এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ) – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায়, ‘সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ)’ অধ্যায়ের কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও সহায়ক। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণী এবং চাকরির পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসতে দেখা যায়।

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন
ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন
Contents Show

সাম্রাজ্য বলতে কী বোঝো?

সাম্রাজ্য হল একটি বড়ো অঞ্চল বা রাজ্য। একটি রাজ্যে কয়েক হাজার জনগণ বাস করে। যুদ্ধের মধ্যদিয়ে রাজ্য জয় করে রাজারা তাদের অঞ্চল বা রাজ্য বৃহৎ করে। এই বৃহৎ অঞ্চল বা রাজ্যকে বলে সাম্রাজ্য।

সাম্রাজ্যের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

সাম্রাজ্যের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল –

  • অনেকগুলি রাজ্য নিয়ে একটি সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে।
  • সাম্রাজ্যের আয়তন বৃহৎ হয়।
  • নানা জাতিধর্মবর্ণের মানুষজনদের নিয়ে। সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে।

কীভাবে রাজা সম্রাট হতেন?

একজন রাজা যুদ্ধের মাধ্যমে কতকগুলি রাজ্য দখল করে একটি সাম্রাজ্য তৈরি করেন। সেই রাজা যজ্ঞ করে একটি বিরাট উপাধি নিতেন। নিজের শক্তির প্রমাণ দেখিয়ে তিনি হতেন সম্রাট।

মগধের ভৌগোলিক অবস্থান কোথায় ছিল?

বর্তমান বিহারের গয়া ও পাটনা জেলা নিয়ে মগধ রাজ্য। গঠিত ছিল। গঙ্গা, শোন ও চম্পা – এই তিনটি নদী। পরিবেষ্টিত ছিল মগধ রাজ্য।

মগধ রাজ্যের প্রথম রাজা কে ছিলেন? তিনি কত খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিংহাসনে বসেন?

মগধ রাজ্যের প্রথম রাজা ছিলেন বিম্বিসার। তিনি আনুমানিক 545 খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিংহাসনে বসেন।

বিম্বিসারের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন নীতির পরিচয় দাও।

মগধের সুরক্ষা তথা মগধকে শত্রুমুক্ত করতে বিম্বিসার পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। যেমন – তিনি কোশল রাজকন্যা কোশলদেবী, লিচ্ছবি রাজকন্যা চেল্লনা, মদ্র রাজকন্যা খেমাদেবী এবং বিদেহ রাজকন্যা বাসবীকে বিবাহ করেন।

অজাতশত্রু কে ছিলেন? তিনি কী উপাধি ধারণ করেন?

অজাতশত্রু ছিলেন মগধের রাজা বিম্বিসারের পুত্র। তিনি আনুমানিক 493 খ্রিস্টপূর্বাব্দে মগধাধিপতি হন। তিনি ‘কুনিক’ উপাধি ধারণ করেন।

হর্যঙ্ক বংশের শেষ রাজা কে ছিলেন? তাঁর পর কে মগধের রাজা হন?

হর্যঙ্ক বংশের শেষ রাজা ছিলেন নাগদশক। তাঁকে পরাজিত করে মগধের রাজা হন শিশুনাগ।

আলেকজান্ডার কোথাকার শাসক ছিলেন? তাঁর সেনাপতি কে ছিলেন?

আলেকজান্ডার গ্রিসের ম্যাসিডনের শাসক ছিলেন। আলেকজান্ডারের সেনাপতি ছিলেন সেলিউকাস নিকেটর।

পুরুর রাজত্ব কোন্ কোন্ নদীর মধ্যেকার ভূখণ্ডে ছিল?

পুরুর রাজত্ব ঝিলাম ও চেনাব নদীর মধ্যেকার ভূখণ্ডে ছিল।

আলেকজান্ডারের অভিযানের ফল কী হয়েছিল?

আলেকজান্ডারের অভিযানের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরে ছোটো ছোটো শক্তিগুলির ক্ষমতা কমে গিয়েছিল। ফলে মৌর্যবংশের উত্থানের পথ সুগম হয়েছিল।

প্রথম মৌর্য সম্রাট কে ছিলেন? তাঁর রাজধানীর নাম কী?

প্রথম মৌর্য সম্রাট ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজধানীর নাম ছিল পাটলিপুত্র।

কাকে, কেন ‘ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট’ বলা হয়?

ঐতিহাসিক হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী ও রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায় চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে ‘ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট’ বলেছেন। কারণ তাঁরই হাত ধরে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রীয় ঐক্যের পথ প্রশস্ত হয়।

চন্দ্রগুপ্তের রাজ্যসীমা বর্ণনা করো।

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য সাম্রাজ্যের সীমানা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। তাঁর সাম্রাজ্য পূর্বে বাংলাদেশ থেকে উত্তর-পশ্চিমে সৌরাষ্ট্র, মালব ও কোঙ্কন পর্যন্ত এবং উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে মহীশূর ও মাদ্রাজ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট কে ছিলেন? তিনি কত বছর রাজত্ব করেন?

মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন অশোক। তিনি খ্রিস্টপূর্ব 273-232 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন।

সম্রাট অশোক কবে কলিঙ্গ রাজ্য আক্রমণ করেন? কলিঙ্গ যুদ্ধের পর তিনি কোন্ নীতি গ্রহণ করেন?

261 খ্রিস্টপূর্বাব্দে সম্রাট অশোক কলিঙ্গ রাজ্য আক্রমণ করেন। কলিঙ্গ যুদ্ধের পর তিনি ধর্মবিজয় নীতি গ্রহণ করেন।

মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন? তিনি কত দিন রাজত্ব করেন?

মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। তিনি 324-300 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন।

কলিঙ্গ রাজ্যটির অবস্থান নির্দেশ করো। মৌর্য যুগে কলিঙ্গের রাজধানী কোথায় ছিল?

অশোক যখন কলিঙ্গ আক্রমণ করেন সেই সময় কলিঙ্গ রাজ্যটি পূর্বে সুবর্ণরেখা নদী থেকে দক্ষিণে গোদাবরী নদীর তীর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সেই সময় কলিঙ্গের রাজধানী ছিল তোষালি।

জেনে রাখো – সম্রাট অশোকের মায়ের নাম ছিল সুভদ্রাঙ্গী।

সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্যের সীমানা নির্দেশ করো।

অথবা, অশোকের আমলে মৌর্য সাম্রাজ্য কতদূর বিস্তৃত ছিল?

সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্য উত্তরে আফগানিস্তান, সিন্ধুদেশ ও নেপাল থেকে শুরু করে দক্ষিণে কর্ণাটক এবং পশ্চিমে আরবসাগর থেকে শুরু করে পূর্বে বঙ্গদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্যের সীমানা নির্দেশকারী দুটি প্রধান পর্বতলিপির নাম করো।

সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্যের সীমানা নির্দেশকারী দুটি প্রধান পর্বতলিপির নাম হল – গিরনার লিপি (গুজরাট) ও সোপারা লিপি (মহারাষ্ট্র)।

কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোকের মধ্যে কীরূপ পরিবর্তন হয়েছিল?

অথবা, অশোক একবার কেন যুদ্ধ করেছিলেন?

কলিঙ্গ যুদ্ধের নারকীয় হত্যালীলা, স্বজনহারা মানুষের কান্না, আর রক্তের স্রোত দেখে অশোকের মনে গভীর রেখাপাত করে। তিনি তাঁর এই কাজের জন্য অনুতপ্ত হন। এই যুদ্ধই ছিল তাঁর জীবনের প্রথম ও শেষ যুদ্ধ। এরপর তিনি শান্তিবাদী বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন এবং যুদ্ধ বিজয়নীতি ত্যাগ করে জনকল্যাণমূলক কর্মে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি তাঁর অবশিষ্ট জীবন কাটিয়ে দেন জনসেবার ব্রত নিয়ে।

টুকরো কথা – কলিঙ্গরাজ খারবেল : সম্রাট অশোকের মৃত্যুর পর মৌর্য সাম্রাজ্যের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভারতবর্ষে – একাধিক রাজবংশের অধীন একাধিক রাজত্ব শুরু হয়। এরকমই একটি রাজ্য ছিল কলিঙ্গ। এই রাজ্যের শাসকরা ছিলেন চেদি বংশীয়। এই বংশের শক্তিশালী রাজা ছিলেন খারবেল। খুব সম্ভবত তিনি প্রথম শতকের শেষ দিকে রাজত্ব করেন। তার সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা আছে হাতিগুম্ফা লেখ – তে।

মৌর্য সেনাবাহিনীর গঠন কেমন ছিল?

মৌর্য সেনাবাহিনীতে সম্রাটের ক্ষমতাই ছিল সবচাইতে বেশি। ঘোড়া, রথ, হাতি, নৌকা প্রভৃতি নিয়ে এই সেনাবাহিনী গঠিত ছিল। পদাতিক সৈন্যরাও এই বাহিনীতে ছিল।

মৌর্য শাসনতন্ত্রের ‘সমাহর্তা’ এবং ‘সন্নিধাতা’দের কাজ কী ছিল?

মৌর্য শাসনব্যবস্থায় সমাহর্তাদের কাজ ছিল রাজস্ব সংগ্রহের তত্ত্বাবধান করা। আর সন্নিধাতারা ছিলেন রাজকোশের প্রতিমন্ত্রী।

সম্রাট অশোক ‘ধর্মমহামাত্র’ নামক এক নতুন রাজকর্মচারী নিয়োগ করেন। এঁদের কাজ কী ছিল?।

ধর্মমহামাত্রদের কাজ ছিল –

  • বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার ঘটানো
  • সাম্রাজ্যে বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে তোলা
  • প্রজারা যাতে শান্তিতে জীবনযাপন করে
  • এবং নির্বিঘ্নে ধর্মাচরণ করতে পারে সেদিকে নজর দেওয়া।

মৌর্য শাসনব্যবস্থায় ‘অ্যাগ্রোনময়’ ও ‘অস্টিনময়’ কারা ছিলেন?

মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকা গ্রন্থ অনুসারে জেলার ভারপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের বলা হত ‘অ্যাগ্রোনময়’ এবং পৌর প্রশাসকদের বলা হত ‘অস্টিনময়’।

মৌর্য সম্রাটরা কেন গুপ্তচর নিয়োগ করতেন?

সাম্রাজ্যের কোথায় কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা বা বিদ্রোহ মাথাচাড়া দিচ্ছে কিনা সে সম্পর্কে খোঁজখবর আনতে এবং বিদেশি বা অচেনা সন্দেহজনক ব্যক্তিদের ওপর নজর রাখতে এমনকি রাজকর্মচারী ও রাজপুত্রদের গতিবিধির সম্পর্কে অবহিত হওয়ার জন্য মৌর্য সম্রাটরা গুপ্তচর নিয়োগ করতেন।

বলি কী?

মৌর্য আমলে প্রচলিত এক ধরনের ভূমি রাজস্ব ছিল বলি।

সম্রাট অশোক ‘ধম্ম’ কথাটি প্রথম কোথায় বা কোন্ লিপিতে ব্যবহার করেন? তাঁর ধর্মের আচরণবিধি উল্লেখিত আছে এমন দুটি লেখ-র নাম করো।

সম্রাট অশোক ধৰ্ম্ম’ কথাটি প্রথম মাস্কি লেখ-তে ব্যবহার করেন। দ্বিতীয় ও সপ্তম স্তম্ভ লেখতে তাঁর ধর্মের আচরণবিধি উল্লেখিত আছে।

সম্রাট অশোকের ‘ধর্মবিজয় নীতি’ বলতে কী বোঝো?

কলিঙ্গ যুদ্ধের তান্ডবলীলা ও মানুষের মৃত্যু দেখে সম্রাট অশোক অনুশোচনায় দগ্ধ হন। এরপর তিনি বৌদ্ধ ধর্ম এবং শান্তিবাদী নীতি গ্রহণ করেন। তিনি মনে করেছিলেন একমাত্র ভালোবাসার দ্বারাই মানুষের মন জয়লাভ করা যায়, যুদ্ধ দ্বারা নয়। সেজন্য তিনি 251 খ্রিস্টপূর্বাব্দের পর ‘ধর্মবিজয়’ নীতি গ্রহণ করেন।

সম্রাট অশোকের ‘ভেরি ঘোষ নীতি’ কী?

সিংহাসনে বসার অষ্টম বছরে সম্রাট অশোক কলিঙ্গ অভিযান করেন। তাঁর এই যুদ্ধবাদী তথা যুদ্ধবিজয় নীতিকেই বলা হয় ‘ভেরি ঘোষ নীতি’।

সম্রাট অশোক যে-পশুপ্রেমী ছিলেন তা বোঝা যায় কীভাবে?

সম্রাট অশোকের দুটি রাজকীয় ঘোষণা প্রমাণ করে যে, তিনি একজন পশুদরদি সম্রাট ছিলেন। যেমন তিনি ঘোষণা করেন – ‘অনারম্ভ প্রাণনাম’ অর্থাৎ প্রাণী হত্যা না-করা এবং ‘অবিহিশ ভূতানাম’ অর্থাৎ, জীবিত প্রাণীর ক্ষতি না করা। এ ছাড়া তিনি পশুদের চিকিৎসার জন্য পশু চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

কত খ্রিস্টাব্দে, কোথায় তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতি আহূত হয়?

আনুমানিক 251 খ্রিস্টপূর্বাব্দে সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে পাটলিপুত্রে তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতি আহূত হয়।

মৌর্য বংশের শেষ শাসক কে ছিলেন? তাঁকে কে পরাজিত করেন?

অথবা, কবে, কোন্ মৌর্য সম্রাটকে সরিয়ে পুষ্যমিত্র শুভঙ্গ রাজা হয়েছিলেন?

