এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চৌরিচৌরার ঘটনা বলতে কী জানো? অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “চৌরিচৌরার ঘটনা বলতে কী জানো? অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ট অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

চৌরিচৌরার ঘটনা বলতে কী জানো?
1922 খ্রিস্টাব্দের 5 ফেব্রুয়ারি অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা গ্রামে উত্তেজিত জনতা থানায় অগ্নিসংযোগ করে 22 জন পুলিশ কর্মীকে পুড়িয়ে মারে। এই ঘটনাই চৌরিচৌরা ঘটনা নামে ইতিহাসে খ্যাত। অহিংস আন্দোলনে এইভাবে হিংসার অনুপ্রবেশ গান্ধিজিকে মর্মাহত করে এবং প্রতিক্রিয়াস্বরূপ তিনি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।
অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?
চৌরিচৌরা ঘটনা –
অসহযোগ আন্দোলন যখন প্রকৃত গণ-আন্দোলনে পরিণত হতে চলেছে ঠিক সেই সময় 1922 খ্রিস্টাব্দের 5 ফেব্রুয়ারি উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা গ্রামে ভগবান আহির নামে এক স্বেচ্ছাসেবকের উপর পুলিশ অকথ্য অত্যাচার এবং বিনা প্ররোচনায় নিরস্ত্র জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে। এর ফলে জনতা উত্তেজিত হয়ে চৌরিচৌরা থানা আক্রমণ করে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং 22 জন পুলিশ কর্মী মারা যায়, এই ঘটনাই ‘চৌরিচৌরা ঘটনা’ নামে পরিচিত।
চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব –
- প্রথমত, চৌরিচৌরা ঘটনার পর (12 ফেব্রুয়ারি, 1922 খ্রিস্টাব্দ) গান্ধিজি অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।
- দ্বিতীয়ত, আন্দোলন প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে সরকার গান্ধিজিকে গ্রেপ্তার করে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।
- তৃতীয়ত, আন্দোলনের হঠাৎ সমাপ্তি কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে,গঠিত হয় ‘স্বরাজ্য দল’ (1 জানুয়ারি, 1923 খ্রিস্টাব্দ)।
- চতুর্থত, সরকার ও প্রশাসনের ওপর জনগণের ভীতি দূর হয়,জনগণের মনো-বল দৃঢ় হয় ও তারা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
চৌরিচৌরার ঘটনা কী?
1922 সালের 5 ফেব্রুয়ারি, উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা গ্রামে এক উত্তেজিত জনতা পুলিশ থানায় আগুন লাগিয়ে 22 জন পুলিশকর্মীকে হত্যা করে। এই ঘটনাকে চৌরিচৌরার ঘটনা বলা হয়। এটি অসহযোগ আন্দোলনের সময় ঘটেছিল।
চৌরিচৌরার ঘটনার কারণ কী ছিল?
চৌরিচৌরার ঘটনার কারণ ছিল –
1. পুলিশ ভগবান আহির নামে এক স্বেচ্ছাসেবকের উপর অত্যাচার করেছিল।
2. নিরস্ত্র জনতার উপর পুলিশ গুলি চালালে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
3. এর প্রতিবাদে জনতা থানায় আগুন লাগিয়ে দেয় এবং 22 জন পুলিশকর্মী মারা যায়।
চৌরিচৌরার ঘটনার পর মহাত্মা গান্ধী কী করেছিলেন?
1. গান্ধীজি অহিংস আন্দোলনের নীতির পরিপন্থী এই ঘটনায় মর্মাহত হন।
2. 1922 সালের 12 ফেব্রুয়ারি তিনি অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।
চৌরিচৌরা ঘটনার ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?
চৌরিচৌরা ঘটনার ঐতিহাসিক গুরুত্ব হল –
1. অসহযোগ আন্দোলন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।
2. গান্ধীজিকে গ্রেপ্তার করে 6 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
3. কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয় এবং স্বরাজ দল গঠিত হয় (1923 খ্রিস্টাব্দ)।
4. ব্রিটিশ সরকারের প্রতি মানুষের ভয় কমে যায় এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
চৌরিচৌরা ঘটনার পর কীভাবে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন প্রভাবিত হয়েছিল?
1. আন্দোলন স্থগিত হওয়ায় স্বাধীনতা সংগ্রামে অস্থায়ী স্তব্ধতা আসে।
2. কিন্তু এই ঘটনা ভারতীয়দের মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব আরও শক্তিশালী করে।
3. পরবর্তীতে সিভিল ডিসঅবিডিয়েন্স আন্দোলন (1930 খ্রিস্টাব্দ) এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলন (1942 খ্রিস্টাব্দ) এর পথ প্রশস্ত হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চৌরিচৌরার ঘটনা বলতে কী জানো? অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “চৌরিচৌরার ঘটনা বলতে কী জানো? অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন