারের সহায়ক অসংখ্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। 1882 খ্রিস্টাব্দে ভারতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়ায় 3916টি। এগুলিতে প্রায় সওয়া দুই লক্ষ শিক্ষার্থী পাশ্চাত্যের আধুনিক শিক্ষাগ্রহণ করত। এভাবে মধ্যবিত্তদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটে।

মূল্যায়ন –

মধ্যবিত্তদের মধ্য বিপুল সংখ্যাক শিক্ষার্থী পাশ্চাত্য ও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও সেই হারে সরকারি চাকরি বৃদ্ধি পায়নি। পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের উচ্চ শিক্ষিতরা শিল্প, বাণিজ্য এবং দেশীয় রাজাদের কাজে নিযুক্ত হলেও পূর্ব ভারতে সে সুযোগ ছিল খুব কম। কিন্তু মধ্যবিত্তদের মধ্য উচ্চ শিক্ষার বিপুল চাহিদা থাকায় বেসরকারি উদ্যোগে সারা ভারতে বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূচনা কখন হয়?

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূচনা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে, বিশেষ করে 1835 সালে লর্ড বেন্টিকের সময়ে, যখন ইংরেজি শিক্ষাকে সরকারি নীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

ম্যাকলে মিনিট কী?

ম্যাকলে মিনিট হলো টমাস ব্যাবিংটন ম্যাকলে কর্তৃক 1835 সালে পেশ করা একটি প্রতিবেদন, যেখানে তিনি প্রাচ্য শিক্ষার পরিবর্তে পাশ্চাত্য শিক্ষার পক্ষে যুক্তি দেন। তিনি মনে করতেন যে পাশ্চাত্য শিক্ষা ভারতীয়দের মধ্যে ইংরেজি চিন্তাভাবনা ও মূল্যবোধ গড়ে তুলবে।

ক্রমনিম্ন পরিশ্রুত নীতি কী?

ক্রমনিম্ন পরিশ্রুত নীতি হলো একটি ধারণা যেখানে প্রথমে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করা হবে এবং তারপর এই শিক্ষা ধীরে ধীরে নিম্ন শ্রেণিতে ছড়িয়ে পড়বে। ম্যাকলে এই নীতির প্রবক্তা ছিলেন।

উডের প্রতিবেদন কী এবং এর গুরুত্ব কী?

উডের প্রতিবেদন হলো 1854 সালে চার্লস উড কর্তৃক পেশ করা একটি প্রতিবেদন, যাকে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার ম্যাগনা কার্তা বলা হয়। এই প্রতিবেদনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, নারী শিক্ষার প্রসার এবং মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের সুপারিশ করা হয়।

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে মিশনারিদের ভূমিকা কী ছিল?

মিশনারিরা ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন, কলকাতায় স্কটিশ চার্চ কলেজ, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ এবং অন্যান্য অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী বিতর্ক কী ছিল?

প্রাচ্যবাদীরা প্রাচ্য ভাষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে শিক্ষাদানের পক্ষে ছিলেন, অন্যদিকে পাশ্চাত্যবাদীরা ইংরেজি ও পাশ্চাত্য শিক্ষার পক্ষে ছিলেন। এই বিতর্কের শেষে পাশ্চাত্যবাদীরা জয়ী হন এবং ইংরেজি শিক্ষাকে সরকারি নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে ভারতীয়দের ভূমিকা কী ছিল?

রামমোহন রায়, ডেভিড হেয়ার, রাধাকান্ত দেব প্রমুখ ব্যক্তিরা ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা হিন্দু কলেজ, এনগলো হিন্দু স্কুল এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।

পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে সরকারি উদ্যোগ কী ছিল?

সরকারি উদ্যোগে কলকাতা মেডিকেল কলেজ, এলফিনস্টোন ইনস্টিটিউশন, থমসন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাব কী ছিল?

পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে ভারতীয়দের মধ্যে আধুনিক চিন্তাভাবনা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। তবে এর ফলে প্রাচ্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি কিছুটা পিছিয়ে পড়ে এবং উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের সমস্যা দেখা দেয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল? ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূত্রপাত নিয়ে আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল? ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূত্রপাত নিয়ে আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন