এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ (রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং ধর্মের বিবর্তন-উত্তর ভারত) – পাঠ্যাংশের অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায়, ‘খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ (রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং ধর্মের বিবর্তন-উত্তর ভারত)’ অধ্যায়ের পাঠ্যাংশের অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও সহায়ক। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণী এবং চাকরির পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসতে দেখা যায়।

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ
Contents Show

সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো

মহাজনপদগুলি গড়ে উঠেছিল_____(খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে/ খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে/ খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ সহস্রাব্দে)।

উত্তর – খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে

গৌতম বুদ্ধ জন্মেছিলেন_____(লিচ্ছবি/হর্যঙ্ক/ শাক্য) বংশে।

উত্তর – শাক্য

পার্শ্বনাথ ছিলেন_____(মগধের রাজা/বজ্জিদের প্রধান/জৈন তীর্থংকর)।

উত্তর – জৈন তীর্থংকর

আর্যসত্য_____(বৌদ্ধ/জৈন/আজীবিক) ধর্মের অংশ।

উত্তর – বৌদ্ধ

‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো

‘ক’ স্তম্ভ‘খ’ স্তম্ভ
১. মগধের রাজধানীক. বৌদ্ধ ধর্ম
২. মহাকাশ্যপখ. রাজগৃহ
৩. দ্বাদশ অঙ্গগ. প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি
৪. হীনযান-মহাযানঘ. জৈন ধর্ম

উত্তর –

‘ক’ স্তম্ভ‘খ’ স্তম্ভ
১. মগধের রাজধানীখ. রাজগৃহ
২. মহাকাশ্যপগ. প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি
৩. দ্বাদশ অঙ্গঘ. জৈন ধর্ম
৪. হীনযান-মহাযানক. বৌদ্ধ ধর্ম

নিজের ভাষায় ভেবে লেখো (তিন/চার লাইন)

মগধ ও বৃজি মহাজনপদ দুটির মধ্যে কী কী পার্থক্য তোমার চোখে পড়ে?

মগধ ও বৃজি মহাজনপদ দুটির মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –

  • মগধ মহাজনপদটি ছিল রাজতান্ত্রিক। বৃজির শাসনক্ষমতা ছিল গোষ্ঠীর হাতে।
  • মগধে পরবর্তীকালে সাম্রাজ্যের সূচনা হয়েছিল। বৃজি মগধের অন্তর্ভুক্ত হয়।
  • বৃজি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। মগধ কিন্তু সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত হয়েছিল।

কী কী কারণে মগধ শেষপর্যন্ত বাকি মহাজনপদগুলির থেকে শক্তিশালী হল? সেই কারণগুলির মধ্যে কোনটি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে তোমার মনে হয়?

মগধের শক্তিশালী হওয়ার কারণগুলি হল নিম্নরূপ –

  • দক্ষ রাজার নেতৃত্ব – দক্ষ রাজাদের নেতৃত্বে মগধ শেষপর্যন্ত স্বাধীন হয়ে উঠেছিল।
  • নদী ও পাহাড়ে ঘেরা – মগধ রাজ্যটি নদী ও পাহাড় দিয়ে ঘেরা ছিল। ফলে বাইরের কেউ সেখানে আক্রমণ করতে পারত না।
  • উর্বর জমি – মগধের জমি ছিল খুব উর্বর।
  • হাতির প্রাচুর্য – মগধে প্রচুর হাতি পাওয়া যেত। ফলে রাজারা একটি বিশাল রণহস্তীবাহিনী তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল।
  • খনি – মগধে ছিল লোহা ও তামার খনি।
  • উন্নত বাণিজ্য – মগধে উন্নতমানের বাণিজ্যও চলত। এইসব কারণে মগধ শেষপর্যন্ত শক্তিশালী মহাজনপদে পরিণত হয়।

আমি মনে করি, মগধের শক্তিশালী মহাজনপদে পরিণত হওয়ার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল দক্ষ রাজাদের নেতৃত্ব।

সমাজের কোন্ কোন্ অংশের মানুষ নব্যধর্ম আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন? কেন করেছিলেন?

সমাজের কৃষক, ব্যবসায়ী ও ক্ষত্রিয়রা নব্যধর্ম আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন।

যজ্ঞ, পশুবলি ও যুদ্ধের ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের নানা ধরনের ক্ষতি হত। দূরদেশে বাণিজ্য নিষিদ্ধ হওয়ার ফলে ব্যবসায়ীরাও অসন্তুষ্ট হয়েছিল। এ ছাড়া অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহারের ফলে ক্ষত্রিয়রাও ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিল। এই সমস্ত কারণে বৈদিক ব্রাহ্মণ্য ধর্ম ছেড়ে তারা নব্যধর্ম আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল।

জৈন ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মে কী কী মিল ও অমিল তোমার চোখে পড়ে?

নানা দিক দিয়ে বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্মের মধ্যে কতগুলি মিল ও অমিল লক্ষ করা যায়, যেমন –

বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্মের মিল

  • উভয় ধর্মই ছিল সমসাময়িক। এই দুই ধর্ম খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতে উদ্ভব হয়।
  • উভয় ধর্মই ব্রাহ্মণ্য ধর্ম বিরোধী ছিল।
  • উভয় ধর্মের মূল আদর্শ ছিল অহিংসা।
  • উভয় ধর্মের মতবাদগুলি প্রচারিত হয় সাধারণ মানুষের কথ্য ভাষা প্রাকৃত ও পালি ভাষায়।
  • উভয় ধর্মের লক্ষ ছিল জাতিভেদ প্রথা ও অস্পৃশ্যতার অবসান করে মানুষের মধ্যে সমতা গড়ে তোলা।
  • উভয় ধর্ম জন্মান্তরবাদ ও কর্মফলবাদে বিশ্বাসী ছিল।
  • যাগযজ্ঞ, পশুবলি ও বর্ণাশ্রম প্রথার বিরোধী ছিল উভয় ধর্ম।

উভয় ধর্মের মধ্যে অমিল

  • জৈনরা সর্বপ্রাণবাদে বিশ্বাসী হলেও বৌদ্ধরা জীব প্রাণবাদে বিশ্বাসী ছিল।
  • জৈনরা কঠোর কৃচ্ছসাধনে (যেমন দিগম্বর প্রথা) বিশ্বাসী হলেও বৌদ্ধরা মঝঝিম বা মধ্যপন্থা নীতিতে বিশ্বাসী ছিল।
  • জৈন ধর্মে একাধিক (24 জন) তীর্থঙ্কর বা ধর্মপ্রচারক আবির্ভূত হলেও বৌদ্ধধর্মের প্রবক্তা ছিলেন গৌতমবুদ্ধ।
  • জৈন ধর্মে পঞ্চমহাব্রতের কথা বলা হয়। কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মে অষ্টাঙ্গিক মার্গ পালনের কথা বলা হয়।
  • প্রাচীনকালে জৈন ধর্ম কেবল ভারতের মাটিতেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু বৌদ্ধধর্ম ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে বিস্তার লাভ করে।
  • জৈনধর্ম প্রচারের মূলকথা ছিল প্রাকৃত। কিন্তু বৌদ্ধধর্ম মূলত প্রচারিত হয় পালি ভাষায়।

হাতেকলমে করো

জনপদ থেকে ষোলোটি মহাজনপদ এবং তার থেকে মগধ রাজ্য কীভাবে হল, তা পিরামিডের আকারে দেখাও।

ষোলোটি মহাজনপদ
ষোলোটি মহাজনপদ

বৌদ্ধ ধর্মে আর্যসত্যের ধারণার সঙ্গে ওই ছবিটির কী কোনো মিল দেখতে পাচ্ছো?

নিম্নের চিত্রের মাধ্যমে জরা, ব্যাধি, মৃত্যু এবং জীবনের অন্যান্য দিকগুলি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ করে দেওয়া হয়েছে।

নিম্নের চিত্রে জরা, ব্যাধি, মৃত্যু এবং জীবনের অন্যান্য দিকগুলি
নিম্নের চিত্রে জরা, ব্যাধি, মৃত্যু এবং জীবনের অন্যান্য দিকগুলি
জীবনের অন্যান্য দিকগুলি
জীবনের অন্যান্য দিকগুলি

আর্যসত্য হল –

  • পৃথিবীতে দুঃখ আছে।
  • দুঃখের কারণ আছে।
  • দুঃখের কারণগুলি মেটাতে পারলে দুঃখ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
  • দুঃখ নিবৃত্তির শ্রেষ্ঠ পথ কী তা জানতে হবে।

রাজকুমার গৌতম একদিন রাজ্য পরিভ্রমণকালে মানব-জীবনের তিনটি বাস্তব সত্যকে প্রত্যক্ষ করেন। এগুলি হল জরা, ব্যাধি, মৃত্যু। রাজকুমারের মনে প্রশ্ন জাগে এর থেকে বাঁচার উপায় কী? কিছুদিন পর এক শান্ত, সৌম্যদর্শন সন্ন্যাসীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। তিনি ভাবেন সন্ন্যাসী এই চরম সত্যের উত্তর খুঁজছেন। অনেকের মতে, এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তিনি সন্ন্যাস ধর্ম নিয়েছিলেন।

জরা, ব্যাধি, মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করে রাজকুমার গৌতমের গভীর অন্তর্দৃষ্টির সৃষ্টি হয়। তাঁর অন্তরের অনুভূতি পরবর্তীকালে আর্যসত্যের দর্শনে রূপান্তরিত হয়। জরা, ব্যাধি, মৃত্যু, সন্ন্যাসী, রাজকুমার প্রভৃতি ছবিগুলির মধ্যদিয়ে সেই ঘটনার বর্ণনাই করা হয়েছে।


আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায়, “খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেশ (রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং ধর্মের বিবর্তন-উত্তর ভারত)” অধ্যায়ের পাঠ্যাংশের অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হবে, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ!

Share via:

মন্তব্য করুন