এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার – প্রবন্ধ রচনা

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা নিয়ে আলোচনা করব। প্রবন্ধ রচনা মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় বা স্কুলের পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা। এই রচনাটি প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। তাই, এই রচনাটি একবার মুখস্ত করলে ক্লাস ৬ থেকে ১২ পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবে।

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার - প্রবন্ধ রচনা

Superstition is to religion what astrolog is to astronomy-the mad daughter of a wise mother.

– Voltaire

ভূমিকা –

বিজ্ঞানমনস্কতা আর বৈজ্ঞানিক তথ্য সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করা-এ দুয়ের মধ্যে অনেক তফাত রয়েছে। বৈজ্ঞানিক বিষয় সম্পর্কে কোনো ব্যক্তি অবহিত হলেই যে তিনি বিজ্ঞানমনস্কও হয়ে উঠবেন, এমনটা নয়। আসলে বাইরের জগতের বস্তুতান্ত্রিক নিয়মের কার্যকারণ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান লাভ করেই বিজ্ঞানচর্চা সম্ভব। কিন্তু পৃথিবীর সব ঘটনাই যে এই কার্যকারণ সম্পর্কের আওতায় পড়ে, এই সহজ যুক্তিকাঠামোটিকে উপলব্ধি করা এবং সেই অনুযায়ী নিজের জাগতিক ও মানসিক যুক্তিবোধ গড়ে তোলা-এই-ই হল বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে ওঠার প্রথম ধাপ।

সংঘাত –

পৃথিবীর সহজ সত্যিগুলোকে মানুষ যখন কুসংস্কারের অন্ধকারে ঢেকে ফেলে, নিজের চোখ বা কানের চেয়েও অন্যের বলা কথাকে চটকের জোরে সত্যি বলে মানতে থাকে, তখনই তৈরি হয় যুক্তি আর সংস্কারের মধ্যে সংঘাত। অন্য সব প্রাণীর চেয়ে মানুষ যেখানে তার বুদ্ধিবৃত্তি ও বিচারশক্তির জোরে, উৎকর্ষ লাভ করেছে, সেখানেই বিজ্ঞান-মনস্কতার সূত্রপাত-যার হাত ধরে লক্ষকোটি বছরব্যাপী বিবর্তনের ধারায় মানুষ পৃথিবীতে হয়ে উঠেছে শ্রেষ্ঠ প্রাণী। অথচ বিজ্ঞানের এই প্রবলতেজা গতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার।

কুসংস্কারের কারণ –

আসলে সভ্যতার আদিপর্বে মানুষ যখন বনবাসী, তখন প্রকৃতির কাছে সে ছিল নিতান্তই অসহায়। তার না জানা ছিল প্রকৃতিকে কাজে লাগানোর শক্তি, না জানা ছিল সেই দুর্যোগের কারণ। সে শুধু অজানা ভয়ে শঙ্কিত হত, বাঁচার রাস্তা খুঁজত। বিশাল প্রাকৃতিক শক্তির প্রতি তুচ্ছ মানুষের তখন স্বাভাবিকভাবেই ভয়মিশ্রিত সম্ভ্রমবোধ জাগত। সেই সম্ভ্রমবোধ থেকে মানুষ সেই শক্তির কাছে নতজানু হওয়া শুরু করল। তার নিজস্ব বোধবুদ্ধির বাইরে বেরিয়ে গিয়ে সেই কাল্পনিক অপদেবতাদের শান্ত করার জন্য কিছু কল্পিত আচার, ক্রিয়াকর্ম সে পালন করতে লাগল। এভাবেই শুরু হয় আধিদৈবিক ও আধিভৌতিক শক্তির ওপর মানুষের অন্ধবিশ্বাসমূলক নির্ভরতার যুগ।

কুসংস্কারের ধরন –

কিন্তু, আজও যখন বিজ্ঞানের রথের চাকা এগিয়ে গেছে বহুদূর, তবুও আমাদের মধ্যে এই কুসংস্কারের ধারা অব্যাহত।

আজও হাঁচি, কাশি, জাতিভেদ, বর্ণভেদ, তাবিজ, কবচ, তুকতাক, ঝাড়ফুঁক, ডাইনি-সবমিলিয়ে সমাজ ক্ষয়িষ্ণুপ্রায়। সেজন্যেই মাউসে ক্লিকরত আঙুলে চকচক করে ওঠে হরেক আংটির ছটা। কার্যকারণ সূত্রের মধ্য দিয়ে সত্যে পৌঁছোনোর চেয়ে, চটজলদি সুখের জন্য হাপিত্যেশ করে ঘুরতে ঘুরতে মানুষ, আজ পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকতেই বেশি স্বস্তি বোধ করেছে। ফলে ভণ্ডদের জুয়াচুরির হারও বেড়ে গেছে।

উপসংহার –

কুসংস্কারের হাত থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষমতা বিজ্ঞানের নেই, আছে বিজ্ঞানচেতনার। যুক্তি, মুক্তচিন্তা ও কার্যকারণ সূত্রের মিশেলই মানুষকে এক স্বচ্ছ পৃথিবীর সন্ধান দিতে পারে, বলতে পারে।

আমাদের আজকের আলোচনা বিজ্ঞান ও কুসংস্কারের প্রবন্ধ রচনা নিয়ে ছিল। আমরা দেখেছি যে, এই প্রবন্ধটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বারবার দেখা যায়। তাই, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

তবে, কেবল মুখস্ত করে এই প্রবন্ধের ভালো উত্তর লেখা সম্ভব নয়। বিজ্ঞান ও কুসংস্কারের মৌলিক ধারণাগুলো বুঝতে হবে, বিভিন্ন উদাহরণ দিতে হবে এবং নিজের মতামত যুক্ত করতে হবে।

Share via:

মন্তব্য করুন