আজকের আর্টিকেলে আমরা অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের দ্বাত্রিংশ অধ্যায়, ‘ঘুরে দাঁড়াও’ এর বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবো। এই বিষয়সংক্ষেপ অষ্টম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই অধ্যায় থেকে প্রশ্নগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে।
ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের কবি পরিচিতি
প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের জন্ম ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই কলকাতা শহরে। বাবা নির্মলেন্দু দাশগুপ্ত ও মা নীলিমা দাশগুপ্ত। তাঁর প্রথম কবিতাটি ছাপা হয় সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের পত্রিকায়। তখন তিনি প্রথম বর্ষের ছাত্র। পরবর্তীকালে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যবিভাগে এমএ পাস করেন ও পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হন। দক্ষিণ আমেরিকার ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তিনি তুলনামূলক সাহিত্যেই আবার এমএ করেন। তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে ‘এক ঋতু’ প্রথম কাব্যগ্রন্থরূপে প্রকাশ পায় (চৈত্র ১৩৬৩)। এরপর যথাক্রমে ‘সদর স্ট্রিটের বারান্দা’, ‘নিজস্ব ঘুড়ির প্রতি’, ‘মানুষের প্রতি’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থ। ‘অলিন্দ’ নামে একটি কবিতা-পত্রিকার তিনি সম্পাদক ছিলেন। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।
ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ
আবহমানের স্রোতেই কবির মানসভূমিতে এক প্রতিবাদ তৈরি হয়েছে। জীবনকে দেখেছেন অসহায় একাকিত্বের অবস্থান থেকে। টানাপোড়েনের মধ্যে জীবনের এক বাস্তবকে উন্মোচিত করেছেন তিনি। বিপন্ন মানুষকে একসময় ঘুরে দাঁড়াতে হয়, না হলে হারিয়ে যেতে হয় একদিন। এই সত্যই প্রকাশের জন্য কবিতাটির অবতারণা।
ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ
জীবনে সব বিষয়ে নিজেকে সরিয়ে রাখলে, সময়ের সঙ্গে নিজেকে বদলে না নিলে, সব কিছুর সঙ্গে একাত্ম না হলে নিজের কোনো মর্যাদা থাকে না। একসময় হারিয়ে যেতে হয়। তাই ঘুরে দাঁড়িয়ে সমকালের সব কিছুর মুখোমুখি হওয়াই নিজের উপস্থিতি প্রকাশের প্রকৃত পন্থা। এ কারণেই কবি বারবার কবিতার মুখে ঘুরে দাঁড়ানোর অর্থাৎ প্রতিবাদী সত্তার জাগরণের কথা বলেছেন।
ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের নামকরণ
নামকরণ সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নামকরণের মধ্য দিয়ে পাঠক বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনের মতো সাহিত্য-বিষয়টি পাঠ করার আগেই সাহিত্য-বিষয়টি সম্পর্কে খানিক ধারণা লাভ করতে পারেন। সাহিত্যে নামকরণ নানা উপায়ে হতে পারে। যথা – চরিত্রকেন্দ্রিক, বিষয়কেন্দ্রিক, ব্যঞ্জনাধর্মী ইত্যাদি।
এই কবিতায় কবি জীবনে চলার পথে সব কিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে না রেখে নিজেকে সময়োপযোগী করে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। ‘ঘুরে দাঁড়াও’ শব্দ দুটি দুবার ব্যবহারও করেছেন কবিতায়। অর্থাৎ কবিতার মধ্যে কবি মানুষকে প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠতে বলেছেন। তাই বলা যায় কবিতাটির নামকরণ বিষয়কেন্দ্রিক এবং সার্থক।
ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা
ঘুরে দাঁড়াও – প্রতিবাদ করো। তুক – বশীকরণের জন্য তন্ত্রমন্ত্র; জাদু। পালটে – বদলে। বনান্তর – অন্য বন। ছায়াপথ – আকাশগঙ্গা; শুভ্রমেঘের মতো বহুদূরের নক্ষত্রপুঞ্জ। উপান্ত – উপকণ্ঠ; কাছ; নিকট। শহরতলি – শহরের পার্শ্ববর্তী বা নিকটস্থ স্থান। বিন্দু – ফোঁটা বা ফুটকি।
আজকের এই নিবন্ধে আমরা অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের দ্বাত্রিংশ অধ্যায় ‘ঘুরে দাঁড়াও’ -এর বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি এবং এর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো তুলে ধরেছি, যা অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার প্রস্তুতিতে সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও সাহায্য প্রয়োজন হয়, টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!