এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “Cl₂ অণুর লুইস ডট্ গঠন দেখাও। অথবা, সমযোজ্যতার উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

Cl₂ অণুর লুইস ডট্ গঠন দেখাও।
অথবা, সমযোজ্যতার উদাহরণ দাও।
ক্লোরিন অণু গঠন – ক্লোরিন পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস 2, 8, 7। ক্লোরিন পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের কক্ষে 7টি ইলেকট্রন থাকে। ক্লোরিন অণু গঠনের সময় দুটি ক্লোরিন পরমাণু তাদের সবচেয়ে বাইরের কক্ষের একটি করে ইলেকট্রন দিয়ে একটি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে। পরে ইলেকট্রন জোড়কে পরমাণু দুটি সমানভাবে গ্রহণ করে বাইরের কক্ষে 8টি ইলেকট্রন সংখ্যা পূর্ণ করে ক্লোরিন অণু গঠন করে। ক্লোরিন পরমাণু একটি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে বলে ক্লোরিনের যোজ্যতা = 1
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সমযোজী বন্ধন কী? ক্লোরিন অণুতে এটি কীভাবে কাজ করে?
সমযোজী বন্ধন হল দুটি পরমাণুর মধ্যে এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড়ের শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে গঠিত বন্ধন। ক্লোরিন পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস 2,8,7
; তাই ভ্যালেন্স শেলে 1টি ইলেকট্রনের ঘাটতি আছে। দুটি ক্লোরিন পরমাণু প্রতিটি 1টি করে ইলেকট্রন শেয়ার করে, ফলে তাদের মধ্যে একটি সমযোজী একবন্ধন (Single covalent bond) সৃষ্টি হয়।
ক্লোরিন পরমাণুর যোজ্যতা 1 কেন?
যোজ্যতা বলতে একটি পরমাণু কতটি ইলেকট্রন শেয়ার বা বিনিময় করে বন্ধন গঠন করতে পারে তা বোঝায়। ক্লোরিনের ভ্যালেন্স শেলে 7টি ইলেকট্রন আছে, তাই এটি স্থায়িত্ব পেতে 1টি অতিরিক্ত ইলেকট্রন প্রয়োজন। সে কারণে এটি মাত্র 1টি ইলেকট্রন শেয়ার করে (অন্য পরমাণুর সাথে 1টি বন্ধন গঠন করে), তাই এর যোজ্যতা 1।
সমযোজী বন্ধন কাকে বলে?
যখন দুটি অধাতু পরমাণু তাদের মধ্যে এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় সমভাবে ভাগাভাগি করে একটি স্থিতিশীল অণু গঠন করে, তখন যে আকর্ষণ বলের সৃষ্টি হয় তাকে সমযোজী বন্ধন বলে। Cl₂ অণু এর একটি আদর্শ উদাহরণ।
Cl₂ অণু গঠনের সময় ক্লোরিন পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাসে কী পরিবর্তন ঘটে?
একক ক্লোরিন পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস [2, 8, 7]। Cl₂ অণু গঠনের সময় প্রতিটি ক্লোরিন একটি ইলেকট্রন ভাগাভাগি করে কার্যত তার বহিঃকক্ষে 8টি ইলেকট্রন (অক্টেট) সম্পূর্ণ করে। তবে প্রত্যেক ক্লোরিন পরমাণুর নিজস্ব ইলেকট্রন বিন্যাস [2, 8, 7] -ই থাকে।
সমযোজী বন্ধন গঠনের প্রধান শর্ত কী?
সমযোজী বন্ধন সাধারণত তখনই গঠিত হয়, যখন—
1. উভয় পরমাণুই অধাতু হয়, এবং
2. তারা ইলেকট্রন ভাগাভাগির মাধ্যমে নিকটবর্তী মহাশূন্য গ্যাসের (Noble gas) ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করতে চায়।
আয়নীয় বন্ধন ও সমযোজী বন্ধনের মধ্যে পার্থক্য কী?
আয়নীয় বন্ধন ও সমযোজী বন্ধনের মধ্যে পার্থক্য হল –
1. আয়নীয় বন্ধন – ধাতু ও অধাতু পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন স্থানান্তরের মাধ্যমে গঠিত হয়।
2. সমযোজী বন্ধন – দুটি অধাতু পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন ভাগাভাগির মাধ্যমে গঠিত হয়।
ক্লোরিন অণু গঠনে কোন ধরনের রাসায়নিক বন্ধন হয়?
ক্লোরিন অণুতে সমযোজী বন্ধন (Covalent Bond) হয়। কারণ দুটি অধাতু ক্লোরিন পরমাণু ইলেকট্রন ভাগাভাগির মাধ্যমে তাদের অক্টেট পূর্ণ করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “Cl₂ অণুর লুইস ডট্ গঠন দেখাও। অথবা, সমযোজ্যতার উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন