এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ছাপাখানার প্রভাবে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ কতদূর সহায়ক হয়েছিল আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ছাপাখানার প্রভাবে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ কতদূর সহায়ক হয়েছিল আলোচনা করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ছাপাখানার প্রভাবে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ কতদূর সহায়ক হয়েছিল আলোচনা করো।
ছাপাখানার প্রভাবে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ –
ছাপাখানা স্থাপিত হলে সেখান থেকে নানা ধরনের বই ও সংবাদপত্র ছাপা হতে থাকে, যা মানুষের চেতনাকে বৃদ্ধি করে, মানুষ বই ও সংবাদপত্র পড়ে অবচেতন থেকে সরে আসে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অ্যাক্ট –
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অ্যাক্ট পাস হয় 1861 খ্রিস্টাব্দে; এরপর থেকেই নিজের অধিকারের ব্যাপারে ভারতবাসী সচেতন হয়ে ওঠে এবং তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে জাতীয়তাবোধ, এইসব কারণে বাংলার ছাপাখানাগুলিও উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে পড়ে। শিশির কুমার ঘোষ, মতিলাল ঘোষ প্রমুখের উদ্যোগে 1868 খ্রিস্টাব্দে অমৃতবাজার পত্রিকা প্রকাশিত হয়।
ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট –
ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন পুস্তক ও পত্র-পত্রিকা জাতীয়তাবোধের উন্মেষে বিশেষভাবে সহায়ক – বিষয়টি বুঝে ব্রিটিশ সরকার ছাপাখানাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ‘ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট’ বা ‘দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন’ পাস করে (1878 খ্রিস্টাব্দ) জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপকে স্তব্ধ করতে চাইলে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ আরও তীব্র আকার ধারণ করে।
ছাপাখানার প্রভাবে জাতীয়তাবাদের মন্তব্য –
জাতীয়তাবাদী চিন্তার বিকাশে ছাপাখানার ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। বরং বলা যায়, কেবলমাত্র বাংলা নয় সারা ভারতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রসারে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিল ছাপাখানাগুলি।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ছাপাখানা কীভাবে জাতীয়তাবাদের বিকাশে সহায়ক হয়েছিল?
ছাপাখানা থেকে বই, পত্রিকা ও সংবাদপত্র প্রকাশের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পায়। মানুষ তাদের অধিকার, স্বাধীনতা ও জাতীয় ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারে, যা জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগ্রত করে।
অমৃতবাজার পত্রিকার ভূমিকা কী ছিল?
অমৃতবাজার পত্রিকা (প্রকাশিত 1868 সালে) শিশির কুমার ঘোষ ও মতিলাল ঘোষের উদ্যোগে প্রকাশিত হয়। এটি ব্রিটিশ শাসনের সমালোচনা করে ও ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদী ভাবনা ছড়িয়ে দেয়।
ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট কী এবং কেন এটি পাস করা হয়?
এটি ছিল একটি দমনমূলক আইন, যা দেশীয় ভাষার সংবাদপত্র ও প্রকাশনাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্রিটিশ সরকার পাস করে। তারা চেয়েছিল জাতীয়তাবাদী লেখা ও প্রচার বন্ধ করতে, কিন্তু এর ফলে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন আরও শক্তিশালী হয়।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অ্যাক্ট জাতীয়তাবাদের উন্মেষে কী ভূমিকা পালন করেছিল?
এই আইনের মাধ্যমে ভারতীয়দের রাজনৈতিক অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিতভাবে বাড়লেও, এটি ভারতীয়দের মধ্যে অধিকার সচেতনতা বাড়ায়। ফলে, তারা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
ছাপাখানার প্রভাব শুধু বাংলায় নয়, সারা ভারতে কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল?
বাংলার পাশাপাশি মুম্বাই, মাদ্রাজ ও অন্যান্য অঞ্চলে ছাপাখানা স্থাপিত হয় এবং সেখানেও জাতীয়তাবাদী সাহিত্য ও সংবাদপত্র প্রকাশিত হতে থাকে। এভাবে সমগ্র ভারতে জাতীয়তাবাদী চেতনা ছড়িয়ে পড়ে।
ছাপাখানার প্রভাবে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন কতটা তীব্র হয়েছিল?
ছাপাখানার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী ধারণা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে। পরবর্তীতে এটি স্বাধীনতা সংগ্রামের রূপ নেয়।
ছাপাখানা ও জাতীয়তাবাদের সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মূল্যায়ন কী?
ঐতিহাসিকরা মনে করেন, ছাপাখানা ছিল জাতীয়তাবাদী চিন্তার প্রসারের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এটি শুধু বাংলা নয়, গোটা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ছাপাখানার প্রভাবে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ কতদূর সহায়ক হয়েছিল আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ছাপাখানার প্রভাবে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ কতদূর সহায়ক হয়েছিল আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন