অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ছন্নছাড়া – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের ছন্নছাড়া অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে ছন্নছাড়া অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় ছন্নছাড়া অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই ছন্নছাড়া অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

কবিতার মূল বিষয়বস্তু হল সমাজের দ্বারা উপেক্ষিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও মানবিকতা। একজন ধনী ব্যক্তি যখন রাস্তার ছন্নছাড়া ছেলেদের জন্য নিজের ভাড়া করা ট্যাক্সি ছেড়ে দেন, তখন তিনি প্রথমে রক্তাক্ত ভিখিরির সংস্পর্শে আসতে ভয় পান। কিন্তু পরে যখন তিনি বুঝতে পারেন যে ভিখিরিরও প্রাণ আছে, তখন তার মনে গভীর শ্রদ্ধা জাগ্রত হয়। এই ঘটনাটি ধনী ব্যক্তির মানবিকতার পরিচয় দেয়।

কবি দেখান যে, ছন্নছাড়া মানুষদের প্রতি সমাজের যদিও অবহেলা রয়েছে, তবুও তাদের মধ্যে একে অপরের প্রতি গভীর আস্থা ও নির্ভরতা রয়েছে। রাস্তার ছেলেরা যখন দেখতে পায় যে একজন ভিখিরি গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে, তখন তারা তাকে উদ্ধার করার জন্য দ্রুত এগিয়ে আসে। তাদের এই কর্ম
মানবিকতার পরিচয় বহন করে। কবিতায় প্রকৃতির সাথে মানুষের আত্মিক সম্পর্কের চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। যখন ধনী ব্যক্তি ছন্নছাড়া ছেলেদের প্রতি সহানুভূতি দেখান, তখন প্রকৃতিও তার সৌন্দর্য প্রকাশ করে। জীর্ণ গাছে নতুন পাতা গজায় এবং পাষাণ হৃদয়ে কোমলতার স্পর্শ লাগে।

কবিতার ভাষা সহজ ও সাবলীল। কবি ছবিময় ভাষা ব্যবহার করে কবিতার বিষয়বস্তুকে স্পষ্ট করে তুলেছেন। কবিতার শৈলী বর্ণনামূলক ও আখ্যানাত্মক।”ছন্নছাড়া” কবিতা একটি সুন্দর ও মর্মস্পর্শী কবিতা। এই কবিতায় কবি সমাজের অবহেলিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও মানবিকতার বার্তা দিয়েছেন। কবিতাটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সমাজের প্রতিটি মানুষই সমান সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী।

ছন্নছাড়া – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি বই-এর নাম লেখো।

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি বই-এর নাম হল – ‘অমাবস্যা’ ও ‘আমরা’।

তিনি কোন পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন?

তিনি ‘কল্লোল’ পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।

কবি প্রথমে গাছটিকে কেমন অবস্থায় দেখেছিলেন?

গলির মোড়ের গাছটিকে দেখে কবির প্রথমে মনে হয়েছিল লতাপাতাহীন, বিন্দুমাত্র সবুজের চিহ্নবিহীন এবং কতকগুলো শুকনো ডাল মেলে ধরা গাছটা যেন আসলে একটা প্রকৃত জীবন্ত গাছ নয়। গাছের কঙ্কাল বা প্রেতমূর্তি।

ওই দেখতে পাচ্ছেন না ভিড়? – ওখানে কীসের ভিড়?

একজন নামপরিচয়হীন ভিখিরিকে একটি গাড়ি চাপা দিয়ে চলে গিয়েছে এবং তার দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় দলা পাকিয়ে গিয়েছে – যে কারণে সেখানে ভিড় জমেছিল।

কে সে লোক? – লোকটির পরিচয় দাও।

লোক’টি একটি পরিচয়হীন চালচুলোহীন ফুটপাথবাসী ভিখিরি, যার দেহ গাড়ি চাপা পড়ে রক্তে মাখামাখি হয়ে প্রায় দলা পাকিয়ে গিয়েছে।

চেঁচিয়ে উঠল সমস্বরে – কী বলে তারা সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল?

ভিখিরির দেহে প্রাণ থাকার আনন্দে যুবকেরা সমস্বরে ‘প্রাণ আছে, এখনও প্রাণ আছে’ বলে আনন্দে ঝংকৃত হয়ে চেঁচিয়ে উঠল।

ছন্নছাড়া কবিতাটির রচয়িতা হলেন – (অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত/জীবনানন্দ দাশ/অজিত দত্ত)।

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত।

ছন্নছাড়া কবিতায় উল্লিখিত গাছটি দাঁড়িয়ে রয়েছে – (বড়ো রাস্তার ধারে/পুকুর পাড়ে/গলির মোড়ে)।

গলির মোড়ে।

রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল এক – (শিল্পপতি/ভিখিরি/চিত্রতারকা)।

ভিখিরি।

ওরা বিরাট এক _ এক নেই রাজ্যের বাসিন্দা।

নৈরাজ্যের।

তা সুধাহরণের _ উদাহরণ।

ক্ষুধাভরণের।

তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে _ মাঝখানে।

সড়কের।

কোথায় চলেছে নেই সেই _ ঠিকানা।

ভবিষ্যতের।

ধীরে ধীরে ঘন পত্রপুঞ্জে ফেলেছে _ দীর্ঘছায়া।

স্নেহার্দ্র।

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত প্রথম কোন্ ছদ্মনামে সাহিত্য-রচনা শুরু করেন?

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত প্রথম ‘নীহারিকা দেবী’ ছদ্মনামে সাহিত্যরচনা শুরু করেন।

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কিছু সময়ের জন্য কোন্ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব সামলেছিলেন?

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কিছু সময়ের জন্য ‘কল্লোল’ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব সামলেছিলেন।

কাকে দেখে কবির ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’ বলে মনে হয়েছিল?

গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রুক্ষ, রিক্ত, জীর্ণ গাছটিকে দেখে কবির ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’ বলে মনে হয়েছিল।

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস এবং দুটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হল ‘বিবাহের চেয়ে বড়ো’ এবং ‘ইন্দ্রাণী’। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য দুটি কাব্যগ্রন্থ হল ‘অমাবস্যা’ এবং ‘নীল আকাশ’।

চেঁচিয়ে উঠল সমস্বরে – কারা কী বলে সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল?

ছন্নছাড়া বেকার যুবকেরা দুর্ঘটনায় আহত নামপরিচয়হীন ভিখিরির দেহে প্রাণ আছে দেখে আনন্দে উল্লসিত হয়ে সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল ‘প্রাণ আছে, এখনও প্রাণ আছে’ বলে।

কবি প্রথমে গাছটিকে কেমন অবস্থায় দেখেছিলেন?

গলির মোড়ের গাছটিকে দেখে কবির প্রথমে মনে হয়েছিল লতাপাতাহীন, বিন্দুমাত্র সবুজের চিহ্নবিহীন এবং কতকগুলো শুকনো ডাল মেলে ধরা গাছটা যেন আসলে একটা প্রকৃত জীবন্ত গাছ নয়। গাছের কঙ্কাল বা প্রেতমূর্তি।

কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের “ছন্নছাড়া” কবিতা শুধু একটি কবিতা নয়, বরং মানবিকতার এক অমর প্রতীক। সমাজের দ্বারা উপেক্ষিত, অবহেলিত মানুষদের প্রতি কবির গভীর সহানুভূতি ও শ্রদ্ধাবোধ এই কবিতায় স্পষ্ট।

প্রথমে, ট্যাক্সিতে রক্তাক্ত ভিখিরির দেহ দেখে কবির মনে যে ঘৃণা ও বিরক্তি জাগে, তা সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। কিন্তু পরক্ষণেই যখন তিনি ছন্নছাড়া ছেলেদের প্রাণের প্রতি তীব্র আগ্রহ দেখতে পান, তখন তার মনে এক অপূর্ব পরিবর্তন আসে। তিনি বুঝতে পারেন যে, সমাজের অবহেলিত মানুষদের মধ্যেও প্রাণের আগুন জ্বলছে, তাদের মধ্যেও মানবিকতা বিদ্যমান।

এই অনুভূতি কবিকে আরও গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য করে। তিনি শহরের সর্বত্র “প্রাণ আছে, এখনও প্রাণ আছে” বাক্যটি প্রতিধ্বনিত হতে শোনেন। এই বাক্যটি শুধু একটি আহত ভিখিরির প্রাণের কথা বলছে না, বরং সমাজের অবহেলিত, উপেক্ষিত সকল মানুষের প্রাণের কথা বলছে।

কবিতার শেষাংশে, কবি জীর্ণ, শুষ্ক গাছটিকে সমাজের অবহেলিত মানুষদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। গাছটির মতো, তারাও জীবনের স্পন্দন হারিয়ে ফেলেছে। কিন্তু ছন্নছাড়া ছেলেদের স্পর্শে, তাদের মধ্যে আবারও জীবনের আলো জ্বলে ওঠে। গাছে আবারও সবুজের প্রলেপ লাগে, পাষাণ হৃদয়ে নরমতার স্পর্শ লাগে।

এইভাবে, “ছন্নছাড়া” কবিতা মানবিকতার জয়গান গায়। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সমাজের প্রতিটি মানুষই সমান মর্যাদার অধিকারী, তাদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি ও শ্রদ্ধাশীল আচরণ প্রদর্শন করা উচিত।

Share via:

মন্তব্য করুন