আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের ষষ্ঠ অধ্যায় ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ এর বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবো। এই বিষয়সংক্ষেপ অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্রায়ই পরীক্ষায় আসে।
নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি
বিশিষ্ট লেখিকা নলিনী দাশ জন্ম এবং বৈবাহিকসূত্রে দুই প্রখ্যাত সাহিত্যিক পরিবারের সদস্যা ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব সত্যজিৎ রায়ের সম্পর্কে ভগিনী। তার বিবাহ হয় বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কবি জীবনানন্দ দাশের পুত্র অশোকানন্দ দাশের সঙ্গে। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে লেখিকা নলিনী দাশ ‘সন্দেশ’ পত্রিকার কার্যনির্বাহী সম্পাদকের পদে যোগদান করেন। এবং তার স্বামী যোগ দেন ওই সংবাদপত্রের প্রকাশকরূপে।
নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ
চারজন সহপাঠী ছাত্রীনিবাসে থাকে। ক্লাসে উনিশটি মেয়ে থাকলেও মালু, কালু, বুলু ও টুলু অভিন্নহৃদয় বন্ধু। তারা তাদের সংহতিকে প্রাধান্য দিতে দলটির নাম দেয় ‘গন্ডালু’। চারজন একসঙ্গে থাকায় তারা ‘গন্ডা’ এবং সবার নামের শেষে ‘লু’ থাকায় নামটি বেশ মজাদার। স্কুলে ভরতি হওয়ার পর মালু মাসির বাড়ি থেকে কালুকে পদ্যে অদ্ভুত পত্র পাঠায়। সেই থেকে মালুর কবিখ্যাতি ছড়ায় স্কুলে। ধীরে ধীরে সবার মধ্যে কবিতা লেখার উৎসাহ জন্মায় এবং মালু সবার নামেই কবিতা লিখে চমকে দেয়। বড়ো মিস বিশ্বাসের কড়া নজর এড়িয়ে কবিতা লেখা চলতে থাকে এবং এইভাবে নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘের জন্ম হয়।
কবিতা সংঘের অধিবেশন নিয়ে ব্যস্ততা শুরু হয়, কিন্তু উপযুক্ত স্থান পাওয়া যায় না। চারজনের বিশেষ উৎসাহ থাকলেও কাজল, ললিতা, বিজলি রবিবার দুপুরে অধিবেশন নিয়ে আপত্তি জানায়। এরপর বীণা, হাসি আর নন্দিতাও শনিবার বিকেলে অধিবেশনের ব্যাপারে আপত্তি করে। পরে ঠিক হয় রাত বারোটায় খাবার ঘরে প্রথম কবিতা সংঘের অধিবেশন হবে।
অধিবেশন উপলক্ষ্যে বিস্কুট আনার ভার পড়ে হাসির উপর। পেয়ারা, বিস্কুট আর চিনে বাদাম কেনার জন্য পয়সা বুলু, হাসি ও কাজলকে দিয়ে দেওয়ার কথা টুলুকে বলা হয়। মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে আলোচনার জন্যে সবাই হাজির রান্নাঘরে, কিন্তু খাবার ঘরটি উজ্জ্বল আলোয় পূর্ণ হয়েছে। ঘরের মধ্যে বড়ো টেবিলে শৌখিন সাদা ফুলকাটা চাদর পাতা ছিল। বড়ো বড়ো পিতলের ফুলদানিতে পদ্ম আর গোলাপ সাজানো ছিল। এ ছাড়া নানারকমের খাবার সাজানো ছিল কাচের বাসনে।
টেবিলে নানাধরনের খাবার। ভালো করে চোখ রগড়ে টুলু তাকিয়ে দেখে মণিকাদি, অণিমাদি, হিরণদি এবং মিস বিশ্বাস। সবাই বেশ বিস্মিত হল। সভা আরম্ভ হল এবং তা কবিতার মধ্য দিয়ে, তা দেখে দিদিমণিরাও খুশি হলেন। প্রত্যেক মেয়ের নামে দু-দু লাইন কবিতায় সম্পাদিকার রিপোর্ট শেষ হয়। মণিকাদি ও অন্যান্য দিদিরা সাহিত্যসভার প্রশংসা করলেন। অণিমাদি টিচারদের পক্ষে কবিতা সংঘকে অভিনন্দন জানান। পরের দিন অশিমাদি ছাত্রীদের লেখার প্রশংসা করেন। সাহিত্য সংঘ জমজমাট হয়, সপ্তাহে সপ্তাহে অধিবেশন হয় এবং হাতে লেখা পত্রিকাও বের হয়। ক্লাসের সবাই যোগ দিয়েছে এবং সবার আশ্চর্য উন্নতি হল সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে।
নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা
প্রতীক্ষা – অপেক্ষা। কৌতূহল – জানার বাসনা। কীর্তি – কৃতিত্ব। সাজসজ্জা – সাজাগোজা। উনবিংশতি – উনিশ। কলিকালে – সাম্প্রতিক সময়ে, বর্তমান সময়ে। সংবর্ধনা – সম্মান প্রদর্শন। দুর্বিষহ – ভীষণ যন্ত্রণা, যা সহ্য করা যায় না। আঁখি – চোখ। স্থাপন – প্রতিষ্ঠা। সন্তর্পণে – সতর্কতার সঙ্গে। নিখিল – সমগ্র। মুশকিল – সমস্যা। অধিবেশন – বৈঠক। উৎসাহ – আগ্রহ। কোশাধ্যক্ষ – হিসাবরক্ষক। হুড়মুড়িয়ে – তাড়াতাড়ি করে, ব্যস্ততার সঙ্গে। আপত্তি – অস্বীকার, প্রতিবাদ। মিটমাট – নিষ্পত্তি, রফা। বিরসবদনে – ম্লান মুখে। ফিশফিশ – খুব আস্তে কথা, যা অন্য কেউ শুনতে না পায়। দুনিয়ার – পৃথিবীর। উত্তেজনা – উৎসাহ, উৎসাহ দান। সাধ্য – ইচ্ছে। পরিকল্পনা – মনে মনে কল্পনা, মতলব। চিরকুট – টুকরো কাগজ। রিপোর্ট – বিবরণ প্রতিবেদন। পণ – প্রতিজ্ঞা।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের ষষ্ঠ অধ্যায় ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ এর বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি। এই বিষয়সংক্ষেপ অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্রায়শই পরীক্ষায় আসবে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও সহায়তার প্রয়োজন হয়, দয়া করে টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করুন। এছাড়াও, আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারা উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!