আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদানরূপে বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর’ গুরুত্ব

Gopi

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদানরূপে বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর’ গুরুত্বপূর্ণ কেন? নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদানরূপে বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর’ গুরুত্বপূর্ণ কেন?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের প্রথম অধ্যায় “ইতিহাসের ধারণা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদানরূপে বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী 'সত্তর বৎসর' গুরুত্বপূর্ণ কেন?
Contents Show

আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদানরূপে বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর’ গুরুত্বপূর্ণ কেন?

আধুনিক ভারত ইতিহাসের আকর উপাদান হিসেবে বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর’ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।

সত্তর বৎসর

  • প্রকাশ – লেখকের আত্মকথন প্রথমে ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় ধারাবাহিক-ভাবে প্রকাশিত হয় এবং পরে 1954 খ্রিস্টাব্দে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
  • পরিসর – আত্মজীবনীতে 1858-80 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত লেখকের আত্মকথা ও দেশকথা বর্ণিত হয়েছে।

জ্ঞাতব্য বিষয় –

  • সমাজচিত্র – উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে লেখকের জন্মস্থান শ্রীহট্টের সমাজজীবন ও লোকাচার, শিক্ষাব্যবস্থায় মিশনারী প্রভাব, জাতি-বর্ণ ব্যবস্থার কঠোরতা, হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক, উচ্চশিক্ষার্থে লেখকের কলকাতায় আগমন প্রভৃতির এক জীবন্তচিত্র প্রতিফলিত হয়েছে।
  • রাজনৈতিক প্রসঙ্গ – বিশিষ্ট দেশনেতা বিপিনচন্দ্র পালের রাজনৈতিক জীবনের নানান তথ্যও পরিবেশিত হয়েছে তাঁর আত্মজীবনীতে। জাতীয় জাগরণের নায়ক সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দমোহন বসুর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা, ব্রাহ্মনেতা শিবনাথ শাস্ত্রীর সঙ্গে তার যোগাযোগ ও ব্রাহ্মসমাজে যোগদান, চরমপন্থায় লেখকের দীক্ষাগ্রহণ প্রভৃতির বাস্তব চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর আত্মকথনে।
  • ভারতসভা ও হিন্দুমেলার প্রসঙ্গ – সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দমোহন বসুর উদ্যোগে 1876 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় প্রাক্-কংগ্রেস পর্বের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন-ভারতসভা। এই সভার উদ্দেশ্য ও কার্যকলাপের বিস্তৃত বিবরণ বিপিনচন্দ্র তাঁর আত্মকথনে পরিবেশন করেছেন। শুধু তাই নয়, নবগোপাল মিত্রের হিন্দুমেলা সম্পর্কেও নানান তথ্য এতে উল্লেখিত হয়েছে।
  • কলকাতার প্রসঙ্গ – আত্মজীবনীর পাতায় পাতায় পুরোনো কলকাতার যে চিত্র তিনি এঁকেছেন, আঞ্চলিক ইতিহাসের তা গুরুত্বপূর্ণ দলিল। তৎকালীন কলকাতার রাস্তাঘাট, ছাত্রাবাস, প্রেসিডেন্সি কলেজ, বাবুকালচার ও মদ্যপান, মদ্যপান নিবারণী সমিতি প্রভৃতির এক মনোজ্ঞ বিবরণ তিনি পরিবেশ করেছেন।
  • মন্তব্য – অসম্পূর্ণতা ও স্বল্প পরিসর দোষে দুষ্ট হলেও তাঁর আত্মজীবনী শুধু তাঁর জীবনদর্পণ নয়, তা একাধারে সমকালীন সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক জীবনের চলমান প্রতিচ্ছবি। স্বয়ং লেখকের পরিভাষায় – ‘আমার সত্তর বৎসরের জীবনকথা বাস্তবিক এই বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাসের কথা’।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর’ কীভাবে প্রকাশিত হয়েছিল?

সত্তর বৎসর প্রথমে ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। পরে 1954 সালে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।

সত্তর বৎসর আত্মজীবনীর সময়সীমা কী?

এই আত্মজীবনীতে 1858 থেকে 1880 সাল পর্যন্ত লেখকের ব্যক্তিগত ও দেশের ঘটনাবলি বর্ণিত হয়েছে।

সত্তর বৎসর আত্মজীবনীতে উনিশ শতকের সমাজচিত্র কীভাবে ফুটে উঠেছে?

লেখকের জন্মস্থান শ্রীহট্টের সমাজজীবন, শিক্ষাব্যবস্থায় মিশনারী প্রভাব, জাতি-বর্ণ ব্যবস্থার কঠোরতা, হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক, এবং কলকাতায় উচ্চশিক্ষার জন্য আগমন ইত্যাদি বিষয়ে জীবন্ত চিত্র পাওয়া যায়।

বিপিনচন্দ্র পালের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে ‘সত্তর বৎসর’ কী তথ্য দেয়?

এই আত্মজীবনীতে বিপিনচন্দ্র পালের রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক, যেমন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দমোহন বসুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, ব্রাহ্মসমাজে যোগদান, এবং চরমপন্থায় দীক্ষাগ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।

ভারতসভা ও হিন্দুমেলা সম্পর্কে ‘সত্তর বৎসর’ কী আলোচনা করে?

বিপিনচন্দ্র পাল তাঁর আত্মজীবনীতে ভারতসভার উদ্দেশ্য ও কার্যকলাপ, এবং নবগোপাল মিত্রের হিন্দুমেলা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পরিবেশন করেছেন।

সত্তর বৎসর আত্মজীবনীতে কলকাতার প্রসঙ্গ কীভাবে উঠে এসেছে?

পুরোনো কলকাতার রাস্তাঘাট, ছাত্রাবাস, প্রেসিডেন্সি কলেজ, বাবু কালচার, মদ্যপান, এবং মদ্যপান নিবারণী সমিতি ইত্যাদির মনোজ্ঞ বিবরণ এই আত্মজীবনীতে পাওয়া যায়।

সত্তর বৎসর আত্মজীবনীর ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

এই আত্মজীবনী শুধু বিপিনচন্দ্র পালের জীবনকথা নয়, এটি উনিশ শতকের সমাজ ও রাজনৈতিক জীবনের একটি চলমান প্রতিচ্ছবি। লেখক নিজেই বলেছেন, “আমার সত্তর বৎসরের জীবনকথা বাস্তবিক এই বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাসের কথা।”

সত্তর বৎসর আত্মজীবনীর কিছু সীমাবদ্ধতা কী?

এই আত্মজীবনী অসম্পূর্ণ এবং স্বল্প পরিসরের দোষে দুষ্ট। তবে তা ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত মূল্যবান।

বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী কেন আধুনিক ভারত ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান?

এটি শুধু একজন বিশিষ্ট নেতার জীবনকথা নয়, বরং উনিশ শতকের সমাজ, রাজনীতি, এবং সংস্কৃতির একটি প্রামাণিক দলিল। এটি আধুনিক ভারতের ইতিহাস বুঝতে সহায়ক।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদানরূপে বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর’ গুরুত্বপূর্ণ কেন?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদানরূপে বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর’ গুরুত্বপূর্ণ কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের প্রথম অধ্যায় “ইতিহাসের ধারণা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

তারকনাথ পালিত স্মরণীয় কেন?

তারকনাথ পালিত স্মরণীয় কেন?

বাংলা লাইনোটাইপ প্রবর্তনের গুরুত্ব কী?

বাংলা লাইনোটাইপ প্রবর্তনের গুরুত্ব কী?

About The Author

Gopi

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

তারকনাথ পালিত স্মরণীয় কেন?

বাংলা লাইনোটাইপ প্রবর্তনের গুরুত্ব কী?

চার্লস উইলকিনস্ কে ছিলেন? বাংলা ছাপাখানার বিকাশে চার্লস উইলকিন্সের ভূমিকা

ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো। ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ ছিল কেন?