আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস বিষয়ের প্রথম অধ্যায়, ‘ইতিহাসের ধারণা’ নিয়ে আলোচনা করবো। এখানে অধ্যায়টির গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর তুলে ধরবো, যা ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও এই প্রশ্নগুলো বেশ কার্যকর, কারণ এই ধরণের প্রশ্ন প্রায়ই পরীক্ষায় উঠে আসে।
ইতিহাস পড়ার সময় তুমি কোন্ বিষয়গুলি সম্পর্কে বেশি সচেতন হবে?
ইতিহাস পড়ার সময় যে – যে বিষয়গুলি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে সেগুলি হল:
- আগে-পরে – ইতিহাসের কোন্ ঘটনাটি আগে আর কোনটি পরে সে বিষয়ে আমাদের সর্বদা সচেতন থাকা জরুরি।
- স্থান-কাল-পাত্র – ইতিহাস পড়ার সময় মনে রাখতে হবে ঘটনা বা বিষয়টি কোথায় ঘটেছে (স্থান), কোন্ সময় ঘটেছে (কাল), আর বিষয়টির সঙ্গে কে বা কারা জড়িত (পাত্র)।
- কবে ও কীভাবে – ঘটনাটি বা ইতিহাসের বিষয়টি কীভাবে বা কেন এবং কবে ঘটেছিল তাও জানা একান্ত জরুরি।
ভারতবর্ষ নামকরণ হল কীভাবে?
ভারতবর্ষ নামকরণ নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্কের শেষ নেই। ধর্মশাস্ত্র মতে, প্রাচীন ভারতে ভরত নামে এক রাজার নাম জানা যায়। তাঁর নামানুসারে উত্তরে হিমালয় পর্বত ও দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম তিনদিক সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত অঞ্চলের নাম হয় ভারত। আবার,
অনেকে মনে করেন, ‘ভরত’ ছিল পুরোনো একটি জনগোষ্ঠী, ওই জনগোষ্ঠী যে অঞ্চলে বসবাস করত সেই অঞ্চলকে বলা হত ভারতবর্ষ।
ভারত শব্দের অর্থ বলতে অনেকে বলেন ভরতের বংশধর। সুতরাং, ভারতবর্ষের নামের উৎপত্তি নিয়ে যতই বিতর্ক থাক-না কেন, মোটামুটি বলা যেতে পারে ভরত নামক রাজার নাম থেকে ভারতবর্ষ কথাটি এসেছে।
জেনে রাখো – ভারতে প্রাচীনকালের রাজারা সময় গণনার জন্য শকাব্দ, হর্ষাব্দ, গুপ্তাব্দ প্রভৃতি পদ্ধতি চালু করেছিলেন, কিন্তু গোটা পৃথিবীতে সময় গণনার জন্য ‘খ্রিস্টাব্দ’ গণনাই বেশি জনপ্রিয় ও প্রচলিত।
প্রাক্-ঐতিহাসিক যুগ, প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ ও ঐতিহাসিক যুগ কাকে বলে?
অথবা, প্রাক্-ঐতিহাসিক যুগ ও প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ বলতে কী বোঝো?
প্রাচীন যুগের বিভিন্ন দিকগুলি হল –
- প্রাক্-ঐতিহাসিক যুগ – যখন লিপির আবিষ্কার হয়নি এবং মানুষেরা লিখতে-পড়তে জানত না, সেই সময়কে প্রাক্-ঐতিহাসিক যুগ বলে।
- প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ – যখন লিপির আবিষ্কার হয়েছে, কিন্তু তার পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, সেই সময়কে প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ বলে।
- ঐতিহাসিক যুগ – যে – সময় মানুষেরা লিপির ব্যবহার জানত এবং সেগুলির পাঠোদ্ধার করা গেছে, সেই সময়কে ঐতিহাসিক যুগ বলে।
টুকরো কথা – আদিমকালের মানুষেরা শুরুতে লিখতে, পড়তে জানত না। সেই সময়কালকে বলে প্রাক্-ঐতিহাসিক যুগ। মানুষ যখন লিখতে শিখল, সেই সময়কার কিছু লিপি আজও পড়তে পারা যায়নি। সেই সময়কে বলা হয় প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ, যেমন – সিন্ধু সভ্যতা। প্রাচীনকালের যে-সময়কার লিপি পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, তাকে বলে ঐতিহাসিক যুগ। যেমন-বৈদিক যুগ।
মনে রেখো – প্রাচীনকালে উত্তর ভারতে আর্য সভ্যতার জন্ম হয়েছিল। আর দক্ষিণ ভারতে গড়ে উঠেছিল দ্রাবিড় সভ্যতা। পরে আর্য সভ্যতা দক্ষিণ ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছিল। এই সময় আর্যদের সঙ্গে অনার্যদের সংঘাত বেঁধেছিল। এই সংঘাতের কথাই সম্ভবত রামায়ণে বর্ণিত হয়েছে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের প্রথম অধ্যায়, “ইতিহাসের ধারণা,” থেকে গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এসব প্রশ্ন ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হতে পারে, কারণ এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের কাজে লেগেছে। কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে, টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ!