এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলনে বা সমাজ সংস্কারে কেশবচন্দ্র সেনের অবদান

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলনে/সমাজ সংস্কারে কেশবচন্দ্র সেনের অবদান পর্যালোচনা করো। নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলনে/সমাজ সংস্কারে কেশবচন্দ্র সেনের অবদান পর্যালোচনা করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলনে/সমাজ সংস্কারে কেশবচন্দ্র সেনের অবদান পর্যালোচনা করো।
Contents Show

ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলনে/সমাজ সংস্কারে কেশবচন্দ্র সেনের অবদান পর্যালোচনা করো।

উনিশ শতকে বাংলার ধর্ম ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনের ইতিহাসে কেশবচন্দ্র সেন এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। ব্রাহ্মসমাজের প্রাণপুরুষরূপে তিনি লোকসেবা ও সমাজ সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।

ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলনে/সমাজ সংস্কারে কেশবচন্দ্রের অবদান

ব্রাহ্ম সমাজের অভ্যন্তরে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের কর্তৃত্ব যখন মধ্য গগনে, তখন 1857 (মতান্তরে, 1858) খ্রিস্টাব্দে তরুণ কেশবচন্দ্র সেন ব্রাহ্ম সমাজে যোগ দেন এবং অচিরেই দেবেন্দ্রনাথ কর্তৃক ‘ব্রহ্মানন্দ’ উপাধিতে ভূষিত হয়ে ব্রাহ্ম সমাজের ‘আচার্য’ পদে অধিষ্ঠিত হন। কেশবচন্দ্রের বলিষ্ঠ নেতৃত্বগুণে – ব্রাহ্ম আন্দোলন বাংলা তথা ভারতের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পরে। কিন্তু অচিরেই সংস্কারের প্রশ্নে কেশবচন্দ্র-দেবেন্দ্রনাথ মতবিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে এবং তিনি কেশবচন্দ্র সেন ও তার অনুগামীদের (আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী প্রমুখ) ব্রাহ্মসমাজ থেকে বিতাড়িত করেন। বিতাড়িত কেশবচন্দ্র ও তার অনুগামীদের নেতৃত্বে 1866 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ’।

সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে 1870 খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন ‘ভারতীয় সংস্কার সভা’। জনকল্যাণ, সমাজ সংস্কার ও জনগণের নৈতিক উন্নতিসাধন এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল। বয়স্ক শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে তিনি 1870 খ্রিস্টাব্দে নৈশ্য বিদ্যালয় এবং নারী শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে 1871 খ্রিস্টাব্দে ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর অপর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হল ‘তিন আইন’ প্রণয়নে উদ্যোগ গ্রহণ। কেশবচন্দ্রের নেতৃত্বে ব্রাহ্ম সমাজের জোরালো আন্দোলনের ফলেই শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকার নাবালিকা বিবাহ রদ, পুরুষের বহুবিবাহ রদ এবং অসবর্ণ বিবাহকে আইনসিদ্ধ ঘোষণা করেন। তাই এই আইন বহুক্ষেত্রে ‘ব্রাহ্ম বিবাহ আইন’ নামেও পরিচিত হয়। তাঁর উদ্যোগে ‘সুলভ সমাচার’ (1870) পত্রিকাও প্রকাশিত হয়েছিল। 1880 খ্রিস্টাব্দে সর্বধর্ম সমন্বয়ের লক্ষ্যে কেশবচন্দ্র ‘নববিধান ব্রাহ্ম সমাজ’ স্থাপন করেন।

মন্তব্য –

নিছক ধর্ম সংস্কারের সীমিত গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ না রেখে ব্রাহ্মসমাজকে সমাজ সংস্কারের বৃহত্তর অঙ্গনে পরিণত করার কৃতিত্ব কেশবচন্দ্রের প্রাপ্য। ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার কেশবচন্দ্রের নেতৃত্বাধীন ব্রাহ্ম আন্দোলনকে ‘প্রথম সর্ব ভারতীয় আন্দোলন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

কেশবচন্দ্র সেন কে ছিলেন?

কেশবচন্দ্র সেন ছিলেন উনিশ শতকের বাংলার একজন প্রখ্যাত ধর্ম ও সমাজ সংস্কারক। তিনি ব্রাহ্ম সমাজের নেতা হিসেবে এবং সমাজ সংস্কার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

কেশবচন্দ্র সেন ব্রাহ্ম সমাজে কখন যোগ দেন?

কেশবচন্দ্র সেন 1857 বা 1858 সালে ব্রাহ্ম সমাজে যোগ দেন এবং অচিরেই দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক ‘ব্রহ্মানন্দ’ উপাধি ও ‘আচার্য’ পদে ভূষিত হন।

কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ব্রাহ্ম সমাজ কীভাবে প্রসারিত হয়?

কেশবচন্দ্র সেনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ব্রাহ্ম আন্দোলন বাংলা ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ব্রাহ্ম সমাজের সংস্কার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

কেশবচন্দ্র সেন ও দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্যে মতবিরোধ কেন হয়?

সংস্কারের প্রশ্নে কেশবচন্দ্র সেন ও দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দেয়। এর ফলে কেশবচন্দ্র ও তার অনুগামীরা ব্রাহ্ম সমাজ থেকে বিতাড়িত হন।

ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ কে প্রতিষ্ঠা করেন?

1866 সালে কেশবচন্দ্র সেন ও তার অনুগামীরা ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।

কেশবচন্দ্র সেনের সমাজ সংস্কারমূলক কাজগুলি কী ছিল?

1. 1870 সালে তিনি ‘ভারতীয় সংস্কার সভা’ প্রতিষ্ঠা করেন।
2. বয়স্ক শিক্ষা প্রসারে নৈশ্য বিদ্যালয় এবং নারী শিক্ষার প্রসারে ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
3. নাবালিকা বিবাহ রদ, পুরুষের বহুবিবাহ রদ এবং অসবর্ণ বিবাহ আইনসিদ্ধ করার জন্য ব্রাহ্ম সমাজের মাধ্যমে আন্দোলন করেন।
4. 1880 সালে সর্বধর্ম সমন্বয়ের লক্ষ্যে ‘নববিধান ব্রাহ্ম সমাজ’ স্থাপন করেন।

কেশবচন্দ্র সেনের ‘তিন আইন’ কী ছিল?

কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলনের ফলে ব্রিটিশ সরকার নাবালিকা বিবাহ রদ, পুরুষের বহুবিবাহ রদ এবং অসবর্ণ বিবাহকে আইনসিদ্ধ করে। এই আইনগুলি ‘ব্রাহ্ম বিবাহ আইন’ নামেও পরিচিত।

কেশবচন্দ্র সেনের প্রকাশিত পত্রিকার নাম কী?

কেশবচন্দ্র সেনের উদ্যোগে 1870 সালে ‘সুলভ সমাচার’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়।

কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ব্রাহ্ম আন্দোলনকে কী বলা হয়?

ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বাধীন ব্রাহ্ম আন্দোলনকে ‘প্রথম সর্ব ভারতীয় আন্দোলন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

কেশবচন্দ্র সেনের প্রধান অবদান কী?

কেশবচন্দ্র সেন ধর্ম সংস্কারের পাশাপাশি সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি নারী শিক্ষা, বয়স্ক শিক্ষা, বিবাহ সংস্কার এবং সর্বধর্ম সমন্বয়ের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলনে/সমাজ সংস্কারে কেশবচন্দ্র সেনের অবদান পর্যালোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলনে/সমাজ সংস্কারে কেশবচন্দ্র সেনের অবদান পর্যালোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন