ভারতের পাঞ্জাব সমভূমি ও ব্রহ্মপুত্র সমভূমি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো

এই আর্টিকেলে, আমরা ভারতের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমভূমি – পাঞ্জাব সমভূমি এবং ব্রহ্মপুত্র সমভূমি – সম্পর্কে আলোচনা করব। দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” অধ্যায়ের “ভারতের ভূপ্রকৃতি” বিভাগের অন্তর্গত।

ভারতের পাঞ্জাব সমভূমি ও ব্রহ্মপুত্র সমভূমি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো

পাঞ্জাব সমভূমি

পাঞ্জাব সমভূমির বিস্তার –

উত্তরের সমভূমি অঞ্চলের পশ্চিমাংশের নাম পাঞ্জাব সমভূমি। অঞ্চলটি যমুনা নদীর পশ্চিম দিক থেকে প্রসারিত হ পাকিস্তানের বেশ কিছু অংশ পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে। দিল্লি, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা এই অঞ্চলের অন্তর্গত।

পাঞ্জাব সমভূমির বৈশিষ্ট্য –

  • সিন্ধুর উপনদী শতদ্রু, বিপাশা, ইরাবতী ও চন্দ্রভাগা পলি সঞ্চয় করে এই সমভূমিটি তৈরি করেছে। এখানকার, নদীতীরবর্তী নতুন পলিগঠিত স্থানসমূহকে বলা হয় বেট। নদী থেকে দূরবর্তী প্রাচীন পলিময় অংশকে বলা হয় বাগর।
  • সমভূমিটির গড় উচ্চতা 200-240 মিটার।
  • এই অংশে পাঁচটি দো-আব দেখা যায়। এগুলি হল — 1. বিস্ত-জলন্ধর দোয়াব, 2. বারি দোয়াব, 3. রেচনা দোয়াব, 4. চাজ দোয়াব এবং 5. সিন্ধু-সাগর দোয়াব। 6. পাঞ্জাব সমভূমির উঁচু পলিময় ঢিবিগুলিকে বলা হয় ধায়া।
পাঞ্জাব সমভূমির অবস্থান

ব্রষ্মপুত্র সমভূমি

ব্রষ্মপুত্র সমভূমির বিস্তার –

640 কিমি দীর্ঘ ও 90-100 কিমি প্রশস্ত ব্রক্ষ্মপুত্র উপত্যকা পূর্বে সদিয়া থেকে পশ্চিমে ধুবড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত। এর আয়তন প্রায় 56 হাজার বর্গকিমি। অসমের সমতলভূমি এর অন্তর্গত।

ব্রষ্মপুত্র সমভূমির বৈশিষ্ট্য –

  • উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণে পর্বত-ঘেরা এই সমভূমিটি দীর্ঘ ও সংকীর্ণ এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে ঢালু।
  • পূর্বদিকে সমভূমির উচ্চতা প্রায় 130 মিটার এবং পশ্চিমে প্রায় 30 মিটার।
  • ব্রক্ষ্মপুত্র এবং তার বিভিন্ন উপনদীর পলি জমে এই সমভূমি তৈরি হয়েছে। পলি সমৃদ্ধ বলে এখানকার মাটি খুব উর্বর।
  • সমভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় ব্রক্ষ্মপুত্র নদ তার গতিপথে বহু বালুচর সৃষ্টি করেছে। এরকমই একটি বালুচরের নাম মাজুলি। এর আয়তন আগে 926 বর্গকিমি ছিল, কিন্তু ক্ষয়ের ফলে এখন তা 614 বর্গকিমিতে পৌঁছেছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম নদী-দ্বীপ।
ব্রহ্মপুত্র সমভূমির অবস্থান

পাঞ্জাব এবং ব্রহ্মপুত্র সমভূমি ভারতের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের উর্বর মাটি, বিপুল পরিমাণে জলসম্পদ, এবং অনুকূল জলবায়ু এই অঞ্চলগুলিকে কৃষিক্ষেত্রে সমৃদ্ধ করে তুলেছে।

Share via:

মন্তব্য করুন