আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক বাংলার ষষ্ঠ পাঠের দ্বিতীয় বিভাগ, ‘অদল বদল’ থেকে কিছু পাঠ্যাংশের ব্যাকরণ নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো পরীক্ষায় প্রায়শই দেখা যায়। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

নিম্নরেখ পদগুলির কারক ও অকারক সম্পর্ক এবং বিভক্তি ও অনুসর্গ নির্দেশ করো।
হোলির দিনের পড়ন্ত বিকেল।
উত্তর – হোলির – সম্বন্ধপদ, ‘র’ বিভক্তি। দিনের – সম্বন্ধপদ, ‘এর’ বিভক্তি।
হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাব ওদের কাছে এল।
উত্তর – অমৃত ও ইসাব – কর্তৃকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি।
দুজনকেই সাময়িক বিপদে আপদে সুদে ধার নিতে হয়।
উত্তর – সুদে – করণকারক, ‘এ’ বিভক্তি।
অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কারণ ছিল।
উত্তর – জোর দিয়ে – করণকারক, ‘দিয়ে’ অনুসর্গ।
মারো! কিন্তু তোমাকে ইসাবের মতো একটা জামা আমার জন্য জোগাড় করতেই হবে।
উত্তর – আমার জন্য – নিমিত্তকারক, ‘জন্য’ অনুসর্গ।
এরপর উনি গিয়ে ইসাবের বাবার গোয়াল ঘর থেকে লুকিয়ে থাকা অমৃতকে বাড়ি নিয়ে এলেন।
উত্তর – গোয়াল ঘর থেকে – অপাদানকারক, ‘থেকে’ অনুসর্গ।
ওদের দুই বাড়ির মাঝখানে ঢুকে অমৃত জামার বোতাম খুলতে লাগল।
উত্তর – মাঝখানে – অধিকরণকারক, ‘এ’ বিভক্তি।
ইসাব ল্যাং মারতে কালিয়া ব্যাঙের মতো হাত পা ছড়িয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে চ্যাঁচাতে লাগল।
উত্তর – কালিয়া – কর্তৃকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি। মাটিতে – অধিকরণকারক, ‘তে’ বিভক্তি।
ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গেল।
উত্তর – ভয়ে – আপাদানকারক, ‘এ’ বিভক্তি।
নিম্নলিখিত বাক্যগুলিতে যে সমাসবদ্ধ পদ আছে তা বেছে নিয়ে তার ব্যাসবাক্য-সহ সমাস নির্ণয় করো।
… একদল ছেলে জড়ো হয়ে ছোড়াছুড়ি করে খেলছিল।
উত্তর – ছোড়াছুড়ি – ছুড়ে ছুড়ে যে খেলা (ব্যতিহার বহুব্রীহি)।
মা তখন ওকে বেকায়দায় ফেলার জন্য বললেন …।
উত্তর – বেকায়দা – কায়দার অভাব (অব্যয়ীভাব)।
… অমৃতের একেবারেই ইচ্ছে ছিল না জামাকাপড় নোংরা হয় এমন কিছু করতে।
উত্তর – জামাকাপড় – জামা ও কাপড় (দ্বন্দ্ব)।
বিশেষকরে ইসাবের সঙ্গে কুস্তি লড়তে তো একবারেই গররাজি।
উত্তর – গররাজি – নয় রাজি (নঞ্ তৎপুরুষ)।
এমন সময় ছেলেছোকরার দঙ্গল থেকে একজন …।
উত্তর – ছেলেছোকরা – ছেলে ও ছোকরা (দ্বন্দ্ব)।
অমৃত ও ইসাবও রণভূমি ত্যাগ করল।
উত্তর – রণভূমি – রণের নিমিত্ত ভূমি (নিমিত্ত তৎপুরুষ)।
এবার অবশ্য ইসাব ও অমৃত অপ্রস্তুত বোধ করল না।
উত্তর – অপ্রস্তুত – নয় প্রস্তুত (নঞ্ তৎপুরুষ)।
নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো।
হোলির দিনের পড়ন্ত বিকেল। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর – পড়ন্ত বিকেল এবং তা হোলির দিনের।
হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাব ওদের কাছে এল। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর – অমৃত ও ইসাব পরস্পরের হাত ধরল এবং ওদের কাছে এল।
এরা দুজনে একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়ে। (জটিল বাক্যে)
উত্তর – ওরা যেমন দুজনে একই স্কুলে পড়ে তেমনই একই ক্লাসেও পড়ে।
দুজনের বাবাই পেশায় চাষি, জমিও প্রায় সমান সমান। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর – দুজনের বাবাই পেশায় চাষি বই তো নয় আর জমির পরিমাণেও বিশেষ কোনো তফাত নেই।
ইসাব অমৃতের দিকে তাকাল।(নাবাচক বাক্যে)
উত্তর – ইসাব অমৃত ছাড়া অন্য কারও দিকে তাকাল না।
অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কারণ ছিল। (জটিল বাক্যে)
উত্তর – অমৃত যে অত জোর দিয়ে বলল তার কারণ ছিল।
শোনামাত্র অমৃত ফতোয়া জারি করে দিল, ঠিক ইসাবের মতো জামাটি না পেলে ও স্কুলে যাবে না। (সরল বাক্যে)
উত্তর – শোনামাত্র অমৃত ঠিক ইসাবের মতো জামাটি না পেলে স্কুলে না যাওয়ার ফতোয়া জারি করে দেয়।
অমৃত এতেও পিছপা হতে রাজি নয়। (হ্যাঁ-বাচক বাক্যে)
উত্তর – অমৃত এতেও পিছপা হতে গররাজি।
অমৃত জানত মা ‘না’ বললে ওর বাবার রাজি হবার সম্ভাবনা খুব কম। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর – অমৃত জানত মা ‘না’ বললে ওর বাবার রাজি হবার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
একটা সূঁচসুতো নিয়ে ছেঁড়া জামাটা রিফু করে দিলেন। (জটিল বাক্যে)
উত্তর – ছেঁড়া জামাটা তিনি রিফু করে দিলেন তা একটা সূঁচসুতো দিয়ে।
তোমরা বন্ধুদের কাছ থেকে পালিয়ে আসছ কেন? (অনুজ্ঞা বাক্যে)
উত্তর – তোমরা বন্ধুদের কাছ থেকে পালিয়ে আসছ কেন তা আমায় বলো।
নির্দেশ অনুযায়ী বাচ্য পরিবর্তন করো।
হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাব ওদের কাছে এল। (ভাববাচ্যে)
উত্তর – হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাবের ওদের কাছে আসা হল।
এরা দুজনেই একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়ে। (ভাববাচ্যে)
উত্তর – এদের দুজনেরই একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়া হয়।
দুজনকেই সাময়িক বিপদ আপদে সুদে ধার নিতে হয়। (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর – দুজনেই সাময়িক বিপদ আপদে সুদে ধার নেন।
ইসাব অমৃতের দিকে তাকাল। (কর্মবাচ্যে)
উত্তর – ইসাব কর্তৃক অমৃতের দিকে তাকানো হল।
অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কারণ ছিল। (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর – কারণ ছিল বলেই অমৃত অত জোর দিয়ে বলেছিল।
এই বলে সে অমৃতকে খোলা মাঠে নিয়ে এল। (কর্মবাচ্যে)
উত্তর – এই বলে তার দ্বারা অমৃতকে খোলা মাঠে নিয়ে আসা হল।
হঠাৎ অমৃতের মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল। (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর – হঠাৎ অমৃত মাথায় একটা বুদ্ধি খেলাল।
আমার কাছে এসে বসো। (ভাববাচ্যে)
উত্তর – আমার কাছে এসে বসা হোক।
পাড়াপড়শি মায়ের দল পাঠানের গল্প শোনার জন্য ঘিরে দাঁড়াল। (ভাববাচ্যে)
উত্তর – পাঠানের গল্প শোনার জন্য পাড়াপড়শি মায়ের দলের ঘিরে দাঁড়ানো হল।
আজ থেকে আমরা অমৃতকে অদল আর ইসাবকে বদল বলে ডাকব। (ভাববাচ্যে)
উত্তর – আজ থেকে আমাদের অমৃতকে অদল আর ইসাবকে বদল বলে ডাকা হবে।
আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক বাংলার ষষ্ঠ পাঠের দ্বিতীয় বিভাগ, “অদল বদল” থেকে কিছু পাঠ্যাংশের ব্যাকরণ নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। যদি আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, তাহলে দয়া করে আমাকে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করুন; আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যারা এর প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ!
মন্তব্য করুন