এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষা কেন সর্বজনীন হল? ছাপাখানার বিকাশে ও শিক্ষার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটির কী ভূমিকা ছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষা কেন সর্বজনীন হল? ছাপাখানার বিকাশে ও শিক্ষার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটির কী ভূমিকা ছিল?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষা কেন সর্বজনীন হল?
চলমান হরফের প্রচলন ও মুদ্রণ বিপ্লব সারাবিশ্বের জ্ঞানচর্চাকে মুষ্টিমেয় সুবিধাভোগীর হাত থেকে মুক্ত করে পৌঁছে দিয়েছিল সাধারণের দোরগোড়ায়। পূর্বেকার হাতে লেখা পুঁথি ছিল অনেকক্ষেত্রেই দুর্বোধ্য এবং স্বাভাবিকভাবেই পঠন-পাঠনের প্রতি-কূল। কিন্তু ছাপাখানায় ছাপাবই এই অসুবিধা দূর করে। ছাপাবই দামে সস্তা হওয়ায় সেগুলি সাধারণ মানুষের হাতে সহজে পৌঁছে যায় এবং গণশিক্ষার বিপুল প্রসার ঘটে।
ছাপাখানার বিকাশে ও শিক্ষার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটির কী ভূমিকা ছিল?
বাংলায় বাণিজ্যিক উদ্যোগে ছাপাখানার বিকাশ ও শিক্ষার প্রসারে প্রথম দিককার যেসব সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, 1817 খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত স্কুল বুক সোসাইটি ছিল সেগুলির মধ্যে অন্যতম। মূলত ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও বিনামূল্যে বা সুলভে ভারতীয় ছাত্রদের মধ্যে বিতরণের উদ্দেশ্যে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। শ্রীরামপুর মিশন প্রেসের সহযোগী হিসেবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশনায় উদ্যোগী হয়ে এই সংস্থা বাংলায় ছাপাখানার প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
স্কুল বুক সোসাইটির প্রতিষ্ঠা ও উদ্দেশ্য কী ছিল?
স্কুল বুক সোসাইটির প্রতিষ্ঠা ও উদ্দেশ্য ছিল –
1. 1817 সালে ডেভিড হেয়ার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার মূল লক্ষ্য ছিল ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরি করে তা বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে ছাত্রদের মধ্যে বিতরণ করা।
2. এটি বাংলায় শিক্ষার প্রসার এবং ছাপাখানার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্কুল বুক সোসাইটি কীভাবে ছাপাখানার প্রসারে সাহায্য করেছিল?
স্কুল বুক সোসাইটি যেভাবে ছাপাখানার প্রসারে সাহায্য করেছিল –
1. শ্রীরামপুর মিশন প্রেসের সহযোগিতায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করে।
2. এটি বাংলায় ছাপাখানার ব্যবহার বাড়িয়ে শিক্ষার উপকরণ সহজলভ্য করে তোলে।
স্কুল বুক সোসাইটি কীভাবে ছাপাখানার প্রসারে সাহায্য করেছিল?
স্কুল বুক সোসাইটি যেভাবে ছাপাখানার প্রসারে সাহায্য করেছিল –
1. শ্রীরামপুর মিশন প্রেসের সহযোগিতায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করে।
2. এটি বাংলায় ছাপাখানার ব্যবহার বাড়িয়ে শিক্ষার উপকরণ সহজলভ্য করে তোলে।
ছাপাখানার আগে হাতে লেখা পুঁথির সমস্যাগুলো কী ছিল?
ছাপাখানার আগে হাতে লেখা পুঁথির সমস্যাগুলো ছিল –
1. পুঁথিগুলো দুর্লভ, দুর্বোধ্য ও ব্যয়বহুল ছিল।
2. হাতে লেখার কারণে ভুল ও অসঙ্গতি থাকত, যা শিক্ষাকে সীমিত করত।
মুদ্রণ বিপ্লবের ফলে শিক্ষার ক্ষেত্রে কী কী পরিবর্তন আসে?
মুদ্রণ বিপ্লবের ফলে শিক্ষার ক্ষেত্রে যে যে পরিবর্তন আসে –
1. বই দ্রুত ও কম খরচে তৈরি হওয়ায় জ্ঞান ছড়িয়ে পড়ে।
2. সাধারণ মানুষও শিক্ষার সুযোগ পায়, ফলে সমাজে শিক্ষার হার বাড়ে।
ছাপাখানার আবির্ভাবের আগে জ্ঞানচর্চা কেমন ছিল?
ছাপাখানার আবির্ভাবের আগে জ্ঞানচর্চা ছিল –
1. জ্ঞানচর্চা ছিল সীমিত ও অভিজাত শ্রেণিকেন্দ্রিক।
2. হাতে লেখা পুঁথি ছিল দুর্লভ ও মূল্যবান, তাই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো কঠিন ছিল।
ছাপাখানা কীভাবে বইকে সস্তা ও সহজলভ্য করেছিল?
ছাপাখানা যেভাবে বইকে সস্তা ও সহজলভ্য করেছিল –
1. হাতে লিখে বই তৈরি করতে সময় ও শ্রম বেশি লাগত, কিন্তু ছাপাখানায় একসাথে অনেক কপি তৈরি করা যেত, ফলে দাম কমে যায়।
2. বইয়ের প্রচুর সংখ্যা বাজারে আসায় সাধারণ মানুষও কিনতে পারত।
মুদ্রণ বিপ্লব শুধু শিক্ষাই নয়, সমাজকেও কীভাবে বদলে দিয়েছিল?
1. জ্ঞান ছড়িয়ে পড়ায় অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার কমতে শুরু করে।
2. নতুন চিন্তাভাবনা ও বৈজ্ঞানিক বিপ্লব ত্বরান্বিত হয় (যেমন: রেনেসাঁস ও প্রোটেস্ট্যান্ট রিফর্মেশন)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষা কেন সর্বজনীন হল? ছাপাখানার বিকাশে ও শিক্ষার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটির কী ভূমিকা ছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষা কেন সর্বজনীন হল? ছাপাখানার বিকাশে ও শিক্ষার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটির কী ভূমিকা ছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন