আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলা পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায় ‘জ্ঞানচক্ষু’ থেকে কিছু “পাঠ্যাংশের ব্যাকরণ” নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে।

নিম্নরেখ পদগুলির কারক ও অকারক সম্পর্ক এবং বিভক্তি ও অনুসর্গ নির্দেশ করো।
কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।
উত্তর – তপনের – সম্বন্ধপদ, ‘এর’ বিভক্তি।
অনেক বই ছাপা হয়েছে মেসোর।
উত্তর – বই – কর্মকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি।
এবিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের।
উত্তর – তপনের – সম্বন্ধপদ, ‘এর’ বিভক্তি।
মামার বাড়িতে এই বিয়ে উপলক্ষ্যেই এসেছে তপন।
উত্তর – বাড়িতে – অধিকরণকারক, ‘তে’ বিভক্তি।
ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয়।
উত্তর – ছোটোমাসি – কর্তৃকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি।
তোমার গল্প আমি ছাপিয়ে দেবো।
উত্তর – তোমার – সম্বন্ধপদ, ‘র’ বিভক্তি।
বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা।
উত্তর – বিকেলে – অধিকরণকারক, ‘এ’ বিভক্তি।
তপন বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকায়।
উত্তর – দৃষ্টিতে – করণকারক, ‘তে’ বিভক্তি।
যেন নেশায় পেয়েছে।
উত্তর – নেশায় – করণকারক, ‘য়’ বিভক্তি।
তপনের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে।
উত্তর – পত্রিকায় – অধিকরণকারক, ‘য়’ বিভক্তি।
আঃ ছোটোমাসি, ভালো হবে না বলছি।
উত্তর – ছোটোমাসি – সম্বোধন পদ, ‘শূন্য’ বিভক্তি।
তার মানে মেসো তপনের গল্পটিকে আগাগোড়াই কারেকশান করেছেন।
উত্তর – গল্পটিকে – কর্মকারক, ‘টি’ নির্দেশক, ‘কে’ বিভক্তি।
কেশে গলা পরিষ্কার করে।
উত্তর – কেশে – করণকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি।
না কি অতি আহ্লাদে বাক্য হরে গেল?
উত্তর – আহ্লাদে – করণকারক, ‘এ’ বিভক্তি।
তপন আর পড়তে পারে না।
উত্তর – পড়তে – কর্মকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি।
বাক্যগুলি থেকে সমাসবদ্ধ পদ বেছে নিয়ে তার ব্যাসবাক্য-সহ সমাস নির্ণয় করো।
এই কদিন আগে তপনের ছোটোমাসির বিয়ে হয়ে গেল দেদার ঘটাপটা করে।
উত্তর – ছোটোমাসির – ছোটো যে মাসি (সাধারণ কর্মধারয়) তার।
তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক।
উত্তর – মেসোমশাই – যিনি মেসো তিনিই মশাই (সাধারণ কর্মধারয়)।
কিন্তু নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের।
উত্তর – জ্ঞানচক্ষু – জ্ঞানরূপ চক্ষু (রূপক কর্মধারয়)।
বোধকরি নতুন বিয়ের শ্বশুরবাড়ির ছেলেকে খুশি করতেই বলে ওঠেন, তপন তোমার গল্প তো দিব্যি হয়েছে।
উত্তর – শ্বশুরবাড়ির – শ্বশুরের বাড়ি (সম্বন্ধ তৎপুরুষ) সেখানের।
আমি বললে ‘সন্ধ্যাতারা’-র সম্পাদক ‘না’ করতে পারবে না।
উত্তর – সন্ধ্যাতারা – সন্ধ্যাকালীন তারা (মধ্যপদলোপী কর্মধারয়)।
এই বয়সের ছেলেমেয়েরা গল্প লিখতে গেলেই তো-হয় রাজারানির গল্প লেখে, নয় তো-খুন জখম অ্যাকসিডেন্ট।
উত্তর – ছেলেমেয়েরা – ছেলে ও মেয়ে (দ্বন্দ্ব) তারা। রাজারানির – রাজা ও রানি (দ্বন্দ্ব) তাদের।
ছেলেবেলা থেকেই তো রাশি রাশি গল্প শুনেছে তপন।
উত্তর – ছেলেবেলা – ছেলে বয়সের বেলা (মধ্যপদলোপী কর্মধারয়)।
এদিকে বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে, কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী।
উত্তর – কথাশিল্পী – কথা বিষয়ে শিল্পী (মধ্যপদলোপী কর্মধারয়)।
মেসো তপনের গল্পটিকে আগাগোড়াই কারেকশান করেছেন।
উত্তর – আগাগোড়া – আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত (অব্যয়ীভাব)।
পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?
উত্তর – অলৌকিক – নয় লৌকিক (নঞ্তৎপুরুষ)।
নির্দেশ অনুযায়ী বাক্যের রূপান্তর করো।
কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল। (জটিল বাক্যে)
উত্তর – যখন কথাটা শুনল তখন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।
মামার বাড়িতে এই বিয়ে উপলক্ষ্যেই এসেছে তপন, আর ছুটি আছে বলেই রয়ে গেছে। (সরল বাক্যে)
উত্তর – তপন মামার বাড়িতে এই বিয়ে উপলক্ষ্যেই এলেও ছুটি থাকায় রয়ে গেছে।
তবে তপনেরই বা লেখক হতে বাধা কী? (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর – তবে তপনেরও লেখক হতে কোনো বাধা নেই।
এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর – এ বিষয়ে তপন সন্দেহহীন ছিল না।
ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর – ক্রমশ ও কথাটাও কি ছড়িয়ে পড়ে না?
হইচই করে দিয়ে দিয়েছে ছোটোমাসি তাঁর ঘুম ভাঙিয়ে। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর – ছোটোমাসি হইচই করেছে এবং তাঁর ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছে।
তা জানে না তপন। (হ্যাঁ-বাচক বাক্যে)
উত্তর – তা তপনের অজানা ছিল।
ছোটোমাসি আর মেসো একদিন বেড়াতে এল। (সরল বাক্যে)
উত্তর – ছোটোমাসি-সহ মেসো একদিন বেড়াতে এল।
নির্দেশ অনুযায়ী বাচ্য পরিবর্তন করো।
সেই তিনি নাকি বই লেখেন। (কর্মবাচ্যে)
উত্তর – সেই তাঁর দ্বারা নাকি বই লেখা হয়।
ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয়। (ভাববাচ্যে)
উত্তর – ছোটোমাসির সেই দিকে ধাবিত হওয়া হয়।
তোমার গল্প আমি ছাপিয়ে দেবো। (কর্মবাচ্যে)
উত্তর – তোমার গল্প আমার দ্বারা ছাপানো হবে।
তপন যেন কোথায় হারিয়ে যায় এইসব কথার মধ্যে। (ভাববাচ্যে)
উত্তর – তপনের যেন কোথায় হারিয়ে যাওয়া হয় এইসব কথার মধ্যে।
তপনকে যেন নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়তে না হয়। (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর – তপন যেন নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন না পড়ে।
আজকের এই আর্টিকেল এ আমরা মাধ্যমিক বাংলার প্রথম অধ্যায় “জ্ঞানচক্ষু” থেকে কিছু “পাঠ্যাংশের ব্যাকরণ” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, এই প্রবন্ধটি আপনার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, তাহলে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন; আমরা যথাসম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করব। এছাড়া, প্রবন্ধটি আপনার প্রিয়জন বা যার প্রয়োজন হতে পারে, তার সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ!
মন্তব্য করুন