মৌর্য বংশের শেষ শাসক ছিলেন বৃহদ্রথ। 187 খ্রিস্টপূর্বাব্দে বৃহদ্রথকে হত্যা করে পুষ্যমিত্র শুঙ্গ মগধের রাজা হন।

মৌর্য সাম্রাজ্য পতনের দুটি কারণ উল্লেখ করো।

মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলি ছিল –

  • অহিংস নীতি – সম্রাট অশোকের অহিংস নীতি গ্রহণ এবং যুদ্ধবিজয় নীতি পরিত্যাগ করার ফলে মৌর্য সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • শক্তিশালী সম্রাটের অভাব – অশোকের পর মৌর্য বংশে তেমন শক্তিশালী নরপতির আর্বিভাব ঘটেনি। ফলে মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রশাসন ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে।

মৌর্যদের পর মগধ শাসন করেছিল এরূপ দুটি রাজবংশের নাম উল্লেখ করো।

মৌর্যদের পর মগধ শাসন করেছিল এরূপ দুটি রাজবংশ হল যথাক্রমে শুঙ্গ বংশ ও কাথ বংশ।

শূঙ্গদের দুজন প্রধান শাসকের নাম লেখো।

শুঙ্গদের দুজন প্রধান শাসক ছিলেন পুষ্যমিত্র শুঙ্গ এবং অগ্নিমিত্র শুঙ্গ।

গঙ্গারিদাই কী?

গ্রিক ও রোমান সাহিত্য থেকে মগধের পূর্বদিকের এক শক্তিশালী রাজ্যের কথা জানা গেছে। সেই রাজ্যকে গঙ্গারিদ বা গঙ্গারিদাই বলা হত।

ভারতে রাজত্বকারী কুষাণ কারা? বা, তাদের পরিচয় কী?

অথবা, কুষাণ কাদের বলা হয়?

মধ্য এশিয়ার ইউয়ে-ঝি নামক এক যাযাবর জাতির পাঁচটি শাখা ছিল। ওই শাখাগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কু এই যুয়াং। ভারতে রাজত্বকারী কুষাণরা ছিল এই কু এই ষুয়াং জাতির বংশধর।

কুষাণ বংশের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন?

কুষাণ বংশের প্রথম রাজা ছিলেন কুজুল কদফিসেস ও শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন প্রথম কনিষ্ক।

কুষাণ শাসনব্যবস্থার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

কুষাণ শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

  • কুষাণ শাসনব্যবস্থায় পিতা ও পুত্র একসঙ্গে শাসনকাজ চালাতেন।
  • শাসনব্যবস্থার সুবিধার জন্য কুষাণ সম্রাটরা সমগ্র সাম্রাজ্যকে কতকগুলি প্রদেশে বিভক্ত করেছিলেন।

কনিষ্ক কোন্ ধর্ম গ্রহণ করেন? তাঁর রাজধানী কোথায় ছিল?

কনিষ্ক বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁর রাজধানী ছিল পুরুষপুর।

কনিষ্ককে কেন ‘দ্বিতীয় অশোক’ বলা হয়?

সম্রাট অশোক যেমন বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন এবং বৌদ্ধ স্তূপচৈত্য নির্মাণ করেন তেমনি কুষাণরাজ কনিষ্ক অশোকের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন। অশোকের মতো তিনিও তাঁর রাজধানীতে বৌদ্ধ সংগীতির আয়োজন করেন। সেজন্য ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ তাঁকে ‘দ্বিতীয় অশোক’ বলে অভিহিত করেছেন।

টুকরো কথা – কুষাণ কারা ? : মৌর্যদের পতনের পর ভারতের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে প্রথমে শক ও পহুব, পরে কুষাণগণ ভারতে প্রবেশ করে। এই কুষাণরা ছিল মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতি ইউয়ে-ঝি’র বংশধর। খ্রিস্টপূর্ব 165 অব্দে এরা হিউৎ-নু জাতির দ্বারা। তাদের আদি বাসস্থান থেকে বিতাড়িত হন। এই সময় কুষাণরা 5টি শাখায় বিভক্ত হয়ে পড়ে, যথা – শুয়াং-মি, কু এই মুয়াৎ, হি-তুয়েন, তু-মি ও হিউ-মি। শেষ পর্যন্ত কু এই মুয়াং বা কুষাণগণন শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং ভারতে প্রবেশ করে। এই বংশের প্রথম রাজা ছিলেন প্রথম কদফিসেস।

কবে, কার আমলে এবং কোথায় চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতি আহূত হয়?

খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে সম্রাট কনিষ্কের আমলে কাশ্মীরে চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতি আহূত হয়।

কবে দাক্ষিণাত্যে সাতবাহন শাসন শুরু হয়েছিল? কবে এই শাসনের অবসান হয়?

খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকের দ্বিতীয় ভাগে দাক্ষিণাত্যে সাতবাহনদের শাসন শুরু হয়েছিল। আনুমানিক 225 খ্রিস্টাব্দ বা তার কিছু পরে এই শাসনের অবসান হয়।

কুষাণ সম্রাটরা কেন নিজেদের ‘দেবতার পুত্র’ বলতেন?

প্রাচীনকালে চিনের সম্রাটরা নিজেদের ‘দেবতার পুত্র’ বলতেন। হয়তো সে-কারণেই কুষাণরা নিজেদের ‘দেবপুত্র’ অর্থাৎ ‘দেবতার পুত্র’ বলে ঘোষণা করতেন।

ক্ষত্রপ কাদের বলা হত?

শাসনব্যবস্থার সুবিধার জন্য কুষান সম্রাটরা সমগ্র সাম্রাজ্যকে কতগুলি প্রদেশে ভাগ করেছিলেন। সেইসব প্রদেশের শাসকদের বলা হত ক্ষত্রপ।

গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে? এই বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কে?

গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শ্রীগুপ্ত। এই বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন প্রথম চন্দ্রগুপ্ত।

কবে থেকে গুপ্তাব্দ গণনা শুরু হয়?

গুপ্তসম্রাট প্রথম চন্দ্রগুপ্তের রাজা হওয়ার সময় থেকে। অর্থাৎ, 319-320 খ্রিস্টাব্দ থেকে গুপ্তাব্দের প্রচলন হয়।

সমুদ্রগুপ্তকে ‘লিচ্ছবি দৌহিত্র’ বলার কারণ কী?

সমুদ্রগুপ্তের পিতা প্রথম চন্দ্রগুপ্ত বৈশালীর লিচ্ছবি বংশীয় রাজকন্যা কুমারদেবীকে বিবাহ করেন। সমুদ্রগুপ্ত কুমারদেবীর সন্তান ছিলেন। তাই ঐতিহাসিকগণ তাঁকে ‘লিচ্ছবি দৌহিত্র’ উপাধিতে ভূষিত করেছেন।

সুদূর দক্ষিণে সমুদ্রগুপ্ত কতদূর অধিকার প্রতিষ্ঠা। করেছিলেন?

সুদূর দক্ষিণে তামিলনাড়ুর উত্তর-পূর্ব অংশ পর্যন্ত। সমুদ্রগুপ্তের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।

সমুদ্রগুপ্তের ‘গ্রহণ’, ‘মোক্ষ’ ও ‘অনুগ্রহ’ নীতি বলতে কী বোঝো?

অথবা, সমুদ্রগুপ্ত দক্ষিণভারতে কোন্ নীতি গ্রহণ করেছিলেন?

সমুদ্রগুপ্ত দক্ষিণ ভারতের 12টি রাজ্যজয়ের ক্ষেত্রে ‘গ্রহণ’, ‘মোক্ষ’ ও ‘অনুগ্রহ’ নীতি গ্রহণ করেন। গ্রহণ নীতি দ্বারা কিছু রাজ্য প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে নিয়ে আসেন। মোক্ষ নীতি দ্বারা কিছু রাজ্যকে তিনি করদ রাজ্যে পরিণত করেন এবং অনুগ্রহ নীতি দ্বারা কিছু রাজ্যের বশ্যতা আদায় করে তাঁদের রাজ্য ফিরিয়ে দেন। আসলে দূরদর্শী সমুদ্রগুপ্ত জানতেন সুদূর। পাটলিপুত্র থেকে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির ওপর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভবপর নয়। তাই তিনি এরূপ নীতি গ্রহণ করেন।

যে-সমস্ত সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলি (গুপ্ত সাম্রাজ্যের) সমুদ্রগুপ্তের বশ্যতা স্বীকার করে তাদের নাম উল্লেখ করো।

সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্যবিস্তার নীতিতে ভয় পেয়ে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সীমান্তবর্তী যে-সমস্ত রাজ্য সমুদ্র। গুপ্তের বশ্যতা স্বীকার করে নেয়, সেগুলি হল – নেপাল, কর্তৃপুর, সমতট, কামরূপ, দাভক প্রভৃতি।

সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যসীমা কীরূপ ছিল?

ঐতিহাসিক রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায়ের মতে, সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্য পূর্বে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা, পশ্চিমে সৌরাষ্ট্র, উত্তরে কাশ্মীর ও হিমালয় পর্বত এবং দক্ষিণে নর্মদা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

কাকে, কেন ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ বলা হয়?

ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ সমুদ্রগুপ্তকে ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ বলেছেন। কারণ নেপোলিয়ন যেমন তাঁর বাহুবলে ইউরোপের বিভিন্ন রাজ্য ফরাসি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন, তেমনই সমুদ্রগুপ্ত তাঁর প্রতিভা ও বাহুবলে ভারতের বহু রাজ্য গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।

কাকে, কেন ‘প্রাচীন ভারতের সুবর্ণযুগের অগ্রদূত’ বলা হয়?

অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে, সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের আমলে প্রায় গোটা ভারতভূমিতে যে-রাজনৈতিক ঐক্য ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা গুপ্ত যুগে সুবর্ণযুগের পথ প্রশস্ত করে। সেজন্য তাঁকে ‘প্রাচীন ভারতের সুবর্ণযুগের অগ্রদূত’ বলা হয়।

পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন নীতির পরিচয় দাও।

গুপ্ত সাম্রাজ্যের সংহতি স্থাপন ও শক্তি বৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। মধ্য ভারতের শক্তিশালী নাগবংশীয় রাজকন্যা কুবেরনাগাকে তিনি বিবাহ করেন এবং নিজের পুত্রের সঙ্গে কুন্তলের কদম্ব বংশীয় রাজকন্যার বিবাহ দেন। এ ছাড়া নিজের কন্যা প্রভাবতীর সঙ্গে নর্মদার দক্ষিণে অবস্থিত বাকাটকরাজ দ্বিতীয় রুদ্রসেনের বিবাহ দেন।

‘শকারি’ উপাধি কোন্ গুপ্ত সম্রাট গ্রহণ করেন? তাঁর আমলে কোন্ মুদ্রা প্রথম চালু হয়?

‘শকারি’ উপাধি গ্রহণ করেন গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের আমলে প্রথম রুপোর মুদ্রা চালু হয়।

দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে ‘শকারি’ বলা হয় কেন?

অথবা কাকে কেন শকারি বলা হয়?

দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে ‘শকারি’ বলা হয়, কারণ তিনি গুপ্তদের দীর্ঘদিনের শত্রু শকরাজ তৃতীয় রুদ্রসিংহকে পরাজিত করে গুপ্ত সাম্রাজ্যকে বিপদমুক্ত করেছিলেন।

প্রথম কুমারগুপ্তের শাসনকালের গুরুত্ব কী ছিল?

প্রথম কুমারগুপ্তের আমলেও গুপ্ত সাম্রাজ্যের গৌরব অক্ষুণ্ণ ছিল। তিনি সাম্রাজ্যে নানা ধরনের মুদ্রার প্রচলন করেছিলেন। তাঁর আমলেই নালন্দা মহাবিহার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

‘ভারতের রক্ষাকারী’ কাকে, কেন বলা হয়?

স্কন্দগুপ্তকে ‘ভারতের রক্ষাকারী’ বলা হয়। তিনি সিংহাসনে বসে অল্পদিনের মধ্যে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে হুনদের পরাজিত করে গুপ্ত সাম্রাজ্যকে এক চরম বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন। তাই ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার তাঁকে ভারতের রক্ষাকর্তা বা রক্ষাকারী বলেছেন।

জেনে রাখো – তিতারি স্তম্ভলিপি থেকে চুনদের সঙ্গে স্কন্দগুপ্তের যুদ্ধের কথা জানা যায়।

স্কন্দগুপ্তের পর কে মগধের রাজা হন? গুপ্ত বংশের শেষ রাজা কে ছিলেন?

স্কন্দগুপ্তের পর মগধের রাজা হন পুরুগুপ্ত। গুপ্ত বংশের শেষ রাজা ছিলেন বিষ্ণুগুপ্ত।

গ্রহবর্মা কে ছিলেন?

গ্রহবর্মা ছিলেন কনৌজের রাজা। তাঁর সঙ্গে পুষ্যভূতিরাজ প্রভাকরবর্ধনের মেয়ে রাজ্যশ্রীর বিয়ে হয়েছিল। কনৌজ ও মালবের যুদ্ধে তিনি মারা যান।

রবিকীর্তি কে ছিলেন? তাঁর লেখা লেখটির নাম কী?

চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশির সভাকবি ছিলেন রবিকীর্তি। তাঁর লেখা লেখটির নাম আইহোল প্রশস্তি।।

এলাহাবাদ প্রশস্তি কোন্ ভাষায় লেখা? এটি কোথায় পাওয়া গেছে?

এলাহবাদ প্রশস্তি সংস্কৃত ভাষায় লেখা। এটি এলাহাবাদের নিকট কৌশাম্বীতে পাওয়া গেছে।

এলাহাবাদ প্রশস্তি গুরুত্বপূর্ণ কেন?

এলাহাবাদ প্রশস্তি একারণে গুরুত্বপূর্ণ যে –

  • এই প্রশস্তি থেকে সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যজয়, সাম্রাজ্যবাদী নীতি ও তাঁর সর্বতোমুখী প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়।
  • তেত্রিশ পঙ্ক্তিতে বিধৃত এই প্রশস্তিটি গুপ্তযুগের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

সাতবাহন শাসনের দুটি দিক উল্লেখ করো।

সাতবাহন শাসনের দুটি দিক ছিল –

  • সাতবাহন শাসকরা শাসনব্যবস্থায় সুবিধার জন্য তাঁদের। সাম্রাজ্যকে কতকগুলি ভাগে (যেমন – প্রদেশ) ভাগ করেছিলেন।
  • তাঁরা কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে কর আদায় করতেন না।

শক-সাতবাহনদের লড়াইয়ের কারণ কী ছিল?

অথবা, শক ও সাতবাহনদের মধ্যে দ্বন্দ্বের প্রধান কারণ কী ছিল?

শক-সাতকাহনদের মধ্যে লড়াইয়ের মূল কারণ ছিল –

  • রাজনৈতিক উদ্দেশ্য – উভয় শাসকগণই চেয়েছিল পূর্ব ও পশ্চিম মালব সহ অন্যান্য অঞ্চলের ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে।
  • অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য – আসলে এই সম্প্রসারণের উদ্দেশ্য ছিল হিরের খনি দখল করা এবং সমুদ্র বাণিজ্যে নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

কুষাণ শাসনব্যবস্থার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

কুষাণ শাসনব্যবস্থার দুটি বৈশিষ্ট্য ছিল –

  • কুষাণ রাজারা তাঁদের নামের আগে দেবপুত্র কথাটি ব্যবহার করতেন।
  • শাসনকার্যের সুবিধার জন্য তাঁরা কুষাণ সাম্রাজ্যকে কতক গুলি প্রদেশে ভাগ করেছিলেন।

নাসিক লেখ – টীকা লেখো।

নাসিক প্রশস্তি উৎকীর্ণ করেন সাতবাহনরাজ গৌতমী পুত্র সাতকর্ণি। নাসিকে তাঁর দুটি লিপি পাওয়া গেছে। এই লিপি উৎকীর্ণ করার উদ্দেশ্য ছিল –

  • শকদের পরাজিত করার ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখা।
  • শাসনব্যবস্থা – সহ তাঁর কৃতিত্ব তুলে ধরা।

গঙ্গারিদাই রাজ্যের রাজধানীর নাম ও এই রাজ্যের অবস্থান কোথায়?

গঙ্গারিদাই রাজ্যের রাজধানীর নাম ছিল গঙ্গা বা গ্যাঙ্গে বন্দর নগর। এই রাজ্যের অবস্থান ছিল মগধ সাম্রাজ্যের পূর্ব দিকে।

কবে, কোন্ মৌর্য সম্রাটকে হারিয়ে রাজা হলেন পুষ্যমিত্র শুঙ্গ?

খ্রিস্টপূর্ব 187 অব্দে মৌর্য সেনাপতি পুষ্যমিত্র শুঙ্গ মৌর্য সম্রাট ব্রহদ্রথকে পরাজিত করেন। এইভাবে মগধে শুঙ্গবংশের শাসন শুরু হয়।

অর্থশাস্ত্র কার লেখো?

অর্থশাস্ত্র কৌটিল্য বা চাণক্য বা বিষ্ণুগুপ্তের লেখা। যদিও এর লেখক কে ছিলেন তা নিয়ে পণ্ডিতমহলে বিতর্ক আছে।

মৌর্য সাম্রাজ্য গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে আলেকজান্ডারের ভারত অভিযানের ভূমিকা কী ছিল?

আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করলেও তাঁর বিশ্বজয়ের উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি। জানা যায়, আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তাঁর সেনাপতি সেই স্বপ্নপূরণে এগিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধে তিনি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের নিকট পরাজিত হন এবং মৌর্য সম্রাটের সঙ্গে এক সন্ধি করতে বাধ্য হন। চুক্তি অনুযায়ী চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য কাবুল, কান্দাহার, হিরাট-সহ একাধিক অঞ্চল মৌর্য সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করে। এইভাবে ভারতে মৌর্য সাম্রাজ্যের ভিত্তি সুদৃঢ় হয়।

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য কিভাবে মগধকে শক্তিশালী করে তোলেন?

নিম্নলিখিত উপায়ে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য মগধকে শক্তিশালী করেন –

  • তিনি গ্রিকদের (সেলিউকাস) পরাজিত করে উত্তর-পূর্ব সীমান্তের অনেক অঞ্চল (হিরাট, কান্দাহার, কাবুল) দখল করেছিলেন।
  • এছাড়া তিনি সৌরাষ্ট্র, দক্ষিণ ভারতের অনেক অঞ্চল (চিতলদুর্গ, তিনেভেলী) এবং বাংলা (প্রাসি, গঙ্গারিদাই) দখল করেছিলেন।

ইন্ডিকা গ্রন্থ কার লেখা? তা থেকে কীসের বিবরণ পাওয়া যায়?

অথবা, ইন্ডিকা কার লেখা? এর গুরুত্ব কী?

ইন্ডিকা গ্রন্থটি মৌর্যযুগে ভারতে আগত গ্রিক দূত মেগাস্থিনিস রচনা করেছিলেন।

কী জানা যায়/গুরুত্ব – এই গ্রন্থ থেকে জানা যায় –

  • চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের শাসনব্যবস্থা এবং
  • মগধের রাজধানী পাটলিপুত্র শহরের বর্ণনা ও এই নগরের শাসন সংক্রান্ত বিষয়।

অশোকের ধম্মে অন্তর্ভুক্ত এমন দুটি সামাজিক আচরণের কথা উল্লেখ করো।

অশোকের ধম্মে অন্তর্ভুক্ত দুটি সামাজিক আচরণ ছিল –

  • গুরুজন (পিতা-মাতা) ও দাসদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, সম্মান প্রদর্শন ও দায়িত্ব পালন করা।
  • তিনি ঘোষণা করেছিলেন অভিহিশ ভূতানাম অর্থাৎ জীবিত প্রাণীর ক্ষতি না করা।

আলেকজান্ডার – টীকা লেখো।

আলেকজান্ডার ছিলেন ম্যাসিডনের রাজা ফিলিপের পুত্র। যিনি দিগ্বিজয়ের স্বপ্ন নিয়ে সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ভারতবর্ষ দখলের জন্য ভারতবর্ষ আক্রমণ করেছিলেন। জানা যায় হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে পাঞ্জাবে তিনি সসৈন্যে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে তিনি পুরু নামে এক রাজার বাধার মুখে পড়েছিলেন। তবে তাঁর স্বপ্নপূরণ হয়নি। স্বদেশ ফিরে যাওয়ার পথে 323 খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি ব্যাবিলন শহরে মারা যান।

হর্ষচরিত কাব্য কার লেখা? এই কাব্যে তিনি কোন্ রাজাকে অনেকভাবে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করেন?

  • হর্ষচরিত কাব্য হর্ষবর্ধনের সভাকবি বাণভট্টের লেখা।
  • এই কাব্যে তিনি গৌড়রাজ শশাঙ্ককে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন।

সকলোত্তরপথনাথ কাকে, কেন বলা হয়?

জানা যায় সম্রাট হর্ষবর্ধন সমগ্র উত্তর ভারত কনৌজ তথা থানেশ্বরের অধীন এনেছিলেন। সেই তালিকায় ছিল- মগধ, উত্তরবঙ্গ, কঙ্গোদ, বলভী রাজ্য প্রভৃতি। এমনকি তিনি সিন্ধু ও কাশ্মীর অভিযান করেছিলেন। একারণে তাঁকে সকলোত্তরপথনাথ বলা হয়।

পঞ্চভারত বলতে কোন্ অঞ্চলকে বোঝায়? এর অধীশ্বর কে হয়েছিলেন?

পঞ্চভারত বলতে বোঝায়-বর্তমান পূর্ব পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, বাংলা ও কঙ্গোদ (ওড়িশা)। এর অধীশ্বর হয়েছিলেন সম্রাট হর্ষবর্ধন।

দ্বিতীয় পুলকেশী ও হর্ষবর্ধনের সংঘাতের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।

দ্বিতীয় পুলকেশী ও হর্ষবর্ধনের সংঘাতের কারণ ছিল –

  • চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশী ছিলেন পশ্চিম ভারতে হর্ষবর্ধনের মূল প্রতিপক্ষ।
  • আবার হর্ষবর্ধনের লক্ষ্য ছিল পশ্চিম উপকূলের বন্দরগুলি দখল করে কনৌজের অর্থনীতি মজবুত করা। স্বাভাবিক কারণেই দ্বিতীয় পুলকেশী-র সঙ্গে হর্ষবর্ধনের সংঘাতের সূচনা হয়।

সুয়ান জাং কোন্ দেশ থেকে ভারতে আসেন? তাঁর লেখা গ্রন্থের নাম কী?

সুয়ান জাং চিন দেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন। তার লেখা গ্রন্থের নাম সি-ইউ-কি।


আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায়, “সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ)” অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হবে, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ!

Share via:

মন্তব্য করুন